০৮:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনায় কোটি টাকা খরচের পর নভোথিয়েটার নির্মান প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ-৩দিনের কর্মসূচী ঘোষনা

####

খুলনা নভোথিয়েটার নির্মান প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবীতে আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষনা করেছে খুলনা নাগরিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। রবিবার দুপুরে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি খুলনা প্রেস ক্লাবের হুমায়ূন কবীর বালু মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দাবী ‍তুলে ধরে ৩দিনের এ আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষনা করে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ-জামান।

লিখিত বক্তব্যে উন্নয়ণ কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেণ, ২০১২ সালে খুলনা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুরসহ ৮টি বিভাগীয় শহরে নতুন প্রজন্মের কাছে বিজ্ঞানকে সহজভাবে উপস্থাপন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আগ্রহী করা, বিজ্ঞান সম্পর্কিত ধারণা দেওয়ার জন্য একটি করে নভোথিয়েটার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুরে নভোথিয়েটারের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু ২০১২ সাল থেকে খুলনা নভোথিয়েটারের জন্য জমি খুঁজতেই সময় লেগেছে প্রায় ১০ বছর। ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি খুলনায় নভোথিয়েটার স্থাপনে স্থান নির্ধারণ-সংক্রান্ত জটিলতা কাটিয়ে একনেকে অনুমোদন পায় এই প্রকল্পটি। নগরীর সিএন্ডবি কলোনির ১০ একর জমিতে নভোথিয়েটার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৫৫৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। গত ৩০ এপ্রিল বিনামূল্যে গণপূর্ত অধিদপ্তরের (পিডব্লউডি’র) জায়গা পেয়েছে নভোথিয়েটার কর্তৃপক্ষ। আর গত ১৯ ডিসেম্বর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের টেন্ডারও আহ্বান করা হয়েছিল। এ ছাড়া প্রকল্পের জন্য এ পর্যন্ত প্রায় পৌনে এক কোটি টাকার মতো খরচ হয়েছে।

তারা আরও বলেন, এ প্রকল্পের বিরুদ্ধে স্থানীয় কিছু মানুষ খেলার মাঠের বিষয় তুলে আন্দোলন করে। পরে ১২ডিসেম্বর খুলনার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রকল্প সংশ্লিষ্ঠরা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি, বিভিন্ন প্রতিষ্টানের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভায় প্রকল্পের নাম ও স্থান পরিবর্তনের দাবী ওঠে। এ সময় মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধিরা খেলার মাঠ উঁচু করে আগেই নির্মান করে তারপর নভোথিয়েটার প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তারপরও গত ৩০ ডিসেম্বর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেনের সভাপতিত্বে প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটির(পিএসসি) সভায় প্রকল্পটির কার্যক্রম অসমাপ্ত রেখে সমাপ্ত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রকল্পের নির্মান কাজ শুরুর মুহূর্তে মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তে খুলনাবাসী হতবাক ও খুলনার প্রতি চরম বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে নেতৃবৃন্দ শেষ সময়ে এসে প্রকল্পটি বাতিলের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানান। খুলনাবাসির প্রত্যাশা অনুযায়ী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় গৃহীত বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ এবং একই সাথে নগরীর জিয়া হলের অবকাঠামো উন্নয়নে ১৫ শত কোটি টাকার প্রকল্পটি অনুমোদন ও বাস্তবায়ন, ৮৩ কোটি টাকার আধুনিক কসাইখানা নির্মান প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী ২২ জানুয়ারী বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় বরাবর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি, ২৪ জানুয়ারী শুক্রবার বিকেল ৩.৩০ টায় খালিশপুর পিপলস্ চত্তরে মানব বন্ধন ও ২৫ জানুয়ারী শনিবার খুলনা প্রেসক্লাবে সকাল ১১টায় খুলনার সকল নাগরিক সংগঠন, পেশাজীবী, সাংবাদিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময়ের কর্মসূচী ঘোষনা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে খূলনা উন্নয়ন কমিটির মহাসচিব এ্যাড. হাফিজুর রহমান হাফিজসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ##

ট্যাগ :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

লেখক তথ্য সম্পর্কে

sunil Dhash

জনপ্রিয়

নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদে পাইকগাছায় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

