০৭:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনার আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

###

খুলনা সদর থানার সাবেক ওসি বর্তমানে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের(কেএমপি) বোম্ব স্কোয়াডের অতিরিক্ত উপকমিশনার এস.এম কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার দুপুরে দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা র্কাযারয়ের সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণীতে ১৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার তথ্য গোপন এবং ১ কোটি ২ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, এস এম কামরুজ্জামান তার সম্পদ বিবরণীতে ২ কোটি ৭ লাখ ১২ হাজার ১৪৯ টাকার স্থাবর এবং ১ কোটি ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬৯৭ টাকার অস্থাবরসহ মোট ৩ কোটি ৯ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৬ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন। সে সময়ে তার ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন ও রূপালী ব্যাংকে ৪৫ লাখ টাকার দায় ছিল। সুতরাং দায় বাদে তার নীট সম্পদের মূল্য ২ কোটি ৬৪ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৬ টাকা। কামরুজ্জামানের অতীত জীবনের সঞ্চয়, বেতন-ভাতার আয়, বাড়ি-ভাড়ার আয়, মাইক্রো-বাস ভাড়া হতে আয়, সঞ্চয়পত্রের সুদ প্রাপ্তি ও জমি বিক্রয় বাবদ মূলধনী আয় হতে মোট গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ ২ কোটি ২৪ লাখ ৮১ হাজার ৭১৮ টাকা। তিনি পারিবারিক ব্যয় ও ঋণ পরিশোধ বাবদ ৬২ লাখ ৩২ হাজার ৪৫৪ টাকা ব্যয় করেন। এ হিসেবে তার নীট আয় ও সঞ্চয়ের পরিমাণ ১ কোটি ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ২৬৪ টাকা।

মামলায় আরও বলা হয়, এস.এম কামরুজ্জামানের জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসংগতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ দাড়ায় ১ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার ৫৮২ টাকা। কাজেই এস.এম কামরুজ্জামান বাংলাদেশ পুলিশে চাকরি করার সময় ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার ৫৮২ টাকার সম্পদ অর্জন করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

জানা গেছে, আওয়ামীলীগ সরকারের প্রথম মেয়াদ থেকেই খুলনায় আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন এস.এম কামরুজ্জামান। ২০১২ সালের ২১এপ্রিল ছাত্রদল নেতা মাহমুদুল হাসান টিটোকে খুলনা সদর থানার ভেতরে ঝুঁলিয়ে পিটানোর ঘটনায় প্রথম আলোচনায় আসেন তিনি। গত ১৫ বছরে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা, নির্যাতন, মাদক বিক্রেতাদের সঙ্গে সখ্যতাসহ অসংখ্য অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। কামরুজ্জামানের পৈত্রিক বাড়ী বাগেরহাটের রামপালের শিবনগর গ্রাম এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের বাড়ী একই উপজেলায় হওয়ায় কামরুজ্জামান নিজেকে সাবেক সিটি মেয়রের ভাগ্নে হিসেবে পরিচয় দিতেন। সরকারের আস্থাভাজন হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কখনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং তাকে দুই দফা পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত উপকমিশনার করা হয়। গত ১৫ বছরের বেশিরভাগ সময়ই তিনি খুলনাতেই দায়িত্ব পালন করেছেন। ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর তাকে কেএমপির গোয়েন্দা বিভাগ থেকে বদলী করে বোম্ব স্কোয়াডে নেওয়া হয়। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

খুলনা জেলায় ১ ডিসেম্বর আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নবায়ন শুরু

খুলনার আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশিত সময় : ০৮:০৩:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪

###

খুলনা সদর থানার সাবেক ওসি বর্তমানে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের(কেএমপি) বোম্ব স্কোয়াডের অতিরিক্ত উপকমিশনার এস.এম কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার দুপুরে দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা র্কাযারয়ের সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণীতে ১৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার তথ্য গোপন এবং ১ কোটি ২ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, এস এম কামরুজ্জামান তার সম্পদ বিবরণীতে ২ কোটি ৭ লাখ ১২ হাজার ১৪৯ টাকার স্থাবর এবং ১ কোটি ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬৯৭ টাকার অস্থাবরসহ মোট ৩ কোটি ৯ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৬ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন। সে সময়ে তার ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন ও রূপালী ব্যাংকে ৪৫ লাখ টাকার দায় ছিল। সুতরাং দায় বাদে তার নীট সম্পদের মূল্য ২ কোটি ৬৪ লাখ ৮১ হাজার ৮৪৬ টাকা। কামরুজ্জামানের অতীত জীবনের সঞ্চয়, বেতন-ভাতার আয়, বাড়ি-ভাড়ার আয়, মাইক্রো-বাস ভাড়া হতে আয়, সঞ্চয়পত্রের সুদ প্রাপ্তি ও জমি বিক্রয় বাবদ মূলধনী আয় হতে মোট গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ ২ কোটি ২৪ লাখ ৮১ হাজার ৭১৮ টাকা। তিনি পারিবারিক ব্যয় ও ঋণ পরিশোধ বাবদ ৬২ লাখ ৩২ হাজার ৪৫৪ টাকা ব্যয় করেন। এ হিসেবে তার নীট আয় ও সঞ্চয়ের পরিমাণ ১ কোটি ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ২৬৪ টাকা।

মামলায় আরও বলা হয়, এস.এম কামরুজ্জামানের জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসংগতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ দাড়ায় ১ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার ৫৮২ টাকা। কাজেই এস.এম কামরুজ্জামান বাংলাদেশ পুলিশে চাকরি করার সময় ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার ৫৮২ টাকার সম্পদ অর্জন করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

জানা গেছে, আওয়ামীলীগ সরকারের প্রথম মেয়াদ থেকেই খুলনায় আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন এস.এম কামরুজ্জামান। ২০১২ সালের ২১এপ্রিল ছাত্রদল নেতা মাহমুদুল হাসান টিটোকে খুলনা সদর থানার ভেতরে ঝুঁলিয়ে পিটানোর ঘটনায় প্রথম আলোচনায় আসেন তিনি। গত ১৫ বছরে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা, নির্যাতন, মাদক বিক্রেতাদের সঙ্গে সখ্যতাসহ অসংখ্য অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। কামরুজ্জামানের পৈত্রিক বাড়ী বাগেরহাটের রামপালের শিবনগর গ্রাম এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের বাড়ী একই উপজেলায় হওয়ায় কামরুজ্জামান নিজেকে সাবেক সিটি মেয়রের ভাগ্নে হিসেবে পরিচয় দিতেন। সরকারের আস্থাভাজন হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কখনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং তাকে দুই দফা পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত উপকমিশনার করা হয়। গত ১৫ বছরের বেশিরভাগ সময়ই তিনি খুলনাতেই দায়িত্ব পালন করেছেন। ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর তাকে কেএমপির গোয়েন্দা বিভাগ থেকে বদলী করে বোম্ব স্কোয়াডে নেওয়া হয়। ##