০৯:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
।।ফলোআপ।।

কেসিসির মশক নিধনের তেল চুরির ঘটনায় অবশেষে মামলা : বিভাগীয় প্রধানসহ একাধিক কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ

####

খুলনা মহানগরীর মশক নিধনের ওষুধ ও তেল চুরির ঘটনায় অবশেষে মামলা দায়ের করেছে খুলনা সিটি করপোরেশন(কেসিসি)কর্তৃপক্ষ। কেসিসি কঞ্জারভেন্সী বিভাগের গার্বেজ ট্রাকের সুপারভাইজার মো নাজমুল হক বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩-৪জনকে আসামী করে  সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। সোমবার বিকেলে সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মো: মোমতাজুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার আসামীরা হরো-কঞ্জারভেন্সী বিভাগের অস্থায়ী স্প্রে ম্যান মো.অয়ন গাজী(২০), মো.মামুন জোয়াদ্দার(২১), আল-মাহফুজ(২১), সবুজ হোসেন(২৭), মো.সম্রাট হাওলাদার(২৮), মো. রবিউল ইসলাম(৪৫) এবং চোরাই তেল ক্রেতা মো. আল আমিন(৩৫)। তবে তেল চুরির সময় আসামীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও এজাহারে ২জনকে পালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করায় কেসিসি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আসামীকে পালানোর সহায়তার অভিযোগ উঠেছে।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, খুলনা সিটি করপোরেশন(কেসিসি)’র কঞ্জারভেন্সী বিভাগের তত্ত্বাবধানে মামলার ১-৬নং আসামীরা মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড এলাকায় মশক নিধনের জন্য প্রদত্ত তেল মেশিনের সাহায্যে স্প্রে করে। ঘটনার দিন তারা চারজন স্প্রের জন্য প্রাপ্ত ৪০লিটার কালো তেল স্প্রে না করে সোনাডাঙ্গা থানার গোবরচাকা ১নং ক্রস রোড বাংলালিংক অফিসের পিছনের গলিতে বিক্রির জন্য মুছা আজমের বাড়ীর নিচে লুকিয়ে রাখে। পরে তেল বিক্রিকালে স্থানীয়দের সহায়তায় সেখান থেকে আসামীদের আটক করা হয়। তবে ৬নং আসামী সুপারভাইজার মো. রবিউল ইসলাম এবং ৭নং আসামী চোরাই তেল ক্রেতা মো. আল আমিন পালিয়ে যায়।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, কেসিসির মশক নিয়ন্ত্রন সুপারভাইজার মো. রবিউল ইসলাম তেল বিক্রির সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা রবিউল ইসলামের ছবি ও ভিডিও ধারন করে। এ সময় কেসিসির কঞ্জারভেন্সি বিভাগের প্রধান আব্দুল আজিজসহ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। যা স্থানীয় পত্রিকায় আটককৃত ৪ জনসহ রবিউল ইসলামের ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। কেসিসির কনজারভেন্সি বিভাগের কর্মকর্তারা মামলায় তাকে পলাতক দেখান তাহলে সেটি অপরাধ থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন বলে এলাকাবাসী জানান। তারা আরো অভিযোগ করেন, কেসিসির মশক নিধন কায্যর্ক্রম ও কঞ্জারভেন্সি বিভাগের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে এভাবে ওষুধ-তেলসহ অন্যান্য উপকরণ যথাযথ ব্যবহার না করে চোরাই পথে বিক্রি করে আসছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে এলাকার মানুষ কোন কথা বলতে সাহস পায় না। এ অনিয়ম ও দূর্ণীতিতে কেসিসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান ইঞ্জিঃ আব্দুল আজিজসহ একাধিক কর্মকর্তা জড়িত বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।
মামলার বাদী কেসিসির কঞ্জারভেন্সী বিভাগের গারবেজ ট্রাকের সুপারভাইজার মো নাজমুল হক জানান, কঞ্জারভেন্সী বিভাগের প্রধান ইঞ্জিয়ার আব্দুল আজিজের নির্দেশে বাদী হয়ে সোনাডাঙ্গা থানায় ৭জনের নামে মামলা করেছি। তবে ঘটনাস্থল থেকে কাদেরকে আটক করা হয়েছে সে বিষয়ে আমি অবহিত না। বিষয়টি পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভালো বলতে পারবেন বলেও তিনি জানান।

