১০:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ক্ষুব্ধ বাঙালির মিছিল-শ্লোগানে উত্তল ছিল সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান

”অগ্নিঝরা মার্চ’র চতুর্থ দিন :

###    আজ অগ্নিঝরা মার্চ’র চতুর্থ দিন। অগ্নিঝরা মার্চ বাঙালির যৌক্তিক স্বপ্নপুরণের মাস। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাস। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা হচ্ছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এই ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক-রাজনৈতিক স্বপ্ন পূরণ হয়। বাঙালীর রক্তের দামে কেনা স্বাধীনতার সূর্য পূর্ব দিগন্তে উদিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের এই মার্চেই। ১৯৭১ সালে এসে যে রাজনৈতিক সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করে, যদিও তার গোড়াপত্তন হয়েছিল বহু বছর আগে; ’৫২’র ভাষা আন্দোলন মধ্যে দিয়ে। এরপর, স্বায়ত্তশাসনসহ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তির ছয়টি দাবি নিয়ে ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণা করেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান। এর অল্প সময়ের মধ্যেই দলের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। চষে বেড়াতে শুরু করেন বাংলার মাঠ-প্রান্তর। এসময় ‘ছয় দফা: আমাদের বাঁচার দাবি’ শিরোনামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে দেশজুড়ে বিলি করা হয়। তুমুল গণজোয়ার শুরু হয় ছয় দফার পক্ষে। তা দেখে ভয় সৃষ্টি হয় পাকিস্তানি জান্তাদের মনে। ছয় দফা ঘোষণার পরের তিন মাসে দেশজুড়ে ৩২টি জনসভা করেন বঙ্গবন্ধু এবং প্রায় প্রতিবারই তাকে আটক করা হয়। অবশেষে বাঙালির জাগরণ দমানোর জন্য দীর্ঘ মেয়াদের জন্য জেলে ঢোকানো হয় জাতির স্বপ্নপুরুষ শেখ মুজিবকে। কিন্তু লাভ হয়নি। ছয় দফা ঘোষণা করে জাতীয় মুক্তির যে বীজমন্ত্র তিনি রোপণ করেছিলেন, তা ততদিনে শাখা-প্রশাখায় ছড়িয়ে গেছে প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে। এই ছয় দফাকে কেন্দ্র করেই স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে ওঠে পুরো জাতি। যার প্রভাব পড়ে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের মোট ৩১৩ আসনের মধ্যে ১৬৭ আসনে জিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আওয়ামী লীগ। নৌকা প্রতীকের কা-ারি হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে হয়ে ওঠেন অখ- পাকিস্তানের সর্বোচ্চ নেতা। কিন্তু পাকিস্তানি জান্তা ও নির্বাচনের পরাজিত পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিকরা ষড়যন্ত্র করতে থাকে।
একাত্তরের রক্তঝরা মার্চের চতুর্থ দিনটির ঘটনাপ্রবাহের দিকে তাকালে বোঝা যায়, দেশমাতৃকাকে হানাদারমুক্ত করার দৃপ্ত শপথে বাঙালি জাতি কী প্রস্তুতি নিয়েছিল। পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) তখন বিদ্রোহ-বিক্ষোভে উত্তাল। একাত্তরের এই দিনে ক্ষুব্ধ বাঙালির মিছিলে মিছিলে ঝাঁঝালো শ্লোগানে উত্তল ছিল সমগ্রপূর্ব পাকিস্তান। সবকিছু চলছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশ মেনে। মুক্তিযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে বলীয়ান বাঙালি জাতি অপেক্ষায় ছিল তার পরবর্তী নির্দেশনার। ১৯৭১ সালের এই দিনে জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা ও গণহত্যার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ঢাকাসহ সারা বাংলায় সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। প্রদেশের বেসামরিক শাসন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। হরতাল চলাকালে খুলনায় সেনাবাহিনীর গুলিতে ৬ জন শহীদ হন। চট্টগ্রামে দু’দিনে প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়ায় ১২১ জনে। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানের পর স্বাধিকার আন্দোলনে গুলিতে আহত মুমুর্ষ বীর সংগ্রামীদের প্রাণরক্ষার্থে শত শত নারী-পুরুষ ও ছাত্রছাত্রী ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ব্লাড ব্যাংকে স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন। রেডিও পাকিস্তান ঢাকা কেন্দ্র ‘ঢাকা বেতার কেন্দ্র’ এবং পাকিস্তান টেলিভিশন ‘ঢাকা টেলিভিশন’ হিসেবে সম্প্রচার শুরু করে। এর মধ্যে দিয়ে বাংরাদেশের সুচনা শুরু হয়। বেতার-টেলিভিশন শিল্পীরা ঘোষণা করেন, যতদিন পর্যন্ত দেশের জনগণ ও ছাত্রসমাজ সংগ্রামে লিপ্ত থাকবেন ততদিন ‘বেতার ও টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তারা অংশ নেবেন না’। ৫ ও ৬ মার্চ সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হরতাল পালনের আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, যেসব সরকারি ও বেসরকারি অফিসে কর্মচারীরা এখনও বেতন পাননি শুধু বেতন প্রদানের জন্য সেসব অফিস দুপুর আড়াইটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। করাচি প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এয়ার মার্শাল (অব.) আসগর খান দেশকে বিচ্ছিন্নতার হাত থেকে রক্ষার উদ্দেশ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের কাছে অবিলম্বে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানান। পিডিপিপ্রধান নুরুল আমিন এক বিবৃতিতে ১০ মার্চ রাজনৈতিক নেতাদের সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে প্রেসিডেন্টের প্রতি অবিলম্বে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ঢাকায় আহ্বান করার দাবি জানান। পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জেডএ ভুট্টো করাচিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশের সংহতির জন্য তার দল যতদূর সম্ভব ৬-দফার কাছাকাছি হওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ৭ মার্চ যতই এগিয়ে আসতে শুরু করে, স্বাধীনতাকামী বাঙালি ও পাক সামরিক জান্তার মধ্যে উত্তেজনা ততই বাড়তে থাকে। দ্রোহ-ক্ষোভে বঞ্চিত-শোষিত বাঙালি তখন ক্রমেই ফুঁসে উঠেছিল ঔপনিবেশিক পাকিস্তানি শাসক-শোষকদের বিরুদ্ধে। তারা এক বুক প্রত্যাশা নিয়ে বসে থাকে ৭ মার্চ কী ঘোষণা দেবেন বঙ্গবন্ধু। অন্যদিকে, পাক সামরিক জান্তা ভয়ে কাতর, যদি বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন তখন কী হবে? এমন আতঙ্ক, ভয় তাদের তাড়া করে। এদিকে, আন্দোলনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা দফায় দফায় বৈঠকে বসেন ৭ মার্চের জনসভা সফল করার জন্য। তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) চলতে থাকে জনসভার প্রস্তুতি। পাশাপাশি ঢাকাসহ সারাদেশে চলতে থাকে সংগ্রাম কমিটি।##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik adhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

