০৭:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুয়েট ভিসি ড. মুহান্মদ মাসুদকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ ও গুজবের প্রতিবাদে শিক্ষক-শির্ক্ষাথী ও কর্মচারীদের পৃথক বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

####

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)’র নবনিযুক্ত ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহান্মদ মাসুদের নামে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ ও গুজব ছড়ানোর প্রতিবাদে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (৮সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ মিছিল ও মানববন্ধন করে। কুয়েট অডিটোরিয়ামের সামনে অনুষ্ঠিত শিক্ষকদের মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. সাইদুল ইসলাম, প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক, প্রফেসর ড. আশরাফুল ইসলাম, মানবিক বিভাগের প্রফেসর. ড. রাজিয়া খাতুন, ইলেকট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ ফারুক হোসেন এবং প্রফেসর ডঃ এবিএম আওলাদ প্রমুখ।

মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, নবনিযুক্ত ভিসি অধ্যাপক ড. মুহান্মদ মাসুদ কুয়েট থেকে ১৯৯৮ সালে পাস করেছেন। দুই বছর আমরা তাকে হল লাইফে দেখেছি। তিনি কখনও কোন পলিটিক্সে যুক্ত ছিলেন না। তিনি পড়াশোনা ছাড়া অন্য কোন কিছুর সাথে যুক্ত ছিলেন না। কিন্তু উনাকে কুয়েট ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন বলা হয়েছে যা সর্ম্পূণ মিথ্যাচার ও গুজব। এই মিথ্যাচারের জন্য যারা তথ্য দিয়েছে এবং সংবাদ প্রকাশ করেছে তাদেরকে ক্ষমা চাওয়ার অনুরোধ করেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।

এদিকে, নবনিযুক্ত ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহান্মদ মাসুদের নামে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ ও গুজব ছড়ানোর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন প্রদক্ষিণ করে। পরে একই স্থানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শেখ মুজাহিদ, সাপ্তি আনসারী, গালিব, মোঃ জাহিদুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোঃ তৈয়বুর রহমান, সহকারি রেজিস্টার আব্দুর রহমান ও কর্মচারী আতাউর রহমান প্রমুখ বক্তৃতা করেন। এ সময় শির্ক্ষাথী ও করমকর্তারা নবনিযুক্ত ভিসি’র বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ ও গুজব রটানোর নিন্দা জানান।

উল্লেখ্য, সাত বছর আগে অন্যের টেকনিক্যাল পেপার নকল করে প্রকাশ ও বিদেশে এক সম্মেলনে উপস্থাপন করার অভিযোগে নবনিযুক্ত ভিসি অধ্যাপক ড. মুহান্মদ মাসুদকে কুয়েট সিন্ডিকেট শাস্তি দিয়েছিল। তখন অভিযোগে উঠেছিল, ২০০৪ সালে মিতসুবিশি মোটরসের টেকনিক্যাল রিভিউতে (নম্বর-১৬) প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রবন্ধের প্রায় শতভাগ নকল করে ড. মুহাম্মদ মাছুদসহ তিন শিক্ষক ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ভলিউম-২ ইস্যু-১) এবং আইসিএমআইএমই ২০১৩-এ দুটি টেকনিক্যাল পেপার প্রকাশ করেন। ওই গবেষণাপত্রের বিষয়বস্তু, ফলাফলসহ অন্য লেখকের গবেষণার সঙ্গে প্রায় শতভাগ মিল ছিল।

পরে কুয়েট প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর সিন্ডিকেটের ৫৮তম সভায় অধ্যাপক মাছুদসহ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই সিন্ডিকেটের ৬২তম সভায় তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি তিন বছরের জন্য স্থগিত এবং পাঁচ বছরের জন্য উচ্চতর স্কেল স্থগিত করা হয়। শাস্তি হয় অন্য দুই শিক্ষকেরও।

অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ১৯৯৮ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি) খুলনা থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং (মেকানিক্যাল) ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। একই সালে একই প্রতিষ্ঠানে প্রভাষক ও ২০০৩ সালে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০০৯ সালে সহযোগী অধ্যাপক ও ২০১১ সালে অধ্যাপক হিসেবে কুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে যোগ দেন। তিনি জাপানের নাগোয়া ইউনিভার্সিটি থেকে ২০০৩ সালে এমএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ২০০৬ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

তবে এ বিষয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। তৎকালীন উপাচার্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁকে ফাঁসিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

