০৯:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানবিক কার্যক্রমে নজীর গড়েছে শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংক

  • সুনীল দাস ।।
  • প্রকাশিত সময় : ০৬:৩৭:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০২৩
  • ১৩০ পড়েছেন

####
খুলনায় করোনা মহামারী থেকে শুরু করে গত তিন বছর নগরবাসীর দু:সময়ে ও বিপদে পাশে থেকে মানবিক কার্যক্রমের নজীর সৃষ্টি করেছে শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংক। সম্প্রতি এ সংগঠন ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে সুরক্ষায় নগরবাসীকে সচেতন করা ও অসুস্থতায় সেবা প্রদানের কার্যক্রমও শুরু করেছে। তিন বছর পূর্তিতে এ সংগঠনের পরিচালিত মানবিক সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রাখারও প্রতিশ্রæতি ব্যক্ত করেছেন প্রতিষ্ঠাতা শেখ সোহেলউদ্দিন। তিনি খুলনাবাসীর সুখে-দ:ুখে এবং যেকোন সংকট মোকাবেলায় আজীবন সেবা করার ব্যক্ত করেছেন।
জানা গেছে, ২০২০সালে সারা বিশ্বের মতো করোনা মহামারী বাংলাদেশেও মারাতœকভাবে বিস্তার লাভ কওে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। দেশের মানুষকে করোনার ভয়ংকর থাবা থেকে বাঁচাতে ২০২০ সালের ১৬ মার্চ থেকে সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে মানুষের চলাচলে কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করে সরকার। পরবর্তীতে পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। একটা সময় করোনার ভয়ে ভীত হয়ে মা তার সন্তানের কাছে যেত না, স্বামী দেখে না স্ত্রীকে, স্ত্রী ফেলে পালিয়ে যায় স্বামীকে। এমনকি জন্মদাতা পিতা-মাতার মৃতদেহ ফেলে পালিয়ে যায় সন্তান। সবাই শুধু নিজেকে বাঁচানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। করোনা মহামারী এ ভয়াল ঢেউ খুলনায়ও লাগে। প্রতিদিন হাসপাতালগুরোতে মৃত্যু আর রোগীর সারি যেন শেষ হয় না এমনই অবস্থা দাড়ায়। হাসপাতাল-ক্লিনিকুগরোতে দেখা দেয় জীবন বাচাতে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও অক্সিজেন সংকট। চরম এ দুঃসময়ে খুলনায় বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বর শেখ সোহেলের উদ্যোগে অসহায়, দ:ুস্থ্য ও ছিন্নমূল মানুষের সেবায় ২০২০ সালের ২১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে গড়ে ওঠে শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংক। যা ক্রমান্বয়ে বিস্তৃতি লাভ করে আর্ত-মানবতার সেবায় সর্বস্তরের মানুষের কল্যানে। এ কার্যক্রমে খুলনা জেলা যুবলীগের সভাপতি চৌধুরী মোহাম্মাদ রায়হান ফরিদের নেতৃত্বে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে করোনা মহামারীর ভয়াবহতা উপেক্ষা করে করোনা আক্রান্ত মানুষের সেবার কাজ শুরু করে। এক পর্যায়ে অসুস্থ্য রোগী ও মৃতদেও লাম পরিবহনের সংকট মোকাবেলায় খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য চালু করেন সেখ জুয়েল ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। নগরীর ১৬লক্ষাধিক অধিবাসীর সেবায় ২৪ঘন্টা চালু রাখা হয় শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংক ও শেখ জুয়েল এ্যাস্বুলেন্স সার্ভিস। চৌধুরী মোহাম্মাদ রায়হান ফরিদের তত্বাবধানে নগরবাসীর জন্য সম্পূর্ণ ফ্রি এই দুই সেবা মানুষের দোর গোড়ায় পৌছে দিতে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুই শতাধিক নেতাকর্মী। করোনার ভয়ে যখন নিজের জীবন বাচাতে একান্ত আপনজনকে ফেলে চলে যাচ্ছে মানুষ। ঠিক তখনই মাত্র একটি ফোন কল বা কোন ইনফরমেশনেই বিনামূল্যে তার বাড়িতে অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ নিয়ে পৌছে দিয়েছে শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংকের কর্মীরা। একই সাথে একটা ফোন কলেই কয়েখ মিনিটের মধ্যেই রোগীর বাড়ির সামনে পৌছাতো সেখ জুয়েল ফ্রি সার্ভিসের এ্যাম্বুলেন্স। এ সংগঠনের মানবিক কার্যক্রমে খুলনা মহানগরীর মানুষের মনে ফিরেছিল স্বস্তি। এ সংগঠনের মাধ্যমে এদুই সেবার পাশাপাশি হতদরিদ্র, দিন মজুর, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন এবং খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ৫০ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ এবং বাড়ি বাড়ি পৌছে দিয়ে মানবিক কার্যক্রমের নজীর স্থাপন করেছেন।
শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংকের প্রধান তত্ত¡াবধায়ক ও খুলনা জেলা যুবলীগের সভাপতি চৌধুরী রায়হান ফরিদ বলেন, আওয়ামীলীগের রাজনীতি মানুষের কল্যানে নিবেদিত। শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাাতা খুলনার মানুসের চরম দু:সময়ে অক্সিজেন, ওষুধ ও খাদ্য সংকটে যেন কেউ মারা না যায় সেজন্য উদ্যোগী হয়ে কাজ করেছেন। করোনাকালীন সময়ে দল, মত, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের জীবন বাচাতে আমাদেও টিম কাজ করেছে। টিমের ১৫০ জন সদস্য গত তিন বছর ধরে নগরীর মানুষকে অক্সিজেন সেবা দিয়ে আসছে। এরমধ্যে ১হাজার ৮শ ৩৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগীকে অক্সিজেন সেবা দেওয়া হয়েছে। ব্যক্তি ও পারিবারিক সেবার পাশাপাশি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ও ডক্টস পয়েন্টসহ বিভিন্ন হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট দেখা দিলে শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংক হাসপাতাল ও ক্লিনিকুগলোতেও অক্সিজেন সেবা দিতে এগিয়ে আসে। এসব প্রতিষ্ঠানে আমরা মাসের পর মাস সম্পূর্ন বিনামূল্যে আমাদের কর্মী দিয়ে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিয়েছি।
তিনি আরও জানান, খুলনায় হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ব্যক্তি ক্সেত্রে করোনা রোগীদেও যখন অক্সিজেনের জন্য হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে তখন শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংক বিনামূল্যে বাড়ী বাড়ী গিয়ে অক্সিজেন সেবা দিয়ে আসছে। পরে অক্সিজেন সেবার পাশপাশি সেখ জুয়েল এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের মাধ্যমে নগরীর অসহায়, দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষসহ নগরবাসিকে সেবা প্রদান করা হয়েছে। গত তিন বছরে নগরীর ১২শ ৩৭জন রোগীকে মুমুর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া ও বাড়িতে পৌছে দিয়েছে সেখ জুয়েল এম্বুলেন্স সার্ভিস টিমের সদস্যরা। আমাদের টিমের সকল সদস্য ও কর্মকর্তাগণ জীবনবাজি রেখে মহামারীর সময়ে দিনরাত কাজ করেছে। যার ধারাবাহিকতা এখনো অব্যাহত রয়েছে। গত বছরের শীতে ও চলতি বছরের ঈদের সময়ও অক্সিজেন ব্যাংকের পক্ষ থেকে খুলনা সদর আসনের এমপি সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের উপস্থিতিতে অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে এবারের ঈদে সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের উপস্থিতিতে অসহায় পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের অভিভাবক শেখ সোহেলের দিকনির্দেশনায় ডেঙ্গু রোগীদের সেবায় কাজ করার জন্য প্রস্তুুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের টিমের সদস্যরা নগরবাসিকে সচেতন করতে কাজ করছে। একই সাথে কোন সয়হতার প্রয়োজন হলেও শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংকের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
অক্সিজেন ব্যাংকের সেবা গ্রহীতা নগরীর ৩নং কাশেম সড়কের বাসিন্দা আসমা সুলতানা বলেন, আমার স্বামী করোনা আক্রান্ত হলে ফোন করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই সেখ জুয়েল ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের এ্যাম্বুলেন্স চলে আসে আমাদের বাসার সামনে। চিকিৎসার জন্য দু-তিনবার আমার স্বামীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা-নেওয়া করলেও আমাদের কোন টাকা লাগেনি। এবং করোনা শনাক্ত হওয়ার পরে যখন বাসায় রেখে চিকিৎসা করতে থাকি তখন অক্সিজেনের প্রয়োজন হলে অক্সিজেন ব্যাংকের চৌধুরী রায়হান ফরিদ ভাইয়ের নাম্বারে ফোন করলে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে সহায়তা করেছেন শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংকের কর্মীরা। এভাবে খুলনার অসহায় মানুষের পাশে থাকার জন্য শেখ সোহেল ভাইয়ের এমন মহৎ উদ্যোগকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। এ ধরনের মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার দাবিও জানান তিনি ।
শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সোহেল উদ্দিন বলেন, করোনা কালীন সময়ে চারিদিকে রোগীর জন্য অক্সিজেন সংকটের খবর পেয়ে ব্যথিত হয়ে পড়ি। এক পর্যায়ে খুলনার মানুষ যেন চিকিৎসা সেবার জন্য কষ্ট না পান এবং অক্সিজেন সংকটে কোন মানুষ যেন ধুকে দুকে না মরে এমন চিন্তা ভাবনা থেকে আমরা অক্সিজেন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করি। শুরু থেকে এ পর্যন্ত অক্সিজেন ব্যাংকের প্রধান সমন্বয়ক চৌধুরী মোহাম্মদ রায়হান ফরিদের নেতৃত্বে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করে করোনা আক্রান্ত ও বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে থেকে সেবা দিয়ে আসছে। প্রার্থনা করি এ ধরনের বড় মহামারী বিপদ যেন আর আমাদের মাঝে না আসে। তারপরেও খুলনার মানুষের যে কোনো ধরনের সমস্যা ও বিপদে পাশে থাকতে সব সময় প্রস্তুত রয়েছি। আমাদের শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংকের অক্সিজেনসহ যাবতীয় সেবা এখনো চলমান রয়েছে। শুধুই করোনা নয় অন্য যে কোনো বিপদেও শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংক একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। এটি সব সময় মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবে। বর্তমান ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক ও মানুষকে যেভাবে সাহায্য সহযোগিতা করার প্রয়োজন আমরা সেগুলো করার জন্য আমাদের টিমের সদস্যরাও সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। করোনাকালে অক্সিজেন ব্যাংকের ভূমিকা খুলনাবাসীর কাছে প্রশংসিত হয়েছে। আজীভন যেন এ ধরনের মানবিক সেবা দিয়ে যেতে পারি সেজন্য মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া এবং খুলনাবাসীর সহযোগীতা কামনা করেন তিনি। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে নগরীতে বিক্ষোভ-সমাবেশ

মানবিক কার্যক্রমে নজীর গড়েছে শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংক

প্রকাশিত সময় : ০৬:৩৭:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০২৩

####
খুলনায় করোনা মহামারী থেকে শুরু করে গত তিন বছর নগরবাসীর দু:সময়ে ও বিপদে পাশে থেকে মানবিক কার্যক্রমের নজীর সৃষ্টি করেছে শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংক। সম্প্রতি এ সংগঠন ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে সুরক্ষায় নগরবাসীকে সচেতন করা ও অসুস্থতায় সেবা প্রদানের কার্যক্রমও শুরু করেছে। তিন বছর পূর্তিতে এ সংগঠনের পরিচালিত মানবিক সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রাখারও প্রতিশ্রæতি ব্যক্ত করেছেন প্রতিষ্ঠাতা শেখ সোহেলউদ্দিন। তিনি খুলনাবাসীর সুখে-দ:ুখে এবং যেকোন সংকট মোকাবেলায় আজীবন সেবা করার ব্যক্ত করেছেন।
জানা গেছে, ২০২০সালে সারা বিশ্বের মতো করোনা মহামারী বাংলাদেশেও মারাতœকভাবে বিস্তার লাভ কওে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। দেশের মানুষকে করোনার ভয়ংকর থাবা থেকে বাঁচাতে ২০২০ সালের ১৬ মার্চ থেকে সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে মানুষের চলাচলে কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করে সরকার। পরবর্তীতে পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। একটা সময় করোনার ভয়ে ভীত হয়ে মা তার সন্তানের কাছে যেত না, স্বামী দেখে না স্ত্রীকে, স্ত্রী ফেলে পালিয়ে যায় স্বামীকে। এমনকি জন্মদাতা পিতা-মাতার মৃতদেহ ফেলে পালিয়ে যায় সন্তান। সবাই শুধু নিজেকে বাঁচানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। করোনা মহামারী এ ভয়াল ঢেউ খুলনায়ও লাগে। প্রতিদিন হাসপাতালগুরোতে মৃত্যু আর রোগীর সারি যেন শেষ হয় না এমনই অবস্থা দাড়ায়। হাসপাতাল-ক্লিনিকুগরোতে দেখা দেয় জীবন বাচাতে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও অক্সিজেন সংকট। চরম এ দুঃসময়ে খুলনায় বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বর শেখ সোহেলের উদ্যোগে অসহায়, দ:ুস্থ্য ও ছিন্নমূল মানুষের সেবায় ২০২০ সালের ২১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে গড়ে ওঠে শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংক। যা ক্রমান্বয়ে বিস্তৃতি লাভ করে আর্ত-মানবতার সেবায় সর্বস্তরের মানুষের কল্যানে। এ কার্যক্রমে খুলনা জেলা যুবলীগের সভাপতি চৌধুরী মোহাম্মাদ রায়হান ফরিদের নেতৃত্বে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে করোনা মহামারীর ভয়াবহতা উপেক্ষা করে করোনা আক্রান্ত মানুষের সেবার কাজ শুরু করে। এক পর্যায়ে অসুস্থ্য রোগী ও মৃতদেও লাম পরিবহনের সংকট মোকাবেলায় খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য চালু করেন সেখ জুয়েল ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। নগরীর ১৬লক্ষাধিক অধিবাসীর সেবায় ২৪ঘন্টা চালু রাখা হয় শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংক ও শেখ জুয়েল এ্যাস্বুলেন্স সার্ভিস। চৌধুরী মোহাম্মাদ রায়হান ফরিদের তত্বাবধানে নগরবাসীর জন্য সম্পূর্ণ ফ্রি এই দুই সেবা মানুষের দোর গোড়ায় পৌছে দিতে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুই শতাধিক নেতাকর্মী। করোনার ভয়ে যখন নিজের জীবন বাচাতে একান্ত আপনজনকে ফেলে চলে যাচ্ছে মানুষ। ঠিক তখনই মাত্র একটি ফোন কল বা কোন ইনফরমেশনেই বিনামূল্যে তার বাড়িতে অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ নিয়ে পৌছে দিয়েছে শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংকের কর্মীরা। একই সাথে একটা ফোন কলেই কয়েখ মিনিটের মধ্যেই রোগীর বাড়ির সামনে পৌছাতো সেখ জুয়েল ফ্রি সার্ভিসের এ্যাম্বুলেন্স। এ সংগঠনের মানবিক কার্যক্রমে খুলনা মহানগরীর মানুষের মনে ফিরেছিল স্বস্তি। এ সংগঠনের মাধ্যমে এদুই সেবার পাশাপাশি হতদরিদ্র, দিন মজুর, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন এবং খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ৫০ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ এবং বাড়ি বাড়ি পৌছে দিয়ে মানবিক কার্যক্রমের নজীর স্থাপন করেছেন।
শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংকের প্রধান তত্ত¡াবধায়ক ও খুলনা জেলা যুবলীগের সভাপতি চৌধুরী রায়হান ফরিদ বলেন, আওয়ামীলীগের রাজনীতি মানুষের কল্যানে নিবেদিত। শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাাতা খুলনার মানুসের চরম দু:সময়ে অক্সিজেন, ওষুধ ও খাদ্য সংকটে যেন কেউ মারা না যায় সেজন্য উদ্যোগী হয়ে কাজ করেছেন। করোনাকালীন সময়ে দল, মত, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের জীবন বাচাতে আমাদেও টিম কাজ করেছে। টিমের ১৫০ জন সদস্য গত তিন বছর ধরে নগরীর মানুষকে অক্সিজেন সেবা দিয়ে আসছে। এরমধ্যে ১হাজার ৮শ ৩৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগীকে অক্সিজেন সেবা দেওয়া হয়েছে। ব্যক্তি ও পারিবারিক সেবার পাশাপাশি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ও ডক্টস পয়েন্টসহ বিভিন্ন হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট দেখা দিলে শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংক হাসপাতাল ও ক্লিনিকুগলোতেও অক্সিজেন সেবা দিতে এগিয়ে আসে। এসব প্রতিষ্ঠানে আমরা মাসের পর মাস সম্পূর্ন বিনামূল্যে আমাদের কর্মী দিয়ে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিয়েছি।
