১০:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনার দিঘলিয়ার গাজী পরিবারেরর  সদস্যদের নামে হত্যা মামলা; উপজেলা জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

###    খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নের লাখোহাটি গ্রামের চার বাড়ির সন্তান শেখ আনসার উদ্দিন হত্যা মামলায় বারাকপুরের গাজী পরিবারের বেশিরভাগ পুরুষ সদস্যদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর থেকেই স্থানীয় এলাকাবাসী ও উপজেলা আওয়ামিলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সুত্রে জানা যায় বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেন হত্যার সাথে জড়িত ছিলেন সদ্য সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত শেখ আনসার উদ্দিন। চেয়ারম্যান হত্যার পর তার পুত্র কাইফ গাজী বাদী হয়ে আনসার উদ্দিনসহ ৮-১০ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। দুইটি হত্যার মধ্যে কিছুটা মিল থাকলেও প্রকৃত হত্যাকারীদের ধরাছোঁয়ার বাইরে রেখে মামলা করায় স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ উৎকন্ঠা সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা আওয়ামিলীগ ও গাজী পরিবারের সদস্যদের মতে বারাকপুরের চার বাড়ি সরকার বিরোধী বিএনপি জামায়াতের ঘাটি। রাজনৈতিক স্বার্থে একটি মহল নিহত আনসার উদ্দিনের পুত্র বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৮-১০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে মামলা দায়ের করেন। এলাকাবাসী ও বারাকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা ও এজাহার সুত্রে জানা যায় বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান ও দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গাজী জাকির হোসেন হত্যা মামলার বাদী তার পুত্র গাজী কাইফকে আনসার উদ্দিন হত্যা মামলায় আসামী করা হয়েছে। আসামী করা হয়েছে গাজী জাকির হোসেনের বড় ভাই ও বারাকপুর বাজার কমিটির নির্বাচিত সভাপতি গাজী নাসির উদ্দিন (৭০), এই মামলার ১ নং আসামী করা হয়েছে বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচন নির্বাচিত চেয়ারম্যান গাজী সাহগীর হোসেন পাভেল, পাভেল উপজেলা যুবলীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক,  জাকির গাজীর বোনের পুত্র এ্যাড. পারভেজ মিনা (৩০) ও পলাশ মিনা (৪৫), উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গাজী ফরহাদ হোসেন (৫০)(গ্রেফতার),  গাজী নাসির উদ্দিনের পুত্র বারাকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন স্বপ্নতরীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি গাজী আলী বাকের প্রিন্স (৪০), এজাহারভুক্ত আসামী করা হয়েছে গাজী জাকির হোসেনের বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম গাজী গোলাম মোস্তফার পুত্র রাসেল গাজী (৩০), গাজী জাকিরের চাচাতো ভাই মোস্তাক গাজীর পুত্র আন্দু গাজী, গাজী জাকির হোসেনের চাচাতো ভাই মঞ্জু গাজী (৫২), মিদু গাজী(৫৫), গাজী সেলিম রেজা (৪৮) কে এজাহারভুক্ত আসামী করা হয়েছে। গাজী জাকির হোসেনের ভাইপো শিমুল গাজী (২৬), মারুফ গাজী (৩০), ভাগনে মহবুব শেখ(৩২), আজিবর শেখ(৩৫), ভগ্নিপতির ভাইপো বিল্লাল চৌধুরী (৪০), আজিজুল চৌধুরী (৩০), মতুল আত্নীয় বাপ্পী শেখ(৩০) আহাদ মোল্লা(২৫), ভগ্নিপতির আত্নীয় জনি শেখ(৩২) কে এজাহারভুক্ত আসামী করা হয়েছে। যাদেরকে আসামী করা হয়েছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত ও প্রায়ত চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেনের স্বজন বা পরিবারের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে নিজ এলাকায় মারামারি, হত্যা, সামাজিক শৃঙ্খলা বিরোধী কোনো কর্মকান্ডের অভিযোগ নেই বলে জানা গেছে। সদ্য প্রয়াত শেখ আনসার উদ্দিন সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর  ফিরে হটাৎ করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে বারাকপুর বাজারের নির্বাচন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন গাজী পরিবারের সাথে। চেয়ারম্যান বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয় শেখ আনসার উদ্দিন আর এলাকাবাসী আনসার উদ্দিনের গ্রুপের নাম দেন আনসার বাহিনী। শেখ আনসার উদ্দিন হত্যা মামলা সম্পর্কে খানজাহান আলী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামাল হোসেন খান সাংবাদিকদের বলেন শেখ আনসার উদ্দিন হত্যার এজাহার ভুক্ত ২ জন আসামীকে গ্রেফতার ও সন্দেহজনক ১ জনকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন আমরা প্রকৃত হত্যাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। প্রকৃত অপরাধীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে এবং অহেতুক কাউকে হয়রানি করা হবে না বলে তিনি জানান।##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik adhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

খুলনার দিঘলিয়ার গাজী পরিবারেরর  সদস্যদের নামে হত্যা মামলা; উপজেলা জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

প্রকাশিত সময় : ০১:০০:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩

###    খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নের লাখোহাটি গ্রামের চার বাড়ির সন্তান শেখ আনসার উদ্দিন হত্যা মামলায় বারাকপুরের গাজী পরিবারের বেশিরভাগ পুরুষ সদস্যদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর থেকেই স্থানীয় এলাকাবাসী ও উপজেলা আওয়ামিলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সুত্রে জানা যায় বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেন হত্যার সাথে জড়িত ছিলেন সদ্য সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত শেখ আনসার উদ্দিন। চেয়ারম্যান হত্যার পর তার পুত্র কাইফ গাজী বাদী হয়ে আনসার উদ্দিনসহ ৮-১০ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। দুইটি হত্যার মধ্যে কিছুটা মিল থাকলেও প্রকৃত হত্যাকারীদের ধরাছোঁয়ার বাইরে রেখে মামলা করায় স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ উৎকন্ঠা সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা আওয়ামিলীগ ও গাজী পরিবারের সদস্যদের মতে বারাকপুরের চার বাড়ি সরকার বিরোধী বিএনপি জামায়াতের ঘাটি। রাজনৈতিক স্বার্থে একটি মহল নিহত আনসার উদ্দিনের পুত্র বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৮-১০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে মামলা দায়ের করেন। এলাকাবাসী ও বারাকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা ও এজাহার সুত্রে জানা যায় বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান ও দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গাজী জাকির হোসেন হত্যা মামলার বাদী তার পুত্র গাজী কাইফকে আনসার উদ্দিন হত্যা মামলায় আসামী করা হয়েছে। আসামী করা হয়েছে গাজী জাকির হোসেনের বড় ভাই ও বারাকপুর বাজার কমিটির নির্বাচিত সভাপতি গাজী নাসির উদ্দিন (৭০), এই মামলার ১ নং আসামী করা হয়েছে বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচন নির্বাচিত চেয়ারম্যান গাজী সাহগীর হোসেন পাভেল, পাভেল উপজেলা যুবলীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক,  জাকির গাজীর বোনের পুত্র এ্যাড. পারভেজ মিনা (৩০) ও পলাশ মিনা (৪৫), উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গাজী ফরহাদ হোসেন (৫০)(গ্রেফতার),  গাজী নাসির উদ্দিনের পুত্র বারাকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন স্বপ্নতরীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি গাজী আলী বাকের প্রিন্স (৪০), এজাহারভুক্ত আসামী করা হয়েছে গাজী জাকির হোসেনের বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম গাজী গোলাম মোস্তফার পুত্র রাসেল গাজী (৩০), গাজী জাকিরের চাচাতো ভাই মোস্তাক গাজীর পুত্র আন্দু গাজী, গাজী জাকির হোসেনের চাচাতো ভাই মঞ্জু গাজী (৫২), মিদু গাজী(৫৫), গাজী সেলিম রেজা (৪৮) কে এজাহারভুক্ত আসামী করা হয়েছে। গাজী জাকির হোসেনের ভাইপো শিমুল গাজী (২৬), মারুফ গাজী (৩০), ভাগনে মহবুব শেখ(৩২), আজিবর শেখ(৩৫), ভগ্নিপতির ভাইপো বিল্লাল চৌধুরী (৪০), আজিজুল চৌধুরী (৩০), মতুল আত্নীয় বাপ্পী শেখ(৩০) আহাদ মোল্লা(২৫), ভগ্নিপতির আত্নীয় জনি শেখ(৩২) কে এজাহারভুক্ত আসামী করা হয়েছে। যাদেরকে আসামী করা হয়েছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত ও প্রায়ত চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেনের স্বজন বা পরিবারের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে নিজ এলাকায় মারামারি, হত্যা, সামাজিক শৃঙ্খলা বিরোধী কোনো কর্মকান্ডের অভিযোগ নেই বলে জানা গেছে। সদ্য প্রয়াত শেখ আনসার উদ্দিন সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর  ফিরে হটাৎ করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে বারাকপুর বাজারের নির্বাচন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন গাজী পরিবারের সাথে। চেয়ারম্যান বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয় শেখ আনসার উদ্দিন আর এলাকাবাসী আনসার উদ্দিনের গ্রুপের নাম দেন আনসার বাহিনী। শেখ আনসার উদ্দিন হত্যা মামলা সম্পর্কে খানজাহান আলী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামাল হোসেন খান সাংবাদিকদের বলেন শেখ আনসার উদ্দিন হত্যার এজাহার ভুক্ত ২ জন আসামীকে গ্রেফতার ও সন্দেহজনক ১ জনকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন আমরা প্রকৃত হত্যাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। প্রকৃত অপরাধীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে এবং অহেতুক কাউকে হয়রানি করা হবে না বলে তিনি জানান।##