০৬:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কেশবপুরে জমি জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক ব্যাংকার ও তহশীলদারের বিরুদ্ধে মামলা, সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ

####

যশোরের কেশবপুর উপজেলার কাটাখালী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন ও সাবেক ব্যাংকার হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে জমি জালিয়াতির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগীরা। উপজেলার দশকাহুনিয়া গ্রামের মৃত আনারুল করিমের ছেলে এসএম শাহিনুর ইসলাম বাদী হয়ে যশোরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কেশবপুর আমলী আদালতে এ মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্য যশোর সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার বাদী আদালতে দাখিলকৃত আরজিতে উল্লেখ করেন, কেশবপুর উপজেলার ১২১নং নারায়নপুর মৌজার আর এস ১৩১নং খতিয়ানের নালিশী ২৭৯৫, ২৭৯৬, ২৭৯৭, ২৯০৯ ও ২৯৫৩ দাগসহ বে-নালিশী দাগে মেহেরুন নেছা, লুৎফুন্নেছা ও শামসুন্নাহার প্রত্যেকের নামে ০.০৫৬ শতাংশসহ অন্যান্যরা আরএস রেকর্ডীয় মালিক। মেহেরুন্নেহার মৃত্যুর পর তার পুত্র মামলার বাদীসহ অন্য ছেলে ও মেয়েরা তার ওয়ারেশ হন। ১নং আসামি হাবিবুর রহমান সাবেক ব্যাংকার ও মেহেরুন্নেছার ভাই এবং ২নং আসামি জালিয়াতি চক্রের সদস্য ও উপজেলার কাটাখালী ভূমি অফিসের তহশীলদার। ১নং আসামি তার শরিক মামলার বাদীর মাতা ও বোন মেহেরুন্নেছা, লুতফুন্নেছা ও শামসুন্নারের সত্বাংশ বে-নালিশী আরএস ২৫৩২, ২৭৭৪, ২৮৩০, ২৮৩১, ও ২৮৩৪নং দাগ থেকে ৩৩শতক জমি ২০০৫ সালের ২৯ মে ৩১৬৬নং দানপত্র দলিলমুলে গ্রহণ করেন। এরপর ওই দলিল মূলে ৩৩ শতক জমি তৎকালীন সংশ্লিষ্ট তহশীল অফিসের মাধ্যমে তিনি নিজের নামে নামপত্তন করাসহ ভোগ দখলে আছেন । পরবর্তিতে ১নং আসামি একই তারিখের ৩১৬৬ নং দলিলের পৃষ্টা পরিবর্তন করে ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আমজাদ হোসেনের সহযোগীতায় জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ২৭৯৫, ২৭৯৬, ২৮৩০, ২৭৯৭ ও ২৯৫৩ দাগগুলি নতুন করে বসিয়ে নিয়ে আরও অতিরিক্ত ৩৩শতক জমি ১নং আসামির নামে নামজারী করে নিয়েছেন। নামজারির পাশাপাশি তিনি ওই দাগগুলির পৃথক ১৬৭৯নং খতিয়ানও খুলে নিয়েছেন। ১নং আসামি ২০০৫ সালের ২৯ মে সম্পাদিত ৩১৬৬ নং দলিলটি জাল-জালিয়াতি করে আরও অতিরিক্ত ৩৩ শতক জমি আত্নসাত করেছেন। ঘটনাটি জানতে পেরে বাদী ও স্বাক্ষীরা ১নং আসামির কাছে গেলে তারা এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দিয়েছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। ১নং আসামি হাবিবুর রহমান কেশবপুর জনতা ব্যাংকে চাকরিতে অনিয়ম-দূর্নীতির কারনে বরখাস্ত হয়েছেন। এ ব্যাপারে কাটাখালী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন বলেন, হাবিবুর রহমান ৩১৬৬নং দলিল মূলে তার নামে নামপত্তন করার জন্য সহকারী কমিশার(ভূমি) বরাবরে আবেদন করেন। সহকারী কশিশনার(ভূমি) এ ব্যাপারে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। আমি তার দলিল দেখে নামপত্তনের প্রতিবেদন দাখিল করি। সহকারী কমিশনার(ভূমি) শুনানীর মাধ্যমে তার নামে পত্তন করে দেন। পরবর্তিতে জাল-জালিয়াতির বিষয়টি জানতে পেরে ওই নামপত্তন বাতিলের জন্য আমি ২০২২সালের ২৩অক্টোবর সহকারী কমিশার(ভূমি) বরাবরে ১৫০ধারায় প্রতিবেদন দাখিল করেছি। এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার ভূমি ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর দু’পক্ষকে নোটিশও করেছেন। শুনানী শেষে জালিয়াতি প্রমানিত হওয়ায় হাবিবুর রহমানের নামপত্তন বাতিল করেছেন সহকারী কমিশনার।

