০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
খুলনায় সিটি নির্বাচনের পর বেড়েছে লোডশেডিং :

অসহনীয় গরম আর লোডশেডিংয়ে দূর্ভোগ কয়েকগুন বেড়েছে, সরবরাহ কম থাকায় লোডশেডিংয়ে বাধ্য হচ্ছে বিদ্যুত বিভাগ

####

 

খুলনায় সিটি নির্বাচনের নির্বাচনের পরেই শুরু হয় চরম লোডশেডিং।নির্বাচনের শেষ দিকের প্রায় এক সপ্তাহ নগরীতে বিদ্যুতের কোন লোডশেডিং না থাকায় সাধারন মানুষ বেশ স্বস্তিতেই ছিল। নির্বাচনে ভোট পেতে সরকারী দলের প্রার্থীর অনুরোধে বিদ্যুত দিলেও ভোটের পরে আবারও ব্যাপক লোডশেডিং হচ্ছে। ফলে একদিকে প্রকৃতিতে অসহনীয়ে উত্তাপ ও গরম আরেক দিকে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে জনজীবনে দূর্ভোগ কয়েকগুন বেড়েছে। এতে মহানগরীর মানুষের মধ্যে বিদ্যুতে জন্য এক প্রকার নাভিশ্বাস উঠেছে। তবে গত দুইদিন তেমন কোন লোডশেডিং না থাকায় কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও কিন্তু সাধারন মানুষ বিদ্যুত নিয়ে আশ্বস্ত হতে পারছেন না।তবে বিদ্যুত বিভাগ বলছে, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় তারা লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

জানা গেছে, খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের প্রতিক বরাদ্ধের পর প্রচার-প্রচারনা শুরু হয় ২৬মে। তারপর বিভিন্ন এরাকায় প্রচারনায় গিয়ে আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী তারুকদার আব্দুল খালেক বিদ্যুতের লোডশেডিং নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন।িএলাকার ভোটাররা বিভিন্ন স্থানে ্রপচারনায় গেলে বিধ্যুতের লোডমেডিংয়ের অভিযোগ তোলেন। তখন তালুকদার আব্দুল খালেক তার স্ত্রী বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন্নাহারকে ফোন করে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রীকে নির্বাচনের মধ্যে রোডমেডিং না করার জন্য অনুরোধ করতে বলেন। তা না হলে নির্বাচনে লোডশেডিংয়ের প্রভাব পড়বে বলেও জানান। এ অনুরোধের পর গত ০৮ই জুন রাত থেকে ১২জুন নির্বাচনের দিন পর্যন্ত খুলনা মহানগরীতে কোন লোডশেডিংমুক্ত রাখা হয়। এ বিষয়টি তখন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। কিন্তু নির্বাচনের পর দিন ১৩জুন থেকে আবারও লোডশেডিং শুরু হয়।এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এক র্যায়ে ১৫জুন খুলনায় সর্বোচ্চ ১৭৬মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হলে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। যদিও গত দুইদিন নগরীতে তেমন কোন লোডশেডিং দেকা যাচ্ছে না। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে মানুষের মধ্যে। তবে তারা বিদ্যুতের উপর আস্তা করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন নগরীর সাধারন মানুষ।

ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর(ওজোপাডিকো) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: মাহবুবুর রহমান সূত্রে জানা গেছে, খুলনায় বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় কম সরবরাহ থাকায় লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। তথ্য মতে, গত ০১জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৭১৫মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬১০মে.ওয়াট। এ সময় লোডশেডিং করা হয় ১০৫মে.ওয়াট।অপরদিকে, রাতের বেলায় চাহিদা কিছুটা কমে ৭০৭মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৬০মে. ওয়াট। তারপরেও ৪২মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। একইভাবে ০২জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৬৪১মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৯০মে.ওয়াট। এ সময় রোডশেডিং করা হয় ৫১মে.ওয়াট। অপরদিকে, রাত ৯টায় চাহিদা ছিল ৬১৮মে. ওয়াট। তার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৯২মে. ওয়াট। তারপরেও ২৬মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। ০৩জুন দিনের বেলায় দুপুর একটায় বিদ্যুতের চাহিদা ৭০৭মে.ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৪৩মে.ওয়াট। এ সময় লোডশেডিং করা হয় ৬৪মে.ওয়াট।অপরদিকে, রাতের বেলায় চাহিদা কিছুটা কমে ৭০০মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬১৪মে. ওয়াট। ৮৬মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। ০৪জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে ৭৩৪মে.ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬২৬মে.ওয়াট। এ সময় লোডশেডিং করা হয় ১০৮মে.ওয়াট।অপরদিকে, রাতের বেলায় চাহিদা কিছুটা কমে ৭২৪মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬২২মে. ওয়াট। রাতে ১০২মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। ০৫জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৭১৩মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৯৩মে.ওয়াট। এ সময় লোডশেডিং করা হয় ১২০মে.ওয়াট।অপরদিকে, রাতের বেলায় চাহিদা বেড়ে ৭২৬মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৩০মে. ওয়াট। ৯৬মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। ০৬জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৭৪৮মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৩৫মে.ওয়াট। এ সময় লোডশেডিং করা হয় ১১৩মে.ওয়াট।অপরদিকে, রাতের বেলায় চাহিদা কিছুটা কমে ৭৩১মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৭৮মে. ওয়াট। তারপরেও ৫৩মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। ০৭জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৭৩৯মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬২৭মে.ওয়াট। এ সময় লোডশেডিং করা হয় ১১২মে.ওয়াট।অপরদিকে, রাতের বেলায় চাহিদা কিছুটা কমে ৭২৩মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬১৪মে. ওয়াট। ১০৯মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। ০৮জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৬৯৬মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৭৩মে.ওয়াট। এ সময় লোডশেডিং করা হয় ১২৩ মে.ওয়াট।অপরদিকে, রাতের বেলায় চাহিদা কমে ৬৭৯মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৭৬মে. ওয়াট। এ সময় মাত্র ০৩মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। কিন্তু আশ্চর্য্যজনকভাবে ০৯জুন থেকে খুলনায় লোডশেডিংমুক্ত হয়ে যায়। ০৯জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৬০৫মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬০৫মে.ওয়াট। এ সময় কোন লোডশেডিং ছিল না। অপরদিকে, রাতের বেলায়ও ৫৩৪মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৩৪মে. ওয়াট। রাতেও কোন লোডশেডিং হয়নি। একইভাবে ১০জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৫৯১মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৯১মে.ওয়াট। এ সময় কোন লোডশেডিং ছিল না। অপরদিকে, রাতের বেলায়ও ৬০৮মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬০৮মে. ওয়াট। এদিন রাতেও কোন লোডশেডিং হয়নি। ১১জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৬৬২মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৬২মে.ওয়াট। এ সময় কোন লোডশেডিং ছিল না। অপরদিকে, রাতের বেলায়ও ৬৪১মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৪১মে. ওয়াট। রাতেও কোন লোডশেডিং হয়নি। ১২জুন খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিনে দুপুর একটায় বিদ্যুতের ৬১৯মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬১৯মে.ওয়াট। এ সময় কোন লোডশেডিং ছিল না। অপরদিকে, রাতের বেলায়ও ৫৫০মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৫০মে. ওয়াট। রাতেও কোন লোডশেডিং হয়নি। কিন্তু বিদ্যুতের অবস্তা পুরোপুরি পাল্টে যায় ১৩জুন থেকে। ১৩জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৬৮৭মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৫৪মে.ওয়াট। এ সময় ৩৩মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। অপরদিকে, রাতের বেলায় ৬০৯মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৯২মে. ওয়াট এবং ১৭মে. ওয়াট লোডশেডিং হয়। ১৪জুন দিনের বেলায় দুপুর একটায় বিদ্যুতের ৬৯১মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬১৯মে.ওয়াট। এ সময় ৭২মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। অপরদিকে, রাতের বেলায় ৯টার সময় ৭১২মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৫৭মে. ওয়াট এবং ৫৫মে. ওয়াট লোডশেডিং হয়। ১৫জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৭১৯মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৪৩মে.ওয়াট। এ সময় এযাবত কালের সর্বোচ্চ ১৭৬মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। অপরদিকে, রাতের বেলায় ৬৯৬মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৮৮মে. ওয়াট এবং মাত্র ০৮মে. ওয়াট লোডশেডিং হয়। ১৬জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৬৫৬মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৫৬মে.ওয়াট। এ সময় কোন লোডশেডিং করা হয়নি। অপরদিকে, রাতের বেলায় ৬৫৭মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৫৩মে. ওয়াট এবং মাত্র ০৪মে. ওয়াট লোডশেডিং হয়। ১৭জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৬৩৮মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৩৮মে.ওয়াট। এ সময় কোন লোডশেডিং করা হয়নি। অপরদিকে, রাতের বেলায় ৬৪১মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৪১মে. ওয়াট এবং কোন লোডশেডিং করা হয়। তবে ১৮জুন দিনের বেলায় বেলা একটা পর্যন্ত বিদ্যুতের ৬৪৮মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৪৮মে.ওয়াট। এ সময় কোন লোডশেডিং করা হয়। অপরদিকে, রাতের বেলায় ৬০৯মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৯২মে. ওয়াট এবং ১৭মে. ওয়াট লোডশেডিং হয়।

