১০:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

“প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন”

।। হাবিবা আখতার ।।
স্বাস্থ্য বলতে আমরা দুই ধরনের স্বাস্থ্যকে বুঝি। একটি হলো শারীরিক স্বাস্থ্য এবং অন্যটি হলো মানসিক স্বাস্থ্য। পারিবারিকভাবে সবসময় শারীরিক স্বাস্থ্যের প্রতি অধিকতর গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। শারীরিক স্বাস্থ্য বলতে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকাকে বুঝে থাকি। আর মানসিক স্বাস্থ্য বলতে স্বাস্থ্যের সার্বিক দিককে বুঝানো হয়। যেখানে ব্যক্তি তার নিজের ক্ষমতা উপলব্ধি করতে পারে, জীবনের স্বাভাবিক চাপ মোকাবেলা করতে পারে এবং ফলপ্রসূভাবে কার্য-সম্পাদন করতে পারে। উপরোক্ত স্বাস্থ্য বিষয়ক ধারনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, শিশুদের শিক্ষার প্রারম্ভিক স্তর হলো প্রাথমিক বিদ্যালয়। যেখানে শিক্ষকদের উচ্চ শিক্ষা ও আধুনিক প্রশিক্ষনের মাধ্যমে বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান করা হয়ে থাকে।
এতদসত্তে¡ও কিছু কিছু ছাত্র-ছাত্রী শ্রেণী কক্ষে প্রায়ই অমনোযোগী থাকে। অন্যমনস্ক হয়ে এলোমেলো হয়ে কাজ করতে থাকে, যা একটি শ্রেণী কক্ষে পাঠদানের জন্য উপযুক্ত বলে মনে হয় না। এরকম কিছু শিক্ষার্থীর পারিবারিক ইতিহাস থেকে যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে তা হলো: অর্থনৈতিক অভাব, পারিবারিক কলহ, বাবা-মায়ের সম্পর্কের সমস্যা, প্রত্যাখাত শিশু, অবহেলা, মানসিক ও শারীরিক শাস্তি, অতিরিক্ত তিরষ্কার করা, বাবা- মায়ের ডিভোর্স, অসচেতনতা, শিক্ষার অভাব, অশিক্ষা, ইত্যাদি কারণে তারা বয়স উপযোগী মেধার বিকাশ ও প্রতিযোগীতায় পিছিয়ে পড়ছে। এছাড়াও পিতামাতা শিশুদের বুদ্ধিমত্তা না বুঝে নিজের প্রত্যাশা সন্তানের উপর চাপিয়ে দেয়। এসব শিশুরা অতিরিক্ত চাপ নিয়ে শ্রেণী কক্ষে থাকলেও প্রকৃত পক্ষে তারা মানসিকভাবে পারিবারিক চাপগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে থাকে। ফলে তারা ক্রমাগতভাবে অমনোযোগী হয়ে পিছিয়ে পড়ছে।
সমস্যা থেকে উন্নতি সাধনে করণীয়:
পরিবারগুলোকে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো, শিশুদের সাথে আবেগীয় সম্পর্ক তৈরী করা, যোগাযোগের দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ, ইতিবাচক প্যারেন্টিং সম্পর্কে প্রশিক্ষণ, সামাজিক যোগাযোগ দক্ষতা তৈরী করা, মৌলিক চাহিদাগুলো পূরন করা, ধর্মীয় জ্ঞান সম্পর্কে ধারনা দেওয়া এবং ভালো কাজগুলোর জন্য প্রশংসা করা।

লেখক : প্রফেশনাল মনোবিজ্ঞানী ও সহকারী শিক্ষক, পোড়ানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধামইরহাট, নওগাঁ।

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

“প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন”

প্রকাশিত সময় : ০৫:৩৯:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

।। হাবিবা আখতার ।।
স্বাস্থ্য বলতে আমরা দুই ধরনের স্বাস্থ্যকে বুঝি। একটি হলো শারীরিক স্বাস্থ্য এবং অন্যটি হলো মানসিক স্বাস্থ্য। পারিবারিকভাবে সবসময় শারীরিক স্বাস্থ্যের প্রতি অধিকতর গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। শারীরিক স্বাস্থ্য বলতে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকাকে বুঝে থাকি। আর মানসিক স্বাস্থ্য বলতে স্বাস্থ্যের সার্বিক দিককে বুঝানো হয়। যেখানে ব্যক্তি তার নিজের ক্ষমতা উপলব্ধি করতে পারে, জীবনের স্বাভাবিক চাপ মোকাবেলা করতে পারে এবং ফলপ্রসূভাবে কার্য-সম্পাদন করতে পারে। উপরোক্ত স্বাস্থ্য বিষয়ক ধারনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, শিশুদের শিক্ষার প্রারম্ভিক স্তর হলো প্রাথমিক বিদ্যালয়। যেখানে শিক্ষকদের উচ্চ শিক্ষা ও আধুনিক প্রশিক্ষনের মাধ্যমে বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান করা হয়ে থাকে।
এতদসত্তে¡ও কিছু কিছু ছাত্র-ছাত্রী শ্রেণী কক্ষে প্রায়ই অমনোযোগী থাকে। অন্যমনস্ক হয়ে এলোমেলো হয়ে কাজ করতে থাকে, যা একটি শ্রেণী কক্ষে পাঠদানের জন্য উপযুক্ত বলে মনে হয় না। এরকম কিছু শিক্ষার্থীর পারিবারিক ইতিহাস থেকে যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে তা হলো: অর্থনৈতিক অভাব, পারিবারিক কলহ, বাবা-মায়ের সম্পর্কের সমস্যা, প্রত্যাখাত শিশু, অবহেলা, মানসিক ও শারীরিক শাস্তি, অতিরিক্ত তিরষ্কার করা, বাবা- মায়ের ডিভোর্স, অসচেতনতা, শিক্ষার অভাব, অশিক্ষা, ইত্যাদি কারণে তারা বয়স উপযোগী মেধার বিকাশ ও প্রতিযোগীতায় পিছিয়ে পড়ছে। এছাড়াও পিতামাতা শিশুদের বুদ্ধিমত্তা না বুঝে নিজের প্রত্যাশা সন্তানের উপর চাপিয়ে দেয়। এসব শিশুরা অতিরিক্ত চাপ নিয়ে শ্রেণী কক্ষে থাকলেও প্রকৃত পক্ষে তারা মানসিকভাবে পারিবারিক চাপগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে থাকে। ফলে তারা ক্রমাগতভাবে অমনোযোগী হয়ে পিছিয়ে পড়ছে।
সমস্যা থেকে উন্নতি সাধনে করণীয়:
পরিবারগুলোকে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো, শিশুদের সাথে আবেগীয় সম্পর্ক তৈরী করা, যোগাযোগের দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ, ইতিবাচক প্যারেন্টিং সম্পর্কে প্রশিক্ষণ, সামাজিক যোগাযোগ দক্ষতা তৈরী করা, মৌলিক চাহিদাগুলো পূরন করা, ধর্মীয় জ্ঞান সম্পর্কে ধারনা দেওয়া এবং ভালো কাজগুলোর জন্য প্রশংসা করা।

লেখক : প্রফেশনাল মনোবিজ্ঞানী ও সহকারী শিক্ষক, পোড়ানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধামইরহাট, নওগাঁ।