মামলার বাদী এসএম শাহিনুর ইসলাম জানান, জাল-জালিয়াতি ধরা পড়ে চাকরী বাচানোর জন্য সহকারী ভুমি অফিসার আমজাদ হোসেন সংশোধনীর আবেদন করেন। সহকারী কমিশনার(ভুমি) ঘটনার সত্যতা পেয়ে হাবিবুর রহমানের নামপত্তন বাতিল করে রায় দিয়েছেন। কিন্তু সহকারী ভুমি অফিসার আমজাদ হোসেনের সহযোগীতায় আরও জাল-জালিয়াতি রয়েছে। সেগুলোও বাতিলের জন্য তিনি দাবী জানান। এছাড়া সহকারী কমিশনার(ভুমি) একটি খতিয়ানের বিষয়ে জালিয়াতির প্রমান পেয়েছেন। সেজন্য  জালিয়াতি চক্রের হোতা হাবিবুর রহমান ও সদস্য সহকারী ভুমি অফিসার আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবীও করেছেন তিনি। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

খুলনা টিভি রিপোর্টার্স ইউনিটি’র নব নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন 

কেশবপুরে জমি জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক ব্যাংকার ও তহশীলদারের বিরুদ্ধে মামলা, সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ

প্রকাশিত সময় : ১২:১৪:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জুলাই ২০২৩

