০৭:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনায় ভারী বর্ষণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি প্লাবিত, ভেসে গেছে ঘের-পুকুর, চরম র্দূভোগে এলাকাবাসী

####

খুলনায় টানা দুইদিনের ভারী বর্ষণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, বসতবাড়িসহ নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে কয়েক হাজার মাছের ঘের ও পুকুর। রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে নগরবাসীসহ সাধারণ মানুষ। বৃষ্টিতে সড়ক ডুবে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষাথীরা। এছাড়া সড়কে যানবাহনের উপস্থিতি কম হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন দৈনন্দিন কাজে বের হওয়া নগরবাসী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পানি উঠে যাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। রবিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। রবিবার বিকেলে সরজমিনে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নগরীর খালিশপুর, মুজগুন্নি মহাসড়ক, বাস্তহারা কলোনি, রায়েরমহল, কেডিএ এভিনিউ, সাতরাস্তা, রয়েল চত্বর, বাইতিপাড়া, মৌলভীপাড়া টিভি বাউন্ডারী রোড, পিটিআই মোড়, রূপসা, লবনচরা, শিপইর্য়াড, বারনগাতী, সোনাডাঙ্গা,ফুলবাড়ি গেইট, তেলিগাতী, শিরোমনিসহ বেশকিছু নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। সড়ক তলিয়ে যাওয়ার কারণে যানবাহন নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন চালকরা। অনেক গাড়ির ইঞ্জিনে পানি প্রবেশ করায় রাস্তায় বিকল হয়েছে। অনেককে গাড়ি ঠেলে নিয়ে যেতেও দেখা যায়। এছাড়া ফুটপাত দিয়েও অনেককে মটরসাইকেলসহ হালকা যানবাহন চালিয়ে যেতে দেখা যায়।

এছাড়া খানজাহান আলীর থানার তেলিগাতী কুয়েট রোডে অবস্থিত খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক ইনস্টিটিউট, গভঃ ল্যাবরেটরি হাইস্কুল, খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, খুলনা মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ তেলিগাতী, উত্তর বনিকপাড়া এলাকার বেশ কয়েকটি সড়ক, বসতবাড়ি, মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে।

নগরীর টুটপাড়া এলাকায় ভ্যানচালক হোসেন আলী বলেন, ভোর থেকে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে শহরের বেশীরভাগ রাস্তা ডুবে গেছে। ভ্যানভর্তি কাঠ নিয়ে আসছি। পানিতে ভ্যান চালাতে না পারায় ঠেলে নিয়ে যাচ্ছি। খুবই কষ্টের মধ্যে চলতে হচ্ছে। নগরীর মোল্রাবাড়ি ছোট খালপাড় এলাকার বাসিন্দা জামিরুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টিতে পানিতে রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় আমরা বাসা থেকে রাস্তায় বের হতে পারছি না। অফিসের কাজেও যেতে পারছি না। ঘরে এক প্রকার আবদ্ধ হয়ে আছি

নগরীর ছোট বয়রা ও রায়েরমহল এলাকার বাসিন্দা বাপ্পী,আ: খালেক, বদরুল হাসান, কামরুজ্জামানসহ অনেকেই জানান, বৃষ্টিতে মুজগুন্নি, পুলিশ লাইন, রায়ের মহল, ছোট বয়রা, বাস্তহারা, সোনাডাঙ্গা-দৌলতপুর সড়কের মুজগুন্নি এলাকাসহ অনেক জায়গায় রাস্তা পানিতে ডুবে গেছে। সেই সঙ্গে বাসাবাড়িতেও পানি উঠেছে। চলাচলে যেমন অনেক দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তেমনি বাসাবাড়িতেও থাকা খুবই দুরহ হয়ে গেছে।

এদিকে, রবিবার দুপুরে দেখা গেছে, খুলনা সরকারি টিসার্চ ট্রেনিং কলেজ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক ইনস্টিটিউটে প্রবেশের রাস্তা এবং খেলার মাঠ পানিতে থৈ থৈ করছে। একই অবস্থা খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং মহিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অবস্থাও। গভঃ ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের খেলার মাঠে হাঁটু সমান পানি জমে আছে। প্রতিভাময়ী প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সামনের সড়কে হাঁটু সমান পানি। তেলিগাতী সড়কের উপর কয়েকজনকে জাল ফেলে মাছ ধরছে। রাস্তার উপর হাঁটু সমান পানি জমে থাকায় বয়স্ক নারী-পুরুষ, মহিলা, শিশুসহ সাধারণ পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ছোট ছোট বাচ্চাসহ পরিবার-পরিজন নিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগে আছে বসতবাড়িতে পানি জমে যাওয়া পরিবারগুলো।

এ সময় এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, এলাকার পানি নিষ্কাশনের সুষ্ঠু কোন ব্যবস্থা না থাকায়, পানি নিষ্কাশনের ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায়, ড্রেনের ভেতর ময়লা আবর্জনা জমে থাকার কারণে বৃষ্টির পানি সরতে না পারার কারণে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। গত পাঁচ বছর ধরে এই দুর্ভোগ চলছে। একটু ভারী বৃষ্টি হলেই এলাকার রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি, পুকুর, মাছের ঘের, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব পানিতে তলিয়ে যায়। এলাকাবাসীর এই দুর্ভোগ নিরসনে কোন সিটি কর্পোরেশন ড্রেন র্নিমানের উদ্যোগ নিলেও ঠিকাদারের গাফিলতির কারনে তা গত দুই বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি।

এলাকাবাসী আরো জানান, গভঃ ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের সামনে সড়কের উপর কালভার্টের একাংশ নির্মাণ করা হয়েছে ৬ মাস আগে। বাকি অর্ধেকাংশ নির্মিত না হওয়ায় কালভার্ট দিয়ে পানি নিষ্কাশন বন্ধ রয়েছে। কালভার্ট দিয়ে পানি সরতে না পারার কারণে গত ২ দিনের ভারী বর্ষণে আমাদের এ এলাকায় অতিরিক্ত পানি জমে আছে।এতে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

তেলিগাতী গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, ওবায়দুল হক, মশিয়ার রহমানসহ অনেকেই বলেন, আমাদের এলাকার জমে থাকা পানি সরতে পারছে না। গতকালকে বৃষ্টি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। যা থাকবে আরো কয়েকদিন। এলাকার অনেক ঘর বাড়িতে পানি ঢুকে গেছে। এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। একই এলাকার নুরুল ফকির বলেন, দুইদিনের বর্ষায় আমাদের এলাকার ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট, পুকুর, মাছের ঘের সব তলায় গেছে। রাস্তার উপর হাঁটু পানি দিয়ে চলতে কষ্ট হচ্ছে। রাতের বেলা অন্ধকারে রাস্তার উপর হাঁটু পানি ঠেলে মানুষ কিভাবে যাবে আসবে? এলাকার পানি সরানোর ড্রেনগুলো বন্ধ হয়ে আছে। পানি সরানোর ব্যবস্থা না করলে আমাদের কষ্ট যাবে না।

খুলনা টিটিসির শিক্ষক বিধান চন্দ্র রায় বলেন, বর্ষায় প্রতিষ্ঠানের নিচ তলায় পানি জমে গেছে। প্রতিষ্ঠানে ঢোকার রাস্তায় ও খেলার মাঠে হাঁটু পানি জমেছে। প্রতিষ্ঠানের নিচ তলায় বিএড অনার্স কোর্সের ক্লাসগুলো নেওয়া হয়। ক্লাসের ভিতর পানি ঢুকে যাওয়ায় নিচের রুমগুলোতে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গভঃ ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু হানিফ বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ভারী বৃষ্টি হলেই বিদ্যালয়ের ভিতর পানি জমে। ভারী বৃষ্টির কারণে অনেক সময় ক্লাস রুমেও পানি ঢুকে যায়। বাচ্চাদের খেলার মাঠে রবিবার হাঁটু সমান পানি জমেছে। এলাকার পানি নিষ্কাশনের কোন সু-ব্যবস্থা নেই। ছাত্র-ছাত্রীসহ আমরা শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় থাকায় এবং নিন্মচাপ সৃষ্টি হওয়ায় এমন বৃষ্টিপাত হচ্ছে। খুলনায় রোববার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ৩টা র্পযন্ত ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া শনিবার সকাল ৬টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৬৪মিলিমিটার। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

