০৮:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম খুলনার মেধাবী শিক্ষার্থী সুশোভন বাছাড় :

১০-এর মধ্যে রেজাল্ট থাকবে ভেবেছিলাম-তবে প্রথম হব ভাবিনি: সুশোভন

  • ।। সুনীল দাস ।।
  • আপডেট সময় : ০৫:২৫:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১৮ টাইম ভিউ

####

সুনীল দাস, খুলনা :

বিশ্বাস হচ্ছিল না প্রথম হয়েছি। প্রথমে রেজাল্ট পেয়ে মনে হয়েছিল ভুল আসছে। কারণ ভালো করব এবং হয়তো ১০-এর মধ্যে রেজাল্ট থাকবে ভেবেছিলাম-তবে প্রথম হব ভাবিনি। তাই অনলাইনে রেজাল্ট কয়েকবার দেখার পরে নিশ্চিত হলাম, না আমিই প্রথম হয়েছি। মনে হচ্ছে একটা স্বপ্ন পুরণ হয়েছে,অনুভূতিটা আসলেই পুরো বুঝিয়ে বলতে পারব না। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করা খুলনার মেধাবী শিক্ষার্থী সুশোভন বাছাড় সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই নিজের অনুভূতির কথা প্রকাশ করেন। রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে প্রকাশিত ফলাফলে সুশোভন বাছাড় সর্বোচ্চ ৯০ দশমিক ৭৬ পেয়ে প্রথম স্থান লাভ করেন।

খুলনা মহানগরীর বয়রা আজিজের মোড় এলাকায় বসবাস করেন পিতা-মাতাসহ সুশোভনদের পরিবার। তাদের গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নে। পিতা সুভাস চন্দ্র বাছাড় খুলনার টিঅ্যান্ডটি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। মা বন্দনা সেন এক সময় শিক্ষক ছিলেন, তবে এখন গৃহিণী। তাদের একমাত্র সন্তান সুশোভন। সুশোভন নগরীর টিঅ্যান্ডটি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পাস করেন।

সুশোভন বাছাড় বলেন, ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হওয়ার। সেইভাবে প্রথম থেকেই চেষ্টা করি বিজ্ঞান বিষয়ে এবং গণিত বিষয়ে কনসেপ্টগুলো ক্লিয়ার করে সামনে এগিয়ে যেতে। এগুলোতে দুর্বলতা থাকলে ভর্তি পরীক্ষায় সমস্যা হয়ে যাবে। সেভাবেই লেখাপড়া করে এগিয়েছি।

লেখাপড়া ও পছন্দের বিষয়ে তিনি বলেন, কখনো টাইম হিসেব করে পড়াশোনা করিনি। রাত জেগে নিজে কখনো পড়িনি এবং এটাকে সাপোর্টও করি না। পড়ার বাইরে খেলাধুলা ও বই পড়া খুব পছন্দ করি। গল্প, উপন্যাস থেকে শুরু করে সায়েন্স ফিকশন, থ্রিলার-জাতীয় বই আমার খুব প্রিয়। ভারো ফলাফলের জন্য বিই পড়ার কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন এই কৃর্তি শিক্ষার্থী।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে এই শিক্ষার্থী বলেন, একজন ভালো ডাক্তার হওয়ার পাশাপাশি ভালো মানুষ হতে চাই। ভালো মানুষ হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা আমার পরিকল্পনা। আমার আশা আছে গরিবদের জন্য একটি আলাদা হাসপাতাল করে দেশ গড়তে কিছু হলেও যেন অবদান রাখতে পারি।

সুশোভন বলেন, আমার লেখাপড়ায় বাবা-মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। তারা আমার প্রতি একটু বেশিই যত্নবান ছিল। আমার মা বয়রা গার্লস স্কুলে শিক্ষকতা করতেন।কিন্তু শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি আমার লেকাপড়ার জন্য তিনি শিক্ষকতা ছেড়ে দেন। লেখাপড়ায় বাবা-মায়ের অবদানের সাথে শিক্ষকরাও আমাকে সহযোগিতা করেছেন। তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

সুশোভনের বাবা সুভাস চন্দ্র বাছাড় বলেন, ছেলের স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। সেই অনুযায়ী সে নিজেকে গড়ে তুলেছে। এইচএসসি পর্যন্ত সে কোনো শিক্ষক বা কোচিংয়ে লেখাপড়া করেনি। বাড়িতে পড়েই সে পরীক্ষা দিয়েছে। তবে মেডিকেলে ভর্তির সময়ে অনলাইন ও অফলাইনে কোচিং করেছে। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বলেছিল ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পাবে। সে ভালোভাবে চান্স পাবে জানতাম তবে প্রথম হবে এটা ভাবিনি। ছেলের সাফল্যে পিতা হিসেবে অনেক ভালো লাগছে।

সুশোভনের মা বন্দনা সেন বলেন, ছেলের রেজাল্ট শুনে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। ছেলের স্বপ্ন ছিল একজন সফল ডাক্তার হওয়ার, আর্শিবাদ করি তার স্বপ্ন পূরণ হোক। ##

