বাগেরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম তানু ভুইয়া হত্যাকাণ্ডের মূল ঘাতক ফরিদ(২৯) সহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (১২ নভেম্বর) রাতে পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলার বালিপাড়া গ্রামের একটি বাড়ি থেকে এদের আটক করা হয়। আটককৃতদের কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন ও এক রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসা কেন্দ্রীক দ্বন্দের কারণে এই হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন গ্রেফতারকৃতরা। রবিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক এসব তথ্য জানান।
এদিকে শনিবার রাতে নিহত নূরে আলম তানু ভুইয়ার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭—৮জনকে আসামী করে বাগেরহাট মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, এজাহারনামীয় আসামী বাগেরহাট শহরের পূর্ববাসাবাটি এলাকার ফরিদ শেখ (২৯), মনির মিস্ত্রি (২৬), রাতুল (২৭), সিরাজুল (২৭), আল আমিন (৩০), সুমন (২৬), মুকুল শেখ(৫৩), কাড়াপাড়া এলাকার সোহাগ (২৫)। এছাড়া হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে কবির (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টে্রট আদালতের বিচারক বেলাল হোসেন আসামীদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বলেন, হত্যার পর থেকেই অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত ছিল। শনিবার রাতে প্রধান আসামী ফরিদ শেখের ফুফু বাড়ি থেকে একত্রে ৯জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত দ্বন্দে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এছাড়া এজাহার নামীয় অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি পদ্মপুকুরের মোড় এলাকায় ফরিদ নামের একব্যক্তির গুলিতে নিহত হন নুরে আলম তানু ভুইয়া। নিহত নুরে আলম তানু ভুইয়া বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি এলাকার আব্দুর রউফ ভুইয়ার ছেলে। তিনি বাগেরহাট জেলা ছাত্র দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। শনিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে নামাজে জানাজা শেষে সরুই কবর স্থানে দাফন করা হয় সাবেক এই ছাত্র নেতাকে। হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে দোয়া, মোনাজাত ও বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষনা করেছে স্বেচ্ছাসেবক দল।