খুলনায় ভারী বর্ষণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি প্লাবিত, ভেসে গেছে ঘের-পুকুর, চরম র্দূভোগে এলাকাবাসী

প্রকাশিত সময় : ১০:২৩:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

####

খুলনায় টানা দুইদিনের ভারী বর্ষণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, বসতবাড়িসহ নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে কয়েক হাজার মাছের ঘের ও পুকুর। রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে নগরবাসীসহ সাধারণ মানুষ। বৃষ্টিতে সড়ক ডুবে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষাথীরা। এছাড়া সড়কে যানবাহনের উপস্থিতি কম হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন দৈনন্দিন কাজে বের হওয়া নগরবাসী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পানি উঠে যাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। রবিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। রবিবার বিকেলে সরজমিনে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নগরীর খালিশপুর, মুজগুন্নি মহাসড়ক, বাস্তহারা কলোনি, রায়েরমহল, কেডিএ এভিনিউ, সাতরাস্তা, রয়েল চত্বর, বাইতিপাড়া, মৌলভীপাড়া টিভি বাউন্ডারী রোড, পিটিআই মোড়, রূপসা, লবনচরা, শিপইর্য়াড, বারনগাতী, সোনাডাঙ্গা,ফুলবাড়ি গেইট, তেলিগাতী, শিরোমনিসহ বেশকিছু নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। সড়ক তলিয়ে যাওয়ার কারণে যানবাহন নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন চালকরা। অনেক গাড়ির ইঞ্জিনে পানি প্রবেশ করায় রাস্তায় বিকল হয়েছে। অনেককে গাড়ি ঠেলে নিয়ে যেতেও দেখা যায়। এছাড়া ফুটপাত দিয়েও অনেককে মটরসাইকেলসহ হালকা যানবাহন চালিয়ে যেতে দেখা যায়।

এছাড়া খানজাহান আলীর থানার তেলিগাতী কুয়েট রোডে অবস্থিত খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক ইনস্টিটিউট, গভঃ ল্যাবরেটরি হাইস্কুল, খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, খুলনা মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ তেলিগাতী, উত্তর বনিকপাড়া এলাকার বেশ কয়েকটি সড়ক, বসতবাড়ি, মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে।

নগরীর টুটপাড়া এলাকায় ভ্যানচালক হোসেন আলী বলেন, ভোর থেকে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে শহরের বেশীরভাগ রাস্তা ডুবে গেছে। ভ্যানভর্তি কাঠ নিয়ে আসছি। পানিতে ভ্যান চালাতে না পারায় ঠেলে নিয়ে যাচ্ছি। খুবই কষ্টের মধ্যে চলতে হচ্ছে। নগরীর মোল্রাবাড়ি ছোট খালপাড় এলাকার বাসিন্দা জামিরুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টিতে পানিতে রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় আমরা বাসা থেকে রাস্তায় বের হতে পারছি না। অফিসের কাজেও যেতে পারছি না। ঘরে এক প্রকার আবদ্ধ হয়ে আছি

নগরীর ছোট বয়রা ও রায়েরমহল এলাকার বাসিন্দা বাপ্পী,আ: খালেক, বদরুল হাসান, কামরুজ্জামানসহ অনেকেই জানান, বৃষ্টিতে মুজগুন্নি, পুলিশ লাইন, রায়ের মহল, ছোট বয়রা, বাস্তহারা, সোনাডাঙ্গা-দৌলতপুর সড়কের মুজগুন্নি এলাকাসহ অনেক জায়গায় রাস্তা পানিতে ডুবে গেছে। সেই সঙ্গে বাসাবাড়িতেও পানি উঠেছে। চলাচলে যেমন অনেক দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তেমনি বাসাবাড়িতেও থাকা খুবই দুরহ হয়ে গেছে।

