১০:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সিলেটে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ে

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে রেকর্ড টাইগারদের

  • অফিস ডেক্স।।
  • প্রকাশিত সময় : ০৬:৫৫:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩
  • ৫৪ পড়েছেন

###     সিলেটে ১০ উইকেটের জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করার পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডে বিপক্ষে রেকর্ড গড়েছে টাইগাররা। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো উইকেট না হারিয়েই জয়ের সিরিজ জয় বাংরাদেশের। টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ২৮ ওভার ১ বলে ১০১ রানে অলআউট আয়ারল্যান্ড। ক্যাম্পারের ব্যাট থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ রান যোগ হয়েছিল দলীয় খাতায় । বাংলাদেশের হয়ে ৩২ রানে ৫ উইকেট শিকার করে দিনের সেরা বোলার হাসান। এটি তার ক্যারিয়ারেরও সেরা বোলিং ফিগার। তাছাড়া ৩টি উইকেট পেয়েছেন তাসকিন। জবাবে তামিম-লিটনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৩ ওভার ১ বলে কোনো উইকেট না হারিয়েই জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। পুরো সিরিজ জুড়ে রানের খরায় ভুগতে থাকা তামিম ইকবাল এদিন ইনিংসের প্রথম ওভারেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের খাতা খুলেন। অপর প্রান্তে লিটন দাসও দুর্দান্ত খেলেন। লিটনেরও রানের খাতা খোলেন চার দিয়ে। দুই ওপেনারের ব্যাটে ৭ ওভারের আগেই দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করে বাংলাদেশ। ১০১ রানের অবিছিন্ন জুটিতে ৪১ রানই এসেছে অধিনায়ক তামিমের ব্যাট থেকে। আর লিটন অপরাজিত থেকেছেন ৫০ রান করে। এর আগে ইনিংস ওপেন করতে নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশি পেসারদের তোপের মুখে পড়ে দুই আইরিশ ওপেনার স্টিফেন ডোহেনি ও পল স্টার্লিং। পেস বান্ধব কন্ডিশনে যেটুকু বাড়তি সুবিধা নেয়া যায়, তার সবটুকুই নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ-হাসান মাহমুদরা। শুরু থেকেই আইরিশদের রানের চাকা আটকে রাখলেও উইকেটের দেখা পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় পঞ্চম ওভার পর্যন্ত। এই ওভারের তৃতীয় বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে রেখে গুড লেন্থে করেছিলেন হাসান, সঙ্গে ছিল বাড়তি পেস আর তাতেই পরাস্ত ডোহেনি। উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের হাতে ধরা পড়ার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২১ বলে ৮ রান। এরপর নবম ওভারে আক্রমণে ফিরে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন হাসান। এই পেসারকে খেলতে এদিন চোখে রীতিমতো সরষে ফুল দেখেছেন আইরিশ ব্যাটাররা। এবার অফ স্টাম্পের বাইরে চতুর্থ স্টাম্প বরাবর রেখে গুড লেন্থে ফেলেছিলেন হাসান। ইন সুইং করে ভেতরে ঢোকা বল ব্যাটে খেলতে পারেননি স্টার্লিং, সরাসরি তার প্যাডে আঘাত হানে। তাতে হাসানের আবেদনে সাড়া দিতে খুব একটা সময় নেননি আম্পায়ার। সাজঘরে ফেরারা আগে ১২ বলে ৭ রান করেছেন এই অভিজ্ঞ ওপেনার। স্টার্লিং ফেরার দুই বল পর আবারও আঘাত হানেন