কুয়েট ভিসি ড. মুহান্মদ মাসুদকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ ও গুজবের প্রতিবাদে শিক্ষক-শির্ক্ষাথী ও কর্মচারীদের পৃথক বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

প্রকাশিত সময় : ১১:৩৯:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

####

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)’র নবনিযুক্ত ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহান্মদ মাসুদের নামে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ ও গুজব ছড়ানোর প্রতিবাদে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (৮সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ মিছিল ও মানববন্ধন করে। কুয়েট অডিটোরিয়ামের সামনে অনুষ্ঠিত শিক্ষকদের মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. সাইদুল ইসলাম, প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক, প্রফেসর ড. আশরাফুল ইসলাম, মানবিক বিভাগের প্রফেসর. ড. রাজিয়া খাতুন, ইলেকট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ ফারুক হোসেন এবং প্রফেসর ডঃ এবিএম আওলাদ প্রমুখ।

মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, নবনিযুক্ত ভিসি অধ্যাপক ড. মুহান্মদ মাসুদ কুয়েট থেকে ১৯৯৮ সালে পাস করেছেন। দুই বছর আমরা তাকে হল লাইফে দেখেছি। তিনি কখনও কোন পলিটিক্সে যুক্ত ছিলেন না। তিনি পড়াশোনা ছাড়া অন্য কোন কিছুর সাথে যুক্ত ছিলেন না। কিন্তু উনাকে কুয়েট ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন বলা হয়েছে যা সর্ম্পূণ মিথ্যাচার ও গুজব। এই মিথ্যাচারের জন্য যারা তথ্য দিয়েছে এবং সংবাদ প্রকাশ করেছে তাদেরকে ক্ষমা চাওয়ার অনুরোধ করেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।

এদিকে, নবনিযুক্ত ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহান্মদ মাসুদের নামে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ ও গুজব ছড়ানোর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন প্রদক্ষিণ করে। পরে একই স্থানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শেখ মুজাহিদ, সাপ্তি আনসারী, গালিব, মোঃ জাহিদুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোঃ তৈয়বুর রহমান, সহকারি রেজিস্টার আব্দুর রহমান ও কর্মচারী আতাউর রহমান প্রমুখ বক্তৃতা করেন। এ সময় শির্ক্ষাথী ও করমকর্তারা নবনিযুক্ত ভিসি’র বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ ও গুজব রটানোর নিন্দা জানান।

উল্লেখ্য, সাত বছর আগে অন্যের টেকনিক্যাল পেপার নকল করে প্রকাশ ও বিদেশে এক সম্মেলনে উপস্থাপন করার অভিযোগে নবনিযুক্ত ভিসি অধ্যাপক ড. মুহান্মদ মাসুদকে কুয়েট সিন্ডিকেট শাস্তি দিয়েছিল। তখন অভিযোগে উঠেছিল, ২০০৪ সালে মিতসুবিশি মোটরসের টেকনিক্যাল রিভিউতে (নম্বর-১৬) প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রবন্ধের প্রায় শতভাগ নকল করে ড. মুহাম্মদ মাছুদসহ তিন শিক্ষক ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ভলিউম-২ ইস্যু-১) এবং আইসিএমআইএমই ২০১৩-এ দুটি টেকনিক্যাল পেপার প্রকাশ করেন। ওই গবেষণাপত্রের বিষয়বস্তু, ফলাফলসহ অন্য লেখকের গবেষণার সঙ্গে প্রায় শতভাগ মিল ছিল।

পরে কুয়েট প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর সিন্ডিকেটের ৫৮তম সভায় অধ্যাপক মাছুদসহ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই সিন্ডিকেটের ৬২তম সভায় তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি তিন বছরের জন্য স্থগিত এবং পাঁচ বছরের জন্য উচ্চতর স্কেল স্থগিত করা হয়। শাস্তি হয় অন্য দুই শিক্ষকেরও।

অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ১৯৯৮ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি) খুলনা থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং (মেকানিক্যাল) ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। একই সালে একই প্রতিষ্ঠানে প্রভাষক ও ২০০৩ সালে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০০৯ সালে সহযোগী অধ্যাপক ও ২০১১ সালে অধ্যাপক হিসেবে কুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে যোগ দেন। তিনি জাপানের নাগোয়া ইউনিভার্সিটি থেকে ২০০৩ সালে এমএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ২০০৬ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

তবে এ বিষয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। তৎকালীন উপাচার্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁকে ফাঁসিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। ##