এদিকে, রবিবার দুপুরে দেখা গেছে, খুলনা সরকারি টিসার্চ ট্রেনিং কলেজ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক ইনস্টিটিউটে প্রবেশের রাস্তা এবং খেলার মাঠ পানিতে থৈ থৈ করছে। একই অবস্থা খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং মহিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অবস্থাও। গভঃ ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের খেলার মাঠে হাঁটু সমান পানি জমে আছে। প্রতিভাময়ী প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সামনের সড়কে হাঁটু সমান পানি। তেলিগাতী সড়কের উপর কয়েকজনকে জাল ফেলে মাছ ধরছে। রাস্তার উপর হাঁটু সমান পানি জমে থাকায় বয়স্ক নারী-পুরুষ, মহিলা, শিশুসহ সাধারণ পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ছোট ছোট বাচ্চাসহ পরিবার-পরিজন নিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগে আছে বসতবাড়িতে পানি জমে যাওয়া পরিবারগুলো।

এ সময় এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, এলাকার পানি নিষ্কাশনের সুষ্ঠু কোন ব্যবস্থা না থাকায়, পানি নিষ্কাশনের ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায়, ড্রেনের ভেতর ময়লা আবর্জনা জমে থাকার কারণে বৃষ্টির পানি সরতে না পারার কারণে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। গত পাঁচ বছর ধরে এই দুর্ভোগ চলছে। একটু ভারী বৃষ্টি হলেই এলাকার রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি, পুকুর, মাছের ঘের, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব পানিতে তলিয়ে যায়। এলাকাবাসীর এই দুর্ভোগ নিরসনে কোন সিটি কর্পোরেশন ড্রেন র্নিমানের উদ্যোগ নিলেও ঠিকাদারের গাফিলতির কারনে তা গত দুই বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি।

এলাকাবাসী আরো জানান, গভঃ ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের সামনে সড়কের উপর কালভার্টের একাংশ নির্মাণ করা হয়েছে ৬ মাস আগে। বাকি অর্ধেকাংশ নির্মিত না হওয়ায় কালভার্ট দিয়ে পানি নিষ্কাশন বন্ধ রয়েছে। কালভার্ট দিয়ে পানি সরতে না পারার কারণে গত ২ দিনের ভারী বর্ষণে আমাদের এ এলাকায় অতিরিক্ত পানি জমে আছে।এতে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

তেলিগাতী গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, ওবায়দুল হক, মশিয়ার রহমানসহ অনেকেই বলেন, আমাদের এলাকার জমে থাকা পানি সরতে পারছে না। গতকালকে বৃষ্টি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। যা থাকবে আরো কয়েকদিন। এলাকার অনেক ঘর বাড়িতে পানি ঢুকে গেছে। এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। একই এলাকার নুরুল ফকির বলেন, দুইদিনের বর্ষায় আমাদের এলাকার ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট, পুকুর, মাছের ঘের সব তলায় গেছে। রাস্তার উপর হাঁটু পানি দিয়ে চলতে কষ্ট হচ্ছে। রাতের বেলা অন্ধকারে রাস্তার উপর হাঁটু পানি ঠেলে মানুষ কিভাবে যাবে আসবে? এলাকার পানি সরানোর ড্রেনগুলো বন্ধ হয়ে আছে। পানি সরানোর ব্যবস্থা না করলে আমাদের কষ্ট যাবে না।

খুলনা টিটিসির শিক্ষক বিধান চন্দ্র রায় বলেন, বর্ষায় প্রতিষ্ঠানের নিচ তলায় পানি জমে গেছে। প্রতিষ্ঠানে ঢোকার রাস্তায় ও খেলার মাঠে হাঁটু পানি জমেছে। প্রতিষ্ঠানের নিচ তলায় বিএড অনার্স কোর্সের ক্লাসগুলো নেওয়া হয়। ক্লাসের ভিতর পানি ঢুকে যাওয়ায় নিচের রুমগুলোতে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গভঃ ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু হানিফ বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ভারী বৃষ্টি হলেই বিদ্যালয়ের ভিতর পানি জমে। ভারী বৃষ্টির কারণে অনেক সময় ক্লাস রুমেও পানি ঢুকে যায়। বাচ্চাদের খেলার মাঠে রবিবার হাঁটু সমান পানি জমেছে। এলাকার পানি নিষ্কাশনের কোন সু-ব্যবস্থা নেই। ছাত্র-ছাত্রীসহ আমরা শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় থাকায় এবং নিন্মচাপ সৃষ্টি হওয়ায় এমন বৃষ্টিপাত হচ্ছে। খুলনায় রোববার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ৩টা র্পযন্ত ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া শনিবার সকাল ৬টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৬৪মিলিমিটার। ##