০৯:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনায় সন্ত্রাস বিরোধী মামলায় দুই জেএমবি জঙ্গীর ১০বছরের কারাদন্ড ও ১৫হাজার টাকা জরিমানা

####

 

খুলনায় সন্ত্রাস বিরোধী মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র দুই জেএমবি জঙ্গীর ১০বছরের কারাদন্ড ও ১৫হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার খুলনার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক রোজিনা আক্তার এ রায় প্রদান করেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলো-মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার মোড়াবাড়ী গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে নূর মোহাম্মদ অনিক ও বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার ঘাগুরদুয়ার গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে মো: ‍মুজাহিদুল ইসলাম রাফি। রায় ঘোষনার  সময় আদালতের কাঠগড়ায় দুই আসামী উপস্থিত ছিলেন। রায়ে আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা ইস্যু ও জব্দকৃত আলামত বিধি মোতাবেক রাষ্ট্র বরাবর বাজেয়াপ্ত করারও আদেশ দেয়।

মামলার বিবরনে জানা গেছে, গত ২০২০সালের ২৫জানুয়ারী গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পায় খুলনা বিশ্ববিদ্যারয় সংলগ্ন পুরাতন গল্রামালী এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন জেএমবি’র কয়েক জন সদস্য বিস্ফোরক দ্রব্যসহ সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য অবস্থান করছে।পরে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশ পুরাতন গল্লামারী রোডের হাসনাহেনা নামক বাড়ীতে(বাড়ী নং-২৩/৪) রাত সাড়ে তিনটার দিকে অভিযান চালায়। এসআই রোহিত কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে এসআই তৌহিদুর রহমান, এসআই সুকান্ত দাশ, এসআই সঞ্জিৎ কুমার মন্ডল, এসআই শাহরিয়া আলম, এএসআই বিশ্বজিৎ দেবনাথ, এএসআই নিতাই দাস, এএসআই রকিবুল হাসানসহ পৃলিশের বিশেষ টিম বাড়ীটি ঘেরাও করে তল্লাশীর এক পর্যায়ে বাড়ীর নিচ তলার উত্তর-পশ্চিম পাশের কক্ষ থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিনের ছাত্র নূর মোহাম্মদ অনিক ও তার সহযোগী মো: ‍মুজাহিদুল ইসলাম রাফিকে আটক করে পুলিশ। পরে  কক্ষ তল্লাশী করে তাদের রুম থেকে ০২টি কালো রংয়ের রিমোট কন্ট্রোল, ১৩টি তারযুক্ত সার্কিট, ০১টি ল্যাপটপ, ০১টি সাইনটিফিক ক্যালকুলেটার, ০১টি এ্যালুমিনিয়ামের পাতিল, ০৩ প্যাকেট লোহার বল,  ০১টি হাতঘড়ি, কালো বাটযুক্ত একটি স্টিলের ছুরি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আইডি কার্ড, ০৩টি হ্যান্ড গ্লোভস, ০১টি প্লাস্টিকের ঝুড়িতে পাটের তৈরি সুতলী, ০১টি প্লাস্টিকের ০১টি টালী খাতা, ০২টি প্লাস্টিকের কৌটা উদ্ধার করে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন “জেএমবি” দলের সদস্য বলে স্বীকার করে। এ সময় আসামীরা জানায়. তাহাদের নেতার নির্দেশে খুলনা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস ও জননিরাপত্তা বিপন্ন করাসহ আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করতে বিস্ফোরক সরঞ্জামাদী সংগ্রহ করেছে।তারা জেএমবি’র কর্মকান্ডকে গতিশীল ও উৎসাহিত করতে চেষ্টা করছিল। এ ঘটনায় সোনাডাঙ্গা থানার এসআই রোহিত ‍কুমার বিশ্বাস বাদী হয়ে সন্ত্রাস দমন ও বিষ্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করে।পরে আদালতের নির্দেশে মহানগর ডিবির এসআই মো: এনামুল হক মামলার তদন্ত শেষে ২০২০সালের ২২আগষ্ট দুই আসামীর বিুরদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেন।এ মামলা নিন্ম আদালত থেকে ২০২০সালের ১৬নভেম্বর সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন পেয়ে ২০২২সালের ০৩জানুয়ারী এ মামলার বিচার কাজ শুরু হয়।এ মামলায় আদালত ২২জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন এবং সিআইডির ফরেনসিক পরীক্ষার প্রতিবেদন ও সকল তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে আসামীদের বিুরদ্ধে ঘটনার সত্যতা প্রমানিত হওয়ায় মঙ্গলবার(১৮জুলাই) রায় প্রদান করেন। রায়ে দুই আসামী নূর মোহাম্মদ অনিক ও মোঃ মোজাহিদুল ইসলাম রাফির বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় প্রত্যেক আসামীকে ৮ধারায় সর্বোচ্চ সাজা ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড এবং ৫হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ০১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড, ৯ ধারায় প্রত্যেককে দোষী সাব্যস্ত করে ৭বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ০১বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৬(১)ধারায় প্রত্যেককে ১০বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেয়। আদালত আসামীদের সকল ধারার দন্ড একই সাথে চলমান থাকবে বলেও রায় প্রদান করেন। এছাড়া দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা আটকের পর যতোদিন হাজতবাসে ছিলেন তা কারাদন্ডের মেয়াদ থেকে বাদ দেয়ার নির্দেশ দেয়।এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি ছিলেন মো: ‍সুজায়েত হোসেন। দন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামীকে খুলনা জেলা কারাগারে নেওয়া হয়েছে। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

