১০:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জোয়ার – ভাটার পানি বিদ্যালয়ে,পরিত্যাক্ত ভবন ও ঝুপড়ি ঘরে পাঠদান 

জোয়ার-ভাটার পানি ঢুকে পরে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে।
ভরা জোয়ারের সময় জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ভরপাশা হেলিপ্যাড সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলেই এমন চিত্র দেখা মিলে। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। জোয়ারের পানির মধ্যে ক্লাস করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা পড়ছে চরম দুর্ভোগে। তবে চরম দুর্ভোগে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকলেও জোয়ারের পানির মধ্যে ক্লাস চলায় সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন শিক্ষার্থীর অভিভাবক।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাকেরগঞ্জ তুলাতলী নদীর চরে অবস্থিত দক্ষিণ ভরপাশা হেলিপ্যাড সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নদীতে ভেরি বাঁধ না থাকায় জোয়ারের সময় স্কুলের আঙ্গিনায় পানি উঠে যায়। এমনকি স্কুলের শ্রেণিকক্ষগুলোতেও জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। এতে দুর্ভোগে পড়তে হয় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের। তবে অভিভাবকরা সন্তানদের জন্য বিষয়টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে নিচ্ছেন। একে-তো জোয়ারের পানিতে থাকে বিভিন্ন রোগ-জীবাণু, অন্যদিকে সাপের ভয়, ফলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। অপরদিকে বিদ্যালয়ের ভবনটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। ভবন না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম দূর্ভোগে পড়েছে।
প্রধান শিক্ষিকা ঝরনা রানী বিশ্বাস জানান, জোয়ারের পানিতে স্কুলের মাঠে কোমরসমান পানি উঠে যায়। জোয়ারের সময় আমাদের প্রায় ১৩৯ জন শিক্ষার্থীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দুপুরের দিকে জোয়ার আসার আগেই অভিভাবকরা দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ছেলেমেয়েদের স্কুল থেকে নিয়ে যায় অনেক সময়।
১০ সেপ্টেম্বর থেকে খুব বেশি জোয়ারের পানি এসেছে। স্কুলে ভবন নেই পাশে একটি টিনশেডের তৈরি ঝুপড়ি  ঘরে পাঠদান দেয়া হয়। শ্রেণিকক্ষে যাওয়ার রাস্তাই  পানিতে ডুবে যায়। শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়েছে জোয়ারের পানি, এর মধ্যেই চলছে পাঠদান কার্যক্রম। বর্ষা মৌসুম আসলে স্কুলের দুর্ভোগের শেষ থাকে না। বিশেষ করে ভরা জোয়ারের সময় আমরা খুব আতঙ্কে থাকি ছোট ছোট বাচ্চা শিক্ষার্থীদের নিয়ে।
এছাড়াও স্কুলের ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি সরকারি হলেও এখন পর্যন্ত হয়নি ভবনের ব্যবস্থা। এর আগে ৮ বছর ব্রাকের অধীনে ছিল বিদ্যালয়টি। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিনা বেতনে আমরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালিয়েছি। বর্তমানে আমরা ৪ জন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নিয়ে আশার আলোর স্বপ্ন দেখছি। বর্ষাকালে স্কুলে জোয়ারের পানি ঢুকে যাওয়ার বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। এ দুর্ভোগ থেকে কখন যে রেহাই পাবো জানি না। ভবনের বিষটি লিখিতভাবে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কয়েকটি স্কুলে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে মৌখিকভাবে শুনেছি তবে লিখিত অভিযোগ এখনো পাইনি। তবে ভবনের বিষয়টি আমরা লিখিত পেয়েছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শীঘ্রই ভবন বরাদ্দ হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। সেখানে সাইক্লোন সেন্টার কাম স্কুল করা যেতে পারে। বিষয়টি সম্পূর্ণ অধিদপ্তরের।
Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

