০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনা থেকে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ০৩সদস্যকে গ্রেফতার

####

খুলনা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম”-এর ০৩সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বৃহষ্পতিবার গভীর রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৬ খুলনার যৌথ টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বটিয়াঘাটা থানাধীন সাচিবুনিয়া রেল ক্রসিং সংলগ্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ‍উগ্রবাদী বই, লিফলেট ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এ সময় অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জন সদস্য পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃরা হলো-ঠাকুরগাও সদরের উওর ঠাকুরগাও গ্রামের জিতেন দাসের ছেলে ইলিয়াস দাস আব্দুল্লাহ ওরফে হুজাইফা উসামা(২৭), পাবনার খয়েরসুতি গ্রামের মোঃ রবিউল ইসলামের ছেলে মোঃ সাব্বিরুল ইসলাম সাব্বির ওরফে আবু সাব্বির আল বাঙালি(২০) ও গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ার কুলপাড়া গ্রামের ইলিয়াস লস্করের ছেলে শামিম লস্কর (১৯)।

র্যাব জানায়, জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্যরা গোপন বৈঠক করছে এমন খবর পেয়ে খুলনার বটিয়াঘাটার সাচিবুনিয়া রেল ক্রসিং সংলগ্ন একটি টিনসেড ঘরে অভিযান চালায় র্যাবের একটি টিম। এ সময় জঙ্গী সংগঠনের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব আরও জানায়, গ্রেফতারকৃতরা জঙ্গিরা আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম-এর র্কাযক্রম পরিচালনা করে আসছিল। পরবর্তীতে তারা নিজেরাই সংগঠনের সদস্য সংগ্রহে দাওয়াতি র্কাযক্রম শুরু করে। সংগঠনের সদস্যদেরকে তারা বিভিন্ন উগ্রবাদি পুস্তিকা, মুসলমানদের উপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সরবরাহ এবং সংগঠনের র্কাযক্রম পরিচালনার জন্য ভুল তথ্য প্রদান করে তাদের আত্মীয়-স্বজন, বিভিন্ন মাদ্রাসা ও সদস্যদের নিকট থেকে নিয়মিত অর্থ সংগ্রহ করতো। এর পাশাপাশি তারা মসজিদ, বাসা বা বিভিন্ন স্থানে সদস্যদের নিয়ে গোপন সভা করে দেশের বিচার ও শাসন ব্যবস্থা সর্ম্পকে বিরুপ মনোভাব তৈরি করে তথাকথিত ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করার জন্য সদস্যদেরকে উগ্রবাদী করে তুলতো। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ইলিয়াস দাস আব্দুল্লাহ ওরফে হুজাইফা উসামার বাড়ি ঠাকুরগাঁও হলেও সে মিরপুরে অবস্থান করে একটি পণ্যের মার্কেটিং এ চাকরি করতো। সে ২০১৮ সালে খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। আব্দুল্লাহ তার নিজ এলাকা ঠাকুরগাও এ দাওয়াতি কাজ শুরু করে এবং বর্তমানে গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত ঠাকুরগাও এর দাওয়াতি শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিল। “কিতাল ফি ছাবিলিল্লাহ” নামে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপের এ্যাডমিন এই আব্দুল্লাহ। এই গ্রুপে বিভিন্ন উগ্রবাদী ছবি, ভিডিও ও কন্টেন্ট শেয়ার করে সদস্যদের উগ্রবাদে উদ্ভূদ্ধ করা হত। ঠাকুরগাঁও ছাড়াও সংগঠনের অন্যান্য জেলার সদস্যদের সাথে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল এবং মাঝে মধ্যেই সে অন্য জেলার সদস্যদের সাথে গোপন বৈঠক করতো। গ্রেফতারকৃত মোঃ সাবিরুল ইসলাম সাব্বির ওরফে আবু সাব্বির আল বাঙ্গালি একজন ছাত্র। তার বড়ি পাবনা জেলায়। তাদের ভাষ্য মতে গণতন্ত্র হচ্ছে কুফরি মতবাদ এবং এই গণতন্ত্রের নামে ভোটাভুটিও তাগুদের কাজ। তাই এই কুফরি কাজ নস্যাৎ করার জন্য তারা বদ্ধপরিকর ছিল। এবং গ্রেফতারকৃত শামিম লস্করও একজন ছাত্র। সে ধৃত ইলিয়াস দাস আব্দুল্লাহ ওরফে হুজাইফা উসামার মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগদান করে দাওয়াতী র্কাযক্রম করতে থাকে। তার নিজ এলাকা গোপালগঞ্জে দাওয়াতী র্কাযক্রম পরিচালনার পাশাপাশি সংগঠনে নিয়মিত চাঁদা প্রদান এবং সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের নিকট হতে চাঁদা সংগ্রহ করতো বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃতদের সকলের নামেই র্পূবে জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা রয়েছে। একারনে তারা বিভিন্ন সময় স্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপনে ছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

গলাচিপায় বিভিন্ন দাবীতে সহকারী শিক্ষকদের মানববন্ধন

খুলনা থেকে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ০৩সদস্যকে গ্রেফতার

প্রকাশিত সময় : ০১:৩৪:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ জানুয়ারী ২০২৪

####

খুলনা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম”-এর ০৩সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বৃহষ্পতিবার গভীর রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৬ খুলনার যৌথ টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বটিয়াঘাটা থানাধীন সাচিবুনিয়া রেল ক্রসিং সংলগ্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ‍উগ্রবাদী বই, লিফলেট ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এ সময় অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জন সদস্য পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃরা হলো-ঠাকুরগাও সদরের উওর ঠাকুরগাও গ্রামের জিতেন দাসের ছেলে ইলিয়াস দাস আব্দুল্লাহ ওরফে হুজাইফা উসামা(২৭), পাবনার খয়েরসুতি গ্রামের মোঃ রবিউল ইসলামের ছেলে মোঃ সাব্বিরুল ইসলাম সাব্বির ওরফে আবু সাব্বির আল বাঙালি(২০) ও গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ার কুলপাড়া গ্রামের ইলিয়াস লস্করের ছেলে শামিম লস্কর (১৯)।

র্যাব জানায়, জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্যরা গোপন বৈঠক করছে এমন খবর পেয়ে খুলনার বটিয়াঘাটার সাচিবুনিয়া রেল ক্রসিং সংলগ্ন একটি টিনসেড ঘরে অভিযান চালায় র্যাবের একটি টিম। এ সময় জঙ্গী সংগঠনের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব আরও জানায়, গ্রেফতারকৃতরা জঙ্গিরা আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম-এর র্কাযক্রম পরিচালনা করে আসছিল। পরবর্তীতে তারা নিজেরাই সংগঠনের সদস্য সংগ্রহে দাওয়াতি র্কাযক্রম শুরু করে। সংগঠনের সদস্যদেরকে তারা বিভিন্ন উগ্রবাদি পুস্তিকা, মুসলমানদের উপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সরবরাহ এবং সংগঠনের র্কাযক্রম পরিচালনার জন্য ভুল তথ্য প্রদান করে তাদের আত্মীয়-স্বজন, বিভিন্ন মাদ্রাসা ও সদস্যদের নিকট থেকে নিয়মিত অর্থ সংগ্রহ করতো। এর পাশাপাশি তারা মসজিদ, বাসা বা বিভিন্ন স্থানে সদস্যদের নিয়ে গোপন সভা করে দেশের বিচার ও শাসন ব্যবস্থা সর্ম্পকে বিরুপ মনোভাব তৈরি করে তথাকথিত ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করার জন্য সদস্যদেরকে উগ্রবাদী করে তুলতো। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ইলিয়াস দাস আব্দুল্লাহ ওরফে হুজাইফা উসামার বাড়ি ঠাকুরগাঁও হলেও সে মিরপুরে অবস্থান করে একটি পণ্যের মার্কেটিং এ চাকরি করতো। সে ২০১৮ সালে খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। আব্দুল্লাহ তার নিজ এলাকা ঠাকুরগাও এ দাওয়াতি কাজ শুরু করে এবং বর্তমানে গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত ঠাকুরগাও এর দাওয়াতি শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিল। “কিতাল ফি ছাবিলিল্লাহ” নামে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপের এ্যাডমিন এই আব্দুল্লাহ। এই গ্রুপে বিভিন্ন উগ্রবাদী ছবি, ভিডিও ও কন্টেন্ট শেয়ার করে সদস্যদের উগ্রবাদে উদ্ভূদ্ধ করা হত। ঠাকুরগাঁও ছাড়াও সংগঠনের অন্যান্য জেলার সদস্যদের সাথে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল এবং মাঝে মধ্যেই সে অন্য জেলার সদস্যদের সাথে গোপন বৈঠক করতো। গ্রেফতারকৃত মোঃ সাবিরুল ইসলাম সাব্বির ওরফে আবু সাব্বির আল বাঙ্গালি একজন ছাত্র। তার বড়ি পাবনা জেলায়। তাদের ভাষ্য মতে গণতন্ত্র হচ্ছে কুফরি মতবাদ এবং এই গণতন্ত্রের নামে ভোটাভুটিও তাগুদের কাজ। তাই এই কুফরি কাজ নস্যাৎ করার জন্য তারা বদ্ধপরিকর ছিল। এবং গ্রেফতারকৃত শামিম লস্করও একজন ছাত্র। সে ধৃত ইলিয়াস দাস আব্দুল্লাহ ওরফে হুজাইফা উসামার মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগদান করে দাওয়াতী র্কাযক্রম করতে থাকে। তার নিজ এলাকা গোপালগঞ্জে দাওয়াতী র্কাযক্রম পরিচালনার পাশাপাশি সংগঠনে নিয়মিত চাঁদা প্রদান এবং সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের নিকট হতে চাঁদা সংগ্রহ করতো বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃতদের সকলের নামেই র্পূবে জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা রয়েছে। একারনে তারা বিভিন্ন সময় স্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপনে ছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।