ডুমুরিয়ায় পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট

খুলনায় সন্ত্রাস বিরোধী মামলায় দুই জেএমবি জঙ্গীর ১০বছরের কারাদন্ড ও ১৫হাজার টাকা জরিমানা

প্রকাশিত সময় : ০৮:১৪:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই ২০২৩

####

 

খুলনায় সন্ত্রাস বিরোধী মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র দুই জেএমবি জঙ্গীর ১০বছরের কারাদন্ড ও ১৫হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার খুলনার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক রোজিনা আক্তার এ রায় প্রদান করেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলো-মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার মোড়াবাড়ী গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে নূর মোহাম্মদ অনিক ও বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার ঘাগুরদুয়ার গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে মো: ‍মুজাহিদুল ইসলাম রাফি। রায় ঘোষনার  সময় আদালতের কাঠগড়ায় দুই আসামী উপস্থিত ছিলেন। রায়ে আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা ইস্যু ও জব্দকৃত আলামত বিধি মোতাবেক রাষ্ট্র বরাবর বাজেয়াপ্ত করারও আদেশ দেয়।

মামলার বিবরনে জানা গেছে, গত ২০২০সালের ২৫জানুয়ারী গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পায় খুলনা বিশ্ববিদ্যারয় সংলগ্ন পুরাতন গল্রামালী এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন জেএমবি’র কয়েক জন সদস্য বিস্ফোরক দ্রব্যসহ সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য অবস্থান করছে।পরে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশ পুরাতন গল্লামারী রোডের হাসনাহেনা নামক বাড়ীতে(বাড়ী নং-২৩/৪) রাত সাড়ে তিনটার দিকে অভিযান চালায়। এসআই রোহিত কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে এসআই তৌহিদুর রহমান, এসআই সুকান্ত দাশ, এসআই সঞ্জিৎ কুমার মন্ডল, এসআই শাহরিয়া আলম, এএসআই বিশ্বজিৎ দেবনাথ, এএসআই নিতাই দাস, এএসআই রকিবুল হাসানসহ পৃলিশের বিশেষ টিম বাড়ীটি ঘেরাও করে তল্লাশীর এক পর্যায়ে বাড়ীর নিচ তলার উত্তর-পশ্চিম পাশের কক্ষ থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিনের ছাত্র নূর মোহাম্মদ অনিক ও তার সহযোগী মো: ‍মুজাহিদুল ইসলাম রাফিকে আটক করে পুলিশ। পরে  কক্ষ তল্লাশী করে তাদের রুম থেকে ০২টি কালো রংয়ের রিমোট কন্ট্রোল, ১৩টি তারযুক্ত সার্কিট, ০১টি ল্যাপটপ, ০১টি সাইনটিফিক ক্যালকুলেটার, ০১টি এ্যালুমিনিয়ামের পাতিল, ০৩ প্যাকেট লোহার বল,  ০১টি হাতঘড়ি, কালো বাটযুক্ত একটি স্টিলের ছুরি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আইডি কার্ড, ০৩টি হ্যান্ড গ্লোভস, ০১টি প্লাস্টিকের ঝুড়িতে পাটের তৈরি সুতলী, ০১টি প্লাস্টিকের ০১টি টালী খাতা, ০২টি প্লাস্টিকের কৌটা উদ্ধার করে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন “জেএমবি” দলের সদস্য বলে স্বীকার করে। এ সময় আসামীরা জানায়. তাহাদের নেতার নির্দেশে খুলনা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস ও জননিরাপত্তা বিপন্ন করাসহ আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করতে বিস্ফোরক সরঞ্জামাদী সংগ্রহ করেছে।তারা জেএমবি’র কর্মকান্ডকে গতিশীল ও উৎসাহিত করতে চেষ্টা করছিল। এ ঘটনায় সোনাডাঙ্গা থানার এসআই রোহিত ‍কুমার বিশ্বাস বাদী হয়ে সন্ত্রাস দমন ও বিষ্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করে।পরে আদালতের নির্দেশে মহানগর ডিবির এসআই মো: এনামুল হক মামলার তদন্ত শেষে ২০২০সালের ২২আগষ্ট দুই আসামীর বিুরদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেন।এ মামলা নিন্ম আদালত থেকে ২০২০সালের ১৬নভেম্বর সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন পেয়ে ২০২২সালের ০৩জানুয়ারী এ মামলার বিচার কাজ শুরু হয়।এ মামলায় আদালত ২২জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন এবং সিআইডির ফরেনসিক পরীক্ষার প্রতিবেদন ও সকল তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে আসামীদের বিুরদ্ধে ঘটনার সত্যতা প্রমানিত হওয়ায় মঙ্গলবার(১৮জুলাই) রায় প্রদান করেন। রায়ে দুই আসামী নূর মোহাম্মদ অনিক ও মোঃ মোজাহিদুল ইসলাম রাফির বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় প্রত্যেক আসামীকে ৮ধারায় সর্বোচ্চ সাজা ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড এবং ৫হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ০১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড, ৯ ধারায় প্রত্যেককে দোষী সাব্যস্ত করে ৭বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ০১বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৬(১)ধারায় প্রত্যেককে ১০বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেয়। আদালত আসামীদের সকল ধারার দন্ড একই সাথে চলমান থাকবে বলেও রায় প্রদান করেন। এছাড়া দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা আটকের পর যতোদিন হাজতবাসে ছিলেন তা কারাদন্ডের মেয়াদ থেকে বাদ দেয়ার নির্দেশ দেয়।এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি ছিলেন মো: ‍সুজায়েত হোসেন। দন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামীকে খুলনা জেলা কারাগারে নেওয়া হয়েছে। ##