কেসিসির কঞ্জারভেন্সী ও মশক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের প্রধান ইঞ্জিঃ আব্দুল আজিজ জানান, নগরীতে ডেঙ্গুর প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কেসিসির পক্ষ থেকে মশক নিধন কায্যর্ক্রম জোরদার করা হয়েছে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার মশক নিধন কায্যর্ক্রমের কয়েকজন কর্মচারী চুরি করে তেল বিক্রি করার ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ৪জনকে আটক এবং ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত কর্মচারীদেরকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ চুরির ঘটনার সাথে তিনিসহ একাধিক কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট থাকার বিষয় অস্বীকার করে বলেন, এ ধরণের অনিয়ম-দূর্ণীতির সাথে তার কোন সংর্শ্লিষ্টতা নেই।এমনকি ৬নং আসামী রবিউল ইসলামসহ জড়িত অন্য আসামীদের পালাতে সহযোগীতার অভিযোগ ও তিনি অস্বীকার করেন।

কেসিসির প্রধান নিবাহী কমকর্তা লষ্কর তাজুল ইসলাম জানান, সারা দেশের ন্যায় খুলনায়ও ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় কেসিসি মশক নিধনে তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এ সময়ে মশক নিধনের ওষুধ-তেল চুরির ঘটনা খুবই অপরাধজনক। ইতিমধ্যেই ঘটনার সাথে জড়িত আউটসোর্সিংয়ের চারজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া কেসিসির স্থায়ী র্কমচারী রবিউল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করে শোকজ করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

উল্লেখ্য, গত ২৮জুলাই দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকায় মশক নিধনের তেল চুরি-৫জন বরখাস্ত র্শীষক সংবাদ প্রকাশিত হয়। ##

 

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে নগরীতে বিক্ষোভ-সমাবেশ

।।ফলোআপ।।

কেসিসির মশক নিধনের তেল চুরির ঘটনায় অবশেষে মামলা : বিভাগীয় প্রধানসহ একাধিক কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ

প্রকাশিত সময় : ০১:১২:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০২৩

####

খুলনা মহানগরীর মশক নিধনের ওষুধ ও তেল চুরির ঘটনায় অবশেষে মামলা দায়ের করেছে খুলনা সিটি করপোরেশন(কেসিসি)কর্তৃপক্ষ। কেসিসি কঞ্জারভেন্সী বিভাগের গার্বেজ ট্রাকের সুপারভাইজার মো নাজমুল হক বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩-৪জনকে আসামী করে  সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। সোমবার বিকেলে সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মো: মোমতাজুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার আসামীরা হরো-কঞ্জারভেন্সী বিভাগের অস্থায়ী স্প্রে ম্যান মো.অয়ন গাজী(২০), মো.মামুন জোয়াদ্দার(২১), আল-মাহফুজ(২১), সবুজ হোসেন(২৭), মো.সম্রাট হাওলাদার(২৮), মো. রবিউল ইসলাম(৪৫) এবং চোরাই তেল ক্রেতা মো. আল আমিন(৩৫)। তবে তেল চুরির সময় আসামীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও এজাহারে ২জনকে পালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করায় কেসিসি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আসামীকে পালানোর সহায়তার অভিযোগ উঠেছে।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, খুলনা সিটি করপোরেশন(কেসিসি)’র কঞ্জারভেন্সী বিভাগের তত্ত্বাবধানে মামলার ১-৬নং আসামীরা মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড এলাকায় মশক নিধনের জন্য প্রদত্ত তেল মেশিনের সাহায্যে স্প্রে করে। ঘটনার দিন তারা চারজন স্প্রের জন্য প্রাপ্ত ৪০লিটার কালো তেল স্প্রে না করে সোনাডাঙ্গা থানার গোবরচাকা ১নং ক্রস রোড বাংলালিংক অফিসের পিছনের গলিতে বিক্রির জন্য মুছা আজমের বাড়ীর নিচে লুকিয়ে রাখে। পরে তেল বিক্রিকালে স্থানীয়দের সহায়তায় সেখান থেকে আসামীদের আটক করা হয়। তবে ৬নং আসামী সুপারভাইজার মো. রবিউল ইসলাম এবং ৭নং আসামী চোরাই তেল ক্রেতা মো. আল আমিন পালিয়ে যায়।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, কেসিসির মশক নিয়ন্ত্রন সুপারভাইজার মো. রবিউল ইসলাম তেল বিক্রির সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা রবিউল ইসলামের ছবি ও ভিডিও ধারন করে। এ সময় কেসিসির কঞ্জারভেন্সি বিভাগের প্রধান আব্দুল আজিজসহ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। যা স্থানীয় পত্রিকায় আটককৃত ৪ জনসহ রবিউল ইসলামের ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। কেসিসির কনজারভেন্সি বিভাগের কর্মকর্তারা মামলায় তাকে পলাতক দেখান তাহলে সেটি অপরাধ থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন বলে এলাকাবাসী জানান। তারা আরো অভিযোগ করেন, কেসিসির মশক নিধন কায্যর্ক্রম ও কঞ্জারভেন্সি বিভাগের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে এভাবে ওষুধ-তেলসহ অন্যান্য উপকরণ যথাযথ ব্যবহার না করে চোরাই পথে বিক্রি করে আসছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে এলাকার মানুষ কোন কথা বলতে সাহস পায় না। এ অনিয়ম ও দূর্ণীতিতে কেসিসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান ইঞ্জিঃ আব্দুল আজিজসহ একাধিক কর্মকর্তা জড়িত বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।
মামলার বাদী কেসিসির কঞ্জারভেন্সী বিভাগের গারবেজ ট্রাকের সুপারভাইজার মো নাজমুল হক জানান, কঞ্জারভেন্সী বিভাগের প্রধান ইঞ্জিয়ার আব্দুল আজিজের নির্দেশে বাদী হয়ে সোনাডাঙ্গা থানায় ৭জনের নামে মামলা করেছি। তবে ঘটনাস্থল থেকে কাদেরকে আটক করা হয়েছে সে বিষয়ে আমি অবহিত না। বিষয়টি পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভালো বলতে পারবেন বলেও তিনি জানান।

কেসিসির কঞ্জারভেন্সী ও মশক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের প্রধান ইঞ্জিঃ আব্দুল আজিজ জানান, নগরীতে ডেঙ্গুর প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কেসিসির পক্ষ থেকে মশক নিধন কায্যর্ক্রম জোরদার করা হয়েছে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার মশক নিধন কায্যর্ক্রমের কয়েকজন কর্মচারী চুরি করে তেল বিক্রি করার ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ৪জনকে আটক এবং ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত কর্মচারীদেরকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ চুরির ঘটনার সাথে তিনিসহ একাধিক কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট থাকার বিষয় অস্বীকার করে বলেন, এ ধরণের অনিয়ম-দূর্ণীতির সাথে তার কোন সংর্শ্লিষ্টতা নেই।এমনকি ৬নং আসামী রবিউল ইসলামসহ জড়িত অন্য আসামীদের পালাতে সহযোগীতার অভিযোগ ও তিনি অস্বীকার করেন।

কেসিসির প্রধান নিবাহী কমকর্তা লষ্কর তাজুল ইসলাম জানান, সারা দেশের ন্যায় খুলনায়ও ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় কেসিসি মশক নিধনে তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এ সময়ে মশক নিধনের ওষুধ-তেল চুরির ঘটনা খুবই অপরাধজনক। ইতিমধ্যেই ঘটনার সাথে জড়িত আউটসোর্সিংয়ের চারজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া কেসিসির স্থায়ী র্কমচারী রবিউল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করে শোকজ করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

উল্লেখ্য, গত ২৮জুলাই দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকায় মশক নিধনের তেল চুরি-৫জন বরখাস্ত র্শীষক সংবাদ প্রকাশিত হয়। ##