
####
কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানার পুঠিমারি গ্রামের আল্লাদী বেগম (৩৫), স্বামী বুলবুল শেখ (৪২) ও দ্বিতীয় স্ত্রী ডেইজি আক্তারসহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন, ভরণপোষণ না দেওয়া এবং হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে নড়াগাতী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, প্রায় ১৫ বছর আগে আল্লাদী বেগমের সঙ্গে বুলবুল শেখের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে তিন কন্যাসন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই স্বামী যৌতুকের জন্য তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। প্রথমে বিদেশ যাওয়ার কথা বলে আল্লাদী বেগমের বাবার কাছ থেকে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নেয়, যা পরবর্তীতে পরকীয়া ও অন্যান্য কাজে ব্যয় করে ফেলে। কিছুদিন পর আবারও বিদেশ যাওয়ার জন্য টাকা দাবি করলে আল্লাদী বেগমের পিতা জমি বিক্রি করে তাকে ৫ লক্ষ টাকা দেন। এই অর্থ ব্যয়ে সাত বছর আগে বুলবুল শেখ সৌদি আরবে যান।
বিদেশ যাওয়ার আগে আল্লাদী বেগমের বাবার বাড়ি থেকে দেওয়া ৪.৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কারও নিয়ে বিক্রি করে ফেলে বুলবুল শেখ। সৌদিতে অবস্থানকালে সে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে এবং স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। তিন বছর ধরে সে স্ত্রী ও সন্তানদের কোনো ভরণপোষণ দিচ্ছে না। স্ত্রী তার ন্যায্য অধিকার চাইলে সে মোবাইলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করত।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সালে বিদেশে থাকা অবস্থায় বুলবুল শেখ তার পরকীয়া প্রেমিকাকে বিয়ে করে। এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ইং দুপুর আনুমানিক ১২টায় বুলবুল শেখ ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী ডেইজি আক্তার আল্লাদী বেগমের বাড়িতে প্রবেশ করে এবং ঘরে ঢোকার চেষ্টা করে। বাধা দিলে বুলবুল শেখ তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং ভয়ভীতি দেখায়। একপর্যায়ে সে হাতে থাকা বঠি দিয়ে আল্লাদী বেগমের মাথায় কোপ মারতে যায়। আল্লাদী বেগম আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে কোপটি তার বাম হাতের কুনুইতে লাগে, যার ফলে তিনি গুরুতর আহত হন।
তার চিৎকার শুনে তার ননদ নাজমা বেগম (৩৫) ছুটে এসে বিবাদীদের ঘর থেকে বের করে দিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখে। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে স্থানীয় ইসুব শেখ (৪৫), মিজান মোল্যা (৫০), শাকিলা খানম (১৪)সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
আল্লাদী বেগম আশঙ্কা করছেন, বিবাদীরা যে কোনো সময় তার ও তার মেয়েদের ক্ষতি করতে পারে। তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং প্রশাসনের কাছে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেছেন।