১০:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনায় আরেক মতিয়ারের ক্ষমতার দাপটে অসহায় কেডিএ, ৫ বছরেও ব্যবস্থা নেয়নি কেডিএ

### অবৈধ ভবন র্নিমান করেও বহাল তবিয়তে মতিয়ার

### ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক মনিরুজ্জামান চরম হয়রানির শিকার

### কেডিএ’র বিগত ৪ চেয়ারম্যানের নির্দেশ মানেনি মতিয়ার

### শুধুই নোটিশ দিয়ে খালাস কেডিএ

### কেডিএ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ

খুলনা প্রতিবেদক :

দেশব্যাপী সাড়া জাগানো ছাগলকান্ডের মতিয়ারের পর এবার খুলনায় আরেক মতিয়ারের ক্ষমতার দাপটের কাছে হার মানছে সরকারী প্রতিষ্ঠান খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। নগরীর নিরালা পুরাতন কাঁচা বাজার এলাকায় নকশা বহির্ভূতভাবে অন্যের জমিতে অবৈধ ভবন নির্মাণ করেও রয়েছেন বহাল তবিয়তে। দখলকৃত জমি ছেড়ে দিতে এস.এম মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে জমির মালিক মনিরুজ্জামান এলু গত ৫ বছর ধরে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। জমির মালিকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেডিএ’র সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তারা সরেজমিন পরির্দশন শেষে একাধিকবার শোকজ  ও অবৈধ অংশ ভেঙ্গে ফেলার নোটিশ প্রদান করে। তবে বিগত ৪ জন চেয়ারম্যানের নির্দেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দাপট দেখাচ্ছেন অবৈধ ভবন নির্মানকারী মতিয়ার রহমান। মতিয়ার গংয়ের ক্রমাগত হুমকি ও অত্যাচার এবং কেডিএ কর্তৃপক্ষের হয়রানির শিকার হয়ে চরম অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন জমির মালিক।

ভুক্তভোগী জমির মালিক মনিরুজ্জামান এলুর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তার জমি অবৈধভাবে দখল করে ভবন নির্মানের বিষয়ে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে ২০১৮ সাল থেকে বিগত ৬ বছরে একাধিক অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে কেডিএ কর্তৃপক্ষ সরেজমিন পরির্দশন শেষে এস এম মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে অননুমোদিত ও মনিরুজ্জামান এলুর জমি দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগের সত্যতা পায়। তার প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ৯ জুলাই ন-৮০২২/২০২১৮-২০২০-২১১০/৩ নং স্মারকে কারণে দর্শাণো নোটিশ প্রদান করে কেডিএ। পরে একই বছরের ২ সেপ্টেম্বর ন-৮০২২/২০২১৮-২০২০-২৮০১/১ নং স্মারকে ভবনের অননুমোদিত অংশ ভেঙে ফেলার নোটিশ জারি করে। ভবন মালিক অননুমোদিত অংশ স্ব-উদ্যোগে ভেঙে না ফেলায় ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর ন-৮০২২/২০২১৮-২০২০-৪০৩১/১ নং স্মারকে ভবন খালি করার নোটিশ দেয় কেডিএ কর্তৃপক্ষ। নোটিশে বলা হয় অনুমোদিত ১৬.৬৭ মিটার (৫৪.৭০ ফুট) অনুমোদন থাকলেও বাস্তবে ইমারতের পিছনে অর্থ্যাৎ র্পূব পাশে ১৯.৮১ মিটার (৬৪.৯৯ ফুট) লম্বা করে অনুমোদনের চেয়ে ৪.১৪ মিটার বেশি বাড়িয়ে নির্মাণ কাজ করা হয়েছে। এছাড়া অনুমোদিত নকশায় ভবনের উত্তর পাশে ১.০০ মিটার জায়গা ছেড়ে নির্মাণের জন্য বলা হলেও বাস্তবে উত্তর পাশে সিড়ির ল্যান্ডিং বা বর্ধিতাংশ বাড়িয়ে মাত্র ০.৩০ মিটার জায়গা ছেড়ে নির্মান কাজ করা হয়েছে।

পরবর্তীতে ২০২১ সালে ২ ফেব্রুয়ারী তারিখে ৮৬৬নং স্মারকে এবং ২০২২ ও ২০২৪ সালেও অননুমোদিত ভবন নির্মানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলেও কেডিএ অনুরূপভাবে নির্মানাধীন ভবন মালিককে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে।এভাবে বিগত ৬ বছরে চারবার এ ভবন মালিককে শুধুমাত্র শোকজ, উচ্ছেদ ও অপসারণের নোটিশ দিয়েই তাদের দায় সেরেছে কেডিএ।

অন্যদিকে, ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে আবারও ভবন নির্মান কাজ শুরু করলে ভবন মালিক এস এম মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন ভূক্তভোগী জমির মালিক। মামলায় আদালত দখল ভিত্তিক স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেয়। কিন্তু আদালত ও কেডিএ’র আদেশ উপেক্ষা করে ভবন মালিক নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখেন। ইতিমধ্যেই বিগত সময়ে কেডিএ এ অননুমোদিত ভবনের অংশ বিশেষ ৫বার ভেঙ্গে দেয়। কিন্তু অবৈধ ভবনের অংশ সর্ম্পূণ অপসারণ করেনি। জমির মালিক মনিরুজ্জামান কেডিএ’র র্বতমান চেয়ারম্যান বরাবরেও অভিযোগ দেয়ার পর কেডিএ কর্তৃপক্ষ সরেজমিন পরির্দশন শেষে অভিযোগের সত্যতা পায়। পরে চেয়ারম্যানের নির্দেশে অথরাইজ অফিসার গত ০৪ জুলাইয়ের মধ্যে অবৈধ ভবনের অংশ ভেঙ্গে অপসারণের নির্দেশ দেয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেও অবৈধ ভবনের অংশ অপসারণ করেনি মতিয়ার গং। এভাবে বছরের পর অভিযোগ দেয়া হলেও কেডিএ কর্তৃপক্ষ চুড়ান্ত কোন ব্যবস্থা বা তাদের নোটিশের বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

একাধিক জমির মালিক ও মহানগরীর বাসিন্দা অভিযোগ করে জানিয়েছেন, খুলনা মাহনগরীকে পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে কেডিএ প্রতিষ্ঠিত হলেও তারা সঠিক কাজ করতে পারছে না। এমনকি অবৈধ ও অননুমোদিত ভবন নির্মানকারীদের সাথে কেডিএ কর্মকর্তা-র্কমচারীদের অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে সুবিধা নেয়ায় অনিয়মকারীরা পার পেয়ে যাচ্ছে।

নকশা র্বহিভূত ও অন্যের জমি দখল করে অবৈধ ভবন র্নিমানকারী এসএম মতিয়ার রহমান বলেন, তিনি মো: মনিরুজ্জামান এলুদের কাছ থেকে কেনা নিজের জমিতেই ভবন র্নিমান করেছেন। মো. মনিরুজ্জামান এলুর অভিযোগ সর্ম্পূণ মিথ্যা ও বানোয়াট। সে জমি বিক্রি করে আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। তিনি এর প্রতিকার চান। তবে নকশা বহির্ভূতভাবে ভবন নির্মাণের বিষয়ে বলেন, তিনি কেডিএ’র নকশার বাইরে কিছু অংশ নির্মাণ করলে কেডিএ সেগুলো ইতিপূর্বে ভেঙ্গে দিয়ে গেছে। তবে আরও ত্রুটির বিষয়ে উল্লেখ করে কেডিএ নোটিশ দিয়ে ০৪ জুলাইয়ের মধ্যে অপসারণের র্নিদেশ দেয়। পরে কেডিএর সাথে যোগাযোগ করলে তারা আমাকে ১০ মাসের সময় দিয়েছেন। কেডিএ যেভাবে বলবে তিনি সেই ভাবেই ভবনের কাজ করবেন বলে জানান। তিনি আরও বলেন, কেডিএ মো. মনিরুজ্জামান এলুর জমি কিনে নিয়ে সমাধানের পরামর্শও দিয়েছেন। আমি এলুর দাবীকৃত রাস্তায় চলাচল না করলেও ওই জমি কিনবো না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কেডিএ’র সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ণ নিয়ন্ত্রন) শবনম সাবা জানান, নকশাবর্হিভূত অবৈধ ভবন নির্মাণের বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে সরেজমিন পরির্দশন শেষে ভবন মালিক এসএম মতিয়ার রহমানকে শোকজ করা হয়। পরে তাকে মো. মনিরুজ্জামান এলুর জমি দখল করে ও নকশা বহির্ভূতভাবে নির্মাণ কাজ অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়। ইতিমধ্যেই ভবন মালিক মতিয়ার রহমান জমির মালিকের সাথে একটি সমঝোতা করবেন বলে শুনেছি। যদি সেটা না হয়ে থাকে তবে আগামী কিছুদিনের মধ্যেই অননুমোদিত ও অন্যের জমি দখল করে অবৈধভাবে নির্মিত ভবন ভেঙ্গে দিতে অভিযান চালানো হবে বলেও তিনি জানান।