dainik madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

জোয়ার – ভাটার পানি বিদ্যালয়ে,পরিত্যাক্ত ভবন ও ঝুপড়ি ঘরে পাঠদান 

প্রকাশিত সময় : ০৫:৪০:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২
জোয়ার-ভাটার পানি ঢুকে পরে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে।
ভরা জোয়ারের সময় জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ভরপাশা হেলিপ্যাড সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলেই এমন চিত্র দেখা মিলে। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। জোয়ারের পানির মধ্যে ক্লাস করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা পড়ছে চরম দুর্ভোগে। তবে চরম দুর্ভোগে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকলেও জোয়ারের পানির মধ্যে ক্লাস চলায় সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন শিক্ষার্থীর অভিভাবক।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাকেরগঞ্জ তুলাতলী নদীর চরে অবস্থিত দক্ষিণ ভরপাশা হেলিপ্যাড সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নদীতে ভেরি বাঁধ না থাকায় জোয়ারের সময় স্কুলের আঙ্গিনায় পানি উঠে যায়। এমনকি স্কুলের শ্রেণিকক্ষগুলোতেও জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। এতে দুর্ভোগে পড়তে হয় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের। তবে অভিভাবকরা সন্তানদের জন্য বিষয়টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে নিচ্ছেন। একে-তো জোয়ারের পানিতে থাকে বিভিন্ন রোগ-জীবাণু, অন্যদিকে সাপের ভয়, ফলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। অপরদিকে বিদ্যালয়ের ভবনটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। ভবন না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম দূর্ভোগে পড়েছে।
প্রধান শিক্ষিকা ঝরনা রানী বিশ্বাস জানান, জোয়ারের পানিতে স্কুলের মাঠে কোমরসমান পানি উঠে যায়। জোয়ারের সময় আমাদের প্রায় ১৩৯ জন শিক্ষার্থীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দুপুরের দিকে জোয়ার আসার আগেই অভিভাবকরা দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ছেলেমেয়েদের স্কুল থেকে নিয়ে যায় অনেক সময়।
১০ সেপ্টেম্বর থেকে খুব বেশি জোয়ারের পানি এসেছে। স্কুলে ভবন নেই পাশে একটি টিনশেডের তৈরি ঝুপড়ি  ঘরে পাঠদান দেয়া হয়। শ্রেণিকক্ষে যাওয়ার রাস্তাই  পানিতে ডুবে যায়। শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়েছে জোয়ারের পানি, এর মধ্যেই চলছে পাঠদান কার্যক্রম। বর্ষা মৌসুম আসলে স্কুলের দুর্ভোগের শেষ থাকে না। বিশেষ করে ভরা জোয়ারের সময় আমরা খুব আতঙ্কে থাকি ছোট ছোট বাচ্চা শিক্ষার্থীদের নিয়ে।
এছাড়াও স্কুলের ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি সরকারি হলেও এখন পর্যন্ত হয়নি ভবনের ব্যবস্থা। এর আগে ৮ বছর ব্রাকের অধীনে ছিল বিদ্যালয়টি। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিনা বেতনে আমরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালিয়েছি। বর্তমানে আমরা ৪ জন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নিয়ে আশার আলোর স্বপ্ন দেখছি। বর্ষাকালে স্কুলে জোয়ারের পানি ঢুকে যাওয়ার বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। এ দুর্ভোগ থেকে কখন যে রেহাই পাবো জানি না। ভবনের বিষটি লিখিতভাবে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কয়েকটি স্কুলে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে মৌখিকভাবে শুনেছি তবে লিখিত অভিযোগ এখনো পাইনি। তবে ভবনের বিষয়টি আমরা লিখিত পেয়েছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শীঘ্রই ভবন বরাদ্দ হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। সেখানে সাইক্লোন সেন্টার কাম স্কুল করা যেতে পারে। বিষয়টি সম্পূর্ণ অধিদপ্তরের।