তিনি আরও জানান, খুলনায় হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ব্যক্তি ক্সেত্রে করোনা রোগীদেও যখন অক্সিজেনের জন্য হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে তখন শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংক বিনামূল্যে বাড়ী বাড়ী গিয়ে অক্সিজেন সেবা দিয়ে আসছে। পরে অক্সিজেন সেবার পাশপাশি সেখ জুয়েল এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের মাধ্যমে নগরীর অসহায়, দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষসহ নগরবাসিকে সেবা প্রদান করা হয়েছে। গত তিন বছরে নগরীর ১২শ ৩৭জন রোগীকে মুমুর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া ও বাড়িতে পৌছে দিয়েছে সেখ জুয়েল এম্বুলেন্স সার্ভিস টিমের সদস্যরা। আমাদের টিমের সকল সদস্য ও কর্মকর্তাগণ জীবনবাজি রেখে মহামারীর সময়ে দিনরাত কাজ করেছে। যার ধারাবাহিকতা এখনো অব্যাহত রয়েছে। গত বছরের শীতে ও চলতি বছরের ঈদের সময়ও অক্সিজেন ব্যাংকের পক্ষ থেকে খুলনা সদর আসনের এমপি সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের উপস্থিতিতে অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে এবারের ঈদে সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের উপস্থিতিতে অসহায় পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের অভিভাবক শেখ সোহেলের দিকনির্দেশনায় ডেঙ্গু রোগীদের সেবায় কাজ করার জন্য প্রস্তুুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের টিমের সদস্যরা নগরবাসিকে সচেতন করতে কাজ করছে। একই সাথে কোন সয়হতার প্রয়োজন হলেও শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংকের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
অক্সিজেন ব্যাংকের সেবা গ্রহীতা নগরীর ৩নং কাশেম সড়কের বাসিন্দা আসমা সুলতানা বলেন, আমার স্বামী করোনা আক্রান্ত হলে ফোন করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই সেখ জুয়েল ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের এ্যাম্বুলেন্স চলে আসে আমাদের বাসার সামনে। চিকিৎসার জন্য দু-তিনবার আমার স্বামীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা-নেওয়া করলেও আমাদের কোন টাকা লাগেনি। এবং করোনা শনাক্ত হওয়ার পরে যখন বাসায় রেখে চিকিৎসা করতে থাকি তখন অক্সিজেনের প্রয়োজন হলে অক্সিজেন ব্যাংকের চৌধুরী রায়হান ফরিদ ভাইয়ের নাম্বারে ফোন করলে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে সহায়তা করেছেন শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংকের কর্মীরা। এভাবে খুলনার অসহায় মানুষের পাশে থাকার জন্য শেখ সোহেল ভাইয়ের এমন মহৎ উদ্যোগকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। এ ধরনের মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার দাবিও জানান তিনি ।
শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সোহেল উদ্দিন বলেন, করোনা কালীন সময়ে চারিদিকে রোগীর জন্য অক্সিজেন সংকটের খবর পেয়ে ব্যথিত হয়ে পড়ি। এক পর্যায়ে খুলনার মানুষ যেন চিকিৎসা সেবার জন্য কষ্ট না পান এবং অক্সিজেন সংকটে কোন মানুষ যেন ধুকে দুকে না মরে এমন চিন্তা ভাবনা থেকে আমরা অক্সিজেন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করি। শুরু থেকে এ পর্যন্ত অক্সিজেন ব্যাংকের প্রধান সমন্বয়ক চৌধুরী মোহাম্মদ রায়হান ফরিদের নেতৃত্বে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করে করোনা আক্রান্ত ও বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে থেকে সেবা দিয়ে আসছে। প্রার্থনা করি এ ধরনের বড় মহামারী বিপদ যেন আর আমাদের মাঝে না আসে। তারপরেও খুলনার মানুষের যে কোনো ধরনের সমস্যা ও বিপদে পাশে থাকতে সব সময় প্রস্তুত রয়েছি। আমাদের শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংকের অক্সিজেনসহ যাবতীয় সেবা এখনো চলমান রয়েছে। শুধুই করোনা নয় অন্য যে কোনো বিপদেও শেখ সোহেল অক্সিজেন ব্যাংক একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। এটি সব সময় মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবে। বর্তমান ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক ও মানুষকে যেভাবে সাহায্য সহযোগিতা করার প্রয়োজন আমরা সেগুলো করার জন্য আমাদের টিমের সদস্যরাও সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। করোনাকালে অক্সিজেন ব্যাংকের ভূমিকা খুলনাবাসীর কাছে প্রশংসিত হয়েছে। আজীভন যেন এ ধরনের মানবিক সেবা দিয়ে যেতে পারি সেজন্য মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া এবং খুলনাবাসীর সহযোগীতা কামনা করেন তিনি। ##