ট্যাগ :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

লেখক তথ্য সম্পর্কে

sunil Dhash

জনপ্রিয়

নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদে পাইকগাছায় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম খুলনার মেধাবী শিক্ষার্থী সুশোভন বাছাড় :

১০-এর মধ্যে রেজাল্ট থাকবে ভেবেছিলাম-তবে প্রথম হব ভাবিনি: সুশোভন

আপডেট সময় : ০৫:২৫:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

####

সুনীল দাস, খুলনা :

বিশ্বাস হচ্ছিল না প্রথম হয়েছি। প্রথমে রেজাল্ট পেয়ে মনে হয়েছিল ভুল আসছে। কারণ ভালো করব এবং হয়তো ১০-এর মধ্যে রেজাল্ট থাকবে ভেবেছিলাম-তবে প্রথম হব ভাবিনি। তাই অনলাইনে রেজাল্ট কয়েকবার দেখার পরে নিশ্চিত হলাম, না আমিই প্রথম হয়েছি। মনে হচ্ছে একটা স্বপ্ন পুরণ হয়েছে,অনুভূতিটা আসলেই পুরো বুঝিয়ে বলতে পারব না। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করা খুলনার মেধাবী শিক্ষার্থী সুশোভন বাছাড় সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই নিজের অনুভূতির কথা প্রকাশ করেন। রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে প্রকাশিত ফলাফলে সুশোভন বাছাড় সর্বোচ্চ ৯০ দশমিক ৭৬ পেয়ে প্রথম স্থান লাভ করেন।

খুলনা মহানগরীর বয়রা আজিজের মোড় এলাকায় বসবাস করেন পিতা-মাতাসহ সুশোভনদের পরিবার। তাদের গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নে। পিতা সুভাস চন্দ্র বাছাড় খুলনার টিঅ্যান্ডটি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। মা বন্দনা সেন এক সময় শিক্ষক ছিলেন, তবে এখন গৃহিণী। তাদের একমাত্র সন্তান সুশোভন। সুশোভন নগরীর টিঅ্যান্ডটি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পাস করেন।

সুশোভন বাছাড় বলেন, ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হওয়ার। সেইভাবে প্রথম থেকেই চেষ্টা করি বিজ্ঞান বিষয়ে এবং গণিত বিষয়ে কনসেপ্টগুলো ক্লিয়ার করে সামনে এগিয়ে যেতে। এগুলোতে দুর্বলতা থাকলে ভর্তি পরীক্ষায় সমস্যা হয়ে যাবে। সেভাবেই লেখাপড়া করে এগিয়েছি।

লেখাপড়া ও পছন্দের বিষয়ে তিনি বলেন, কখনো টাইম হিসেব করে পড়াশোনা করিনি। রাত জেগে নিজে কখনো পড়িনি এবং এটাকে সাপোর্টও করি না। পড়ার বাইরে খেলাধুলা ও বই পড়া খুব পছন্দ করি। গল্প, উপন্যাস থেকে শুরু করে সায়েন্স ফিকশন, থ্রিলার-জাতীয় বই আমার খুব প্রিয়। ভারো ফলাফলের জন্য বিই পড়ার কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন এই কৃর্তি শিক্ষার্থী।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে এই শিক্ষার্থী বলেন, একজন ভালো ডাক্তার হওয়ার পাশাপাশি ভালো মানুষ হতে চাই। ভালো মানুষ হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা আমার পরিকল্পনা। আমার আশা আছে গরিবদের জন্য একটি আলাদা হাসপাতাল করে দেশ গড়তে কিছু হলেও যেন অবদান রাখতে পারি।

সুশোভন বলেন, আমার লেখাপড়ায় বাবা-মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। তারা আমার প্রতি একটু বেশিই যত্নবান ছিল। আমার মা বয়রা গার্লস স্কুলে শিক্ষকতা করতেন।কিন্তু শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি আমার লেকাপড়ার জন্য তিনি শিক্ষকতা ছেড়ে দেন। লেখাপড়ায় বাবা-মায়ের অবদানের সাথে শিক্ষকরাও আমাকে সহযোগিতা করেছেন। তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

সুশোভনের বাবা সুভাস চন্দ্র বাছাড় বলেন, ছেলের স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। সেই অনুযায়ী সে নিজেকে গড়ে তুলেছে। এইচএসসি পর্যন্ত সে কোনো শিক্ষক বা কোচিংয়ে লেখাপড়া করেনি। বাড়িতে পড়েই সে পরীক্ষা দিয়েছে। তবে মেডিকেলে ভর্তির সময়ে অনলাইন ও অফলাইনে কোচিং করেছে। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বলেছিল ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পাবে। সে ভালোভাবে চান্স পাবে জানতাম তবে প্রথম হবে এটা ভাবিনি। ছেলের সাফল্যে পিতা হিসেবে অনেক ভালো লাগছে।

সুশোভনের মা বন্দনা সেন বলেন, ছেলের রেজাল্ট শুনে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। ছেলের স্বপ্ন ছিল একজন সফল ডাক্তার হওয়ার, আর্শিবাদ করি তার স্বপ্ন পূরণ হোক। ##