
####
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কুয়েটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পাল্টা-পাল্টি কর্মসুচীতে চরম উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অমান্যকারী শিক্ষার্থীদের ভিসির অপসারনের এক দফা দাবির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে কুয়েটের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। অন্যদিকে, ভিসি প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের একদফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বেলা পৌনে ১টায় ভিসির অপসারনের এক দফা দাবির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে কুয়েটের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দুর্বার বাংলার পাদদেশে গিয়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা কুয়েট উপাচার্যকে হয়রানি করছে দাবি করে শিক্ষক-কমকর্তারা প্রতিবাদ জানান। শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, ক্যাম্পাস চলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-কানুন ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে। সিন্ডিকেট সভায় যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তার বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা উপাচার্য বা সাধারণ শিক্ষকদের নেই। শিক্ষার্থীদের প্রতি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার আহবান জানান তারা।
এদিকে, ভিসি প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের একদফা দাবিতে দুপুর ১২ টার দিকে শিক্ষার্থীরা দুর্বার বাংলার পাদদেশ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে ছাত্র কল্যাণ কেন্দ্রের সামনে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগের দাবিতে দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার লাগিয়ে দেয়। বর্তমানে শিক্ষাথীরা ছাত্র কল্যাণ সেন্টারের সামনে অবস্থান করছে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার রাত থেকে তারা হলে অবস্থান করলেও কুয়েট প্রশাসন হলের ইন্টারনেট ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।
অমর একুশে হলের উনিশ ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌফিক বলেন, আমরা হলে উঠলেও খাবার পানির সংকট রয়েছে। ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ। দুই মাস আগের ট্যাংকির পানি ব্যবহারের অনুপযোগী। হলের কর্মচারীদের এখনও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আমাদের সমস্যাগুলো হল প্রভোস্টকে অবহিত করেছি। তিনি বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনের কারণে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম দুই মাস বন্ধ ছিল। সব মিলিয়ে চার-পাঁচ মাস শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ। এতে করে আমরা শিক্ষার্থীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দপ্তরের ডেপুটি পরিচালক ড. সাইফুল ইসলাম খুলনা গেজেটকে বলেন, দুই মাস আগে সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো সিলগালা করে দেওয়া হয়। ওই সময় হলের ইন্টারনেট সংযোগ এবং পানির লাইন যেভাবে ছিল সেভাবে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হলের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন কিংবা পানির লাইন বন্ধ করে নাই। শিক্ষার্থীদের অভিযোগটি সত্য নয় বরং ভিত্তিহীন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারী বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে সকল প্রকার রাজনীতি নিষিদ্ধ, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৬দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। শির্ক্ষাথীদের আন্দোলনের মুখে ২৫ফেব্রুয়ারী বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করা হয়।
পরে গত ১৩ এপ্রিল হল খুলে দেয়ার দাবি জানায় আন্দোলনরত শির্ক্ষাথীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১৪ এপ্রিল রাতে সিন্ডিকেট সভায় আগামী ০৪মে একাডেমী কার্যক্রম শুরু ও ০২মে হল খোলার ঘোষণা দেয়। একই সাথে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা গতকাল মঙ্গলবার তালা ভেঙে হলগুলোতে প্রবেশ করে। পরে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এক দফা আন্দোলন ঘোষণা করে। ##