১০:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনায় উপকূলীয় এলাকার মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক

  • সংবাদদাতা
  • প্রকাশিত সময় : ১২:৪১:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অক্টোবর ২০২২
  • ৬৫ পড়েছেন

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে খুলনায় গতকাল রোববার রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। আজ সোমবার সকাল থেকেও আকাশ কালো মেঘে ঢেকে আছে। সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলছে। বৃষ্টির কারণে খুব বেশি প্রয়োজন না হলে মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। এদিকে উপকূলীয় এলাকার মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।

খুলনা আবহাওয়া কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল রোববার ঝড়ের কিছুটা প্রভাব থাকলেও মূলত রাত ১১টা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। রাতভর ওই বৃষ্টি চলে। গতকাল রাত ১২টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল রাতে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান ছিল চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমে, পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমে।

এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

খুলনা আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, খুলনাসহ উপকূলীয় এলাকার জন্য আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ৪ নম্বর সতর্কতা–সংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় ও এর আগে-পরে নদীতে জোয়ারের পানির উচ্চতা ৫ থেকে ৭ ফুট বৃদ্ধি পেতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি বরিশাল ও পটুয়াখালীর দিকে আঘাত হানতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এর প্রভাব খুলনা ও এর আশপাশেও পড়বে।

এদিকে গতকাল রাত থেকে বৃষ্টির কারণে সকালে খুলনার রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা দেখা গেছে। সড়কে যানবাহন চলাচলও কম ছিল। এতে অফিসমুখী মানুষের ভোগান্তি ছিল চরমে। ঘূর্ণিঝড়কে কেন্দ্র করে উপকূলীয় এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলার মানুষের মধ্যে বাধ ভাঙার আতঙ্ক বিরাজ করছে।খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ-২–এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম বলেন, খুলনার দাকোপ, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটা এলাকার প্রায় ১৫ কিলোমিটার নদীর বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ ছাড়া কয়রা উপজেলার প্রায় ১০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জিও ব্যাগ ও সিন্থেটিক ব্যাগ নিয়ে কর্মীরা প্রস্তুত রয়েছেন। সেই সঙ্গে প্রস্তুত রাখা হয়েছে এলাকার স্বেচ্ছাসেবক টিমকে। যদি কোনো জায়গায় বাঁধ ভেঙে যায় বা বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে থাকে তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে ওই টিম কাজ শুরু করবে।

খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার  বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংকে ঘিরে খুলনায় ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ও স্বেচ্ছাসেবক দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বলা হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। মেডিকেল দল ও পর্যাপ্ত শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

dainik madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

খুলনায় উপকূলীয় এলাকার মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক

প্রকাশিত সময় : ১২:৪১:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অক্টোবর ২০২২

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে খুলনায় গতকাল রোববার রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। আজ সোমবার সকাল থেকেও আকাশ কালো মেঘে ঢেকে আছে। সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলছে। বৃষ্টির কারণে খুব বেশি প্রয়োজন না হলে মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। এদিকে উপকূলীয় এলাকার মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।

খুলনা আবহাওয়া কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল রোববার ঝড়ের কিছুটা প্রভাব থাকলেও মূলত রাত ১১টা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। রাতভর ওই বৃষ্টি চলে। গতকাল রাত ১২টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল রাতে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান ছিল চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমে, পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পশ্চিমে।

এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

খুলনা আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, খুলনাসহ উপকূলীয় এলাকার জন্য আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ৪ নম্বর সতর্কতা–সংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় ও এর আগে-পরে নদীতে জোয়ারের পানির উচ্চতা ৫ থেকে ৭ ফুট বৃদ্ধি পেতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি বরিশাল ও পটুয়াখালীর দিকে আঘাত হানতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এর প্রভাব খুলনা ও এর আশপাশেও পড়বে।

এদিকে গতকাল রাত থেকে বৃষ্টির কারণে সকালে খুলনার রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা দেখা গেছে। সড়কে যানবাহন চলাচলও কম ছিল। এতে অফিসমুখী মানুষের ভোগান্তি ছিল চরমে। ঘূর্ণিঝড়কে কেন্দ্র করে উপকূলীয় এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলার মানুষের মধ্যে বাধ ভাঙার আতঙ্ক বিরাজ করছে।খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ-২–এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম বলেন, খুলনার দাকোপ, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটা এলাকার প্রায় ১৫ কিলোমিটার নদীর বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ ছাড়া কয়রা উপজেলার প্রায় ১০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জিও ব্যাগ ও সিন্থেটিক ব্যাগ নিয়ে কর্মীরা প্রস্তুত রয়েছেন। সেই সঙ্গে প্রস্তুত রাখা হয়েছে এলাকার স্বেচ্ছাসেবক টিমকে। যদি কোনো জায়গায় বাঁধ ভেঙে যায় বা বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে থাকে তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে ওই টিম কাজ শুরু করবে।

খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার  বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংকে ঘিরে খুলনায় ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ও স্বেচ্ছাসেবক দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বলা হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। মেডিকেল দল ও পর্যাপ্ত শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।