০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতে পাচারের পর হত্যা : মূল হত্যাকারীসহ ০৩ পাচারকারীকে গ্রেফতার 

  • অফিস ডেক্স।।
  • প্রকাশিত সময় : ০৯:১২:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ৫০ পড়েছেন

###    ঢাকা থেকে চাকরীর প্রলোভনে ভারতে পাচারের পর হত্যার ঘটনার মূল হত্যাকারীসহ ০৩ পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। শুক্রবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খুলনা ও যশোরে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলো-কালিয়ার আলী হোসেন(২০), পাচারকারীচক্রের সদস্য মোঃ আল আমিন(১৯) ও কুলসুম বেগম(৪৫)।

র‌্যাব জানায়, ভারতে বসবাসরত যশোর অভয়নগরের নবাব ও পিরোজপুর ভান্ডারিয়ার বৃষ্টি পরস্পর স্বামী-স্ত্রী। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নারীদেরকে চাকুরীর ও অর্থের প্ররোভন দিয়ে ভারতে পাচারকারী চক্রের মূলহোতা। তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তাদের চক্রের সদস্যদের সাহায্যে অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভাতরে পাচার এবং বিক্রি করে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজে বাধ্য করে। এই পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য বৃষ্টির মা কুলসুম এবং ভাই আল আমিন যারা খুলনার সদর থানা এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করে মানবপাচারে তার মেয়ে এবং মেয়ে জামাইকে সহযোগীতা করে আসছে। গত বছর ঢাকার ডেমরা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বাবা-মায়ের সাথে বসবাসরত টুম্পাকে আসামীরা আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে, টিকটক সেলিব্রাটি বানিয়ে দেওয়া ও বিদেশে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেয়। পরে তাকে পাচারকারী বৃষ্টি এবং নবাবের পরিকল্পনায় লেংরা রমজান এবং জুয়েল বিশ্বাসের সহযোগীতায় ঢাকা থেকে খুলনায় নিয়ে আসে। এরপর বৃষ্টির মা টুম্পাকে কুলসুমের বাসায় ৩দিন রাখে। পরবর্তীতে বৃষ্টি এবং নবাবের আদেশে কুলসুম এবং আল আমিন তাকে মানবপাচার চক্রের সাহায্যে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে। ভারতে একটি বাসায় আটকে রেখে ভিকটিমকে ভারতের এনআইডি কার্ড ও আধার কার্ড তৈরি করে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করাতো। এরপর বৃষ্টি এবং নবাবের নির্দেশে আলী হোসেনের জিম্মায় অনৈতিক কাজ করার জন্য ভিকটিমকে ২মাস আটকে রাখা হয়েছিল এবং জোরপূর্বক ভিকটিমের সাথে আলী হোসেনের টিকটক ভিডিও বানানো হতো, পাশাপাশি ভিকটিমকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো। পরবর্তীতে ভিকটিম পাচারকারীদের সকল গোপন তথ্য জেনে যায় এবং তাদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে দেশে আসার চেষ্টা করে। বিষয়টি নবাব ও বৃষ্টিকে আলী হোসেন জানায়। তখন বৃষ্টি এবং নবাব পাচারকারীদের গোপন তথ্য ফাঁস করতে না পারে সেজন্য আলী হোসেনকে হত্যা করার নির্দেশ দেয়। গত ২৬জানুয়ারি ভারতের গুজরাট পুলিশ ফোন করে ভিকটিমের বাবাকে জানায় যে, তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে অন্য একটি ফোনের মাধ্যমে ভিকটিমের বাবাকে জানানো হয় আসামী আলী হোসেন তার মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। এ বিষয়ে ভিকটিমের বাবা র‌্যাব বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। র‌্যাব তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আসামীদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি র‌্যাব-৬ খুলনার স্পেশাল কোম্পানি ও যশোর ক্যাম্পের একটি যৌথ টিম যশোর ও খুলনা এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় হত্যাকারী কালিয়ার আলী হোসেন(২০), পাচারকারীচক্রের সদস্য মোঃ আল আমিন(১৯) ও কুলসুম বেগম(৪৫)কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা র‌্যাবের কাছে অপরাধের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে ডিএমপি ঢাকার ডেমরা থানায় হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik adhumati

