০৯:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সরকারের পক্ষ থেকে দাম নির্ধারণ করে দিলে বাজারে অহেতুক অথবা উদ্দেশ্যমূলক অস্থিতিশীলতা তৈরির সুযোগ পাবে না

আসন্ন রমজানে ভোগ্যপণ্যের কোনো সংকট হবে না খুলনায়

###   আসন্ন রমজানে ভোগ্যপণ্যের কোনো সংকট হবে না শিল্পনগরীখ্যাত খুলনায়। ইতিমধ্যে প্রায় সব ধরণের পণ্যেরই সরবরাহ বেড়েছে এবং মজুদও পর্যাপ্ত রয়েছে। নগরীর পাইকারি বাজারে গত কয়েকদিনের পর্যবেক্ষণ এবং পাইকারি ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের সাথে কথা বলে এ চিত্র পাওয়া গেছে।  ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকটের কারণে পণ্য আমদানি কয়েক মাস আগে কিছুটা কমলেও তা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে ওঠছে। আগামী মার্চের শেষ ভাগে শুরু পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে যারা পণ্য আমদানিতে এলসি  খুলেছেন তাদের পণ্য বাজারে আসা শুরু হয়েছে। খুলনার পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংকট না থাকায় বেশ কিছু পণ্যের দাম কমেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাম তেলের দাম মণপ্রতি ৪০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৬৬০ টাকা এবং সয়াবিন তেলের দাম মণপ্রতি ৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৩৬০ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিতে ৬ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা, চীনা রসুন কেজিতে ১০ টাকা কমে ১৫০ টাকা এবং চীনা আদা কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। মসুর ডালের দাম কেজিতে ২ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। অস্ট্রেলিয়ান  ছোলা কেজি প্রতি ৪ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকা, ভারতীয় ছোলা কেজিতে ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। মটর ডালের দাম কেজিতে ৩ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬১ টাকায়। এলাচের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে এখন বিক্রি  হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা, লবঙ্গ কেজিতে ২৫ টাকা কমে ১ হাজার ৩৪০ টাকা, জিরা ৩০ টাকা কমে ৫৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নগরীর বড়বাজার আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাজারে সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। পাইকারি আড়ত সরবরাহ লাইনে রয়েছে আরো বিপুল পরিমাণ ভোগ্যপণ্য। গুদামেও পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। সামনের দিনগুলোতে এর ইতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়তে পারে। পাইকারি ব্যবসায়ি আলমগীর পারভেজ জানান, ‘পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি ভালো। অধিকাংশ পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে দর নিন্মমুখী থাকায় আমাদের বাজারেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বহু ভোগ্যপণ্যের এলসি হয়েছে। শিগগির এগুলো দেশে এসে পৌঁছাবে। এলসি ডেচপাচ আরো সহজ করা গেলে বাজার আরো সুষম হবে। তবে চিনির আন্তর্জাতিক বাজার ঊর্ধ্বমুখী। তাই চিনিতে কিছুটা অস্বস্তি দেখা যেতে পারে। এক্ষত্রে ডিউটি কমানো গেলে চিনির দাম স্বাভাবিক থাকবে।’ আলমগীর পারভেজ মনে করেন, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ কমিটি গঠন করে আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সরকারের পক্ষ থেকে দাম নির্ধারণ করে দিলে বাজারে অহেতুক অথবা উদ্দেশ্যমূলক অস্থিতিশীলতা তৈরির সুযোগ পাবে না কোনো পক্ষ। অনেক সময় রাজনৈতিক উদ্দেশে অথবা অসাধু ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা থাকে। এ সময় প্রশাসনের অভিযানে অসাধুদের সাথে সাধারণ ব্যবসায়ীদেরও ভোগান্তি পোহাতে হয়। এতে ভয় থেকেও বাজার অস্থির হয়ে ওঠার আশংকা থাকে। খুলনা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি শেখ আসাদুর রহমান বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমদানিকৃত বহু পণ্য বাজারে পৌঁছেছে। ফলে বাজারে কিছু পণ্যের দাম সামান্য কমেছে। সরবরাহ বৃদ্ধির এ ধারায় পণ্যমূল্য আরো কমে আসবে। সাপ্লাই চেইন ঠিক থাকলে বাজার স্বাভাবিক থাকবে। ভোগ্যপণ্য আমদানির জন্য যারা এলসি করতে চায় তাদের যেন অগ্রাধিকার দেয়া হয় এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংককে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘ট্রেডবডির পক্ষ থেকে আমরা বাজার স্বাভাবিক রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। খুলনা চেম্বারের পক্ষ থেকে আগামী মাসের প্রথম দিকে মেট্রোপলিটন শপ ওনার্স এসোসিয়েশনের সাথে বৈঠক করা হবে। মহানগরীর সব মার্কেটের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এ বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। আমাদের টার্গেট হচ্ছে, কৃত্রিম সংকটের মাধ্যমে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি করে কোনো অসাধু চক্র যেন সরকারকে বিব্রত করতে না পারে বা ব্যবসায়ী সমাজের সাথে সরকারের দূরত্ব সৃষ্টি যেন না হয়।’ আসাদুর রহমান বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য বাড়ার কোনো কারণ দেখি না। এক কোটি লোক টিসিবি’র মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পাচ্ছেন। এর মাধ্যমে ৫ কোটি মানুষের চাহিদা মিটছে। ফলে দেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ সরাসরি সরকারের পদক্ষেপের সুফল পাচ্ছেন।’ প্রসঙ্গক্রমে তিনি জানান, মিল মালিক, আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীসহ সব স্টেকহোল্ডারকে নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে উচ্চ পর্যায়ের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন সভা করা যেতে পারে। এতে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো কার্যকর হতে পারে। খুলনার বড় বাজারে মুদি বিক্রেতা মো. সালাম বলেন, এখন যে তেল আছে তা বেশি দরে কেনা। এই মজুত শেষ হলে নতুন করে কেনার সময় কম দামে পেলে অবশ্যই সরকারের বেঁধে দেওয়া দরে বিক্রি করব। তিনি বলেন, দাম নির্ধারণ করে দিলেই আমরা বিক্রি করতে পারি না। কারণ ওই দরে বিক্রি করলে আমাদের অনেক টাকা লস (লোকসান) হবে। খুলনার বাজার মনিটরিং কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তরফদার বলেন, বাজারে এখন চাল তেল আর চিনির দাম স্বাভাবিক রাখতে সব সময় মনিটরিং করা হচ্ছে। পূবের চেয়ে দ্রব্যমূল্য কমতে শুরু আমদানী বৃদ্ধি পেলে দাম কমবে, খাদ্য বিভাগ যদি খোলা বাজারে নিত্যপণ্য বিক্রি অব্যহতরাখে এবং ডিলারের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়ে তাহলেও দাম কমবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বাজার সিন্ডিকেটের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এবার রমজান ঘিরে কারসাজি করলে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। দরকার হলে প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া হবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’ বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, রমজানের সব পণ্যেরই পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে, রমজান মাসে তারা ভোগ্যপণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখবেন।

