
গভীর গ্যাস সংকটে আসন্ন। গৃহস্থালিসহ হোটেল রেস্তোঁরায় জ্বালানি বিপর্যয়ের আশংকা করা হচ্ছে। বর্তমানে গ্যাস সংকটে শিল্প কারখানায় নেমে এসেছে স্থবিরতা। বিঘ্ন ঘটছে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও। বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ভুগছেন সাধারণ মানুষ। সংকট নিরসনে সরকার যানবাহনে ব্যবহৃত তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (সিএনজি) রেশনিং করার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি কতোটুকু সামাল দেয়া সম্ভব হবে, সেটাই বড় প্রশ্ন। জানা গেছে, দেশে এই মুহূর্তে যে অবকাঠামো রয়েছে তাতে গ্যাসের সংকট দৈনিক একশ’ কোটি ঘনফুট।
গ্যাস প্রাকৃতিক সম্পদ এর মজুদ সীমাহীন নয়। নতুন নতুন উৎস ক্ষেত্র খুঁজে বের করতে না পারলে এর মজুদ শেষ হবে, শুরু হবে গ্যাসের সংকট -এটাই স্বাভাবিক। দেশে বর্তমানে গ্যাসের যে মজুদ রয়েছে তাতে আগামি দশ বছরের বেশি চলবে না বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। তাদের মতে, সব সময় একই পরিমাণে গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব নয়। গ্যাস যতোই উত্তোলন করা হবে, গ্যাস ক্ষেত্রের চাপ ততোই কমতে থাকবে। ফলে এক পর্যায়ে গ্যাসের মজুদ থাকলেও গ্যাস উত্তোলনের পরিমাণ ক্রমাগত কমতে থাকবে। বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে, গ্যাসের অভাবে দেশে দুই হাজার তিনশ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বিঘ্নিত হচ্ছে। আর উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় গ্যাস দিয়েই বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেশি আগ্রহী বিদ্যুৎ বিভাগ।
এই সংকট নিরসনে গবেষণা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন মূলত বিদেশ থেকে এলএনজি গ্যাস আমদানি ও নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিস্কারের মাধ্যমে সংকট মোকাবেলা সম্ভব। তারা বলছেন, গত ১০/১৫ বছরের মধ্যে দেশে উল্লেখযোগ্য কোন গ্যাসক্ষেত্র আবিস্কার হয়নি। তাদের মতে, দেশের গভীর সমুদ্রে গ্যাস প্রাপ্তির যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দরকার যথাযথ অনুসন্ধান। অপর দিকে সরকারের বক্তব্য হচ্ছে, সংকট মোকাবেলায় আমদানি করা হচ্ছে গ্যাস। সব মিলিয়ে গ্যাসের এই বিপর্যয় মোকাবেলায় গ্যাস ব্যবহারকারিদেরও সতর্ক হতে হবে। বন্ধ করতে হবে গ্যাসের অপচয়।