সূত্র আরও জানায়, কেসিসি নির্বাচনের কারনে বিশেষ করে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনায় খুলনা মহানগরীতে গত ০৮জুন রাত থেকে চাহিদানুযায়ী বিদ্যুত সরবরাহ করা ঞয়। সে কারনে ১২জুন পর্যন্ত মহানগরীতে কোন লোডশেডিং করতে হয়নি। কিন্তু শহরের বাইরের উপজেলা ও পৌরসভা এলাকায় লোডশেডিং ছিল। সিটি নির্বাচন শেষ হওয়ার পর আবারও পুরাতন নিয়মে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম পাওয়া যায়। সে কারনে সরবরাহ পাওয়ার হিসেব অনুরূপ লোডশেডিং করা হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশী লোডশেডিং হয়েছে ১৫জুন।এ দিন ওজোপাডিকোর এলাকায় লোডশেডিং ছিল ১৭৬মে. ওয়াট। অর্থাৎ দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৭১৯মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৪৩মে.ওয়াট। এদিন প্রায় ২৬শতাংশ লোডশেডিং করা হয়েছে। অন্যদিকে, খুলনা মহানগরীতে সর্বোচ্চ ১৮৪মে. ওয়াট চাহিদার বিপরীতে ১১৮মে. ওয়াট সরবরাহ পায়। ফলে ৬৬মে.ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। ফলে নগরীর প্রতিটি এলাকায় প্রতি আড়াই থেকে তিনঘন্টা পর পর এক ঘন্টা করে লোডশেডিং করা হয়েছে। এতে খুলনা মহানগরীতে সিটি নির্বাচনের শেষ পাঁচদিনে যে শূন্য লোডশেডিং-এ মানুষ বেশ শস্তিতে ছিল তা নিমিষেই উবে যায়। তুলনামূলকভাবে জনজীবনে বিদ্যুতের দূর্ভোগ কয়েকগুন বৃদ্ধি পায়।