ক্ষুব্ধ বাঙালির মিছিল-শ্লোগানে উত্তল ছিল সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান

”অগ্নিঝরা মার্চ’র চতুর্থ দিন :

প্রকাশিত সময় : ১০:১১:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ মার্চ ২০২৩

###    আজ অগ্নিঝরা মার্চ’র চতুর্থ দিন। অগ্নিঝরা মার্চ বাঙালির যৌক্তিক স্বপ্নপুরণের মাস। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাস। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা হচ্ছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এই ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক-রাজনৈতিক স্বপ্ন পূরণ হয়। বাঙালীর রক্তের দামে কেনা স্বাধীনতার সূর্য পূর্ব দিগন্তে উদিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের এই মার্চেই। ১৯৭১ সালে এসে যে রাজনৈতিক সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করে, যদিও তার গোড়াপত্তন হয়েছিল বহু বছর আগে; ’৫২’র ভাষা আন্দোলন মধ্যে দিয়ে। এরপর, স্বায়ত্তশাসনসহ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তির ছয়টি দাবি নিয়ে ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণা করেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান। এর অল্প সময়ের মধ্যেই দলের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। চষে বেড়াতে শুরু করেন বাংলার মাঠ-প্রান্তর। এসময় ‘ছয় দফা: আমাদের বাঁচার দাবি’ শিরোনামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে দেশজুড়ে বিলি করা হয়। তুমুল গণজোয়ার শুরু হয় ছয় দফার পক্ষে। তা দেখে ভয় সৃষ্টি হয় পাকিস্তানি জান্তাদের মনে। ছয় দফা ঘোষণার পরের তিন মাসে দেশজুড়ে ৩২টি জনসভা করেন বঙ্গবন্ধু এবং প্রায় প্রতিবারই তাকে আটক করা হয়। অবশেষে বাঙালির জাগরণ দমানোর জন্য দীর্ঘ মেয়াদের জন্য জেলে ঢোকানো হয় জাতির স্বপ্নপুরুষ শেখ মুজিবকে। কিন্তু লাভ হয়নি। ছয় দফা ঘোষণা করে জাতীয় মুক্তির যে বীজমন্ত্র তিনি রোপণ করেছিলেন, তা ততদিনে শাখা-প্রশাখায় ছড়িয়ে গেছে প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে। এই ছয় দফাকে কেন্দ্র করেই স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে ওঠে পুরো জাতি। যার প্রভাব পড়ে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের মোট ৩১৩ আসনের মধ্যে ১৬৭ আসনে জিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আওয়ামী লীগ। নৌকা প্রতীকের কা-ারি হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে হয়ে ওঠেন অখ- পাকিস্তানের সর্বোচ্চ নেতা। কিন্তু পাকিস্তানি জান্তা ও নির্বাচনের পরাজিত পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিকরা ষড়যন্ত্র করতে থাকে।
একাত্তরের রক্তঝরা মার্চের চতুর্থ দিনটির ঘটনাপ্রবাহের দিকে তাকালে বোঝা যায়, দেশমাতৃকাকে হানাদারমুক্ত করার দৃপ্ত শপথে বাঙালি জাতি কী প্রস্তুতি নিয়েছিল। পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) তখন বিদ্রোহ-বিক্ষোভে উত্তাল। একাত্তরের এই দিনে ক্ষুব্ধ বাঙালির মিছিলে মিছিলে ঝাঁঝালো শ্লোগানে উত্তল ছিল সমগ্রপূর্ব পাকিস্তান। সবকিছু চলছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশ মেনে। মুক্তিযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে বলীয়ান বাঙালি জাতি অপেক্ষায় ছিল