১১:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনায় গ্রেফতার আতংকে বিএনপি নেতারা আত্মগোপনে, দলীয় কার্যালয়ে ১৪দিন যাবৎ তালা

####

খুলনায় গ্রেফতার আতংকে আত্মগোপনে রয়েছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা ও সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম বাপ্পীসহ অধিকাংশ নেতারা। এমনকি এসব নেতাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। শুধুই মহানগর বিএনপির নেতারাই নন-থানা এবং ওর্য়াড পর্যায়ের বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অধিকাংশ নেতাকর্মীরাও গ্রেপ্তার এড়াতে আত্নগোপনে রয়েছে। দিনের বেলায় কাউকে কাউকে চলাফেরা করতে দেখা গেলেও রাতের বেলায় বাড়ীতে কেউই থাকছেন না। অনেকে মোবাইল নম্বরও পরিবর্তন করে ফেলছেন। এদিকে, গত ১৪ দিন ধরে খুলনা বিএনপির দলীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ রয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং কারফিউ পরিস্থিতিতে তারা বিপাকে পড়েছেন। ছাত্ররা আন্দোলন ও সহিংসতা করলেও পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করছে। সে কারনে গ্রেপ্তারের ভয়ে দলীয় অফিসমুখী হচ্ছে না বিএনপির নেতাকর্মীরা। নাশকতার নতুন ও পুরানো মামলায় গত ১৩ দিনে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। তবে পুলিশ বলছে, নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নিরীহ কাউকে গ্রেফতার বা হয়রানি করা হচ্ছে না। এমনকি দলীয় পরিচয়েও কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জের ধরে ১৭ জুলাই পুলিশের একটি টিম নগরীর কেডি ঘোষ রোডে দলীয় অফিসের ২ জন পিওনকে তালা লাগিয়ে বেরিয়ে যেতে বলেন। এরপর থেকে দলীয় অফিস তালাবদ্ধ রয়েছে। পরে কারফিউ পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীরা আরও বিপাকে পড়েছেন। তাদের অভিযোগ, দলীয় অফিসে নেতাকর্মীরা যেতে পারছেন না। গেলেই গ্রেফতারের আশংকা রয়েছে। এমনকি দলীয় অফিসের আশপাশের চায়ের দোকানগুলোতে এসেও পুলিশ নেতাকর্মীদের খোঁজাখুঁজি করছে। কোটা বিরোধী আন্দোলনের জের ধরে নাশকতার নতুন ০৩ মামলা এবং পুরানো মামলায় খুলনা মহানগর ও জেলার বিভিন্ন থানা থেকে শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

শনিবার(২৭জুলাই) খুলনা মহানগর বিএনপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়, শুক্রবার(২৬জুলাই) পুলিশ মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনাকে খুঁজতে মুন্সিপাড়া এলাকার বাস ভবনে যান। তিনি বাড়িতে নেই জানার পরও পুলিশ তার বাসার দরজা ভেঙে ফেলে। পরে গ্রিল কাটার মেশিন দিয়ে গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে তাকে না পেয়ে পুলিশ লাইন এলাকায় মনার শ্বশুর বাড়িতে অবিযান চালায়। পুলিশ মনার শ্বশুর বাড়িরও দরজা ভেঙে ফেলেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়।

তবে বাড়ীর দরজা ভেঙ্গে ফেলার বিষয়ে খুলনা সদর থানার ওসি কামাল হোসেন খান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, নাশকতা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হয়েছে। কোথাও কোন ভাংচুরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। কোন নীরিহ কাউকে হয়রানি বা দলীয় পরিচয়েও কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।

আত্নগোপনে থাকায় ও মোবাইল নাম্বার পরির্বতন করার কারনে মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিবসহ অন্য নেতাদের সাথে কলা বলা সম্ভব হয়নি। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী অভিযোগ করেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে খুলনায় আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা। অথচ নতুন করে পুলিশের দায়েরকৃত নাশকতার ০৩ মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে। এজন্য দলের নেতাকর্মী ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। অনেকেই গ্রেফতার এড়াতে আত্নগোপনে রয়েছেন। নেতাকর্মীরা বিব্রত অবস্থায় পড়েছেন।

তবে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে যারা নাশকতার সাথে জড়িত তাদেরকেই শুধূ গ্রেফতার করা হচ্ছে। কোন নিরীহ মানুষকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হচ্ছে না। এছাড়া যাদের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে তাদেরকে গ্রেফতারের বিষয় ‍পুলিশের রেগুলার কাজ, সেটাই করছে পুলিশ। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

