####
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত ২০৩ একর জমি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মৎস্য খামার ব্যবস্থাপকের কার্যালয় অধিগ্রহণে প্রশাসনের উদাসীনতা এবং দীর্ঘসূত্রতার প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে বিবশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনেেএ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে আগামী সাত দিনের মধ্যে জমি অধিগ্রহণের ঘোষণা দিতে আল্টিমেটাম দেয়া হয়।প্রেশাসনের কাছ থেকে জমি অধিগ্রহনের ঘোষনা না আসলে বিশ্ববিদ্যারয়ের সামনের সরকারী মৎস্য খামার ভেঙ্গে ফেলার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জহুরুল তানভীর, আয়মান আহাদ, সাজ্জাদ ইসলাম আজাদ প্রমুখ।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক জহুরুল তানভীর বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পাশাপাশি বড় সুন্দর আবাসন থাকা দরকার। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ডিসিপ্লিনগুলোতে কোন আদর্শ ক্লাস রুম চেয়ার টেবিল নেই। বিগত দিনে দেখেছি অনেক প্রকল্প করতে অনেক বছর সময় নিয়েছে কিন্তু সেখানে কালজয়ী মুজিবের ম্যুরাল তৈরি করতে মাত্র চার দিন সময় নিয়েছে। তাই বলতে চায় প্রশাসন চাইলে সবকিছু পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণ একটি জরুরি বিষয় সেখানে প্রশাসন যদি আগামী মধ্যে জমি অধিগ্রহনের ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হলে আমরা সরকারী মৎস্য খামার ভেঙে ফেলে দখলে নেবো।
চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও সমন্বয়ক আয়মান আহাদ বলেন, বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দেশে বিদেশে অনেক সুনাম অর্জন করছে এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন র্যাংঙ্কিয়ে স্থান পাচ্ছে। কিন্তু দেশের মধ্যে অন্যতম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় অনেক কম। বর্তমানে নতুন করে আর কোনো ভবন নির্মাণ করারও জায়গা নেই। অনেক ডিসিপ্লিনের গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত ফিল্ড নেই। এমতাবস্থায় প্রস্তাবিত ২০৩ একর জমি অধিগ্রহণ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন আর সম্ভব না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সমন্বয়ক সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, জমি অধিগ্রহণে আমরা যদি প্রশাসনের কাজে সন্তোষজনক কোন পদক্ষেপ না পায় তাহলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের আশায় বসে থাকবে না। সামনে আরো বড় আন্দোলনের কর্মসূচি আসবে। আমরা জানি কীভাবে আমাদের দাবি আদায় করতে হয়। দ্রুতই শিক্ষার্থী বান্ধব উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
এ সময় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণে ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে বর্তমান উপাচার্যের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের অবস্থান ও গৃহীত কর্মকাণ্ডসমূহ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বর্তমানে ছাত্রদের যৌক্তিক দাবি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে প্রশাসনের কোন বিরোধ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম ভূমি অধিগ্রহণসহ বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণের জন্য ইতোমধ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, জমি অধিগ্রহণের ব্যাপারে ইতোমধ্যে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং খুলনার বিভাগীয় কমিশনারের সাথে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত আমাদের ক্যাম্পাসের উত্তর-পশ্চিম অংশে সকল ধরনের নতুন স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি স্থগিত করার অনুরোধ করা হয়েছে, যেন অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের জটিলতা না হয়। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এ ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন এবং শীঘ্রই তিনি পত্র মারফত এই ঘোষণা জানিয়ে দিবেন। আগামী রবিবারের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে প্রি-ফিজিবিলিটি স্টাডি করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দপ্তর সমূহের সাথে কথা বলে ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন করে একটি চূড়ান্ত প্রকল্প প্রস্তাবনা(ডিপিপি) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে। এ সকল প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি। ##