১০:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আবারও নৌকায় ভোট দিন : প্রধানমন্ত্রী

####

২০৪১সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আবারও নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার বিকেলে খুলনার সার্কিট হাউজ মাঠের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী আগামী নিবার্চনে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, নৌকা দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, নৌকা উন্নয়ণ দিয়েছে। নৌকায় ভোট দেওয়ায় বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মযার্দা পেয়েছে।এই নৌকাই দেবে ২০৪১সালে স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট বাংলাদেশ হলে স্মার্ট সরকার হবে, স্মার্ট অর্থনীতি হবে এবং স্মার্ট সমাজ হবে। বাংলাদেশকে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন উন্নত ও সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন পুরন করে দিয়ে যাবো। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তাকে আবারও দেশ ও জনগনের সেবা করার সুযোগ দেয়ার আহবান জানান।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আপনারা বার বার আমাদেরকে ও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন বলেই আজকের বাংলাদেশ-বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজকে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। এখন বাংলাদেশের মানুষ মাথা উঁচু করে চলতে পারে। আজকের বাংলাদেশ আর অবহেলার নয়-এগিয়ে যাওয়ার বাংলাদেশ। আপনাদের মানুষের সমর্থন থাকলে আরো অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

সোমবার খুলনার সার্কিট হাউজ মাঠে আওয়ামীলীগ আয়োজিত বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। এরআগে তিনি খুলনাঞ্চলের ২৪টি উপন্নয়ন প্রকল্পের ‍উদ্বোধন ও ৫টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বিকেল সোয়া চারটায় প্রধানমন্ত্রী জনসভায় বক্তৃতার শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯৭৫সালে নিহত স্বজনদের ও ১৯৭১সালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫সালে স্বাধীন দেশের যিনি স্থপতি তাকেই স্বাধীনতা বিরোধীরা চক্রান্ত করে সপরিবারে হত্যা করে। আমি পেলাম মাতা-পিতা, ভাইদের সারিসারি লাশ। কিন্তু আমি বাবা-মা, ভাইদের হত্যাকারীর বিচার পায়নি। জিয়াউর রহমান সেই খুনীদের বিচার না করে ইন্ডেমনিটি আদেশ জারি করে তাদেরকে পুরষ্কৃত করেছিল। এরশাদও তাদেরকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুযোগ করে দেয়। আর খালেদা জিয়া তাদেরকে এমপি বানিয়ে সংসদে আসার সুযোগ করে দেয় এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের মন্ত্রী বানিয়ে দেশের পতাকাকে কলঙ্কিত করেছে। আমি ক্ষমতায় এসে তাদের বিচারের ব্যবস্থা করেছি। তিনি বলেন, আমি সবকিছুই হারিয়ে যেদিন দেশের মাটিতে পা রেখেছিলাম সেদিন দেখলাম আমার আপন কেউ নেই। তাই এ দেশের মানুষকে আমি আমার আপনজন হিসেবে নিয়েছি। বাংলার মানুষের মাঝে আমি ফিরে পেয়েছি আমার বাবা-মায়ের স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ। দেশের জনগনই আমার পরিবার। জনগনকেই আমি পরিবার হিসেবে আপন করে নিয়েছি। তাই তাদের কল্যানের জন্যই আমি কাজ করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৮সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পরবর্তী সময়ে সরকারের ধারাবাহিকতা রয়েছে। এটা না থাকলে দেশের উন্নয়ণ থমকে যেতো। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত দেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্থ করতে আবারও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তারা ২০১৩-১৪সালে হাজার হাজার গাড়ী, মানুষ ও রেল পুড়িয়েছিল। কিন্তু পারেনি নির্বাচনকে বন্ধ করতে। সাধারন মানুষ ‍রুখে দিয়েছিল। যারা আগুন দিতে আসবে তাদের ধরিয়ে দিলে ২০হাজার টাকা পুরষ্কার ঘোষনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত ২৮অক্টোবর বিএনপি পুলিশ হত্যা করেছে। হাসপাতাল ও প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাংচুর করেছে। ইসরাইল যেমন হাসপাতালে হামলা করে ফিলিস্তিনিদের মারছে তেমনি বিএনপিও হাসপাতালে হামলা করে দেশের মানুষকে মারতে চায়। তারা এগুলো করে দেশকে ধ্বংস করতে চায়। বিএনপি-জামাত যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন তারা এবারও জাতীয় সংসদ নির্বাচন বন্ধ করতে পারবে না। সংবিধান অনুসারে যথা সময়েই জাতীয় নির্বাচন হবেই।