হাসান। এবার তার শিকার হ্যারি ট্যাক্টর। ওভারের চতুর্থ বলটি ব্যাক অব লেন্থে রেখেছিলেন হাসান, সেখান থেকে ভেতরে ঢোকা বলে ব্যাট চালিয়েও পুরোপুরি পরাস্ত হন এই ব্যাটার। বল তার পায়ে আঘাত হানলে আবেদন করেন হাসান। কিন্তু আম্পায়ার তাতে সাড়া দেননি। ফলে রিভিউ নেন তামিম ইকবাল। আর তখনই আম্পায়ার তার সিদ্ধান্ত বদলে আউট দিতে বাধ্য হন। সাজঘরে ফেরার আগে ৩ বল খেলেও রানের খাতাই খুলতে পারেননি ট্যাক্টর। পরের ওভারে আক্রমণে আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদও। ওভারের দ্বিতীয় বলটি খানিকটা শর্ট লেন্থে ফেলে অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বের করে নিয়েছিলেন তাসকিন, সেখানে ফুটওয়ার্ক ছাড়াই জায়গায় দাঁড়িয়ে খোঁচা দিয়ে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন অ্যান্ডি বার্লবির্নি। আর তাতে কোনো ভুল করেনি দ্বিতীয় স্লিপে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত। ৬ রান করে অধিনায়ক ফিরে গেলে ২৬ রানেই টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটারকে হারায় আইরিশরা। দলীয় রান ত্রিশ পেরোনোর আগেই টপ অর্ডার ব্যাটারদের হারিয়ে যখন ধুঁকছিল আয়ারল্যান্ড, তখন টাকারকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন কুর্টিস ক্যাম্পার। এই দুইজনের দৃঢ়তায় আইরিশরা আর কোনো উইকেট না হয়ারিয়ে অর্ধশতক পূর্ণ করে। এরপরের গল্পটা শুধুই বাংলাদেশি পেসারদের। সিলেটে এদিন রীতিমতো রাজত্ব করেছেন তারা। তবে টাকারকে খুব বেশি দূর এগোতে দেননি এবাদত হোসেন। ১৯তম ওভারের আক্রমণে এসে তাসকিন-হাসানদের সঙ্গে ‘উইকেট পার্টিতে’ যোগ দেন এই পেসার। ওভারের পঞ্চম বলে লাইন মিস করেন টাকার, তাতে বল আঘাত হানে তার প্যাডে। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ২৮ রান করে এই ব্যাটার ফিরলে ভাঙ্গে ৪২ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি। পরের বলে স্বপ্নের মতো এক ডেলিভারী করলেন এবাদত। অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে হালকা ইনসুইয়ে পরাস্ত জজ ডকরেল। এঁটেই তার অফ স্টাম্প কয়েকটা ডিগবাজি খেয়ে কয়েক হাত ধূরে গিয়ে পড়লো। এরপর ২২তম ওভারে আক্রমণে ফিরে জোড়া শিকার ধরেন তাসকিন। ওভারের প্রথম বলে নাসুমের হাতে ধরা পড়েন অ্যান্ডু ১ রান করা ম্যাকব্রাইন। এক বল পর সাজঘরে ফেরেন মার্ক অ্যাডায়ারও। এই অলরাউন্ডার অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্টামে ডেকে এনে বোল্ড হয়েছেন। খেয়েছেন সিলভার ডাক। তাসকিনের জোড়া উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে ইনিংসে বোলিং করা বাংলাদেশের তিন পেসারই জোড়া শিকারের স্বাদ পেয়েছেন। আর তাদের তোপের মুখে ২২ ওভারে ৭৯ রান তুলতেই ৮ উইকেট হারিয়েছে আইরিশরা। বাকি ব্যাটাররা আসা-যাওয়ার মিছিলে থাকলেও এদিন ব্যাতিক্রম ছিলেন ক্যাম্পার। এই অলরাউন্ডার এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করেছেন। কিন্তু সঙ্গীর অভাবে খুব একটা পথ হাটতে পারেননি। থামতে হয়েছে ৩৬ রানে। শেষ পর্যন্ত ২৮ ওভার ১ বল খেলে ১০১ রানে অলআউট হয়েছে আয়ারল্যান্ড।##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik adhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