####

যশোরের কেশবপুর উপজেলার কাটাখালী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন ও সাবেক ব্যাংকার হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে জমি জালিয়াতির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগীরা। উপজেলার দশকাহুনিয়া গ্রামের মৃত আনারুল করিমের ছেলে এসএম শাহিনুর ইসলাম বাদী হয়ে যশোরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কেশবপুর আমলী আদালতে এ মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্য যশোর সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার বাদী আদালতে দাখিলকৃত আরজিতে উল্লেখ করেন, কেশবপুর উপজেলার ১২১নং নারায়নপুর মৌজার আর এস ১৩১নং খতিয়ানের নালিশী ২৭৯৫, ২৭৯৬, ২৭৯৭, ২৯০৯ ও ২৯৫৩ দাগসহ বে-নালিশী দাগে মেহেরুন নেছা, লুৎফুন্নেছা ও শামসুন্নাহার প্রত্যেকের নামে ০.০৫৬ শতাংশসহ অন্যান্যরা আরএস রেকর্ডীয় মালিক। মেহেরুন্নেহার মৃত্যুর পর তার পুত্র মামলার বাদীসহ অন্য ছেলে ও মেয়েরা তার ওয়ারেশ হন। ১নং আসামি হাবিবুর রহমান সাবেক ব্যাংকার ও মেহেরুন্নেছার ভাই এবং ২নং আসামি জালিয়াতি চক্রের সদস্য ও উপজেলার কাটাখালী ভূমি অফিসের তহশীলদার। ১নং আসামি তার শরিক মামলার বাদীর মাতা ও বোন মেহেরুন্নেছা, লুতফুন্নেছা ও শামসুন্নারের সত্বাংশ বে-নালিশী আরএস ২৫৩২, ২৭৭৪, ২৮৩০, ২৮৩১, ও ২৮৩৪নং দাগ থেকে ৩৩শতক জমি ২০০৫ সালের ২৯ মে ৩১৬৬নং দানপত্র দলিলমুলে গ্রহণ করেন। এরপর ওই দলিল মূলে ৩৩ শতক জমি তৎকালীন সংশ্লিষ্ট তহশীল অফিসের মাধ্যমে তিনি নিজের নামে নামপত্তন করাসহ ভোগ দখলে আছেন । পরবর্তিতে ১নং আসামি একই তারিখের ৩১৬৬ নং দলিলের পৃষ্টা পরিবর্তন করে ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আমজাদ হোসেনের সহযোগীতায় জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ২৭৯৫, ২৭৯৬, ২৮৩০, ২৭৯৭ ও ২৯৫৩ দাগগুলি নতুন করে বসিয়ে নিয়ে আরও অতিরিক্ত ৩৩শতক জমি ১নং আসামির নামে নামজারী করে নিয়েছেন। নামজারির পাশাপাশি তিনি ওই দাগগুলির পৃথক ১৬৭৯নং খতিয়ানও খুলে নিয়েছেন। ১নং আসামি ২০০৫ সালের ২৯ মে সম্পাদিত ৩১৬৬ নং দলিলটি জাল-জালিয়াতি করে আরও অতিরিক্ত ৩৩ শতক জমি আত্নসাত করেছেন। ঘটনাটি জানতে পেরে বাদী ও স্বাক্ষীরা ১নং আসামির কাছে গেলে তারা এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দিয়েছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। ১নং আসামি হাবিবুর রহমান কেশবপুর জনতা ব্যাংকে চাকরিতে অনিয়ম-দূর্নীতির কারনে বরখাস্ত হয়েছেন। এ ব্যাপারে কাটাখালী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন বলেন, হাবিবুর রহমান ৩১৬৬নং দলিল মূলে তার নামে নামপত্তন করার জন্য সহকারী কমিশার(ভূমি) বরাবরে আবেদন করেন। সহকারী কশিশনার(ভূমি) এ ব্যাপারে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। আমি তার দলিল দেখে নামপত্তনের প্রতিবেদন দাখিল করি। সহকারী কমিশনার(ভূমি) শুনানীর মাধ্যমে তার নামে পত্তন করে দেন। পরবর্তিতে জাল-জালিয়াতির বিষয়টি জানতে পেরে ওই নামপত্তন বাতিলের জন্য আমি ২০২২সালের ২৩অক্টোবর সহকারী কমিশার(ভূমি) বরাবরে ১৫০ধারায় প্রতিবেদন দাখিল করেছি। এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার ভূমি ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর দু’পক্ষকে নোটিশও করেছেন। শুনানী শেষে জালিয়াতি প্রমানিত হওয়ায় হাবিবুর রহমানের নামপত্তন বাতিল করেছেন সহকারী কমিশনার।

মামলার বাদী এসএম শাহিনুর ইসলাম জানান, জাল-জালিয়াতি ধরা পড়ে চাকরী বাচানোর জন্য সহকারী ভুমি অফিসার আমজাদ হোসেন সংশোধনীর আবেদন করেন। সহকারী কমিশনার(ভুমি) ঘটনার সত্যতা পেয়ে হাবিবুর রহমানের নামপত্তন বাতিল করে রায় দিয়েছেন। কিন্তু সহকারী ভুমি অফিসার আমজাদ হোসেনের সহযোগীতায় আরও জাল-জালিয়াতি রয়েছে। সেগুলোও বাতিলের জন্য তিনি দাবী জানান। এছাড়া সহকারী কমিশনার(ভুমি) একটি খতিয়ানের বিষয়ে জালিয়াতির প্রমান পেয়েছেন। সেজন্য  জালিয়াতি চক্রের হোতা হাবিবুর রহমান ও সদস্য সহকারী ভুমি অফিসার আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবীও করেছেন তিনি। ##