জনপ্রিয়

খুলনা টিভি রিপোর্টার্স ইউনিটি’র নব নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন 

ভারতে পাচারের পর হত্যা : মূল হত্যাকারীসহ ০৩ পাচারকারীকে গ্রেফতার 

প্রকাশিত সময় : ০৯:১২:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

###    ঢাকা থেকে চাকরীর প্রলোভনে ভারতে পাচারের পর হত্যার ঘটনার মূল হত্যাকারীসহ ০৩ পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। শুক্রবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খুলনা ও যশোরে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলো-কালিয়ার আলী হোসেন(২০), পাচারকারীচক্রের সদস্য মোঃ আল আমিন(১৯) ও কুলসুম বেগম(৪৫)।

র‌্যাব জানায়, ভারতে বসবাসরত যশোর অভয়নগরের নবাব ও পিরোজপুর ভান্ডারিয়ার বৃষ্টি পরস্পর স্বামী-স্ত্রী। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নারীদেরকে চাকুরীর ও অর্থের প্ররোভন দিয়ে ভারতে পাচারকারী চক্রের মূলহোতা। তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তাদের চক্রের সদস্যদের সাহায্যে অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভাতরে পাচার এবং বিক্রি করে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজে বাধ্য করে। এই পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য বৃষ্টির মা কুলসুম এবং ভাই আল আমিন যারা খুলনার সদর থানা এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করে মানবপাচারে তার মেয়ে এবং মেয়ে জামাইকে সহযোগীতা করে আসছে। গত বছর ঢাকার ডেমরা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বাবা-মায়ের সাথে বসবাসরত টুম্পাকে আসামীরা আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে, টিকটক সেলিব্রাটি বানিয়ে দেওয়া ও বিদেশে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেয়। পরে তাকে পাচারকারী বৃষ্টি এবং নবাবের পরিকল্পনায় লেংরা রমজান এবং জুয়েল বিশ্বাসের সহযোগীতায় ঢাকা থেকে খুলনায় নিয়ে আসে। এরপর বৃষ্টির মা টুম্পাকে কুলসুমের বাসায় ৩দিন রাখে। পরবর্তীতে বৃষ্টি এবং নবাবের আদেশে কুলসুম এবং আল আমিন তাকে মানবপাচার চক্রের সাহায্যে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে। ভারতে একটি বাসায় আটকে রেখে ভিকটিমকে ভারতের এনআইডি কার্ড ও আধার কার্ড তৈরি করে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করাতো। এরপর বৃষ্টি এবং নবাবের নির্দেশে আলী হোসেনের জিম্মায় অনৈতিক কাজ করার জন্য ভিকটিমকে ২মাস আটকে রাখা হয়েছিল এবং জোরপূর্বক ভিকটিমের সাথে আলী হোসেনের টিকটক ভিডিও বানানো হতো, পাশাপাশি ভিকটিমকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো। পরবর্তীতে ভিকটিম পাচারকারীদের সকল গোপন তথ্য জেনে যায় এবং তাদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে দেশে আসার চেষ্টা করে। বিষয়টি নবাব ও বৃষ্টিকে আলী হোসেন জানায়। তখন বৃষ্টি এবং নবাব পাচারকারীদের গোপন তথ্য ফাঁস করতে না পারে সেজন্য আলী হোসেনকে হত্যা করার নির্দেশ দেয়। গত ২৬জানুয়ারি ভারতের গুজরাট পুলিশ ফোন করে ভিকটিমের বাবাকে জানায় যে, তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে অন্য একটি ফোনের মাধ্যমে ভিকটিমের বাবাকে জানানো হয় আসামী আলী হোসেন তার মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। এ বিষয়ে ভিকটিমের বাবা র‌্যাব বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। র‌্যাব তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আসামীদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি র‌্যাব-৬ খুলনার স্পেশাল কোম্পানি ও যশোর ক্যাম্পের একটি যৌথ টিম যশোর ও খুলনা এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় হত্যাকারী কালিয়ার আলী হোসেন(২০), পাচারকারীচক্রের সদস্য মোঃ আল আমিন(১৯) ও কুলসুম বেগম(৪৫)কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা র‌্যাবের কাছে অপরাধের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে ডিএমপি ঢাকার ডেমরা থানায় হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। ##