প্রধানমন্ত্রী গত ১৪বছরে খুলনাঞ্চলের উন্নয়নের উল্লেখ করে বলেন, ২০১৮সালে ইশতেহারে রূপকল্প ২০২১ ঘোষনা করা হয়েছিল তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকীতে খাদ্য নিরাপত্তা ও খাদ্য ‍উপাদন বেড়ে ৪কোটি ৯২লাখ ১৬হাজার টন বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষায় উন্নয়ন বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষায় বৃত্তি ও উচ্চশিক্ষায় ৩কোটি ৯৪লাখ বৃত্তি দেয়া হয়েছে। দেশে একটি পরিবারও ভুমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না প্রকল্পের আওতায় ঘর উপহার দেয়া হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় এসেছে ১০কোটি ৬১লাখ ১৪হাজার পরিবার। তিনি খুলনাঞ্চলের উন্নয়নের ফিরিস্তি ‍তুলে ধরে বলেন, খুলনাঞ্চলের নেতৃবৃন্দ আমার কাছে ১৮দফা উন্নয়ণ প্রকল্পের দাবী জানিয়েছেন। এসব উন্নয়ন সরকারের ধারাবাহিকতা তাকলে অবশ্যই হবে। যে উন্নয়ণ প্রকল্পগুলো আছে সেগুলো আগামীতে ক্ষমতায় এলে পুরন করার আশ্বাস দেন।

শেখ হাসিনা জনসভায় উপস্থিত সকলের কাছে আহবান জানিয়ে বলেন, আসুন আবারো তো ইলেকশন হবে। ইলেকশনের সময় একটা কথা স্মরণ রাখবেন। ওই বিএনপি-জামায়াতরা জানে যে, গত ইলেকশনে তারা ৩০টা সিট পেয়েছিল। তারা জানে যে তাদের নেতা নেই। মুন্ডুহীণ একটা দল-তাদের দলের একজন কারাগারে আরেকজন পলাতক আসামী। এই দল দেশে নির্বাচন হতে দিতে চায় না। একটা অস্বাভাবিক পরিস্তিতির সৃষ্টি করতে চায়। আবারও কেউ যদি আগুন দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারা চেষ্টা করে তবে তাদের হাত আপনারাও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেবেন। তাদেরকে উপযুক্ত শিক্সা দিয়ে দেবেন যেন ভবিষ্যতে সাহস না পায় এ দেশের মানুষকে ক্ষতি করার।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা সজাগ থেকে সাধারন মানুষের নিরাপত্তার জন্য কাজ করবেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনের লোকজনের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য কাজ করতে আহবান জানান। ৪৫মিনিটের বক্তৃতা শেষে ছড়ার ছন্দে ‘রিক্ত আমি নি:শ্ব আমি দেবার কিছুই নাই-আছে শুধুই ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই’ বলে শেখ হাসিনা সকাল থেকে দীর্ঘ সময় ধরে সমাবেশস্থলে রোদ উপেক্সা করে অবস্তান করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান।

