০৬:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী এখনও বৈষম্যের শিকার : অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, আয়নাঘরসহ সকল নিষ্ঠুরতার মাস্টার মাইন্ড শেখ হাসিনার ১৭ বছরের কালোযুগে দেওয়া সব মিথ্যা মামলা ও কথিত রায়ে অনেকেই মুক্তি পেলেও জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম কেন এখনও কারাবন্দি ? তিনি এটিএম আজহারুল ইসলামের নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যথায় আবারো জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে লড়াই এমনকি জীবন দিতেও প্রস্তুত রয়েছেন তিনি। ২০১০ সালের ৩০ জুনের পর এটি খুলনায় প্রথম প্রকাশ্য কোন সমাবেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পরের দিন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হলেও জামায়াত নেতা এটিএম আজহারকে কেন এখনও কারাগারে থাকতে হবে ? জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের আমরাওতো শরীক। এমনকি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে জামায়াতও ছিল রাজপথে’। তিনি বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে ফ্যাসিবাদের প্রতীক আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের জুলুম থেকে রক্ষার জন্য অন্তত: একটি সুবিচার করুন, এটিএম আজহারের দন্ডকে বাতিল ঘোষণা করুন।’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা মওকুফের সুযোগ রয়েছে। অবিলম্বে সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এটিএম আজহারকে মুক্তি দিন।’ তিনি বলেন, স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী এখনও বৈষম্যের শিকার। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে খুলনার ঐতিহাসিক শহীদ হাদিস পার্কে এ বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনা মহানগরী ও জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহনগরী জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।
খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান ও মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপ্যাল শেখ জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় বক্তৃতা করেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, জেলা নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম, মহানগরী সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল, বটিয়াঘাটা উপজেলা আমীর মাওলানা শেখ মো. আবু ইউসুফ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের খুলনা জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ গাউসুল আজম হাদী, মহানগর সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের খুলনা মহানগরী সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, খুলনা জেলা উত্তর সভাপতি আবু ইউসুফ ফকির ও জেলা দক্ষিণ সভাপতি আবু জার আল গিফারী। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন বদরুজ্জামান নাবিল।


অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, এটিএম আজহারুল ইসলাম ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় ট্রাইবুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করেন। আপিল বিভাগের চারজন বিচারপতির মধ্যে তিনজন বিচারপতি ট্রাইবুনালের রায় বহাল রাখলেও একজন বিচারপতি এ রায়ের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। এটিএম আজহারুল ইসলাম সেখানেও ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত বলেও তিনি উল্লেখ করেন। স্বৈরাচারের আমলে গ্রেফতারকৃত এটিএম আজহারুল ইসলামকে কারাগারে আটক রাখা তার প্রতি চরম জুলুম ও অন্যায় ছাড়া আর কিছুই নয়। দেশবাসী স্বৈরাচারের কবল থেকে পরিপূর্ণভাবে মুক্তি চায় উল্লেখ করে তিনি জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানান।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর শহীদ পার্ক থেকে শুরু হয়ে পিকচার প্যালেস মোড়, ডাকবাংলো মোড়, ফেরিঘাট, পাওয়ার হাউজ মোড় হয়ে শিববাড়ি মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। তবে শেষ মুহুর্তে এসে নগরীর শিববাড়ি মোড়স্থ কেডিএ’র প্রধান ফটকের পাশে রেলওয়ের ভেতর থেকে মিছিলের শেষ ভাগে একটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। বিকট শব্দে ককটেলটি বিস্ফোরিত হয়। মিছিলের শেষভাগে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে রেলওয়ে এলাকার উঁচু স্থান থেকে একটি ককটেল বোমা নিক্ষেপের ফলে ইসমাইল হোসেন নামের একজন আহত হন।  #

ট্যাগ :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

লেখক তথ্য সম্পর্কে

sunil Dhash

জনপ্রিয়

নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদে পাইকগাছায় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী এখনও বৈষম্যের শিকার : অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার

আপডেট সময় : ০৩:১৫:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, আয়নাঘরসহ সকল নিষ্ঠুরতার মাস্টার মাইন্ড শেখ হাসিনার ১৭ বছরের কালোযুগে দেওয়া সব মিথ্যা মামলা ও কথিত রায়ে অনেকেই মুক্তি পেলেও জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম কেন এখনও কারাবন্দি ? তিনি এটিএম আজহারুল ইসলামের নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যথায় আবারো জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে লড়াই এমনকি জীবন দিতেও প্রস্তুত রয়েছেন তিনি। ২০১০ সালের ৩০ জুনের পর এটি খুলনায় প্রথম প্রকাশ্য কোন সমাবেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পরের দিন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হলেও জামায়াত নেতা এটিএম আজহারকে কেন এখনও কারাগারে থাকতে হবে ? জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের আমরাওতো শরীক। এমনকি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে জামায়াতও ছিল রাজপথে’। তিনি বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে ফ্যাসিবাদের প্রতীক আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের জুলুম থেকে রক্ষার জন্য অন্তত: একটি সুবিচার করুন, এটিএম আজহারের দন্ডকে বাতিল ঘোষণা করুন।’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা মওকুফের সুযোগ রয়েছে। অবিলম্বে সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এটিএম আজহারকে মুক্তি দিন।’ তিনি বলেন, স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী এখনও বৈষম্যের শিকার। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে খুলনার ঐতিহাসিক শহীদ হাদিস পার্কে এ বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনা মহানগরী ও জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহনগরী জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।
খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান ও মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপ্যাল শেখ জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় বক্তৃতা করেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, জেলা নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম, মহানগরী সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল, বটিয়াঘাটা উপজেলা আমীর মাওলানা শেখ মো. আবু ইউসুফ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের খুলনা জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ গাউসুল আজম হাদী, মহানগর সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের খুলনা মহানগরী সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, খুলনা জেলা উত্তর সভাপতি আবু ইউসুফ ফকির ও জেলা দক্ষিণ সভাপতি আবু জার আল গিফারী। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন বদরুজ্জামান নাবিল।


অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, এটিএম আজহারুল ইসলাম ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় ট্রাইবুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করেন। আপিল বিভাগের চারজন বিচারপতির মধ্যে তিনজন বিচারপতি ট্রাইবুনালের রায় বহাল রাখলেও একজন বিচারপতি এ রায়ের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। এটিএম আজহারুল ইসলাম সেখানেও ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত বলেও তিনি উল্লেখ করেন। স্বৈরাচারের আমলে গ্রেফতারকৃত এটিএম আজহারুল ইসলামকে কারাগারে আটক রাখা তার প্রতি চরম জুলুম ও অন্যায় ছাড়া আর কিছুই নয়। দেশবাসী স্বৈরাচারের কবল থেকে পরিপূর্ণভাবে মুক্তি চায় উল্লেখ করে তিনি জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানান।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর শহীদ পার্ক থেকে শুরু হয়ে পিকচার প্যালেস মোড়, ডাকবাংলো মোড়, ফেরিঘাট, পাওয়ার হাউজ মোড় হয়ে শিববাড়ি মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। তবে শেষ মুহুর্তে এসে নগরীর শিববাড়ি মোড়স্থ কেডিএ’র প্রধান ফটকের পাশে রেলওয়ের ভেতর থেকে মিছিলের শেষ ভাগে একটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। বিকট শব্দে ককটেলটি বিস্ফোরিত হয়। মিছিলের শেষভাগে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে রেলওয়ে এলাকার উঁচু স্থান থেকে একটি ককটেল বোমা নিক্ষেপের ফলে ইসমাইল হোসেন নামের একজন আহত হন।  #