তার পরবর্তী নির্দেশনার। ১৯৭১ সালের এই দিনে জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা ও গণহত্যার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ঢাকাসহ সারা বাংলায় সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। প্রদেশের বেসামরিক শাসন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। হরতাল চলাকালে খুলনায় সেনাবাহিনীর গুলিতে ৬ জন শহীদ হন। চট্টগ্রামে দু’দিনে প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়ায় ১২১ জনে। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানের পর স্বাধিকার আন্দোলনে গুলিতে আহত মুমুর্ষ বীর সংগ্রামীদের প্রাণরক্ষার্থে শত শত নারী-পুরুষ ও ছাত্রছাত্রী ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ব্লাড ব্যাংকে স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন। রেডিও পাকিস্তান ঢাকা কেন্দ্র ‘ঢাকা বেতার কেন্দ্র’ এবং পাকিস্তান টেলিভিশন ‘ঢাকা টেলিভিশন’ হিসেবে সম্প্রচার শুরু করে। এর মধ্যে দিয়ে বাংরাদেশের সুচনা শুরু হয়। বেতার-টেলিভিশন শিল্পীরা ঘোষণা করেন, যতদিন পর্যন্ত দেশের জনগণ ও ছাত্রসমাজ সংগ্রামে লিপ্ত থাকবেন ততদিন ‘বেতার ও টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তারা অংশ নেবেন না’। ৫ ও ৬ মার্চ সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হরতাল পালনের আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, যেসব সরকারি ও বেসরকারি অফিসে কর্মচারীরা এখনও বেতন পাননি শুধু বেতন প্রদানের জন্য সেসব অফিস দুপুর আড়াইটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। করাচি প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এয়ার মার্শাল (অব.) আসগর খান দেশকে বিচ্ছিন্নতার হাত থেকে রক্ষার উদ্দেশ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের কাছে অবিলম্বে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানান। পিডিপিপ্রধান নুরুল আমিন এক বিবৃতিতে ১০ মার্চ রাজনৈতিক নেতাদের সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে প্রেসিডেন্টের প্রতি অবিলম্বে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ঢাকায় আহ্বান করার দাবি জানান। পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জেডএ ভুট্টো করাচিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশের সংহতির জন্য তার দল যতদূর সম্ভব ৬-দফার কাছাকাছি হওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ৭ মার্চ যতই এগিয়ে আসতে শুরু করে, স্বাধীনতাকামী বাঙালি ও পাক সামরিক জান্তার মধ্যে উত্তেজনা ততই বাড়তে থাকে। দ্রোহ-ক্ষোভে বঞ্চিত-শোষিত বাঙালি তখন ক্রমেই ফুঁসে উঠেছিল ঔপনিবেশিক পাকিস্তানি শাসক-শোষকদের বিরুদ্ধে। তারা এক বুক প্রত্যাশা নিয়ে বসে থাকে ৭ মার্চ কী ঘোষণা দেবেন বঙ্গবন্ধু। অন্যদিকে, পাক সামরিক জান্তা ভয়ে কাতর, যদি বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন তখন কী হবে? এমন আতঙ্ক, ভয় তাদের তাড়া করে। এদিকে, আন্দোলনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা দফায় দফায় বৈঠকে বসেন ৭ মার্চের জনসভা সফল করার জন্য। তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) চলতে থাকে জনসভার প্রস্তুতি। পাশাপাশি ঢাকাসহ সারাদেশে চলতে থাকে সংগ্রাম কমিটি।##