ভোক্ত সাধারণ চায়, বাণিজ্যমন্ত্রীর এই আশ্বাসের বাস্তব প্রতিফলন ঘটুক। যাতে সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস রমজানে স্বস্তিতে থাকতে পারে। ব্যবসায় মুনাফা অর্জন স্বতঃসিদ্ধ ও স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। তবে বাস্তবতা হলো, দেশে বছরজুড়ে পণ্যমূল্যে আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের বিপরীত চিত্রই পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু মুনাফা অর্জনের নামে নীতিজ্ঞানহীন অনৈতিক কর্মকান্ড সমর্থনযোগ্য নয়। ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের দুর্দশা লাঘবে আন্তরিক হলে সারা বছর তো বটেই, রমজান-ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবেও বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এবারের রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয়সহ সব ধরনের পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকারের পাশাপাশি দেশের ব্যবসায়ীরাও আন্তরিক হবেন এটাই সর্ব সাধারণের প্রত্যাশা।##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik adhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

সরকারের পক্ষ থেকে দাম নির্ধারণ করে দিলে বাজারে অহেতুক অথবা উদ্দেশ্যমূলক অস্থিতিশীলতা তৈরির সুযোগ পাবে না

আসন্ন রমজানে ভোগ্যপণ্যের কোনো সংকট হবে না খুলনায়

প্রকাশিত সময় : ০৩:৫৯:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

###   আসন্ন রমজানে ভোগ্যপণ্যের কোনো সংকট হবে না শিল্পনগরীখ্যাত খুলনায়। ইতিমধ্যে প্রায় সব ধরণের পণ্যেরই সরবরাহ বেড়েছে এবং মজুদও পর্যাপ্ত রয়েছে। নগরীর পাইকারি বাজারে গত কয়েকদিনের পর্যবেক্ষণ এবং পাইকারি ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের সাথে কথা বলে এ চিত্র পাওয়া গেছে।  ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকটের কারণে পণ্য আমদানি কয়েক মাস আগে কিছুটা কমলেও তা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে ওঠছে। আগামী মার্চের শেষ ভাগে শুরু পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে যারা পণ্য আমদানিতে এলসি  খুলেছেন তাদের পণ্য বাজারে আসা শুরু হয়েছে। খুলনার পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংকট না থাকায় বেশ কিছু পণ্যের দাম কমেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাম তেলের দাম মণপ্রতি ৪০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৬৬০ টাকা এবং সয়াবিন তেলের দাম মণপ্রতি ৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৩৬০ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিতে ৬ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা, চীনা রসুন কেজিতে ১০ টাকা কমে ১৫০ টাকা এবং চীনা আদা কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। মসুর ডালের দাম কেজিতে ২ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। অস্ট্রেলিয়ান  ছোলা কেজি প্রতি ৪ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকা, ভারতীয় ছোলা কেজিতে ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। মটর ডালের দাম কেজিতে ৩ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬১ টাকায়। এলাচের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে এখন বিক্রি  হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা, লবঙ্গ কেজিতে ২৫ টাকা কমে ১ হাজার ৩৪০ টাকা, জিরা ৩০ টাকা কমে ৫৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নগরীর বড়বাজার আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাজারে সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। পাইকারি আড়ত সরবরাহ লাইনে রয়েছে আরো বিপুল পরিমাণ ভোগ্যপণ্য। গুদামেও পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। সামনের দিনগুলোতে এর ইতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়তে পারে। পাইকারি ব্যবসায়ি আলমগীর পারভেজ জানান, ‘পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি ভালো। অধিকাংশ পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে দর নিন্মমুখী থাকায় আমাদের বাজারেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বহু ভোগ্যপণ্যের এলসি হয়েছে। শিগগির এগুলো দেশে এসে পৌঁছাবে। এলসি ডেচপাচ আরো সহজ করা গেলে বাজার আরো সুষম হবে। তবে চিনির আন্তর্জাতিক বাজার ঊর্ধ্বমুখী। তাই চিনিতে কিছুটা অস্বস্তি দেখা যেতে পারে। এক্ষত্রে ডিউটি কমানো গেলে চিনির দাম স্বাভাবিক থাকবে।’ আলমগীর পারভেজ মনে করেন, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ কমিটি গঠন করে আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সরকারের পক্ষ থেকে দাম নির্ধারণ করে দিলে বাজারে অহেতুক অথবা উদ্দেশ্যমূলক অস্থিতিশীলতা তৈরির সুযোগ পাবে না কোনো পক্ষ। অনেক সময় রাজনৈতিক উদ্দেশে অথবা অসাধু ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা থাকে। এ সময় প্রশাসনের অভিযানে অসাধুদের সাথে সাধারণ ব্যবসায়ীদেরও ভোগান্তি পোহাতে হয়। এতে ভয় থেকেও বাজার অস্থির হয়ে ওঠার আশংকা থাকে। খুলনা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি শেখ আসাদুর রহমান বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমদানিকৃত বহু পণ্য বাজারে পৌঁছেছে। ফলে বাজারে কিছু পণ্যের দাম সামান্য কমেছে। সরবরাহ বৃদ্ধির এ ধারায় পণ্যমূল্য আরো কমে আসবে। সাপ্লাই চেইন ঠিক থাকলে বাজার স্বাভাবিক থাকবে। ভোগ্যপণ্য আমদানির জন্য যারা এলসি করতে চায় তাদের যেন অগ্রাধিকার দেয়া হয় এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংককে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘ট্রেডবডির পক্ষ থেকে আমরা বাজার স্বাভাবিক রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। খুলনা চেম্বারের পক্ষ থেকে আগামী মাসের প্রথম দিকে মেট্রোপলিটন শপ ওনার্স এসোসিয়েশনের সাথে বৈঠক করা হবে। মহানগরীর সব মার্কেটের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এ বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। আমাদের টার্গেট হচ্ছে, কৃত্রিম সংকটের মাধ্যমে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি করে কোনো অসাধু চক্র যেন সরকারকে বিব্রত করতে না পারে বা ব্যবসায়ী সমাজের সাথে সরকারের দূরত্ব সৃষ্টি যেন না হয়।’ আসাদুর রহমান বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য বাড়ার কোনো কারণ দেখি না। এক কোটি লোক টিসিবি’র মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পাচ্ছেন। এর মাধ্যমে ৫ কোটি মানুষের চাহিদা মিটছে। ফলে দেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ সরাসরি সরকারের পদক্ষেপের সুফল পাচ্ছেন।’ প্রসঙ্গক্রমে তিনি জানান, মিল মালিক, আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীসহ সব স্টেকহোল্ডারকে নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে উচ্চ পর্যায়ের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন সভা করা যেতে পারে। এতে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো কার্যকর হতে পারে। খুলনার বড় বাজারে মুদি বিক্রেতা মো. সালাম বলেন, এখন যে তেল আছে তা বেশি দরে কেনা। এই মজুত শেষ হলে নতুন করে কেনার সময় কম দামে পেলে অবশ্যই সরকারের বেঁধে দেওয়া দরে বিক্রি করব। তিনি বলেন, দাম নির্ধারণ করে দিলেই আমরা বিক্রি করতে পারি না। কারণ ওই দরে বিক্রি করলে আমাদের অনেক টাকা লস (লোকসান) হবে। খুলনার বাজার মনিটরিং কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তরফদার বলেন, বাজারে এখন চাল তেল আর চিনির দাম স্বাভাবিক রাখতে সব সময় মনিটরিং করা হচ্ছে। পূবের চেয়ে দ্রব্যমূল্য কমতে শুরু আমদানী বৃদ্ধি পেলে দাম কমবে, খাদ্য বিভাগ যদি খোলা বাজারে নিত্যপণ্য বিক্রি অব্যহতরাখে এবং ডিলারের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়ে তাহলেও দাম কমবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বাজার সিন্ডিকেটের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এবার রমজান ঘিরে কারসাজি করলে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। দরকার হলে প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া হবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’ বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, রমজানের সব পণ্যেরই পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে, রমজান মাসে তারা ভোগ্যপণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখবেন।

ভোক্ত সাধারণ চায়, বাণিজ্যমন্ত্রীর এই আশ্বাসের বাস্তব প্রতিফলন ঘটুক। যাতে সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস রমজানে স্বস্তিতে থাকতে পারে। ব্যবসায় মুনাফা অর্জন স্বতঃসিদ্ধ ও স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। তবে বাস্তবতা হলো, দেশে বছরজুড়ে পণ্যমূল্যে আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের বিপরীত চিত্রই পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু মুনাফা অর্জনের নামে নীতিজ্ঞানহীন অনৈতিক কর্মকান্ড সমর্থনযোগ্য নয়। ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের দুর্দশা লাঘবে আন্তরিক হলে সারা বছর তো বটেই, রমজান-ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবেও বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এবারের রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয়সহ সব ধরনের পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকারের পাশাপাশি দেশের ব্যবসায়ীরাও আন্তরিক হবেন এটাই সর্ব সাধারণের প্রত্যাশা।##