খুলনা মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে জনসবায় বক্তৃতা করেন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সেতু মন্ত্রী ওবায়দুর কাদের, প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ, আওয়ামীলীগ নেতা কাজী জাফরউল্লাহ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, বন ও পরিবেশ উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন্নাহার, প্রতিমন্ত্রী এনমূল হক মামীম, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, সংসদ সদস্য নূরে আলম চৌধুরী লিটন, নড়াইলের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মূর্তজা, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আফম.বাহাউদ্দিন নাসিম ও মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আল মাহমুদ স্বপন, বিএম মোজাম্মেল হক ও এসএম কামাল হোসেন, সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সংসদ সদস্য শাহজাহান খান, বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড আমিরুল আলম মিলন, সংসদ সদস্য এ্যাড. গ্রোরিয়া সরকার ঝর্ণা, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক রুনু ইকবাল বিথার, খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ন চন্দ্র চন্দ, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো: আকতারুজ্জামান বাবু, খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শিদী, নড়াইলের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুবাস চন্দ্র বোস, শ্রমিকলীগের সাধারন সম্পাদক রনজিত ‍ুকমার ঘোষ, মহানগর মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সুলতানা রহমান শিল্পী, মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সোহনেয়ারা চম্পা, যুবমহিলা আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি শারমিন সুলতানা লিলি, কৃষিবিদ সমীর চন্দ্র চন্দ, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মো: আবু হানিফ, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাসেল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ হাওলাদার, মহানগর যুবলীগের সাধারন সম্পাদক শেখ শাহজালাল হোসেন ‍সুজন, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: আ. হাই, মো: শহিদুল ইসলাম, বটিয়াঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম খান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো: আসাদুজ্জামান বাচ্চু প্রমুখ।

এরআগে প্রধানমন্ত্রী খুলনা সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে বিভাগীয় বিভিন্ন দপ্তরের অফিস প্রধানদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ সভায় খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো: হেলাল মাহমুদ শরীফ, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, ডিআইজি মো: মাইনুল হক, কেএমপি কমিশনার মো: মোজাম্মেল হক, পুলিশ সুপার মো: সাইদুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পুলক কুমার মন্ডল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুকুল কুমার মৈত্রসহ বিভাঘীয় বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগন উপস্থিত ছিলেন।  ##

 

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আবারও নৌকায় ভোট দিন : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত সময় : ০৭:০৯:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩

####

২০৪১সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আবারও নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার বিকেলে খুলনার সার্কিট হাউজ মাঠের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী আগামী নিবার্চনে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, নৌকা দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, নৌকা উন্নয়ণ দিয়েছে। নৌকায় ভোট দেওয়ায় বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মযার্দা পেয়েছে।এই নৌকাই দেবে ২০৪১সালে স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট বাংলাদেশ হলে স্মার্ট সরকার হবে, স্মার্ট অর্থনীতি হবে এবং স্মার্ট সমাজ হবে। বাংলাদেশকে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন উন্নত ও সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন পুরন করে দিয়ে যাবো। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তাকে আবারও দেশ ও জনগনের সেবা করার সুযোগ দেয়ার আহবান জানান।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আপনারা বার বার আমাদেরকে ও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন বলেই আজকের বাংলাদেশ-বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজকে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। এখন বাংলাদেশের মানুষ মাথা উঁচু করে চলতে পারে। আজকের বাংলাদেশ আর অবহেলার নয়-এগিয়ে যাওয়ার বাংলাদেশ। আপনাদের মানুষের সমর্থন থাকলে আরো অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

