১২:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনায় গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত

####

খুলনায় গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবসে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার(৩০ আগষ্ট) বিকেলে খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ ও গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’। মানববন্ধন ও সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন করেন অধিকার খুলনার ফোকাল পার্সন সাংবাদিক মুহাম্মদ নূরুজ্জামান ও পরিচালনা করেন সাংবাদিক কেএম জিয়াউস সাদাত।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে গুমের শিকার সাতক্ষীরার হোমিও চিকিৎসক মোখলেসুর রহমান জনির বাবা শেখ আব্দুর রাশেদ কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই হিমেলের নেতৃত্বে পুলিশ জনিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর প্রায় ৮ বছরেও তার সন্ধান দিতে পারেনি পুলিশ। ছেলেকে হারিয়ে তাদের সংসার তছনছ হয়ে গেছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বারবার আবেদন করা হলেও সন্তানকে ফেরত দেননি তিনি। ফলে জনির মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁরা অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের কঠোর শাস্তি এবং জনিকে ফিরিয়ে দিতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

যশোরের বেনাপোলে গুমের শিকার মেধাবী কলেজ ছাত্র মো. রেজোয়ান হোসেনের বড় ভাই মো. রিপন হোসেন বলেন, তার ভাইকে ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট বেনাপোল থানা পুলিশ আটক করে। পরে ওসি অপূর্ব হাসানের নেতৃত্বে তাকে গুম করা হয়। দীর্ঘ ৮ বছরেও তার সন্ধান মেলেনি। ভাইয়ের সন্ধান না পেয়ে তাঁর বৃদ্ধ মা-বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মায়ের ডাক এবং অধিকার গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরে পাওয়ার দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচীসহ আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে এবং এই কারণে অধিকার এবং গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা কর্তৃত্ববাদী সরকার কর্তৃক নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অধিকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ৭০৯ ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন। গত ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে কর্তৃত্ববাদী হাসিনা সরকারের পতন হলে বিভিন্ন অবৈধ বন্দিশালাগুলোতে আটক ব্যক্তিদের ফিরে পেতে অন্তর্র্বতী সরকারের কাছে দাবী জানিয়েছেন। এরমধ্যে ৮ বছর কর্তৃত্ববাদী সরকার কর্তৃক আয়না ঘরে গুম হয়ে থাকা ব্যারিস্টার আরমান, সাবেক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আজমী এবং ৫ বছর গুমের শিকার ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমা মুক্তি পেয়েছেন। এই কারণে অন্যান্য গুম হওয়া স্বজনদের মধ্যে আশা জাগিয়েছে যে, তাদের স্বজনরাও ফিরে আসবে।

মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা জেলা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা শাখার আহ্বায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন(এমইউজে)’র কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক রানা, ব্লাস্টের অ্যাডভোকেট অশোক কুমার সাহা, সাতক্ষীরার মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট শেখ আলমগীর আশরাফ, মানবাধিকার কর্মী শেখ আব্দুল হালিম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ছায়াবৃক্ষের প্রধান মাহবুব আলম বাদশা, নারীনেত্রী ইসমত আরা কাকন, সিনিয়র সাংবাদিক কাজী মোতাহার রহমান বাবু, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের এ এইচ শামিমুজ্জামান, এসএ টিভি’র রকিবুল ইসলাম মতি, সময়ের খবরের আশরাফুল ইসলাম নূর, কালবেলা’র মোহাম্মদ বশির হোসেন, সংযোগ প্রতিদিনের মিশারুল ইসলাম মনির, দীপ্ত টেলিভিশনের ইয়াসিন আরাফাত রুমি, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক এম এ আজিম প্রমূখ। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মতবিনিময় সভা দু’গ্রুপের হাতাহাতিতে ভন্ডুল

খুলনায় গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত সময় : ০৬:৫৫:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪

####

খুলনায় গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবসে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার(৩০ আগষ্ট) বিকেলে খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ ও গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’। মানববন্ধন ও সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন করেন অধিকার খুলনার ফোকাল পার্সন সাংবাদিক মুহাম্মদ নূরুজ্জামান ও পরিচালনা করেন সাংবাদিক কেএম জিয়াউস সাদাত।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে গুমের শিকার সাতক্ষীরার হোমিও চিকিৎসক মোখলেসুর রহমান জনির বাবা শেখ আব্দুর রাশেদ কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই হিমেলের নেতৃত্বে পুলিশ জনিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর প্রায় ৮ বছরেও তার সন্ধান দিতে পারেনি পুলিশ। ছেলেকে হারিয়ে তাদের সংসার তছনছ হয়ে গেছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বারবার আবেদন করা হলেও সন্তানকে ফেরত দেননি তিনি। ফলে জনির মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁরা অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের কঠোর শাস্তি এবং জনিকে ফিরিয়ে দিতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

যশোরের বেনাপোলে গুমের শিকার মেধাবী কলেজ ছাত্র মো. রেজোয়ান হোসেনের বড় ভাই মো. রিপন হোসেন বলেন, তার ভাইকে ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট বেনাপোল থানা পুলিশ আটক করে। পরে ওসি অপূর্ব হাসানের নেতৃত্বে তাকে গুম করা হয়। দীর্ঘ ৮ বছরেও তার সন্ধান মেলেনি। ভাইয়ের সন্ধান না পেয়ে তাঁর বৃদ্ধ মা-বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মায়ের ডাক এবং অধিকার গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরে পাওয়ার দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচীসহ আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে এবং এই কারণে অধিকার এবং গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা কর্তৃত্ববাদী সরকার কর্তৃক নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অধিকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ৭০৯ ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন। গত ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে কর্তৃত্ববাদী হাসিনা সরকারের পতন হলে বিভিন্ন অবৈধ বন্দিশালাগুলোতে আটক ব্যক্তিদের ফিরে পেতে অন্তর্র্বতী সরকারের কাছে দাবী জানিয়েছেন। এরমধ্যে ৮ বছর কর্তৃত্ববাদী সরকার কর্তৃক আয়না ঘরে গুম হয়ে থাকা ব্যারিস্টার আরমান, সাবেক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আজমী এবং ৫ বছর গুমের শিকার ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমা মুক্তি পেয়েছেন। এই কারণে অন্যান্য গুম হওয়া স্বজনদের মধ্যে আশা জাগিয়েছে যে, তাদের স্বজনরাও ফিরে আসবে।

মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা জেলা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা শাখার আহ্বায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন(এমইউজে)’র কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক রানা, ব্লাস্টের অ্যাডভোকেট অশোক কুমার সাহা, সাতক্ষীরার মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট শেখ আলমগীর আশরাফ, মানবাধিকার কর্মী শেখ আব্দুল হালিম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ছায়াবৃক্ষের প্রধান মাহবুব আলম বাদশা, নারীনেত্রী ইসমত আরা কাকন, সিনিয়র সাংবাদিক কাজী মোতাহার রহমান বাবু, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের এ এইচ শামিমুজ্জামান, এসএ টিভি’র রকিবুল ইসলাম মতি, সময়ের খবরের আশরাফুল ইসলাম নূর, কালবেলা’র মোহাম্মদ বশির হোসেন, সংযোগ প্রতিদিনের মিশারুল ইসলাম মনির, দীপ্ত টেলিভিশনের ইয়াসিন আরাফাত রুমি, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক এম এ আজিম প্রমূখ। ##