সবশেষ কেডিএ অথরাইজেশন শাখা থেকে অননুমোদিত ভবন র্নিমানকারী মতিয়ার রহমানকে অননুমোদিত ও অন্যের জমি দখল করে অবৈধভাবে নির্মিত ভবন ভেঙ্গে অপসারণ করতে দুই মাসের সময় দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

কেডিএর চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: এসএম. মিরাজুল ইসলাম জানান, খুলনা মহানগরীসহ কেডিএর আওতাভুক্ত এলাকাকে পরিবেশ বান্ধব ও বাসযোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করছে কেডিএ। কেডিএ থেকে ভবনের নকশা দেয়ার সময়ই প্রত্যেক মালিককে আইন-কানুন বিসয়ে অবগত করা হয়। কিন্তু তারপরও বেশীরভাগ জমির মালিক নিয়মকানুন মানছেন না। নগরবাসী সচেতন ও দায়িত্ববান না হলে কেডিএর প্রচেষ্টা সফল হবে না। তারপরও কেডিএ অননুমোদিত ও অবৈধভাবে ভবন র্নিমানের বিরুদ্ধে সক্ষমতা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছে। নকশা বর্হিভুতভাবে ভবন র্নিমান করার দায়ের মতিয়ার রহমানকে কয়েকবার নোটিশ দেয়া হয়েছে এবং আংশিক ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। সবশেষ তিনি সময় নিয়েছেন এ সময়ের মধ্যে নিজে না করলে কেডিএ আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।  ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

খুলনায় আরেক মতিয়ারের ক্ষমতার দাপটে অসহায় কেডিএ, ৫ বছরেও ব্যবস্থা নেয়নি কেডিএ

প্রকাশিত সময় : ০৭:৩৮:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

### অবৈধ ভবন র্নিমান করেও বহাল তবিয়তে মতিয়ার

### ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক মনিরুজ্জামান চরম হয়রানির শিকার

### কেডিএ’র বিগত ৪ চেয়ারম্যানের নির্দেশ মানেনি মতিয়ার

### শুধুই নোটিশ দিয়ে খালাস কেডিএ

### কেডিএ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ

খুলনা প্রতিবেদক :

দেশব্যাপী সাড়া জাগানো ছাগলকান্ডের মতিয়ারের পর এবার খুলনায় আরেক মতিয়ারের ক্ষমতার দাপটের কাছে হার মানছে সরকারী প্রতিষ্ঠান খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। নগরীর নিরালা পুরাতন কাঁচা বাজার এলাকায় নকশা বহির্ভূতভাবে অন্যের জমিতে অবৈধ ভবন নির্মাণ করেও রয়েছেন বহাল তবিয়তে। দখলকৃত জমি ছেড়ে দিতে এস.এম মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে জমির মালিক মনিরুজ্জামান এলু গত ৫ বছর ধরে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। জমির মালিকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেডিএ’র সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তারা সরেজমিন পরির্দশন শেষে একাধিকবার শোকজ  ও অবৈধ অংশ ভেঙ্গে ফেলার নোটিশ প্রদান করে। তবে বিগত ৪ জন চেয়ারম্যানের নির্দেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দাপট দেখাচ্ছেন অবৈধ ভবন নির্মানকারী মতিয়ার রহমান। মতিয়ার গংয়ের ক্রমাগত হুমকি ও অত্যাচার এবং কেডিএ কর্তৃপক্ষের হয়রানির শিকার হয়ে চরম অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন জমির মালিক।