খুলনায় কোটি টাকা খরচের পর নভোথিয়েটার নির্মান প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ-৩দিনের কর্মসূচী ঘোষনা

আপডেট সময় : ০৫:১৮:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

####

খুলনা নভোথিয়েটার নির্মান প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবীতে আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষনা করেছে খুলনা নাগরিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। রবিবার দুপুরে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি খুলনা প্রেস ক্লাবের হুমায়ূন কবীর বালু মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দাবী ‍তুলে ধরে ৩দিনের এ আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষনা করে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ-জামান।

লিখিত বক্তব্যে উন্নয়ণ কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেণ, ২০১২ সালে খুলনা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুরসহ ৮টি বিভাগীয় শহরে নতুন প্রজন্মের কাছে বিজ্ঞানকে সহজভাবে উপস্থাপন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আগ্রহী করা, বিজ্ঞান সম্পর্কিত ধারণা দেওয়ার জন্য একটি করে নভোথিয়েটার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুরে নভোথিয়েটারের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু ২০১২ সাল থেকে খুলনা নভোথিয়েটারের জন্য জমি খুঁজতেই সময় লেগেছে প্রায় ১০ বছর। ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি খুলনায় নভোথিয়েটার স্থাপনে স্থান নির্ধারণ-সংক্রান্ত জটিলতা কাটিয়ে একনেকে অনুমোদন পায় এই প্রকল্পটি। নগরীর সিএন্ডবি কলোনির ১০ একর জমিতে নভোথিয়েটার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৫৫৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। গত ৩০ এপ্রিল বিনামূল্যে গণপূর্ত অধিদপ্তরের (পিডব্লউডি’র) জায়গা পেয়েছে নভোথিয়েটার কর্তৃপক্ষ। আর গত ১৯ ডিসেম্বর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের টেন্ডারও আহ্বান করা হয়েছিল। এ ছাড়া প্রকল্পের জন্য এ পর্যন্ত প্রায় পৌনে এক কোটি টাকার মতো খরচ হয়েছে।

তারা আরও বলেন, এ প্রকল্পের বিরুদ্ধে স্থানীয় কিছু মানুষ খেলার মাঠের বিষয় তুলে আন্দোলন করে। পরে ১২ডিসেম্বর খুলনার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রকল্প সংশ্লিষ্ঠরা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি, বিভিন্ন প্রতিষ্টানের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভায় প্রকল্পের নাম ও স্থান পরিবর্তনের দাবী ওঠে। এ সময় মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধিরা খেলার মাঠ উঁচু করে আগেই নির্মান করে তারপর নভোথিয়েটার প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তারপরও গত ৩০ ডিসেম্বর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেনের সভাপতিত্বে প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটির(পিএসসি) সভায় প্রকল্পটির কার্যক্রম অসমাপ্ত রেখে সমাপ্ত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রকল্পের নির্মান কাজ শুরুর মুহূর্তে মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তে খুলনাবাসী হতবাক ও খুলনার প্রতি চরম বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে নেতৃবৃন্দ শেষ সময়ে এসে প্রকল্পটি বাতিলের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানান। খুলনাবাসির প্রত্যাশা অনুযায়ী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় গৃহীত বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ এবং একই সাথে নগরীর জিয়া হলের অবকাঠামো উন্নয়নে ১৫ শত কোটি টাকার প্রকল্পটি অনুমোদন ও বাস্তবায়ন, ৮৩ কোটি টাকার আধুনিক কসাইখানা নির্মান প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী ২২ জানুয়ারী বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় বরাবর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি, ২৪ জানুয়ারী শুক্রবার বিকেল ৩.৩০ টায় খালিশপুর পিপলস্ চত্তরে মানব বন্ধন ও ২৫ জানুয়ারী শনিবার খুলনা প্রেসক্লাবে সকাল ১১টায় খুলনার সকল নাগরিক সংগঠন, পেশাজীবী, সাংবাদিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময়ের কর্মসূচী ঘোষনা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে খূলনা উন্নয়ন কমিটির মহাসচিব এ্যাড. হাফিজুর রহমান হাফিজসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ##