১০:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনায় মোঃ আল আমিন বিশ্বাস হত্যা মামলার তদন্তে অনিয়োমের অভিযোগ

####

খুলনায় মটরসাইকেল গ্যারেজ মালিক মোঃ আল আমিন বিশ^াষ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করে, পিবিআই বা গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তের দাবি জানিয়েছে নিহতের পরিবার। বুধবার সকালে খুলনা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন নিহতের পরিবার। আর এ বিষয়ে পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা সোনাডাঙ্গা থানার সাব ইন্সপেক্টর ত্রিদীপ কুমার মন্ডল জানান, এজাহার ও প্রাথমিক তদন্ত নিয়ে তিনি কিছু জানেনা। কারন এজাহার ও প্রাথমিক তদন্ত হওয়ার পর তিনি মামলার তদন্তভার পেয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিহত মোঃ আল আমিন বিশ^াষের বোন ফাতেমা খাতুন জানান, তার ভাই মোঃ আলামিন বিশ^াষ (২৪) খুলনার কয়রা উপজেলায় মটরসাইকেল গ্যারেজের মালিক। তার পিতা আব্দুল কালাম বিশ^াষ সৌদি আরবে কাজ করেন। তার ভাই কয়রার মালীখালী এলাকায় থাকেন। তার স্ত্রী ও দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। গত ০১জুন তিনি সাতক্ষীরাতে গ্যারেজের মালামাল কেনার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। ০২জুন’২৪ইং তারীখ খুলনার সিএন্ডবি কলোনীর একটি ছয়তলা বাড়ির নিচ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় পুলিশ ঐ ভবনের ছাদ থেকে কয়রা মহেশ^রীপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর এলাকার মজিবুর সানার পুত্র রিয়াছাদ (২২) ও সিএন্ডবি কলোনী থেকে টুটপাড়া সরকার পাড়া এলাকার মোঃ ইব্রাহিম এর পুত্র মোঃ আশিক গাজী(১৮) কে গ্রেফতার করে। ০৩জুন’২৪ইং তারীখ এই ঘটনায় থানায় একটি কাগজে আমার সই নিয়ে পুলিশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে আমাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে।

পরে আমি জানতে পারি যে কাগজে আমাদের সই নেওয়া হয়েছে  সেটি মামলার এজাহার। কিন্তু আমাদেরকে এজাহার পড়তে দেওয়া হয়নি সই করানোর আগে। পাশাপাশি নিহতের পরিবার হিসেবে আমাদের কোন বক্তব্যও এজাহারে উল্লেখ করা হয়নি। আমরা পরে এজাহার দেখে জানতে পারি এই মামলায় শুধুমাত্র গ্রেফতার দুই জনকে আসামী করা হয়েছে। কিন্তু আমরা ঘটনস্থলে গিয়ে ও আশপাশের মানুষের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি এই ঘটনায় আরো সন্ত্রাসীরা যুক্ত রয়েছে। এছাড়াও আমার ভাই ০১জুন’২৪ তারীখ তিন লাখ ১০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে মালামাল কেনার জন্য। পথে রিয়াছাদ তার পূর্ব পরিচিত সে তাকে তার বোনের বিয়ের কথা বলে খুলনায় নিয়ে আসে। এবং ঘটনাস্থল থেকে রিয়াছাদের নিকট থেকে ৪৫ হাজার টাকা ও আমার ভাইয়ের মোবাইল সহ দুটি মোবাইল উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু এজাহারে এই কথা উল্লেখ নেই। মামলার জব্দ তালিকায় ৪৫ হাজার টাকার স্থলে মাত্র সাড়ে ১২ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে।