সোমবার খুলনার সার্কিট হাউজ মাঠে আওয়ামীলীগ আয়োজিত বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। এরআগে তিনি খুলনাঞ্চলের ২৪টি উপন্নয়ন প্রকল্পের ‍উদ্বোধন ও ৫টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বিকেল সোয়া চারটায় প্রধানমন্ত্রী জনসভায় বক্তৃতার শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯৭৫সালে নিহত স্বজনদের ও ১৯৭১সালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫সালে স্বাধীন দেশের যিনি স্থপতি তাকেই স্বাধীনতা বিরোধীরা চক্রান্ত করে সপরিবারে হত্যা করে। আমি পেলাম মাতা-পিতা, ভাইদের সারিসারি লাশ। কিন্তু আমি বাবা-মা, ভাইদের হত্যাকারীর বিচার পায়নি। জিয়াউর রহমান সেই খুনীদের বিচার না করে ইন্ডেমনিটি আদেশ জারি করে তাদেরকে পুরষ্কৃত করেছিল। এরশাদও তাদেরকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুযোগ করে দেয়। আর খালেদা জিয়া তাদেরকে এমপি বানিয়ে সংসদে আসার সুযোগ করে দেয় এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের মন্ত্রী বানিয়ে দেশের পতাকাকে কলঙ্কিত করেছে। আমি ক্ষমতায় এসে তাদের বিচারের ব্যবস্থা করেছি। তিনি বলেন, আমি সবকিছুই হারিয়ে যেদিন দেশের মাটিতে পা রেখেছিলাম সেদিন দেখলাম আমার আপন কেউ নেই। তাই এ দেশের মানুষকে আমি আমার আপনজন হিসেবে নিয়েছি। বাংলার মানুষের মাঝে আমি ফিরে পেয়েছি আমার বাবা-মায়ের স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ। দেশের জনগনই আমার পরিবার। জনগনকেই আমি পরিবার হিসেবে আপন করে নিয়েছি। তাই তাদের কল্যানের জন্যই আমি কাজ করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৮সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পরবর্তী সময়ে সরকারের ধারাবাহিকতা রয়েছে। এটা না থাকলে দেশের উন্নয়ণ থমকে যেতো। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত দেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্থ করতে আবারও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তারা ২০১৩-১৪সালে হাজার হাজার গাড়ী, মানুষ ও রেল পুড়িয়েছিল। কিন্তু পারেনি নির্বাচনকে বন্ধ করতে। সাধারন মানুষ ‍রুখে দিয়েছিল। যারা আগুন দিতে আসবে তাদের ধরিয়ে দিলে ২০হাজার টাকা পুরষ্কার ঘোষনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত ২৮অক্টোবর বিএনপি পুলিশ হত্যা করেছে। হাসপাতাল ও প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাংচুর করেছে। ইসরাইল যেমন হাসপাতালে হামলা করে ফিলিস্তিনিদের মারছে তেমনি বিএনপিও হাসপাতালে হামলা করে দেশের মানুষকে মারতে চায়। তারা এগুলো করে দেশকে ধ্বংস করতে চায়। বিএনপি-জামাত যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন তারা এবারও জাতীয় সংসদ নির্বাচন বন্ধ করতে পারবে না। সংবিধান অনুসারে যথা সময়েই জাতীয় নির্বাচন হবেই।

প্রধানমন্ত্রী গত ১৪বছরে খুলনাঞ্চলের উন্নয়নের উল্লেখ করে বলেন, ২০১৮সালে ইশতেহারে রূপকল্প ২০২১ ঘোষনা করা হয়েছিল তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকীতে খাদ্য নিরাপত্তা ও খাদ্য ‍উপাদন বেড়ে ৪কোটি ৯২লাখ ১৬হাজার টন বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষায় উন্নয়ন বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষায় বৃত্তি ও উচ্চশিক্ষায় ৩কোটি ৯৪লাখ বৃত্তি দেয়া হয়েছে। দেশে একটি পরিবারও ভুমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না প্রকল্পের আওতায় ঘর উপহার দেয়া হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় এসেছে ১০কোটি ৬১লাখ ১৪হাজার পরিবার। তিনি খুলনাঞ্চলের উন্নয়নের ফিরিস্তি ‍তুলে ধরে বলেন, খুলনাঞ্চলের নেতৃবৃন্দ আমার কাছে ১৮দফা উন্নয়ণ প্রকল্পের দাবী জানিয়েছেন। এসব উন্নয়ন সরকারের ধারাবাহিকতা তাকলে অবশ্যই হবে। যে উন্নয়ণ প্রকল্পগুলো আছে সেগুলো আগামীতে ক্ষমতায় এলে পুরন করার আশ্বাস দেন।