নগরীর নিরালা আবাসিক এলাকার চাকুরীজীবি ও বাড়ীর মালিক মো: মহসীন জানান, সিটি নির্বাচনের মধ্যে বেশ ভালোই ছিলাম। কিন্তু নির্বাচন শেষ হতেই শহরে যে পরিমানে লোডশেডিং বেড়ে গিয়েছে সেটার জন্য বসবাস করাই কঠিন হয়ে গেছে। এভাবে বিদ্যুতের রোডমেডিং হলে মানুষ তো সরকারকে ভালোভাবে দেখবে না। শান্তিধাম মোড়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো: ইমরান হোসেন বলেন, তিনি কম্পিউটার ও প্রিন্টিং ব্যবসা করেন। কিন্তু ঘন ঘন রোডশেডিংয়ের কারনে গত কয়েখদিন ধরে কোন কাজই করতে পারছেন না। নির্বাচনের সময় শুনেছিলাম মেয়র সাহেব বিদ্যুত মন্ত্রীকে বলেছিলেন নির্বাচনের ম্যেধ লোডশেডিং না দিতে। সে সময় আমরা একটু স্বস্তিতে ছিলাম। এভাবে লোডশেডিং হলে তার প্রভাবে আমরা তো না খেয়ে মারা যাবো। শামুসর রহমান রোডের প্রেস ব্যবসায়ী মো: আতিকুর রহমান ও মিজানুর রহমান বলেন, বিদ্যেুতের ভয়াবহ রোডশেডিংয়ে আমাদের ব্যবসা লাটে উঠেছে। এই তীব্র গরম ও তাপদাহের সময় লোডশেডিং হলে মানুসের জীবন বাচানো যেমন কষ্টকর। তেমনি প্রেস চালাতে না পেরে আমরাও নি:স্ব হয়ে যাচ্ছি। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নিজেরই দেখা উচিত।

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব এ্যাড. বাবুল হাওলাদার বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে একটি কথা চাউর হয়েছিল। আওয়ামীলীগের মেয়র র্থী তালুকদার আব্দুল খালেক তার স্ত্রী বন, পরিবেশ ও জলবায় উপমন্ত্রীকে সিটি নির্বাচনের মধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিং না দিতে অনুরোধ করেছিলেন। এটা সত্য হলেও একটি ইস্যুকে নিয়ে ভোটের সুবিধালাভের জন্য এভাবে কাজ করা অণৈতিক। যদিও সে কারনে সিটি নির্বাচনের সময় নগরীর মানুষ স্বস্তিতে ছিল। সরকার হাজার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের কথা বলছে আবার ব্যাপকহারে লোডশেডিং দিচ্ছে। এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।  তাই নির্বাচনের পরে ভয়াবহ লোডশেডিং করাও সরকারের উন্নয়ন ও সকল অর্জনকেই ম্লান করে দেয়ার শামিল। তাই লোডশেডিংয়ের যন্ত্রনা থেকে সাধারন মানুষকে মুক্তি দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।

খুলনা ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর ম্যানেজার (প্রশাসন) মো: নাজমুল হক বলেন, কয়েকদিন বিদ্যুতে ঘাটতির কারনে লোডশেডিং দিতে বাধ্য হয়েছেন। চাহিদা অনুযায়ী দিনের মধ্যে দুপুর একটা থেকে চারটা এবং রাতের ১০টার পরে চাহিদা বেড়ে যায়। এ সময় সবাই প্রচন্ড তাপ ও গরমের কারনে বেশী বিদ্যুত ব্যবহার করে থাকে। আবার রাতের বেলায় বিভিন্ন এরাকায় কলকারখানাও চালু রাখা হয়। তবে ইতিমধ্যেই চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেড়েছে। গত দুইদিন শনিবার ও রবিবার কোথাও রোডমেডিং দেয়া হয়নি। এভাবে সরবরাহ ঠিক থাকলে আমাদের কোন লোডশেডিং দেয়ার প্রয়োজন হবে না। আশাকরি দ্রুতই এ অবস্থার অবসান হবে বলেও তিনি জানান।  ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

ডুমুরিয়ায় পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট

খুলনায় সিটি নির্বাচনের পর বেড়েছে লোডশেডিং :