এছাড়াও তিনি অভিযোগ করেন, মামলার দ্বিতীয় আসামী মোঃ আশিক গাজীর বয়স ১৮ দেখিয়ে তাকে মামলাকে দূরে রাখার চেষ্টা করছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্ত কর্মকর্তার সাথে তারা ০২জুন’২৪ইং তারীখ থেকে গত ২৫জুন’২৪ তারীখ পর্যন্ত বার বার ফোন করা হলেও তিনি কোন যোগাযোগ করেননি। ২৫জুন’২৪ইং তারীখ সোনাডাঙ্গায় থানায় গিয়ে দেখা করলে তিনি বলেন, তিনি তার মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করেছেন। তিনি আমাদের অভিযোগ নিয়েও কোন সদ উত্তর দিতে পারেননি। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন, নিহত আল আমিন বিশ^াসের পিতা আবুল কালাম বিশ^াস, ফাতেমা খাতুনের স্বামী তরিকুল ইসলাম সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এমতাবস্থায় তারা এই হত্যা মামলাটির এজাহার পরিবর্তন ও মামলা পূর্ন তদন্তের জন্য পিবিআই অথবা পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষন করেন।

এ বিষয়ে এস আই ত্রিদীপ কুমার মন্ডল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এজাহার উনারা দায়ের করেছেন। এজাহার করার সময় আমি ছিলাম না। আমি মামলা রেকর্ড হওয়ার পরে তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। অতএব এজাহার আসলে কে করেছে, কিভাবে করেছে আমি সেটা জানি না। এছাড়াও তিনি বলেন, এই ঘটনার শুরুতে আমি ছিলাম না। অতএব প্রাথমিক তদন্তে কিকি জব্দ হয়েছে সেটিও আমি জানি না। আমি যেটি জব্দ হিসেবে তদন্তে এসে পেয়েছি সেটি জব্দ তালিকায় দিয়েছি। তিনি বলেন, আমি কিছু দিন আগে বগুড়া থেকে এসে এখানে জয়েন্ট করেছি। এসেই আমি এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। আর তিনি বলেন, পুলিশের মামলার সফটওয়্যারে তার একটি  মোবাইল নম্বর ছিলো। যেটি তিনি ব্যাক্তিগত কারনে বন্দ রেখেছেন। এ কারনে মামলার কাগজে দেওয়া মোবাইল নম্বরে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তিনি দাবি করেন, বাদীর পক্ষ থেকে থানার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে আমি পরে তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি।

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

খুলনায় মোঃ আল আমিন বিশ্বাস হত্যা মামলার তদন্তে অনিয়োমের অভিযোগ

প্রকাশিত সময় : ০২:৫৯:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪

####

খুলনায় মটরসাইকেল গ্যারেজ মালিক মোঃ আল আমিন বিশ^াষ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করে, পিবিআই বা গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তের দাবি জানিয়েছে নিহতের পরিবার। বুধবার সকালে খুলনা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন নিহতের পরিবার। আর এ বিষয়ে পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা সোনাডাঙ্গা থানার সাব ইন্সপেক্টর ত্রিদীপ কুমার মন্ডল জানান, এজাহার ও প্রাথমিক তদন্ত নিয়ে তিনি কিছু জানেনা। কারন এজাহার ও প্রাথমিক তদন্ত হওয়ার পর তিনি মামলার তদন্তভার পেয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিহত মোঃ আল আমিন বিশ^াষের বোন ফাতেমা খাতুন জানান, তার ভাই মোঃ আলামিন বিশ^াষ (২৪) খুলনার কয়রা উপজেলায় মটরসাইকেল গ্যারেজের মালিক। তার পিতা আব্দুল কালাম বিশ^াষ সৌদি আরবে কাজ করেন। তার ভাই কয়রার মালীখালী এলাকায় থাকেন। তার স্ত্রী ও দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। গত ০১জুন তিনি সাতক্ষীরাতে গ্যারেজের মালামাল কেনার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। ০২জুন’২৪ইং তারীখ খুলনার সিএন্ডবি কলোনীর একটি ছয়তলা বাড়ির নিচ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় পুলিশ ঐ ভবনের ছাদ থেকে কয়রা মহেশ^রীপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর এলাকার মজিবুর সানার পুত্র রিয়াছাদ (২২) ও সিএন্ডবি কলোনী থেকে টুটপাড়া সরকার পাড়া এলাকার মোঃ ইব্রাহিম এর পুত্র মোঃ আশিক গাজী(১৮) কে গ্রেফতার করে। ০৩জুন’২৪ইং তারীখ এই ঘটনায় থানায় একটি কাগজে আমার সই নিয়ে পুলিশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে আমাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে।