শেখ হাসিনা জনসভায় উপস্থিত সকলের কাছে আহবান জানিয়ে বলেন, আসুন আবারো তো ইলেকশন হবে। ইলেকশনের সময় একটা কথা স্মরণ রাখবেন। ওই বিএনপি-জামায়াতরা জানে যে, গত ইলেকশনে তারা ৩০টা সিট পেয়েছিল। তারা জানে যে তাদের নেতা নেই। মুন্ডুহীণ একটা দল-তাদের দলের একজন কারাগারে আরেকজন পলাতক আসামী। এই দল দেশে নির্বাচন হতে দিতে চায় না। একটা অস্বাভাবিক পরিস্তিতির সৃষ্টি করতে চায়। আবারও কেউ যদি আগুন দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারা চেষ্টা করে তবে তাদের হাত আপনারাও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেবেন। তাদেরকে উপযুক্ত শিক্সা দিয়ে দেবেন যেন ভবিষ্যতে সাহস না পায় এ দেশের মানুষকে ক্ষতি করার।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা সজাগ থেকে সাধারন মানুষের নিরাপত্তার জন্য কাজ করবেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনের লোকজনের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য কাজ করতে আহবান জানান। ৪৫মিনিটের বক্তৃতা শেষে ছড়ার ছন্দে ‘রিক্ত আমি নি:শ্ব আমি দেবার কিছুই নাই-আছে শুধুই ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই’ বলে শেখ হাসিনা সকাল থেকে দীর্ঘ সময় ধরে সমাবেশস্থলে রোদ উপেক্সা করে অবস্তান করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান।

খুলনা মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে জনসবায় বক্তৃতা করেন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সেতু মন্ত্রী ওবায়দুর কাদের, প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ, আওয়ামীলীগ নেতা কাজী জাফরউল্লাহ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, বন ও পরিবেশ উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন্নাহার, প্রতিমন্ত্রী এনমূল হক মামীম, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, সংসদ সদস্য নূরে আলম চৌধুরী লিটন, নড়াইলের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মূর্তজা, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আফম.বাহাউদ্দিন নাসিম ও মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আল মাহমুদ স্বপন, বিএম মোজাম্মেল হক ও এসএম কামাল হোসেন, সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সংসদ সদস্য শাহজাহান খান, বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড আমিরুল আলম মিলন, সংসদ সদস্য এ্যাড. গ্রোরিয়া সরকার ঝর্ণা, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক রুনু ইকবাল বিথার, খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ন চন্দ্র চন্দ, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো: আকতারুজ্জামান বাবু, খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শিদী, নড়াইলের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুবাস চন্দ্র বোস, শ্রমিকলীগের সাধারন সম্পাদক রনজিত ‍ুকমার ঘোষ, মহানগর মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সুলতানা রহমান শিল্পী, মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সোহনেয়ারা চম্পা, যুবমহিলা আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি শারমিন সুলতানা লিলি, কৃষিবিদ সমীর চন্দ্র চন্দ, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মো: আবু হানিফ, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাসেল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ হাওলাদার, মহানগর যুবলীগের সাধারন সম্পাদক শেখ শাহজালাল হোসেন ‍সুজন, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: আ. হাই, মো: শহিদুল ইসলাম, বটিয়াঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম খান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো: আসাদুজ্জামান বাচ্চু প্রমুখ।

এরআগে প্রধানমন্ত্রী খুলনা সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে বিভাগীয় বিভিন্ন দপ্তরের অফিস প্রধানদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ সভায় খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো: হেলাল মাহমুদ শরীফ, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, ডিআইজি মো: মাইনুল হক, কেএমপি কমিশনার মো: মোজাম্মেল হক, পুলিশ সুপার মো: সাইদুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পুলক কুমার মন্ডল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুকুল কুমার মৈত্রসহ বিভাঘীয় বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগন উপস্থিত ছিলেন।  ##