
####
খুলনার সাবেক সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, সাবেক ৮ এমপি ও কেএমপির সাবেক পুলিশ কমিশনারসহ ২৬জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গুমের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (২৩জুন) খানজাহান আলী থানার মিরেরডাঙ্গা এলাকা মোঃ লাভলু গাজীর ছেলে জুলাই গনআন্দোলনের সমন্বয়ক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পী বাদী হয়ে এ অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি অভিযোগটি রেজিস্টারভুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩-এর ৮ ধারা অনুযায়ী আসামীদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন। এ মামলায় আসামী করা হয়েছে-খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা-২ আসনের সাবেক এমপি ও শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ জুয়েল, খুলনা-৩ আসনের সাবেক এমপি এস এম কামাল হোসেন ও বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, খুলনা-৪ আসনের সাবেক এমপি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, যুবলীগ নেতা ও শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ সোহেল, বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক এমপি ও শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল, খুলনা-৫ আসনের সাবেক এমপি নারায়ণচন্দ্র চন্দ্র, খুলনা-৬ আসনের সাবেক এমপি আক্তারুজ্জামান বাবু ও রাশীদুজ্জামান মোড়ল, খুলনা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাড সাইফুল ইসলাম, খুলনা মহানগর যুবলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশ, খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ, খুলনা মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহাজালাল সুজন, কেএমপির সাবেক কমিশনার মোজাম্মেল হক, খুলনার আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী, কেএমপির উপপুলিশ কমিশনার সোনালী সেন, এডিসি গোপিনাথ কাঞ্জিলাল, কেএমপির ডিবি ওসি নুরুজ্জামান, লবনচরা থানার সাবেক ওসি মো: মনির, এস আই হাসান, এসআই সুমন মন্ডল, সোনাডাঙ্গা থানার সাবেক ওসি মমতাজ হোসেন, মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো; সাইফ উদ্দিন, সাবেক সাংসদ আমির হোসেন আমুর সাবেক পিএস ও খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের র্কাযারয়ের এডিডি জহিরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর ও নগরীর মুজগুন্নী আবাসিক এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে জগলুল কাদের।
অভিযোগে বাদী বলেন, তিনি ২০২৪ সালের জুলাই মাসের শুরু থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে একত্বতা ঘোষনা করে খুলনায় আন্দোলন সংগঠিত করেন। ২০২৪সালের ৮ জুলাই বৈষমাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব পান। খুলনার সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় পূর্বঘোষিত সড়ক ও রেল অবরোধ কর্মসূচীতে অংশ নিতে নতুন রাস্তার মোড়ের উদ্দেশ্যে ইজি বাইকে যাওয়ার সময় সোনাডাঙ্গা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সামনে পৌঁছালে অজ্ঞাত মুখোশধারী আওয়ামী নেতা ও পুলিশ বাহিনীর সমন্বয়ে ১৫ থেকে ২০ ইজিবাইকের গতিরোধ করে টেনে হেচড়ে আমাকে ইজিবাইক থেকে নামিয়ে নেয়। আমার সাথে থাকা সাক্ষীরা ইজিবাইক চালক ইদ্রিসসহ কয়েকজন এগিয়ে আসলে আসামীরা দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে আমাকে হাত ও চোখ বেঁধে ফেলে। দীর্ঘ ১২ ঘন্টার বেশি সময় ধরে আমার চোখ এবং হাত বেঁধে রাখা হয়। পরে আমকে প্রাইভেট কারে তুলে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও মাথায় আঘাত করে বন্ধ ঘরে আটকে রাখে এবং আন্দোলন বন্ধ করতে চাপ দেয়। কিন্তু সেটাতে রাজি না হওয়ায় আমাকে নির্যাতন করে আমার কাছে নগদ টাকা, সোনার আংটি তারা নিয়ে যায়। পরে গভীর রাতে গাড়ীতে করে নিয়ে আড়ংঘাটা বাইপাস মোড় থেকে একটু সামনে একটা ফাকা বাগানের ভিতর হাত পা বান্ধা অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। সেখান থেকে এলাকাবাসি আমাকে উদ্ধার করে।
ছাত্র-জনতার অধিকার আদায়ের যৌক্তিক মিছিল দমন করার জন্য উল্লেখিত আসামীদের পরিকল্পনা এবং সরাসরি নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, মিছিলের উপর সরাসরি গুলিবর্ষন করে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় মামলা দায়েরে অনিচ্ছাকৃত বিলম্ব হয়। আমাকে গুম ও র্নিযাতনের মাধ্যমে আসামীগন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩-এর ৩(২)/৪(১)/৪(২)(৩) ধারা মোতাবেক অপরাধ ও গনহত্যার অপরাধ সংগঠিত করে। অভিযোগটি রেজিস্টারভুক্ত করে আসামীগনের উপযুক্ত গনহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের যথাযথ তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীও জানানো হয়েছে। ##