অসহনীয় গরম আর লোডশেডিংয়ে দূর্ভোগ কয়েকগুন বেড়েছে, সরবরাহ কম থাকায় লোডশেডিংয়ে বাধ্য হচ্ছে বিদ্যুত বিভাগ

প্রকাশিত সময় : ০৯:১৬:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুন ২০২৩

####

 

খুলনায় সিটি নির্বাচনের নির্বাচনের পরেই শুরু হয় চরম লোডশেডিং।নির্বাচনের শেষ দিকের প্রায় এক সপ্তাহ নগরীতে বিদ্যুতের কোন লোডশেডিং না থাকায় সাধারন মানুষ বেশ স্বস্তিতেই ছিল। নির্বাচনে ভোট পেতে সরকারী দলের প্রার্থীর অনুরোধে বিদ্যুত দিলেও ভোটের পরে আবারও ব্যাপক লোডশেডিং হচ্ছে। ফলে একদিকে প্রকৃতিতে অসহনীয়ে উত্তাপ ও গরম আরেক দিকে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে জনজীবনে দূর্ভোগ কয়েকগুন বেড়েছে। এতে মহানগরীর মানুষের মধ্যে বিদ্যুতে জন্য এক প্রকার নাভিশ্বাস উঠেছে। তবে গত দুইদিন তেমন কোন লোডশেডিং না থাকায় কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও কিন্তু সাধারন মানুষ বিদ্যুত নিয়ে আশ্বস্ত হতে পারছেন না।তবে বিদ্যুত বিভাগ বলছে, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় তারা লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

জানা গেছে, খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের প্রতিক বরাদ্ধের পর প্রচার-প্রচারনা শুরু হয় ২৬মে। তারপর বিভিন্ন এরাকায় প্রচারনায় গিয়ে আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী তারুকদার আব্দুল খালেক বিদ্যুতের লোডশেডিং নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন।িএলাকার ভোটাররা বিভিন্ন স্থানে ্রপচারনায় গেলে বিধ্যুতের লোডমেডিংয়ের অভিযোগ তোলেন। তখন তালুকদার আব্দুল খালেক তার স্ত্রী বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন্নাহারকে ফোন করে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রীকে নির্বাচনের মধ্যে রোডমেডিং না করার জন্য অনুরোধ করতে বলেন। তা না হলে নির্বাচনে লোডশেডিংয়ের প্রভাব পড়বে বলেও জানান। এ অনুরোধের পর গত ০৮ই জুন রাত থেকে ১২জুন নির্বাচনের দিন পর্যন্ত খুলনা মহানগরীতে কোন লোডশেডিংমুক্ত রাখা হয়। এ বিষয়টি তখন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। কিন্তু নির্বাচনের পর দিন ১৩জুন থেকে আবারও লোডশেডিং শুরু হয়।এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এক র্যায়ে ১৫জুন খুলনায় সর্বোচ্চ ১৭৬মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হলে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। যদিও গত দুইদিন নগরীতে তেমন কোন লোডশেডিং দেকা যাচ্ছে না। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে মানুষের মধ্যে। তবে তারা বিদ্যুতের উপর আস্তা করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন নগরীর সাধারন মানুষ।

ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর(ওজোপাডিকো) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: মাহবুবুর রহমান সূত্রে জানা গেছে, খুলনায় বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় কম সরবরাহ থাকায় লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। তথ্য মতে, গত ০১জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৭১৫মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬১০মে.ওয়াট। এ সময় লোডশেডিং করা হয় ১০৫মে.ওয়াট।অপরদিকে, রাতের বেলায় চাহিদা কিছুটা কমে ৭০৭মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৬০মে. ওয়াট। তারপরেও ৪২মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। একইভাবে ০২জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৬৪১মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৯০মে.ওয়াট। এ সময় রোডশেডিং করা হয় ৫১মে.ওয়াট। অপরদিকে, রাত ৯টায় চাহিদা ছিল ৬১৮মে. ওয়াট। তার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৯২মে. ওয়াট। তারপরেও ২৬মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। ০৩জুন দিনের বেলায় দুপুর একটায় বিদ্যুতের চাহিদা ৭০৭মে.ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৪৩মে.ওয়াট। এ সময় লোডশেডিং করা হয় ৬৪মে.ওয়াট।অপরদিকে, রাতের বেলায় চাহিদা কিছুটা কমে ৭০০মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬১৪মে. ওয়াট। ৮৬মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। ০৪জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে ৭৩৪মে.ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬২৬মে.ওয়াট। এ সময় লোডশেডিং করা হয় ১০৮মে.ওয়াট।অপরদিকে, রাতের বেলায় চাহিদা কিছুটা কমে ৭২৪মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬২২মে. ওয়াট। রাতে ১০২মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। ০৫জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৭১৩মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৯৩মে.ওয়াট। এ সময় লোডশেডিং করা হয় ১২০মে.ওয়াট।অপরদিকে, রাতের বেলায় চাহিদা বেড়ে ৭২৬মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৩০মে. ওয়াট। ৯৬মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। ০৬জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৭৪৮মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৩৫মে.ওয়াট। এ সময় লোডশেডিং করা হয় ১১৩মে.ওয়াট।অপরদিকে, রাতের বেলায় চাহিদা কিছুটা কমে ৭৩১মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৭৮মে. ওয়াট। তারপরেও ৫৩মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। ০৭জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৭৩৯মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬২৭মে.ওয়াট। এ সময় লোডশেডিং করা হয় ১১২মে.ওয়াট।অপরদিকে, রাতের বেলায় চাহিদা কিছুটা কমে ৭২৩মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬১৪মে. ওয়াট। ১০৯মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। ০৮জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৬৯৬মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৭৩মে.ওয়াট। এ সময় লোডশেডিং করা হয় ১২৩ মে.ওয়াট।অপরদিকে, রাতের বেলায় চাহিদা কমে ৬৭৯মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৭৬মে. ওয়াট। এ সময় মাত্র ০৩মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। কিন্তু আশ্চর্য্যজনকভাবে ০৯জুন থেকে খুলনায় লোডশেডিংমুক্ত হয়ে যায়। ০৯জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৬০৫মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬০৫মে.ওয়াট। এ সময় কোন লোডশেডিং ছিল না। অপরদিকে, রাতের বেলায়ও ৫৩৪মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৩৪মে. ওয়াট। রাতেও কোন লোডশেডিং হয়নি। একইভাবে ১০জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৫৯১মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৯১মে.ওয়াট। এ সময় কোন লোডশেডিং ছিল না। অপরদিকে, রাতের বেলায়ও ৬০৮মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬০৮মে. ওয়াট। এদিন রাতেও কোন লোডশেডিং হয়নি। ১১জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৬৬২মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৬২মে.ওয়াট। এ সময় কোন লোডশেডিং ছিল না। অপরদিকে, রাতের বেলায়ও ৬৪১মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৪১মে. ওয়াট। রাতেও কোন লোডশেডিং হয়নি। ১২জুন খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিনে দুপুর একটায় বিদ্যুতের ৬১৯মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬১৯মে.ওয়াট। এ সময় কোন লোডশেডিং ছিল না। অপরদিকে, রাতের বেলায়ও ৫৫০মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৫০মে. ওয়াট। রাতেও কোন লোডশেডিং হয়নি। কিন্তু বিদ্যুতের অবস্তা পুরোপুরি পাল্টে যায় ১৩জুন থেকে। ১৩জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৬৮৭মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৫৪মে.ওয়াট। এ সময় ৩৩মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। অপরদিকে, রাতের বেলায় ৬০৯মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৯২মে. ওয়াট এবং ১৭মে. ওয়াট লোডশেডিং হয়। ১৪জুন দিনের বেলায় দুপুর একটায় বিদ্যুতের ৬৯১মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬১৯মে.ওয়াট। এ সময় ৭২মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। অপরদিকে, রাতের বেলায় ৯টার সময় ৭১২মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৫৭মে. ওয়াট এবং ৫৫মে. ওয়াট লোডশেডিং হয়। ১৫জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৭১৯মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৪৩মে.ওয়াট। এ সময় এযাবত কালের সর্বোচ্চ ১৭৬মে. ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। অপরদিকে, রাতের বেলায় ৬৯৬মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৮৮মে. ওয়াট এবং মাত্র ০৮মে. ওয়াট লোডশেডিং হয়। ১৬জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৬৫৬মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৫৬মে.ওয়াট। এ সময় কোন লোডশেডিং করা হয়নি। অপরদিকে, রাতের বেলায় ৬৫৭মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৫৩মে. ওয়াট এবং মাত্র ০৪মে. ওয়াট লোডশেডিং হয়। ১৭জুন দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৬৩৮মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৩৮মে.ওয়াট। এ সময় কোন লোডশেডিং করা হয়নি। অপরদিকে, রাতের বেলায় ৬৪১মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৪১মে. ওয়াট এবং কোন লোডশেডিং করা হয়। তবে ১৮জুন দিনের বেলায় বেলা একটা পর্যন্ত বিদ্যুতের ৬৪৮মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৪৮মে.ওয়াট। এ সময় কোন লোডশেডিং করা হয়। অপরদিকে, রাতের বেলায় ৬০৯মে. ওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৯২মে. ওয়াট এবং ১৭মে. ওয়াট লোডশেডিং হয়।