পরে আমি জানতে পারি যে কাগজে আমাদের সই নেওয়া হয়েছে  সেটি মামলার এজাহার। কিন্তু আমাদেরকে এজাহার পড়তে দেওয়া হয়নি সই করানোর আগে। পাশাপাশি নিহতের পরিবার হিসেবে আমাদের কোন বক্তব্যও এজাহারে উল্লেখ করা হয়নি। আমরা পরে এজাহার দেখে জানতে পারি এই মামলায় শুধুমাত্র গ্রেফতার দুই জনকে আসামী করা হয়েছে। কিন্তু আমরা ঘটনস্থলে গিয়ে ও আশপাশের মানুষের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি এই ঘটনায় আরো সন্ত্রাসীরা যুক্ত রয়েছে। এছাড়াও আমার ভাই ০১জুন’২৪ তারীখ তিন লাখ ১০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে মালামাল কেনার জন্য। পথে রিয়াছাদ তার পূর্ব পরিচিত সে তাকে তার বোনের বিয়ের কথা বলে খুলনায় নিয়ে আসে। এবং ঘটনাস্থল থেকে রিয়াছাদের নিকট থেকে ৪৫ হাজার টাকা ও আমার ভাইয়ের মোবাইল সহ দুটি মোবাইল উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু এজাহারে এই কথা উল্লেখ নেই। মামলার জব্দ তালিকায় ৪৫ হাজার টাকার স্থলে মাত্র সাড়ে ১২ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে।

এছাড়াও তিনি অভিযোগ করেন, মামলার দ্বিতীয় আসামী মোঃ আশিক গাজীর বয়স ১৮ দেখিয়ে তাকে মামলাকে দূরে রাখার চেষ্টা করছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্ত কর্মকর্তার সাথে তারা ০২জুন’২৪ইং তারীখ থেকে গত ২৫জুন’২৪ তারীখ পর্যন্ত বার বার ফোন করা হলেও তিনি কোন যোগাযোগ করেননি। ২৫জুন’২৪ইং তারীখ সোনাডাঙ্গায় থানায় গিয়ে দেখা করলে তিনি বলেন, তিনি তার মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করেছেন। তিনি আমাদের অভিযোগ নিয়েও কোন সদ উত্তর দিতে পারেননি। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন, নিহত আল আমিন বিশ^াসের পিতা আবুল কালাম বিশ^াস, ফাতেমা খাতুনের স্বামী তরিকুল ইসলাম সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এমতাবস্থায় তারা এই হত্যা মামলাটির এজাহার পরিবর্তন ও মামলা পূর্ন তদন্তের জন্য পিবিআই অথবা পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষন করেন।

এ বিষয়ে এস আই ত্রিদীপ কুমার মন্ডল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এজাহার উনারা দায়ের করেছেন। এজাহার করার সময় আমি ছিলাম না। আমি মামলা রেকর্ড হওয়ার পরে তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। অতএব এজাহার আসলে কে করেছে, কিভাবে করেছে আমি সেটা জানি না। এছাড়াও তিনি বলেন, এই ঘটনার শুরুতে আমি ছিলাম না। অতএব প্রাথমিক তদন্তে কিকি জব্দ হয়েছে সেটিও আমি জানি না। আমি যেটি জব্দ হিসেবে তদন্তে এসে পেয়েছি সেটি জব্দ তালিকায় দিয়েছি। তিনি বলেন, আমি কিছু দিন আগে বগুড়া থেকে এসে এখানে জয়েন্ট করেছি। এসেই আমি এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। আর তিনি বলেন, পুলিশের মামলার সফটওয়্যারে তার একটি  মোবাইল নম্বর ছিলো। যেটি তিনি ব্যাক্তিগত কারনে বন্দ রেখেছেন। এ কারনে মামলার কাগজে দেওয়া মোবাইল নম্বরে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তিনি দাবি করেন, বাদীর পক্ষ থেকে থানার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে আমি পরে তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি।