
####
রূপসা উপজেলার নৈহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম পলাশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। নৈহাটি গ্রামের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষার্থীর অবিভাবক নিজামুদ্দিন শেখ টিটু গতকাল এ লিখিত অভিযোগ করেন। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা), জেলা শিক্ষা অফিসার, দুর্নীতি দমন কমিশন খুলনা ও রূপসা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, রূপসার নৈহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাচীনতম একটি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিট। যে বিদ্যালয়টি ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ইতিমধ্যে শত বছর পেরিয়ে গেছে। এই বিদ্যালয় থেকে পাশ করে অনেক শিক্ষার্থী এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন বড় বড় সেক্টরে অবদান রাখছে। সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম পলাশ বিদ্যালয়টিতে অনিয়মের স্বর্গরাজ্যে পরিনত করেছেন। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমল থেকে তিনি স্কুলে ঠিকমতো আসেন না। তবে যেদিন আসেন সেদিনও নিজের খেয়াল খুশি মত সময়ে আসেন। তারপর এসে হাজিরা খাতায় বাকি অনুপস্থিত সব দিনের স্বাক্ষর করেন। যা স্থানীয় এলাকাবাসী সবাই জানলেও তার ক্ষমতার প্রভাবে তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পান না। এমন কি সে নিয়মিত স্কুলে না আসার কারণে কিছুদিন পূর্বে স্কুলের শিক্ষক কর্তৃক নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে সেই ছাত্রী আত্মহত্যা করেন। যা নিয়ে কোর্টে মামলা, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। সেই ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব অবহেলার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন সকলে। তার স্বেচ্ছাচারিতার কারনে স্কুলের সকল শিক্ষকরা তার প্রতি অসন্তুষ্ট। ইতিপূর্বে কয়েকজন শিক্ষক এসব বিষয় নিয়ে কথা বলার কারনে তাদেরকে গালি-গালাজসহ বিভিন্ন ভাবে হুমকিও দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে তার এসব অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা চলমান রাখার জন্য কৌশলে সবাইকে ম্যানেজ করে নিজের পছন্দ মত সভাপতি নিয়োগ দিয়ে থাকেন। বিগত সময় রূপসা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ফ.ম. আ: সালাম নৈহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি থাকা অবস্থায় প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তৎকালীন এমপিকে ভুল বুঝিয়ে জোর পূর্বক সভাপতি পদ থেকে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। বর্তমানে সভাপতি নিয়োগে তিনি আবারও দোড় ঝাপ শুরু করেছেন। যাতে তার পছন্দ মত সভাপতি নিয়োগ দিতে পারেন। এজন্য তিনি বিভিন্ন রকম কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন। যাতে তার পছন্দ মত সভাপতি নিয়োগ দিয়ে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যেতে পারেন। লিখিত অভিযোগে আরো বলা হয়, ঐতিহ্যবাহী নৈহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি পদে সৎ ও যোগ্য কোন ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হোলে তিনি প্রতিষ্ঠানটিকে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা মুক্ত করতে পারবেন। পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানানো হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম পলাশ তার বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবী করেন। তিনি বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীর ভাই মিজানুজ্জামান সভাপতি প্রার্থী হতে চান। তিনি ঢাকায় থাকেন।তাকে সভাপতি হিসেবে প্রস্তাব না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে এই অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
রূপসা উপজেলা নিবার্হী অফিসার আকাশ কুমার কুন্ডু জানান, তিনি নৈহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগের কপি পেয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে খতিয়ে দেখে কোন অনিয়ম ও বেআইনী কিছু থাকলে অবশ্যই ব্যবস্তা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। ##