সূত্র আরও জানায়, কেসিসি নির্বাচনের কারনে বিশেষ করে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনায় খুলনা মহানগরীতে গত ০৮জুন রাত থেকে চাহিদানুযায়ী বিদ্যুত সরবরাহ করা ঞয়। সে কারনে ১২জুন পর্যন্ত মহানগরীতে কোন লোডশেডিং করতে হয়নি। কিন্তু শহরের বাইরের উপজেলা ও পৌরসভা এলাকায় লোডশেডিং ছিল। সিটি নির্বাচন শেষ হওয়ার পর আবারও পুরাতন নিয়মে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম পাওয়া যায়। সে কারনে সরবরাহ পাওয়ার হিসেব অনুরূপ লোডশেডিং করা হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশী লোডশেডিং হয়েছে ১৫জুন।এ দিন ওজোপাডিকোর এলাকায় লোডশেডিং ছিল ১৭৬মে. ওয়াট। অর্থাৎ দিনের বেলায় বিদ্যুতের ৭১৯মে.ওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৪৩মে.ওয়াট। এদিন প্রায় ২৬শতাংশ লোডশেডিং করা হয়েছে। অন্যদিকে, খুলনা মহানগরীতে সর্বোচ্চ ১৮৪মে. ওয়াট চাহিদার বিপরীতে ১১৮মে. ওয়াট সরবরাহ পায়। ফলে ৬৬মে.ওয়াট লোডশেডিং করা হয়। ফলে নগরীর প্রতিটি এলাকায় প্রতি আড়াই থেকে তিনঘন্টা পর পর এক ঘন্টা করে লোডশেডিং করা হয়েছে। এতে খুলনা মহানগরীতে সিটি নির্বাচনের শেষ পাঁচদিনে যে শূন্য লোডশেডিং-এ মানুষ বেশ শস্তিতে ছিল তা নিমিষেই উবে যায়। তুলনামূলকভাবে জনজীবনে বিদ্যুতের দূর্ভোগ কয়েকগুন বৃদ্ধি পায়।

নগরীর নিরালা আবাসিক এলাকার চাকুরীজীবি ও বাড়ীর মালিক মো: মহসীন জানান, সিটি নির্বাচনের মধ্যে বেশ ভালোই ছিলাম। কিন্তু নির্বাচন শেষ হতেই শহরে যে পরিমানে লোডশেডিং বেড়ে গিয়েছে সেটার জন্য বসবাস করাই কঠিন হয়ে গেছে। এভাবে বিদ্যুতের রোডমেডিং হলে মানুষ তো সরকারকে ভালোভাবে দেখবে না। শান্তিধাম মোড়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো: ইমরান হোসেন বলেন, তিনি কম্পিউটার ও প্রিন্টিং ব্যবসা করেন। কিন্তু ঘন ঘন রোডশেডিংয়ের কারনে গত কয়েখদিন ধরে কোন কাজই করতে পারছেন না। নির্বাচনের সময় শুনেছিলাম মেয়র সাহেব বিদ্যুত মন্ত্রীকে বলেছিলেন নির্বাচনের ম্যেধ লোডশেডিং না দিতে। সে সময় আমরা একটু স্বস্তিতে ছিলাম। এভাবে লোডশেডিং হলে তার প্রভাবে আমরা তো না খেয়ে মারা যাবো। শামুসর রহমান রোডের প্রেস ব্যবসায়ী মো: আতিকুর রহমান ও মিজানুর রহমান বলেন, বিদ্যেুতের ভয়াবহ রোডশেডিংয়ে আমাদের ব্যবসা লাটে উঠেছে। এই তীব্র গরম ও তাপদাহের সময় লোডশেডিং হলে মানুসের জীবন বাচানো যেমন কষ্টকর। তেমনি প্রেস চালাতে না পেরে আমরাও নি:স্ব হয়ে যাচ্ছি। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নিজেরই দেখা উচিত।

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব এ্যাড. বাবুল হাওলাদার বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে একটি কথা চাউর হয়েছিল। আওয়ামীলীগের মেয়র র্থী তালুকদার আব্দুল খালেক তার স্ত্রী বন, পরিবেশ ও জলবায় উপমন্ত্রীকে সিটি নির্বাচনের মধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিং না দিতে অনুরোধ করেছিলেন। এটা সত্য হলেও একটি ইস্যুকে নিয়ে ভোটের সুবিধালাভের জন্য এভাবে কাজ করা অণৈতিক। যদিও সে কারনে সিটি নির্বাচনের সময় নগরীর মানুষ স্বস্তিতে ছিল। সরকার হাজার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের কথা বলছে আবার ব্যাপকহারে লোডশেডিং দিচ্ছে। এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।  তাই নির্বাচনের পরে ভয়াবহ লোডশেডিং করাও সরকারের উন্নয়ন ও সকল অর্জনকেই ম্লান করে দেয়ার শামিল। তাই লোডশেডিংয়ের যন্ত্রনা থেকে সাধারন মানুষকে মুক্তি দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।

খুলনা ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর ম্যানেজার (প্রশাসন) মো: নাজমুল হক বলেন, কয়েকদিন বিদ্যুতে ঘাটতির কারনে লোডশেডিং দিতে বাধ্য হয়েছেন। চাহিদা অনুযায়ী দিনের মধ্যে দুপুর একটা থেকে চারটা এবং রাতের ১০টার পরে চাহিদা বেড়ে যায়। এ সময় সবাই প্রচন্ড তাপ ও গরমের কারনে বেশী বিদ্যুত ব্যবহার করে থাকে। আবার রাতের বেলায় বিভিন্ন এরাকায় কলকারখানাও চালু রাখা হয়। তবে ইতিমধ্যেই চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেড়েছে। গত দুইদিন শনিবার ও রবিবার কোথাও রোডমেডিং দেয়া হয়নি। এভাবে সরবরাহ ঠিক থাকলে আমাদের কোন লোডশেডিং দেয়ার প্রয়োজন হবে না। আশাকরি দ্রুতই এ অবস্থার অবসান হবে বলেও তিনি জানান।  ##