ভুক্তভোগী জমির মালিক মনিরুজ্জামান এলুর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তার জমি অবৈধভাবে দখল করে ভবন নির্মানের বিষয়ে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে ২০১৮ সাল থেকে বিগত ৬ বছরে একাধিক অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে কেডিএ কর্তৃপক্ষ সরেজমিন পরির্দশন শেষে এস এম মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে অননুমোদিত ও মনিরুজ্জামান এলুর জমি দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগের সত্যতা পায়। তার প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ৯ জুলাই ন-৮০২২/২০২১৮-২০২০-২১১০/৩ নং স্মারকে কারণে দর্শাণো নোটিশ প্রদান করে কেডিএ। পরে একই বছরের ২ সেপ্টেম্বর ন-৮০২২/২০২১৮-২০২০-২৮০১/১ নং স্মারকে ভবনের অননুমোদিত অংশ ভেঙে ফেলার নোটিশ জারি করে। ভবন মালিক অননুমোদিত অংশ স্ব-উদ্যোগে ভেঙে না ফেলায় ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর ন-৮০২২/২০২১৮-২০২০-৪০৩১/১ নং স্মারকে ভবন খালি করার নোটিশ দেয় কেডিএ কর্তৃপক্ষ। নোটিশে বলা হয় অনুমোদিত ১৬.৬৭ মিটার (৫৪.৭০ ফুট) অনুমোদন থাকলেও বাস্তবে ইমারতের পিছনে অর্থ্যাৎ র্পূব পাশে ১৯.৮১ মিটার (৬৪.৯৯ ফুট) লম্বা করে অনুমোদনের চেয়ে ৪.১৪ মিটার বেশি বাড়িয়ে নির্মাণ কাজ করা হয়েছে। এছাড়া অনুমোদিত নকশায় ভবনের উত্তর পাশে ১.০০ মিটার জায়গা ছেড়ে নির্মাণের জন্য বলা হলেও বাস্তবে উত্তর পাশে সিড়ির ল্যান্ডিং বা বর্ধিতাংশ বাড়িয়ে মাত্র ০.৩০ মিটার জায়গা ছেড়ে নির্মান কাজ করা হয়েছে।

পরবর্তীতে ২০২১ সালে ২ ফেব্রুয়ারী তারিখে ৮৬৬নং স্মারকে এবং ২০২২ ও ২০২৪ সালেও অননুমোদিত ভবন নির্মানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলেও কেডিএ অনুরূপভাবে নির্মানাধীন ভবন মালিককে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে।এভাবে বিগত ৬ বছরে চারবার এ ভবন মালিককে শুধুমাত্র শোকজ, উচ্ছেদ ও অপসারণের নোটিশ দিয়েই তাদের দায় সেরেছে কেডিএ।

অন্যদিকে, ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে আবারও ভবন নির্মান কাজ শুরু করলে ভবন মালিক এস এম মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন ভূক্তভোগী জমির মালিক। মামলায় আদালত দখল ভিত্তিক স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেয়। কিন্তু আদালত ও কেডিএ’র আদেশ উপেক্ষা করে ভবন মালিক নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখেন। ইতিমধ্যেই বিগত সময়ে কেডিএ এ অননুমোদিত ভবনের অংশ বিশেষ ৫বার ভেঙ্গে দেয়। কিন্তু অবৈধ ভবনের অংশ সর্ম্পূণ অপসারণ করেনি। জমির মালিক মনিরুজ্জামান কেডিএ’র র্বতমান চেয়ারম্যান বরাবরেও অভিযোগ দেয়ার পর কেডিএ কর্তৃপক্ষ সরেজমিন পরির্দশন শেষে অভিযোগের সত্যতা পায়। পরে চেয়ারম্যানের নির্দেশে অথরাইজ অফিসার গত ০৪ জুলাইয়ের মধ্যে অবৈধ ভবনের অংশ ভেঙ্গে অপসারণের নির্দেশ দেয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেও অবৈধ ভবনের অংশ অপসারণ করেনি মতিয়ার গং। এভাবে বছরের পর অভিযোগ দেয়া হলেও কেডিএ কর্তৃপক্ষ চুড়ান্ত কোন ব্যবস্থা বা তাদের নোটিশের বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

একাধিক জমির মালিক ও মহানগরীর বাসিন্দা অভিযোগ করে জানিয়েছেন, খুলনা মাহনগরীকে পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে কেডিএ প্রতিষ্ঠিত হলেও তারা সঠিক কাজ করতে পারছে না। এমনকি অবৈধ ও অননুমোদিত ভবন নির্মানকারীদের সাথে কেডিএ কর্মকর্তা-র্কমচারীদের অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে সুবিধা নেয়ায় অনিয়মকারীরা পার পেয়ে যাচ্ছে।

নকশা র্বহিভূত ও অন্যের জমি দখল করে অবৈধ ভবন র্নিমানকারী এসএম মতিয়ার রহমান বলেন, তিনি মো: মনিরুজ্জামান এলুদের কাছ থেকে কেনা নিজের জমিতেই ভবন র্নিমান করেছেন। মো. মনিরুজ্জামান এলুর অভিযোগ সর্ম্পূণ মিথ্যা ও বানোয়াট। সে জমি বিক্রি করে আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। তিনি এর প্রতিকার চান। তবে নকশা বহির্ভূতভাবে ভবন নির্মাণের বিষয়ে বলেন, তিনি কেডিএ’র নকশার বাইরে কিছু অংশ নির্মাণ করলে কেডিএ সেগুলো ইতিপূর্বে ভেঙ্গে দিয়ে গেছে। তবে আরও ত্রুটির বিষয়ে উল্লেখ করে কেডিএ নোটিশ দিয়ে ০৪ জুলাইয়ের মধ্যে অপসারণের র্নিদেশ দেয়। পরে কেডিএর সাথে যোগাযোগ করলে তারা আমাকে ১০ মাসের সময় দিয়েছেন। কেডিএ যেভাবে বলবে তিনি সেই ভাবেই ভবনের কাজ করবেন বলে জানান। তিনি আরও বলেন, কেডিএ মো. মনিরুজ্জামান এলুর জমি কিনে নিয়ে সমাধানের পরামর্শও দিয়েছেন। আমি এলুর দাবীকৃত রাস্তায় চলাচল না করলেও ওই জমি কিনবো না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কেডিএ’র সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ণ নিয়ন্ত্রন) শবনম সাবা জানান, নকশাবর্হিভূত অবৈধ ভবন নির্মাণের বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে সরেজমিন পরির্দশন শেষে ভবন মালিক এসএম মতিয়ার রহমানকে শোকজ করা হয়। পরে তাকে মো. মনিরুজ্জামান এলুর জমি দখল করে ও নকশা বহির্ভূতভাবে নির্মাণ কাজ অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়। ইতিমধ্যেই ভবন মালিক মতিয়ার রহমান জমির মালিকের সাথে একটি সমঝোতা করবেন বলে শুনেছি। যদি সেটা না হয়ে থাকে তবে আগামী কিছুদিনের মধ্যেই অননুমোদিত ও অন্যের জমি দখল করে অবৈধভাবে নির্মিত ভবন ভেঙ্গে দিতে অভিযান চালানো হবে বলেও তিনি জানান।

সবশেষ কেডিএ অথরাইজেশন শাখা থেকে অননুমোদিত ভবন র্নিমানকারী মতিয়ার রহমানকে অননুমোদিত ও অন্যের জমি দখল করে অবৈধভাবে নির্মিত ভবন ভেঙ্গে অপসারণ করতে দুই মাসের সময় দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

কেডিএর চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: এসএম. মিরাজুল ইসলাম জানান, খুলনা মহানগরীসহ কেডিএর আওতাভুক্ত এলাকাকে পরিবেশ বান্ধব ও বাসযোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করছে কেডিএ। কেডিএ থেকে ভবনের নকশা দেয়ার সময়ই প্রত্যেক মালিককে আইন-কানুন বিসয়ে অবগত করা হয়। কিন্তু তারপরও বেশীরভাগ জমির মালিক নিয়মকানুন মানছেন না। নগরবাসী সচেতন ও দায়িত্ববান না হলে কেডিএর প্রচেষ্টা সফল হবে না। তারপরও কেডিএ অননুমোদিত ও অবৈধভাবে ভবন র্নিমানের বিরুদ্ধে সক্ষমতা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছে। নকশা বর্হিভুতভাবে ভবন র্নিমান করার দায়ের মতিয়ার রহমানকে কয়েকবার নোটিশ দেয়া হয়েছে এবং আংশিক ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। সবশেষ তিনি সময় নিয়েছেন এ সময়ের মধ্যে নিজে না করলে কেডিএ আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।  ##