০৭:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় বৃষ্টির মধ্যে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্টিত

####

 

ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে কম সংখ্যক মুসুল্লি নিয়ে ঈদুল আজহার ১৯৬তম জামাত অনুষ্টিত হয়েছে। থেমে থেমে ৪৮ ঘন্টার অব্যাহত বৃষ্টি ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণ মাঠে খতিব এবং ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ আসতে না পারায় ১৯৬তম জামাতে ইমামতি করেন মারকাজ মসজিদের ইমাম হযরত মাওলানা হিফজুল রহমান খান। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, উপ সচিব হাবিবুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী ছিদ্দিক, পৌর মেয়র মাহমুদ পারভেজ, প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্মকর্তাসহ শহরের গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত মুসুল্লিরা বৃষ্টিতে ভিজে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শুরুর ৫মি. ৩মি. ও ১মিনিট আগে তিনটি,দুইটি ও ১টি শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে মুসুল্লিদের জানান দেওয়া হয়। মাঠের অধিকাংশ স্থানে পানি জমে গেলেও মুসুল্লিরা ছাতা নিয়ে মাঠে নামাজে দাঁড়িয়ে যায়।

মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ প্রতিদিনের বাংলাদেশ’কে জানান, এবার শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের চারদিকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিন্দ্র করা হয়েছে। মুসুল্লিরা মাঠের প্রতি,ইসলামে প্রতি ভালোবাসা ও ধর্মীয় আবেগের কারণে এমন বৈরী আবহাওয়ায় নামাজ পড়তে চলে এসেছেন। শোলাকিয়া জামাতকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটি সব ধরনের ব্যবস্থার আয়োজন করে।তাছাড়া বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাসহ নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে সর্বিক ব্যবস্থা সুসম্পন্ন করা হয়েছে। প্রচণ্ড বৃষ্টি তীব্র সমস্যার সৃষ্টি করে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, বৃহত্তম ঈদের জামাতকে কেন্দ্র করে কম মুসুল্লিদের আগমন হওয়ার পরও ২০১৬ সালের জঙ্গী হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে শোলাকিয়া ময়দানে চারস্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। জামাতের ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি র‍্যার ও গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতিতে শোলাকিয়া নিরাপত্তা ছাদরে ডেকে রাখে।

শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ আরও জানান,  শোলাকিয়া জামাতে মুসুল্লিদের আসা-যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে  ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে দুইটি শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে  বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে তারা বিভিন্ন মসজিদে নামাজ আদায় করেন। স্বাভাবিকভাবে কিছু কম মুসুল্লি হলেও সবদিক থেকে শোলাকিয়ায় জামাত সুন্দন ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে।  তিনি মুসুল্লিসহ পৌরসভা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ, জেলা চেম্বার অব কমার্সসহ সংশ্লিষ্ঠ বিভাগ সমূহকে ধন্যবাদ জানান। মাঠে অজু, গোসল এবং শোলাকিয়া মাঠে সহজে মাঠে প্রবেশের ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখাসহ মুসুল্লিদেও সার্বিক সু-ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

নামাজের পর বিশেষ মোনাজাতে ইমাম হযরত মাওলানা হিফজুল রহমান খান বিশ্বের সকল মুসলিম উম্মার শান্তি কামনা করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদসহ অবদানকারি সবার জন্য দোয়া করা হয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ ৭৫’ আগস্ট সকল শহীদদের জন্য বিশেষ দোয়াসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘজীবন ও সুষ্টু ও সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনা করার তৌফিক দানেও দোয়া করা হয়। উল্লেখ্য, ১৮২৮ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লির সমাগম ঘটেছিল। সোয়া লাখ থেকেই বিবর্তনের ধারায় এ মাঠের নাম শোলাকিয়া হয়েছে। দিন দিন এর প্রচারণা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতি বছরই মুসল্লিদের সমাগম বাড়ছে।

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় বৃষ্টির মধ্যে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্টিত

প্রকাশিত সময় : ১২:৪৬:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন ২০২৩

####

 

ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে কম সংখ্যক মুসুল্লি নিয়ে ঈদুল আজহার ১৯৬তম জামাত অনুষ্টিত হয়েছে। থেমে থেমে ৪৮ ঘন্টার অব্যাহত বৃষ্টি ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণ মাঠে খতিব এবং ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ আসতে না পারায় ১৯৬তম জামাতে ইমামতি করেন মারকাজ মসজিদের ইমাম হযরত মাওলানা হিফজুল রহমান খান। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, উপ সচিব হাবিবুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী ছিদ্দিক, পৌর মেয়র মাহমুদ পারভেজ, প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্মকর্তাসহ শহরের গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত মুসুল্লিরা বৃষ্টিতে ভিজে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শুরুর ৫মি. ৩মি. ও ১মিনিট আগে তিনটি,দুইটি ও ১টি শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে মুসুল্লিদের জানান দেওয়া হয়। মাঠের অধিকাংশ স্থানে পানি জমে গেলেও মুসুল্লিরা ছাতা নিয়ে মাঠে নামাজে দাঁড়িয়ে যায়।

মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ প্রতিদিনের বাংলাদেশ’কে জানান, এবার শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের চারদিকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিন্দ্র করা হয়েছে। মুসুল্লিরা মাঠের প্রতি,ইসলামে প্রতি ভালোবাসা ও ধর্মীয় আবেগের কারণে এমন বৈরী আবহাওয়ায় নামাজ পড়তে চলে এসেছেন। শোলাকিয়া জামাতকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটি সব ধরনের ব্যবস্থার আয়োজন করে।তাছাড়া বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাসহ নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে সর্বিক ব্যবস্থা সুসম্পন্ন করা হয়েছে। প্রচণ্ড বৃষ্টি তীব্র সমস্যার সৃষ্টি করে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, বৃহত্তম ঈদের জামাতকে কেন্দ্র করে কম মুসুল্লিদের আগমন হওয়ার পরও ২০১৬ সালের জঙ্গী হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে শোলাকিয়া ময়দানে চারস্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। জামাতের ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি র‍্যার ও গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতিতে শোলাকিয়া নিরাপত্তা ছাদরে ডেকে রাখে।

শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ আরও জানান,  শোলাকিয়া জামাতে মুসুল্লিদের আসা-যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে  ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে দুইটি শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে  বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে তারা বিভিন্ন মসজিদে নামাজ আদায় করেন। স্বাভাবিকভাবে কিছু কম মুসুল্লি হলেও সবদিক থেকে শোলাকিয়ায় জামাত সুন্দন ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে।  তিনি মুসুল্লিসহ পৌরসভা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ, জেলা চেম্বার অব কমার্সসহ সংশ্লিষ্ঠ বিভাগ সমূহকে ধন্যবাদ জানান। মাঠে অজু, গোসল এবং শোলাকিয়া মাঠে সহজে মাঠে প্রবেশের ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখাসহ মুসুল্লিদেও সার্বিক সু-ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

নামাজের পর বিশেষ মোনাজাতে ইমাম হযরত মাওলানা হিফজুল রহমান খান বিশ্বের সকল মুসলিম উম্মার শান্তি কামনা করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদসহ অবদানকারি সবার জন্য দোয়া করা হয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ ৭৫’ আগস্ট সকল শহীদদের জন্য বিশেষ দোয়াসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘজীবন ও সুষ্টু ও সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনা করার তৌফিক দানেও দোয়া করা হয়। উল্লেখ্য, ১৮২৮ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লির সমাগম ঘটেছিল। সোয়া লাখ থেকেই বিবর্তনের ধারায় এ মাঠের নাম শোলাকিয়া হয়েছে। দিন দিন এর প্রচারণা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতি বছরই মুসল্লিদের সমাগম বাড়ছে।