গলাচিপায় বিভিন্ন দাবীতে সহকারী শিক্ষকদের মানববন্ধন

খুলনায় গ্রেফতার আতংকে বিএনপি নেতারা আত্মগোপনে, দলীয় কার্যালয়ে ১৪দিন যাবৎ তালা

প্রকাশিত সময় : ০৭:৪৬:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪

####

খুলনায় গ্রেফতার আতংকে আত্মগোপনে রয়েছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা ও সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম বাপ্পীসহ অধিকাংশ নেতারা। এমনকি এসব নেতাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। শুধুই মহানগর বিএনপির নেতারাই নন-থানা এবং ওর্য়াড পর্যায়ের বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অধিকাংশ নেতাকর্মীরাও গ্রেপ্তার এড়াতে আত্নগোপনে রয়েছে। দিনের বেলায় কাউকে কাউকে চলাফেরা করতে দেখা গেলেও রাতের বেলায় বাড়ীতে কেউই থাকছেন না। অনেকে মোবাইল নম্বরও পরিবর্তন করে ফেলছেন। এদিকে, গত ১৪ দিন ধরে খুলনা বিএনপির দলীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ রয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং কারফিউ পরিস্থিতিতে তারা বিপাকে পড়েছেন। ছাত্ররা আন্দোলন ও সহিংসতা করলেও পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করছে। সে কারনে গ্রেপ্তারের ভয়ে দলীয় অফিসমুখী হচ্ছে না বিএনপির নেতাকর্মীরা। নাশকতার নতুন ও পুরানো মামলায় গত ১৩ দিনে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। তবে পুলিশ বলছে, নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নিরীহ কাউকে গ্রেফতার বা হয়রানি করা হচ্ছে না। এমনকি দলীয় পরিচয়েও কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জের ধরে ১৭ জুলাই পুলিশের একটি টিম নগরীর কেডি ঘোষ রোডে দলীয় অফিসের ২ জন পিওনকে তালা লাগিয়ে বেরিয়ে যেতে বলেন। এরপর থেকে দলীয় অফিস তালাবদ্ধ রয়েছে। পরে কারফিউ পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীরা আরও বিপাকে পড়েছেন। তাদের অভিযোগ, দলীয় অফিসে নেতাকর্মীরা যেতে পারছেন না। গেলেই গ্রেফতারের আশংকা রয়েছে। এমনকি দলীয় অফিসের আশপাশের চায়ের দোকানগুলোতে এসেও পুলিশ নেতাকর্মীদের খোঁজাখুঁজি করছে। কোটা বিরোধী আন্দোলনের জের ধরে নাশকতার নতুন ০৩ মামলা এবং পুরানো মামলায় খুলনা মহানগর ও জেলার বিভিন্ন থানা থেকে শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

শনিবার(২৭জুলাই) খুলনা মহানগর বিএনপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়, শুক্রবার(২৬জুলাই) পুলিশ মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনাকে খুঁজতে মুন্সিপাড়া এলাকার বাস ভবনে যান। তিনি বাড়িতে নেই জানার পরও পুলিশ তার বাসার দরজা ভেঙে ফেলে। পরে গ্রিল কাটার মেশিন দিয়ে গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে তাকে না পেয়ে পুলিশ লাইন এলাকায় মনার শ্বশুর বাড়িতে অবিযান চালায়। পুলিশ মনার শ্বশুর বাড়িরও দরজা ভেঙে ফেলেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়।

তবে বাড়ীর দরজা ভেঙ্গে ফেলার বিষয়ে খুলনা সদর থানার ওসি কামাল হোসেন খান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, নাশকতা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হয়েছে। কোথাও কোন ভাংচুরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। কোন নীরিহ কাউকে হয়রানি বা দলীয় পরিচয়েও কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।

আত্নগোপনে থাকায় ও মোবাইল নাম্বার পরির্বতন করার কারনে মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিবসহ অন্য নেতাদের সাথে কলা বলা সম্ভব হয়নি। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী অভিযোগ করেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে খুলনায় আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা। অথচ নতুন করে পুলিশের দায়েরকৃত নাশকতার ০৩ মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে। এজন্য দলের নেতাকর্মী ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। অনেকেই গ্রেফতার এড়াতে আত্নগোপনে রয়েছেন। নেতাকর্মীরা বিব্রত অবস্থায় পড়েছেন।

তবে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে যারা নাশকতার সাথে জড়িত তাদেরকেই শুধূ গ্রেফতার করা হচ্ছে। কোন নিরীহ মানুষকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হচ্ছে না। এছাড়া যাদের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে তাদেরকে গ্রেফতারের বিষয় ‍পুলিশের রেগুলার কাজ, সেটাই করছে পুলিশ। ##