০৩:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় দেশের  বড় রক্ষক সুন্দরবনকে বাঁচাতে হবে

####
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট একের পর এক শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বুক পেতে ঠেকিয়ে যাচ্ছে সুন্দরবন। শুধু ঝড়-জলোচ্ছাসেই নয়; লবণাক্ততা ও উষ্ণতা বৃদ্ধি, অচেনা রোগবালাই আর কীটপতঙ্গের আক্রমণেও দেশের এই অতন্দ্র প্রহরী এখন ক্ষতবিক্ষত। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অসাধু মানুষের অত্যাচার। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় দেশের সবচেয়ে বড় রক্ষক সুন্দরবন আজ নিজেই বিপদে। এ মুহূর্তে সুন্দরবনের সবচেয়ে বড় বিপদ হলো বনের নদী-খালে বিষ দিয়ে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা। এই অপতৎপরতার পেছনে কাজ করছে প্রভাবশালী অন্তত তিনটি গোষ্ঠী। প্রথমটি হলো বন উপকূলের একশ্রেণির মাছ ব্যবসায়ী, যাঁদের বলা হয় কোম্পানি মহাজন। তাঁরা নিজেদের নিয়ন্ত্রিত জেলেদের প্ররোচনা দেন বিষ ছিটিয়ে দ্রæত বেশি মাছ শিকারে। আরেক গোষ্ঠী হলো অসাধু বনরক্ষী। কোম্পানি মহাজনদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে তারা অভয়ারণ্যের নদী-খালে ঢ়ুুকে বিষ ছিটিয়ে মাছ ধরার সুযোগ করে দেন। এই দুই দলের সঙ্গে স¤প্রতি আবার যুক্ত হয়েছে বনদস্যুরা। এসব কথা বললেন জনউদ্যোগ,খুলনার আলোচনা সভায় বক্তারা।  সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টায় জনউদ্যোগ , খুলনার আয়োজনে খুলনা আর্ট স্কুল মিলনায়তনে “জলবায়ু সংকটে দক্ষিণাঞ্চলে : আমাদের করণীয়”- শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বীরমুক্তিযোদ্ধা এ্যাডঃ আফম মহসিন। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারন সম্পাদক মহেন্দ্রনাথ সেন। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন আয়কর আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এস এম শাহনেওয়াজ আলী, ওয়ার্কার্স পার্টি মহানগর কমিটির সভাপতি শেখ মফিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থার সমন্বয়কারি এ্যাডঃ মোমিনুল ইসলাম, সরদার আবু তাহের, ডাঃ মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু, দেলোয়ার উদ্দিন দিলু, বিধান চন্দ্র রায়, নারীনেত্রী নূরুন নাহার হীরা, ছাত্রনেতা জয় বৈদ্য, মোঃ ওয়সি উদ্দিন রাফি, জ্যোতি সাহা, মোঃ আব্দুল্লাহ, সাগর সরকার প্রমুখ। ধারণাপত্র পাঠ করেন এম এন আলী শিপলু।
সভায় বক্তারা বলেন, শুধু অতিরিক্ত গরমই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঋতুবৈচিত্র্যে ছন্দপতন ছাড়াও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে মারাত্মক হুমকির মুখে বাংলাদেশ। এজন্য উন্নত দেশগুলোর সীমাহীন গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণকে দায়ী করে চলতি শতাব্দিতেই বিশ্বজুড়ে গড় তাপমাত্রা দুই দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। যা সত্যি হলে, নিম্নাঞ্চল ডুবে যাওয়া, স্বাস্থ্য সংকট, শিক্ষা ও খাদ্যসঙ্কটসহ আরও অনেক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে বাংলাদেশকে।
বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে একদিকে যেমন শীতের সময়কাল কমে আসছে অন্যদিকে দীর্ঘ হচ্ছে গ্রীষ্ম ও তীব্র হচ্ছে গরম। আর এই বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ গ্রিন হাউস গ্যাসের বিরূপ প্রতিক্রিয়া। বিশ্বের উন্নত ও অগ্রসরমান উন্নয়নশীল দেশগুলো এই গ্যাস উৎপাদনে দায়ী হলেও ক্ষতিকর ফল ভোগ করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের যে অভিঘাত, এটা আমাদের জন্য একটা অস্তিত্বের লড়াই তৈরি করে দিচ্ছে। সরকার শুধু আইন করে বা শাস্তি দিয়ে বা অর্থায়নের ব্যবস্থা করে এ সমস্যা সমাধান করতে পারবে না। এর জন্য সব মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদেরকে বিষয়গুলো বুঝতে হবে।

