
####
খুলনা নগরীতে চরম বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসীরা। একদিনেই তিন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় এক যুবদল নেতা নিহত ও আরও দুইজন গুরুতর জখম হয়েছে। এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে তীব্র উদ্বেগ-উৎকন্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১২টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পযর্ন্ত নগরীতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এর আগেরদিন রবিবার খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার নিরাপদ নগরী গড়ার প্রত্যয়ে আইন-শৃংখলার উন্নয়ন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, মাদক-জুয়া বন্ধসহ কঠোর পদক্ষেপ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণের কথা গনমাধ্যমের সাথে ব্রিফিংয়ে জানিয়েছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সোমবার বেরা সাড়ে ১২টার দিকে নগরীল পুরাতন রেলস্টেশন রোড রেলওয়ে মসজিদের পেছনে নগরীর ২১নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মানিক হাওলাদারকে অস্ত্র দিয়ে বেপরোয়া কুপিয়ে জখম করে সন্ত্রাসীরা। বিকালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিহত মানিক রেলওয়ে হাসপাতাল রোডের মনছুর হাওলাদারের ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে।
এলাকাবাসী জানায়, ওএমএস-এর চাল বিতরণে লাইন দেওয়াকে কেন্দ্র করে এক নারীর সঙ্গে মানিকের তর্ক হয়। এই তর্কের জের ধরে কয়েকজন মানিককে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এতে সে বুকের মাঝখানে এবং পেটের বামপাশে ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম হন৷ স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে খুমেক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে, সন্ত্রাসীদের চাপাতির কোপে নগরীর সুন্দরবন আর্দশ মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রদল কর্মী মো: নওফেল গুরুতর আহত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে নগরীর আযমখান কমার্স কলেজের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। সে টিবি ক্রস রোড এলাকার ২৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান লিটুর ছেলে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, সন্ধ্যা ৬টার দিকে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন সন্ত্রাসী নওফেলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। আত্মরক্ষার জন্য সে আযমখান কমার্স কলেজের ভেতর লুকানোর চেষ্টা করে। সন্ত্রাসীরা তার পিছু ধাওয়া করে চাপতি দিয়ে নওফেলের বাম হাত ও হাটুতে আঘাত করে। এতে তার বাম হাতের একটি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এছাড়া, নগরীর বয়রা চেয়ারম্যান ভিটা শশ্মান ঘাট এলাকায় সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সজীব শিকদার(২৯) নামে এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তাকে রাতে চিকিৎসার জন্য ঢাকা প্রেরণ করা হয়েছে। সজীব শিকদার নগরীর জিরোপয়েন্ট বিসমিল্লাহ সড়ক এলাকার জালাল শিকদরের ছেলে। হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে হরিণটানা থানার ওসি শেখ খায়রুল বাসার বলেন, সজীব হরিণটানা এলাকার সন্ত্রাসী কালা লাভলু ও সাগর গ্রুপের সদস্য ছিল। গত কয়েকদিন ধরে এ গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দের জেরে হামলার শিকার হয় সজীব শিকদার। রাতে তাকে বয়রা চেয়ারম্যান ভিটা শশ্মানঘাট এলাকায় ডেকে নেওয়া নিয়ে অতর্কিত চাপাতি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ আহসান হাবীব বলেন, নগরীর পুরাতন রেলওয়ে রোড এলাকায় ২১নং ওয়ার্ড যুবদলের সহ-সভাপতি মানিক হাওলাদারকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ২ জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া নগরীর আযমখান কমার্স কলেজ এলাকা ও হরিনটানার বয়রা চেয়ারম্যান ভিটা শশ্মানঘাট এলাকায় দুইজনকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে আহত করেছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ##