০৪:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গলাচিপায় খেয়া পারাপারে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ, যাত্রী হয়রানি চরমে

###   পটুয়াখালীর গলাচিপার বড়গাবুয়া খেয়া ঘাটে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি নির্ধারিত জনপ্রতি ৫ টাকা টোলের পরিবর্তে আদায় করা হচ্ছে দশ টাকা করে। শুধু তাই নয় রাত হলে দু’পাড়ের মানুষকে জিম্মি করে ১শ’ থেকে ৫শ’ টাকা আদায় করে ইজারাদার। খেয়াঘাটে টোল আদায়ের চার্ট টানানোর নিয়ম থাকলেও কোথাও নেই চার্ট টানানো। প্রতিবাদ করলে ইজারাদার কচিন সিকদারের পেটোয়া বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হতে হয় সাধারণ মানুষকে। দীর্ঘদিন ধরে এমন অনিয়ম করে আসলেও দেখার যেন কেউ নেই। দ্রুত এ খেয়াঘাটের ভাড়া কমানোর দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। প্রতিদিনই এ খেয়া দিয়ে গলাচিপা-দশমিনা ও রাঙ্গাবালী উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। কচিন সিকদার বড়গাবুয়ার ঘাট ইজারা নেয়ার পরই সরকারি এ নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জনপ্রতি পাঁচ টাকার পরিবর্তে দশ টাকা করে টোল আদায় করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। আর বিশেষ দিবস, মেলা ও ঈদে সময় জনপ্রতি ২০ টাকা করে আদায় করে। মটরসাইকেল পারাপারে ১৫ টাকার কথা থাকলেও আদায় করা হচ্ছে ২৫ টাকা করে। আর বাইসাইকেল ৫ টাকার পরিবর্তে ১০ টাকা করে আদায় করা হয়। হাতের মালামালেও অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। গলাচিপার ব্যবসায়ী হারুন বলেন, অতিরিক্ত টোল আদায়ের ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করলে লাঞ্ছিত হতে হয় মোস্তফা পেটোয়া ভাইয়া বাহিনীর হাতে। উভয় পারের মানুষকে জিম্মি করে টোল আদায় করছে। গোলখালী গ্রামের পারুল বেগম বলেন, কোনো রোগী নিয়ে আসলে খেয়া দিয়ে তাড়াতাড়ি পার হওয়া যায় না। ৩০ জন লোক না হলে খেয়া ছাড়ে না। আর ছাড়তে বললে বলে ৩০ জনের ৩শ’ টাকা দিলে খেয়া ছাড়া হবে। অনেকে রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে বাধ্য হয়েই তিন/চার শত টাকা দিয়ে পারাপার হয়। বড়গাবুয়ার ইসমাইল হোসেন জানান, বড়গাবুয়া খেয়াঘাট ইজারা নেয়ার পর থেকেই প্রকাশ্যে প্রতিদিন হাজারো মানুষের কাছ থেকে খেয়ার টোলের নামে চাঁদাবাজি করছে। শিক্ষক সোহরাব মিয়া জানান, খেয়াঘাটে এদের হাতে প্রতিদিনই দু’একজন যাত্রী লাঞ্ছিত হচ্ছে। তাই ভদ্রলোকরা এই ভয়ে ওদের নৈরাজ্যের প্রতিবাদ করে না। তিনি ক্ষোভ করে বলেন, এগুলো দেখার যেন কেউ নেই। বছরের পর বছর অনিয়ম করে যাচ্ছে কিন্তু কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। জোলেখা গ্রামের নেছার উদ্দিন জানান, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করলে চাঁদা দাবির মামলা দেয়ার হুমকি দেয় ইজারাদার। এ নিয়ে অনেকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে। এজন্য এখন আর মানুষ প্রতিবাদ করে না। এ ব্যাপারে বড়গাবুযা খেয়াঘাটের টোল আদায়কারী কচিন বলেন, বেশি টাকায় ইজারা নিয়েছি। এছাড়া প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করতে হয় তাই অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছি। সবাই জানে আমরা বেশি টাকা নেই । আর দৃশ্যমান স্থানে টোল চার্ট টানানোর প্রয়োজনীয়তা নেই। কত টাকা দিতে হবে তাতো মুখেই বলছি-টানাতে হবে কেনো। এ ব্যাপারে গলাচিপা উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল জানান, গলাচিপার প্রায় সব খেয়াঘাটেই অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমরা খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

কেএমপি’র ০২ পুলিশ সদস্য জাতীয় শুদ্ধাচার পুরস্কারে ভূষিত

গলাচিপায় খেয়া পারাপারে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ, যাত্রী হয়রানি চরমে

প্রকাশিত সময় : ০৯:২০:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ অক্টোবর ২০২২

###   পটুয়াখালীর গলাচিপার বড়গাবুয়া খেয়া ঘাটে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি নির্ধারিত জনপ্রতি ৫ টাকা টোলের পরিবর্তে আদায় করা হচ্ছে দশ টাকা করে। শুধু তাই নয় রাত হলে দু’পাড়ের মানুষকে জিম্মি করে ১শ’ থেকে ৫শ’ টাকা আদায় করে ইজারাদার। খেয়াঘাটে টোল আদায়ের চার্ট টানানোর নিয়ম থাকলেও কোথাও নেই চার্ট টানানো। প্রতিবাদ করলে ইজারাদার কচিন সিকদারের পেটোয়া বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হতে হয় সাধারণ মানুষকে। দীর্ঘদিন ধরে এমন অনিয়ম করে আসলেও দেখার যেন কেউ নেই। দ্রুত এ খেয়াঘাটের ভাড়া কমানোর দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। প্রতিদিনই এ খেয়া দিয়ে গলাচিপা-দশমিনা ও রাঙ্গাবালী উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। কচিন সিকদার বড়গাবুয়ার ঘাট ইজারা নেয়ার পরই সরকারি এ নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জনপ্রতি পাঁচ টাকার পরিবর্তে দশ টাকা করে টোল আদায় করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। আর বিশেষ দিবস, মেলা ও ঈদে সময় জনপ্রতি ২০ টাকা করে আদায় করে। মটরসাইকেল পারাপারে ১৫ টাকার কথা থাকলেও আদায় করা হচ্ছে ২৫ টাকা করে। আর বাইসাইকেল ৫ টাকার পরিবর্তে ১০ টাকা করে আদায় করা হয়। হাতের মালামালেও অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। গলাচিপার ব্যবসায়ী হারুন বলেন, অতিরিক্ত টোল আদায়ের ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করলে লাঞ্ছিত হতে হয় মোস্তফা পেটোয়া ভাইয়া বাহিনীর হাতে। উভয় পারের মানুষকে জিম্মি করে টোল আদায় করছে। গোলখালী গ্রামের পারুল বেগম বলেন, কোনো রোগী নিয়ে আসলে খেয়া দিয়ে তাড়াতাড়ি পার হওয়া যায় না। ৩০ জন লোক না হলে খেয়া ছাড়ে না। আর ছাড়তে বললে বলে ৩০ জনের ৩শ’ টাকা দিলে খেয়া ছাড়া হবে। অনেকে রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে বাধ্য হয়েই তিন/চার শত টাকা দিয়ে পারাপার হয়। বড়গাবুয়ার ইসমাইল হোসেন জানান, বড়গাবুয়া খেয়াঘাট ইজারা নেয়ার পর থেকেই প্রকাশ্যে প্রতিদিন হাজারো মানুষের কাছ থেকে খেয়ার টোলের নামে চাঁদাবাজি করছে। শিক্ষক সোহরাব মিয়া জানান, খেয়াঘাটে এদের হাতে প্রতিদিনই দু’একজন যাত্রী লাঞ্ছিত হচ্ছে। তাই ভদ্রলোকরা এই ভয়ে ওদের নৈরাজ্যের প্রতিবাদ করে না। তিনি ক্ষোভ করে বলেন, এগুলো দেখার যেন কেউ নেই। বছরের পর বছর অনিয়ম করে যাচ্ছে কিন্তু কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। জোলেখা গ্রামের নেছার উদ্দিন জানান, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করলে চাঁদা দাবির মামলা দেয়ার হুমকি দেয় ইজারাদার। এ নিয়ে অনেকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে। এজন্য এখন আর মানুষ প্রতিবাদ করে না। এ ব্যাপারে বড়গাবুযা খেয়াঘাটের টোল আদায়কারী কচিন বলেন, বেশি টাকায় ইজারা নিয়েছি। এছাড়া প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করতে হয় তাই অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছি। সবাই জানে আমরা বেশি টাকা নেই । আর দৃশ্যমান স্থানে টোল চার্ট টানানোর প্রয়োজনীয়তা নেই। কত টাকা দিতে হবে তাতো মুখেই বলছি-টানাতে হবে কেনো। এ ব্যাপারে গলাচিপা উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল জানান, গলাচিপার প্রায় সব খেয়াঘাটেই অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমরা খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। ##