ট্যাগ :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

লেখক তথ্য সম্পর্কে

sunil Dhash

জনপ্রিয়

নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদে পাইকগাছায় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় দেশের  বড় রক্ষক সুন্দরবনকে বাঁচাতে হবে

আপডেট সময় : ১১:১৮:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

####
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট একের পর এক শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বুক পেতে ঠেকিয়ে যাচ্ছে সুন্দরবন। শুধু ঝড়-জলোচ্ছাসেই নয়; লবণাক্ততা ও উষ্ণতা বৃদ্ধি, অচেনা রোগবালাই আর কীটপতঙ্গের আক্রমণেও দেশের এই অতন্দ্র প্রহরী এখন ক্ষতবিক্ষত। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অসাধু মানুষের অত্যাচার। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় দেশের সবচেয়ে বড় রক্ষক সুন্দরবন আজ নিজেই বিপদে। এ মুহূর্তে সুন্দরবনের সবচেয়ে বড় বিপদ হলো বনের নদী-খালে বিষ দিয়ে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা। এই অপতৎপরতার পেছনে কাজ করছে প্রভাবশালী অন্তত তিনটি গোষ্ঠী। প্রথমটি হলো বন উপকূলের একশ্রেণির মাছ ব্যবসায়ী, যাঁদের বলা হয় কোম্পানি মহাজন। তাঁরা নিজেদের নিয়ন্ত্রিত জেলেদের প্ররোচনা দেন বিষ ছিটিয়ে দ্রæত বেশি মাছ শিকারে। আরেক গোষ্ঠী হলো অসাধু বনরক্ষী। কোম্পানি মহাজনদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে তারা অভয়ারণ্যের নদী-খালে ঢ়ুুকে বিষ ছিটিয়ে মাছ ধরার সুযোগ করে দেন। এই দুই দলের সঙ্গে স¤প্রতি আবার যুক্ত হয়েছে বনদস্যুরা। এসব কথা বললেন জনউদ্যোগ,খুলনার আলোচনা সভায় বক্তারা।  সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টায় জনউদ্যোগ , খুলনার আয়োজনে খুলনা আর্ট স্কুল মিলনায়তনে “জলবায়ু সংকটে দক্ষিণাঞ্চলে : আমাদের করণীয়”- শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বীরমুক্তিযোদ্ধা এ্যাডঃ আফম মহসিন। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারন সম্পাদক মহেন্দ্রনাথ সেন। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন আয়কর আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এস এম শাহনেওয়াজ আলী, ওয়ার্কার্স পার্টি মহানগর কমিটির সভাপতি শেখ মফিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থার সমন্বয়কারি এ্যাডঃ মোমিনুল ইসলাম, সরদার আবু তাহের, ডাঃ মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু, দেলোয়ার উদ্দিন দিলু, বিধান চন্দ্র রায়, নারীনেত্রী নূরুন নাহার হীরা, ছাত্রনেতা জয় বৈদ্য, মোঃ ওয়সি উদ্দিন রাফি, জ্যোতি সাহা, মোঃ আব্দুল্লাহ, সাগর সরকার প্রমুখ। ধারণাপত্র পাঠ করেন এম এন আলী শিপলু।
সভায় বক্তারা বলেন, শুধু অতিরিক্ত গরমই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঋতুবৈচিত্র্যে ছন্দপতন ছাড়াও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে মারাত্মক হুমকির মুখে বাংলাদেশ। এজন্য উন্নত দেশগুলোর সীমাহীন গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণকে দায়ী করে চলতি শতাব্দিতেই বিশ্বজুড়ে গড় তাপমাত্রা দুই দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। যা সত্যি হলে, নিম্নাঞ্চল ডুবে যাওয়া, স্বাস্থ্য সংকট, শিক্ষা ও খাদ্যসঙ্কটসহ আরও অনেক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে বাংলাদেশকে।
বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে একদিকে যেমন শীতের সময়কাল কমে আসছে অন্যদিকে দীর্ঘ হচ্ছে গ্রীষ্ম ও তীব্র হচ্ছে গরম। আর এই বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ গ্রিন হাউস গ্যাসের বিরূপ প্রতিক্রিয়া। বিশ্বের উন্নত ও অগ্রসরমান উন্নয়নশীল দেশগুলো এই গ্যাস উৎপাদনে দায়ী হলেও ক্ষতিকর ফল ভোগ করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের যে অভিঘাত, এটা আমাদের জন্য একটা অস্তিত্বের লড়াই তৈরি করে দিচ্ছে। সরকার শুধু আইন করে বা শাস্তি দিয়ে বা অর্থায়নের ব্যবস্থা করে এ সমস্যা সমাধান করতে পারবে না। এর জন্য সব মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদেরকে বিষয়গুলো বুঝতে হবে।