####
খুলনায় বটিয়াঘাটায় সুপার কুইন ফুটবল একাডেমির নারী ফুটবলার মঙ্গলী বাকচী, সাদিয়া নাসরিনসহ ৪জনকে মারপিট করা ও ভয়ভিতি হুমকি প্রদর্শনের প্রতিবাদে ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে নারী ফুটবলারদের উপর হামলা ও মারপিটের প্রতিবাদে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহষ্পতিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠির অধিকার আন্দোলন, গীতা ফাউন্ডেশন ও নাগরিক অধিকার সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে এ মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে সমাবেশে বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠির অধিকার আন্দোলনের খুলনা জেলা কমিটির সভাপতি সুব্রত কুমার মিস্ত্রীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সভাপতি বিভুতোশ রায়। মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নিশিত রঞ্জন মিস্ত্রী, গীতা ফাউন্ডেশনের সভাপতি এ্যাডভোকেট প্রসেনজিৎ দত্ত, খুলনা জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক শিবপদ দাস, শান্তা মন্ডল, পরিত্র মন্ডল, বন্যা পাল, সুপার কুইন ফুটবল একাডেমীর সহসভাপতি রনজিৎ বৈরাগী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা জবা বৈরাগী, ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন ঋতু বৈরাগী, ফুটবরার জুই মন্ডল, হাজেরা খাতুন প্রমুখ।
মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ২৭জুলাই বৃহষ্পতিবার তেঁতুলতলা সুপার কুইন ফুটবল একাডেমীর নারী খেলোয়াড়রা প্রতিদিনের ন্যায় মাঠে অনুশীলন করছিলেন। নারী হয়ে ফুটবল খেলায় দুবৃর্ত্তরা নারী খেলোয়াড়দের ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া এবং সেটা তার পিতা-মাতাকে দেখিয়ে নানা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও গালিগালাজ করে। এ সময় স্থানীয় নূর আলম ও তার মেয়ে নুপুর খাতুন সাদিয়াকে ফুটবল খেলতে দেবে না বলে হুমকি দেয়। পরে সাদিয়া তাদের ছবি তোলা ও তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়ে অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদ করতে গেলে নূর আলম, তার মেয়ে নুপুর খাতুন তাকে বেপরোয়া মারপিট করে। এ সময় তার চিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। পরে বিষয়টি তার মা রাবেয়া বেগম ও ক্লাবের কোচ মো: মোস্তাকুজ্জামানকে জানায়। শনিবার ফুটবল টিমের খেরোয়াড়সহ সাদিয়ার মা ও কোচ মিলে নূর আলমের বাড়ীতে গিয়ে মারপিটের ঘটনা জানতে চাইলে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে নারী ফুটবলারদের উপর আবারও দা, কুড়াল, লাঠিসোটা, রড ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এ সময় নূল আলম লোহার রড দিয়ে খুলনা জেলা অনুর্ধ-১৭ দলের অন্যতম নারী ফুটবল খেলোয়াড় মলঙ্গী বাগচীর মাথায় আঘাত করলে সে জ্ঞান হারিয়ে মটিতে পড়ে যায়। পরে জুই মন্ডল এগিয়ে এলে তাকেও মারপিট করে। তখন নূর আলম, তার ছেলে আলাউদ্দিন ও সালাউদ্দিন এবং মেয়ে নুপুর মিলে মলঙ্গী ও জুইকে রশি দিয়ে বেধে আবারও মারপিট করে। দূবৃর্ত্তদের হামলায় সাদিয়া নাসরিন, মলঙ্গী বাগচী, জুই মন্ডল, হাজেরা খাতুনসহ কয়েকজন রক্তাক্ত জখম হয়। পরবর্তীতে খবর পেয়ে স্থানীয়রা ঘটনাস্থরে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ হামলার ঘটনায় সাদিয়া নাসরিন বাদী হয়ে হামরাকালী তেতুলতলা গ্রামের আজিজ খানের ছেলে নূর আলম, নূর আলমের ছেলে আলাউদ্দিন, সালাউদ্দিন ও মেয়ে নূপুর খাতুন, স্ত্রী রঞ্জি বেগম এবং মনোয়ারা বেগমের নামোল্লেখ করে বটিয়াঘাটা থানায় মামলা করেন। পুলিশ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে রবিবার নূর আলমকে আটক করে। পরে মঙ্গলবার আসামীরা মামলা তুলে নিতে সাদিয়াকে ভয়ভীতিসহ হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় সাদিয়া জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারন ডায়রী করেছেন। সমাবেশ থেকে বক্তারা ফুটবলারদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।এবং এখনও হামলাকারীরা গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একই সাথে হামলাকারী যেই হোক না কেন নারীর স্বাধীনতা ও নারী জাগরন বিরোধী এসব দূবৃর্ত্তদেরকে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তির দাবী জানান। ##