১০:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মানছে না প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ :

খুলনার ডুমুরিয়ার গুটুদিয়া-পাবলার কৃষি জমি গিলে খাচ্ছে বালু কারবারী ও আবাসন ব্যবসায়ীরা

ডুমুরিয়া প্রতিনিধি।।

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় গুটুদিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা ও বিলা পাবলার কৃষি জমি গিলে কাচ্ছে বালু কারবারী ও আবাসন কোম্পানীর ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বর এবং রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালীদের দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছে এলাকার কৃষক ও কৃষিজীবিরা্ বিলের পর বিল কৃষি জমিতে আবাসন ব্যবসায়ীরা বালি ও মাটি দিয়ে ভরাট করায় হুমকিতে পড়ছে কৃষি চাষাবাদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি জমি অন্যকোন কাজে ব্যবহার বন্ধে কঠোর নির্দেশনা দিলেও তা মানছে না এসব ভুমিদস্যু, বালু কারবারীরা ও আবাসন ব্যবসায়ীরা। এসব বালু কারবারী ও আবাসন খাতের দস্যু ও ভুমি খেকোরা কৃষি জমি ভরাটের কাজে ব্যবহার করছে বিকট শব্দওয়ালা এক ধরনের শ্যালো ইঞ্জিন। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে এর কার্যক্রম। ফলে মেশিনের শব্দ ও বালিতে পরিবেশ হচ্ছে দুষিত অপরদিকে হারিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি।

সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, খুলনা মহানগরী একাংশকে ঘিরে রয়েছে উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়ন। বর্তমানে ইউনিয়নের জয় বাংলা মোড়সহ চকমথুরাবাদ, বিলপাবলা, কুলটি, জিলেরডাঙ্গা, মোস্তফার মোড়, লতা-খামারবাটি এলাকা গুলো হয়ে উঠেছে খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে এসব অ লে গড়ে উঠেছে বহু সরকারি প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি বে-সরকারি শিল্প কল-কারখানাও গড়ে তোলা হচ্ছে। উপজেলার এই অ লটি এখন ভরে উঠছে শহোরী পরিবেশে। তবে উন্নয়নের এই ছোঁয়ার মধ্যে রয়েছে অনেক ঝুঁকি। এরই মধ্যে বহু কৃষি জমি হারিয়ে গেছে। বালি ফেলে ফেলে জমি গুলো করা হচ্ছে ভরাট। আর এই বালি সরবরাহের কাজে মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে শ্যালো ইঞ্জিনের বুস্টার মেশিন। কৈয়া বাজার থেকে শুরু করে মোস্তফার মোড় পর্যন্ত প্রায় ২০টি মেশিন বসানো হয়েছে। এরমধ্যে জমজমাট ব্যবসা গড়ে তোলা হয়েছে বিল পাবলা মোড়ে। সেখানে সোহেল শেখ ও আলো সাহেব নামের দু’জন দুটি বালু প্রতিষ্ঠান খুলে বসে আছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শ শ ডাম্পার ট্রাকে করে বালি এনে ফেলা হচ্ছে। আর সেখানে থাকা বুস্টার মেশিন দিয়ে সেই বালি বিভিন্ন প্লটে ফেলে ভরাট করা হচ্ছে কৃষি জমি। ফলে এই বালু কারবারিতে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে আবাদি জমি। তবে এর প্রভাব শুধু কৃষি জমির ওপর পড়ছে না। এই বালির কারণে পরিবেশও হচ্ছে দুষিত। রাস্তা জুড়ে মিশে থাকে বালি আর বালি। যার প্রভাবে সাধারণ পথচারি অতিষ্ট। অন্য যানবাহন চলাচলেও হয় অসুবিধা। বালির এই প্রভাব ছাড়াও আছে ওই সিলিন্ডার মেশিনের প্রকট শব্দ। মেশিনের কারণে বিল পাবলার ওই মোড়ে কোন পথচারীর একটু আশ্রয় নেয়ার সুযোগ নেই। গুটুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ তুহিনুল ইসলাম তুহিন কৃষি জমি খেকো বালু কারবারী ও আবাসন ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজসের কথা অস্বীকার করে বলেন, এই বালি কারবারের পেছনে রয়েছে প্লট ব্যবসায়ীরা। তারা ফসলি জমি কিনে তা বালি দিয়ে ভরাট করছে। কৈয়া বাজার থেকে শুরু করে অশিকাংশ রাস্তার পাশে বসানো আছে সালেন্ডার মেশিন। দিনের বেলায় বালি ও মেশিনের শব্দে যাতায়াত করা কঠিন। পথচারি ছাড়াও রাস্তার পাশে বসবাসরত মানুষ গুলোও আছে চরম অশান্তিতে। তবে এসব সমস্যা সমাধানে আমি ইতোমধ্যে বালি ও প্লট ব্যবসায়ীদের নোটিশ করেছি। এছাড়া চলমান এই পরিস্থিতি নিয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবিহিত করা হয়েছে। বালু কারবারী খুলনার বয়রা এলাকার বাসিন্দা সোহেল শেখ মুঠোফোনে বলেন, বালির এ কাজটি আমি আড়াই মাস ধরে চালাচ্ছি। আমরা পাইপের মাধ্যমে দুই থেকে তিন কিলোমিটার দুরত্ব পর্যন্ত বালি পৌঁছে দিয়ে থাকি। তবে এর কারণে কোন প্রকার ক্ষতি বা বিগ্ন হচ্ছে এমন কোন কথা আমাদের কেউ বলেনি। এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান জানান, সরকারি কোন রাস্তার পাশে এ ধরনের বালি ব্যবসা গড়ে তোলা যাবে না। যত দ্রুত সম্ভব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কথাও জানান তিনি। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik adhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

মানছে না প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ :

খুলনার ডুমুরিয়ার গুটুদিয়া-পাবলার কৃষি জমি গিলে খাচ্ছে বালু কারবারী ও আবাসন ব্যবসায়ীরা

প্রকাশিত সময় : ০৮:৩৫:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩

ডুমুরিয়া প্রতিনিধি।।

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় গুটুদিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা ও বিলা পাবলার কৃষি জমি গিলে কাচ্ছে বালু কারবারী ও আবাসন কোম্পানীর ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বর এবং রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালীদের দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছে এলাকার কৃষক ও কৃষিজীবিরা্ বিলের পর বিল কৃষি জমিতে আবাসন ব্যবসায়ীরা বালি ও মাটি দিয়ে ভরাট করায় হুমকিতে পড়ছে কৃষি চাষাবাদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি জমি অন্যকোন কাজে ব্যবহার বন্ধে কঠোর নির্দেশনা দিলেও তা মানছে না এসব ভুমিদস্যু, বালু কারবারীরা ও আবাসন ব্যবসায়ীরা। এসব বালু কারবারী ও আবাসন খাতের দস্যু ও ভুমি খেকোরা কৃষি জমি ভরাটের কাজে ব্যবহার করছে বিকট শব্দওয়ালা এক ধরনের শ্যালো ইঞ্জিন। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে এর কার্যক্রম। ফলে মেশিনের শব্দ ও বালিতে পরিবেশ হচ্ছে দুষিত অপরদিকে হারিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি।

সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, খুলনা মহানগরী একাংশকে ঘিরে রয়েছে উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়ন। বর্তমানে ইউনিয়নের জয় বাংলা মোড়সহ চকমথুরাবাদ, বিলপাবলা, কুলটি, জিলেরডাঙ্গা, মোস্তফার মোড়, লতা-খামারবাটি এলাকা গুলো হয়ে উঠেছে খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে এসব অ লে গড়ে উঠেছে বহু সরকারি প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি বে-সরকারি শিল্প কল-কারখানাও গড়ে তোলা হচ্ছে। উপজেলার এই অ লটি এখন ভরে উঠছে শহোরী পরিবেশে। তবে উন্নয়নের এই ছোঁয়ার মধ্যে রয়েছে অনেক ঝুঁকি। এরই মধ্যে বহু কৃষি জমি হারিয়ে গেছে। বালি ফেলে ফেলে জমি গুলো করা হচ্ছে ভরাট। আর এই বালি সরবরাহের কাজে মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে শ্যালো ইঞ্জিনের বুস্টার মেশিন। কৈয়া বাজার থেকে শুরু করে মোস্তফার মোড় পর্যন্ত প্রায় ২০টি মেশিন বসানো হয়েছে। এরমধ্যে জমজমাট ব্যবসা গড়ে তোলা হয়েছে বিল পাবলা মোড়ে। সেখানে সোহেল শেখ ও আলো সাহেব নামের দু’জন দুটি বালু প্রতিষ্ঠান খুলে বসে আছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শ শ ডাম্পার ট্রাকে করে বালি এনে ফেলা হচ্ছে। আর সেখানে থাকা বুস্টার মেশিন দিয়ে সেই বালি বিভিন্ন প্লটে ফেলে ভরাট করা হচ্ছে কৃষি জমি। ফলে এই বালু কারবারিতে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে আবাদি জমি। তবে এর প্রভাব শুধু কৃষি জমির ওপর পড়ছে না। এই বালির কারণে পরিবেশও হচ্ছে দুষিত। রাস্তা জুড়ে মিশে থাকে বালি আর বালি। যার প্রভাবে সাধারণ পথচারি অতিষ্ট। অন্য যানবাহন চলাচলেও হয় অসুবিধা। বালির এই প্রভাব ছাড়াও আছে ওই সিলিন্ডার মেশিনের প্রকট শব্দ। মেশিনের কারণে বিল পাবলার ওই মোড়ে কোন পথচারীর একটু আশ্রয় নেয়ার সুযোগ নেই। গুটুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ তুহিনুল ইসলাম তুহিন কৃষি জমি খেকো বালু কারবারী ও আবাসন ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজসের কথা অস্বীকার করে বলেন, এই বালি কারবারের পেছনে রয়েছে প্লট ব্যবসায়ীরা। তারা ফসলি জমি কিনে তা বালি দিয়ে ভরাট করছে। কৈয়া বাজার থেকে শুরু করে অশিকাংশ রাস্তার পাশে বসানো আছে সালেন্ডার মেশিন। দিনের বেলায় বালি ও মেশিনের শব্দে যাতায়াত করা কঠিন। পথচারি ছাড়াও রাস্তার পাশে বসবাসরত মানুষ গুলোও আছে চরম অশান্তিতে। তবে এসব সমস্যা সমাধানে আমি ইতোমধ্যে বালি ও প্লট ব্যবসায়ীদের নোটিশ করেছি। এছাড়া চলমান এই পরিস্থিতি নিয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবিহিত করা হয়েছে। বালু কারবারী খুলনার বয়রা এলাকার বাসিন্দা সোহেল শেখ মুঠোফোনে বলেন, বালির এ কাজটি আমি আড়াই মাস ধরে চালাচ্ছি। আমরা পাইপের মাধ্যমে দুই থেকে তিন কিলোমিটার দুরত্ব পর্যন্ত বালি পৌঁছে দিয়ে থাকি। তবে এর কারণে কোন প্রকার ক্ষতি বা বিগ্ন হচ্ছে এমন কোন কথা আমাদের কেউ বলেনি। এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান জানান, সরকারি কোন রাস্তার পাশে এ ধরনের বালি ব্যবসা গড়ে তোলা যাবে না। যত দ্রুত সম্ভব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কথাও জানান তিনি। ##