১০:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কয়রায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড

####
খুলনায় যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে হত্যা মামলায় স্বামী মোঃ কায়েদে আযমকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। বুধবার খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আব্দুস সালাম খান এই আদেশ দেন। একই সাথে মামলার অপর ৬ আসামীকে খালাস দিয়েছে আদালত। খালাসপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন- কায়েদে আজমের বাবা আবু তালেব গাজী, ভাই ইসরাফিল, ভাবী মাফিয়া খাতুন, বন্ধু মোঃ মনি, রজব আলী ও জহুরুল।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে কয়রা উপজেলার ০১নং ওয়ার্ডের আবু তালেব গাজীর ছেলে মোঃ কায়েদে আজমের সাথে একই এলাকার ফজর ঢালীর মেয়ে নাজমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবীতে নাজমা খাতুনের উপর নির্যাতন চালাতো কায়েদে আজম ও তার পরিবারের সদস্যরা। এই নিয়ে এলাকায় গনমান্য ব্যাক্তিবর্গের সামনে বেশ কয়েকবার শালিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নিজের ভুল স্বীকার করে ও ক্ষমা প্রার্থনা করে স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকার করে কায়েদে আজম। কিন্তু প্রতিবারই সে তার অঙ্গীকার ভঙ্গ করে নাজমা খাতুনের উপর নির্যাতন চালাতো। এ সময় তাদের এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানও জন্ম নেয়। ২০০৬ সালে কায়েদে আজম পরকিয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। এই নিয়ে নাজমা খাতুনের সাথে তার প্রায়শই ঝগড়া লেগে থাকতো। এই বছরের ০৮সেপ্টেম্বর বিকালে মোঃ কায়েদে আযম, তার তিন বন্ধু ও ভাই- ভাবী মিলে নাজমা খাতুনকে নির্যাতন করে মেরে ফেলে। পরে ঘরের বাঁশে গলায় ফাঁস দিয়ে নাজমা খাতুনের লাশ ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে। তারা যখন নাজমা খাতুনের উপর নির্যাতন করছিলো তখন তাদের আট বছর বয়সের পুত্র গোলাম মোস্তফা বাড়ির বাইরে গিয়ে তার নানা ফজর ঢালীকে ডাকতে যায়। রোজার মাস থাকায় তার নানা ইফতারির জন্য শসা কেনার পর গোলাম মোস্তফাকে বাসায় পাঠিয়ে দিয়ে বলে সে একটু পরে আসবে। পরে বাড়িতে এসে গোলাম মোস্তফা দেখতে পায় তার মায়ের লাশ ঘরের বাঁশের সাথে ঝুলছে। বাড়িতে কেউ নেই সবাই পালিয়ে গেছে। তখন সে তার ১৪ মাস বয়সের শিশু বোন সারমিন আক্তারকে নিয়ে পুনরায় নানার কাছে যান ও তাকে ডেকে নিয়ে আসেন। নানা গোলাম মোস্তফাদের বাড়িতে এসে তার মেয়ের লাশ দেখতে পান। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে এবং ফজর ঢালীকে বাদী করে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা না করতে পেরে ২০০৬ সালের ২০ নভেম্বর নাজমা খাতুনের মা মোছাঃ রাজিয়া খাতুন আদালতে মোঃ কায়েদে আযমসহ সাত আসামীর নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় ১৭ স্বাক্ষীর মধ্য নয় স্বাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। পরে বিচার শেষে বুধবার আদালত মোঃ কায়েদে আজমকে ফাঁসি ও অন্য ছয় আসামীকে খালাস দেন। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

কয়রায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড

প্রকাশিত সময় : ১২:১৯:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪

####
খুলনায় যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে হত্যা মামলায় স্বামী মোঃ কায়েদে আযমকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। বুধবার খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আব্দুস সালাম খান এই আদেশ দেন। একই সাথে মামলার অপর ৬ আসামীকে খালাস দিয়েছে আদালত। খালাসপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন- কায়েদে আজমের বাবা আবু তালেব গাজী, ভাই ইসরাফিল, ভাবী মাফিয়া খাতুন, বন্ধু মোঃ মনি, রজব আলী ও জহুরুল।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে কয়রা উপজেলার ০১নং ওয়ার্ডের আবু তালেব গাজীর ছেলে মোঃ কায়েদে আজমের সাথে একই এলাকার ফজর ঢালীর মেয়ে নাজমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবীতে নাজমা খাতুনের উপর নির্যাতন চালাতো কায়েদে আজম ও তার পরিবারের সদস্যরা। এই নিয়ে এলাকায় গনমান্য ব্যাক্তিবর্গের সামনে বেশ কয়েকবার শালিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নিজের ভুল স্বীকার করে ও ক্ষমা প্রার্থনা করে স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকার করে কায়েদে আজম। কিন্তু প্রতিবারই সে তার অঙ্গীকার ভঙ্গ করে নাজমা খাতুনের উপর নির্যাতন চালাতো। এ সময় তাদের এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানও জন্ম নেয়। ২০০৬ সালে কায়েদে আজম পরকিয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। এই নিয়ে নাজমা খাতুনের সাথে তার প্রায়শই ঝগড়া লেগে থাকতো। এই বছরের ০৮সেপ্টেম্বর বিকালে মোঃ কায়েদে আযম, তার তিন বন্ধু ও ভাই- ভাবী মিলে নাজমা খাতুনকে নির্যাতন করে মেরে ফেলে। পরে ঘরের বাঁশে গলায় ফাঁস দিয়ে নাজমা খাতুনের লাশ ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে। তারা যখন নাজমা খাতুনের উপর নির্যাতন করছিলো তখন তাদের আট বছর বয়সের পুত্র গোলাম মোস্তফা বাড়ির বাইরে গিয়ে তার নানা ফজর ঢালীকে ডাকতে যায়। রোজার মাস থাকায় তার নানা ইফতারির জন্য শসা কেনার পর গোলাম মোস্তফাকে বাসায় পাঠিয়ে দিয়ে বলে সে একটু পরে আসবে। পরে বাড়িতে এসে গোলাম মোস্তফা দেখতে পায় তার মায়ের লাশ ঘরের বাঁশের সাথে ঝুলছে। বাড়িতে কেউ নেই সবাই পালিয়ে গেছে। তখন সে তার ১৪ মাস বয়সের শিশু বোন সারমিন আক্তারকে নিয়ে পুনরায় নানার কাছে যান ও তাকে ডেকে নিয়ে আসেন। নানা গোলাম মোস্তফাদের বাড়িতে এসে তার মেয়ের লাশ দেখতে পান। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে এবং ফজর ঢালীকে বাদী করে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা না করতে পেরে ২০০৬ সালের ২০ নভেম্বর নাজমা খাতুনের মা মোছাঃ রাজিয়া খাতুন আদালতে মোঃ কায়েদে আযমসহ সাত আসামীর নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় ১৭ স্বাক্ষীর মধ্য নয় স্বাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। পরে বিচার শেষে বুধবার আদালত মোঃ কায়েদে আজমকে ফাঁসি ও অন্য ছয় আসামীকে খালাস দেন। ##