সিলেটে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ে

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে রেকর্ড টাইগারদের

প্রকাশিত সময় : ০৬:৫৫:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩

###     সিলেটে ১০ উইকেটের জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করার পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডে বিপক্ষে রেকর্ড গড়েছে টাইগাররা। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো উইকেট না হারিয়েই জয়ের সিরিজ জয় বাংরাদেশের। টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ২৮ ওভার ১ বলে ১০১ রানে অলআউট আয়ারল্যান্ড। ক্যাম্পারের ব্যাট থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ রান যোগ হয়েছিল দলীয় খাতায় । বাংলাদেশের হয়ে ৩২ রানে ৫ উইকেট শিকার করে দিনের সেরা বোলার হাসান। এটি তার ক্যারিয়ারেরও সেরা বোলিং ফিগার। তাছাড়া ৩টি উইকেট পেয়েছেন তাসকিন। জবাবে তামিম-লিটনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৩ ওভার ১ বলে কোনো উইকেট না হারিয়েই জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। পুরো সিরিজ জুড়ে রানের খরায় ভুগতে থাকা তামিম ইকবাল এদিন ইনিংসের প্রথম ওভারেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের খাতা খুলেন। অপর প্রান্তে লিটন দাসও দুর্দান্ত খেলেন। লিটনেরও রানের খাতা খোলেন চার দিয়ে। দুই ওপেনারের ব্যাটে ৭ ওভারের আগেই দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করে বাংলাদেশ। ১০১ রানের অবিছিন্ন জুটিতে ৪১ রানই এসেছে অধিনায়ক তামিমের ব্যাট থেকে। আর লিটন অপরাজিত থেকেছেন ৫০ রান করে। এর আগে ইনিংস ওপেন করতে নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশি পেসারদের তোপের মুখে পড়ে দুই আইরিশ ওপেনার স্টিফেন ডোহেনি ও পল স্টার্লিং। পেস বান্ধব কন্ডিশনে যেটুকু বাড়তি সুবিধা নেয়া যায়, তার সবটুকুই নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ-হাসান মাহমুদরা। শুরু থেকেই আইরিশদের রানের চাকা আটকে রাখলেও উইকেটের দেখা পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় পঞ্চম ওভার পর্যন্ত। এই ওভারের তৃতীয় বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে রেখে গুড লেন্থে করেছিলেন হাসান, সঙ্গে ছিল বাড়তি পেস আর তাতেই পরাস্ত ডোহেনি। উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের হাতে ধরা পড়ার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২১ বলে ৮ রান। এরপর নবম ওভারে আক্রমণে ফিরে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন হাসান। এই পেসারকে খেলতে এদিন চোখে রীতিমতো সরষে ফুল দেখেছেন আইরিশ ব্যাটাররা। এবার অফ স্টাম্পের বাইরে চতুর্থ স্টাম্প বরাবর রেখে গুড লেন্থে ফেলেছিলেন হাসান। ইন সুইং করে ভেতরে ঢোকা বল ব্যাটে খেলতে পারেননি স্টার্লিং, সরাসরি তার প্যাডে আঘাত হানে। তাতে হাসানের আবেদনে সাড়া দিতে খুব একটা সময় নেননি আম্পায়ার। সাজঘরে ফেরারা আগে ১২ বলে ৭ রান করেছেন এই অভিজ্ঞ ওপেনার। স্টার্লিং ফেরার দুই বল পর আবারও আঘাত হানেন হাসান। এবার তার শিকার হ্যারি ট্যাক্টর। ওভারের চতুর্থ বলটি ব্যাক অব লেন্থে রেখেছিলেন হাসান, সেখান থেকে ভেতরে ঢোকা বলে ব্যাট চালিয়েও পুরোপুরি পরাস্ত হন এই ব্যাটার। বল তার পায়ে আঘাত হানলে আবেদন করেন হাসান। কিন্তু আম্পায়ার তাতে সাড়া দেননি। ফলে রিভিউ নেন তামিম ইকবাল। আর তখনই আম্পায়ার তার সিদ্ধান্ত বদলে আউট দিতে বাধ্য হন। সাজঘরে ফেরার আগে ৩ বল খেলেও রানের খাতাই খুলতে পারেননি ট্যাক্টর। পরের ওভারে আক্রমণে আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদও। ওভারের দ্বিতীয় বলটি খানিকটা শর্ট লেন্থে ফেলে অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বের করে নিয়েছিলেন তাসকিন, সেখানে ফুটওয়ার্ক ছাড়াই জায়গায় দাঁড়িয়ে খোঁচা দিয়ে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন অ্যান্ডি বার্লবির্নি। আর তাতে কোনো ভুল করেনি দ্বিতীয় স্লিপে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত। ৬ রান করে অধিনায়ক ফিরে গেলে ২৬ রানেই টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটারকে হারায় আইরিশরা। দলীয় রান ত্রিশ পেরোনোর আগেই টপ অর্ডার ব্যাটারদের হারিয়ে যখন ধুঁকছিল আয়ারল্যান্ড, তখন টাকারকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন কুর্টিস ক্যাম্পার। এই দুইজনের দৃঢ়তায় আইরিশরা আর কোনো উইকেট না হয়ারিয়ে অর্ধশতক পূর্ণ করে। এরপরের গল্পটা শুধুই বাংলাদেশি পেসারদের। সিলেটে এদিন রীতিমতো রাজত্ব করেছেন তারা। তবে টাকারকে খুব বেশি দূর এগোতে দেননি এবাদত হোসেন। ১৯তম ওভারের আক্রমণে এসে তাসকিন-হাসানদের সঙ্গে ‘উইকেট পার্টিতে’ যোগ দেন এই পেসার। ওভারের পঞ্চম বলে লাইন মিস করেন টাকার, তাতে বল আঘাত হানে তার প্যাডে। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ২৮ রান করে এই ব্যাটার ফিরলে ভাঙ্গে ৪২ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি। পরের বলে স্বপ্নের মতো এক ডেলিভারী করলেন এবাদত। অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে হালকা ইনসুইয়ে পরাস্ত জজ ডকরেল। এঁটেই তার অফ স্টাম্প কয়েকটা ডিগবাজি খেয়ে কয়েক হাত ধূরে গিয়ে পড়লো। এরপর ২২তম ওভারে আক্রমণে ফিরে জোড়া শিকার ধরেন তাসকিন। ওভারের প্রথম বলে নাসুমের হাতে ধরা পড়েন অ্যান্ডু ১ রান করা ম্যাকব্রাইন। এক বল পর সাজঘরে ফেরেন মার্ক অ্যাডায়ারও। এই অলরাউন্ডার অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্টামে ডেকে এনে বোল্ড হয়েছেন। খেয়েছেন সিলভার ডাক। তাসকিনের জোড়া উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে ইনিংসে বোলিং করা বাংলাদেশের তিন পেসারই জোড়া শিকারের স্বাদ পেয়েছেন। আর তাদের তোপের মুখে ২২ ওভারে ৭৯ রান তুলতেই ৮ উইকেট হারিয়েছে আইরিশরা। বাকি ব্যাটাররা আসা-যাওয়ার মিছিলে থাকলেও এদিন ব্যাতিক্রম ছিলেন ক্যাম্পার। এই অলরাউন্ডার এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করেছেন। কিন্তু সঙ্গীর অভাবে খুব একটা পথ হাটতে পারেননি। থামতে হয়েছে ৩৬ রানে। শেষ পর্যন্ত ২৮ ওভার ১ বল খেলে ১০১ রানে অলআউট হয়েছে আয়ারল্যান্ড।##