০৯:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে চরম অনিশ্চয়তা, দ্রুত র্অথ বরাদ্ধ করে অবকাঠামো র্নিমানের দাবী খুলনাবাসীর

####

 

খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণ, দক্ষ চিকিৎসক তৈরি, স্বাস্থ্য খাতে সর্বাধুনিক উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিক গবেষণায় স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য্যরে নেতৃত্বে গত সাড়ে ৩ বছরে প্রশাসনিক, আর্থিক ও ক্রয় ব্যবস্থাপনাসহ সামগ্রিক কার্যক্রম অটোমেশনের আধুনিক প্রযুক্তির পদ্ধতিতে উন্নীত করা হয়েছে। ফলে এই বিশ^বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকায় সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন দ্রুততার সাথে প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী ক্যাম্পাস ও অবকাঠামোগত সুবিধা গড়ে তুলতে সার্বিক সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু গত সাড়ে তিন বছরেও বিশ^বিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস ও একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর জন্য জমি অধিগ্রহন, পূর্নাঙ্গ ক্যাম্পাসসহ অবকাঠামো নির্মান এবং ও প্রয়োজণীয় জনবল নিয়োগ ও আধুনিক হাসপাতাল নির্মানের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্ধ না হওয়ায় অনিশ্চয়তার মাত্রা দিন দিন বাড়ছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উচ্চশিক্ষার এ প্রতিষ্ঠানে। এদিকে, সরকার পরিবর্তনের পর বিশ^বিদ্যালয়ের উন্নয়নের প্রকল্পের দ্রæত অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় ধীরগতির সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে বিশ^বিদ্যালয়ের কাংখিত উন্নয়নের সাথে সাথে প্রশাসনিক, একাডেমিক ও গবেষণা কার্যক্রম সঠিকভাবে চালু করতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় কিছু ষড়যন্ত্রকারী অণৈতিক ও বিধিবর্হিভূত সুবিধা না নিতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনাম নষ্ট করতে উঠেপড়ে লেগেছে। যারা মনগড়া, মিথ্যা ও ভুল উদ্দেশ্যমূলক তথ্য মাধ্যমে দিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। যারা খুলনার মানুষের আন্দোলনের ফরষ এই প্রতিষ্টানকে ধ্বংস করে নিজেদের ফায়দা লোটার তৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে খুলনার সামাজিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ সকল ষড়যন্ত্র ও জটিলতা অপসারণ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ০৩ কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা খুলনার শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় প্রকল্প পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, খুলনাবাসীর দীর্ঘ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ২০২১ সালের ০৪ ফেব্রæয়ারী জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় স্থাপন আইন পাশ হয়। পরে ২০২১ সালের ০৩মে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের হেমাটোলজী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মোঃ মাহবুবুর রহমানকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। উপাচার্য নিয়োগের ৭ মাস পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা (ফিজিবিলিটি) পরিচালনার জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মেহেদী নেওয়াজকে প্রকল্প পরিচালক ও শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. নুরুল মোমেনকে উপ-প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা সম্পন্ন শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করাও হয়েছে। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস ও আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন ও মৌলিক অবকাঠামো নির্মাণে একটি খসড়া প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) ২০২৩ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে দাখিল করা হয়। এ প্রকল্প প্রস্তাবে দেশের স্বাস্থ্য শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য বেশ কয়েকটি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়। প্রকল্পে অবকাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের মাধ্যমে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে খুলনা অঞ্চলের সবচেয়ে আধুনিক ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা; দেশের সাস্থ্য খাতে সর্বাধুনিক মানের উচ্চ শিক্ষা এমডি, এমএস, এফসিপিএসসহ উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করা, রোগীদের জন্য সর্বাধুনিক মানের সার্বক্ষণিক ওয়ান-স্টপ সাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা চালু করা; খুলনা বিভাগের সকল মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং কলেজ ও ইন্সটিটিউট এবং সমজাতীয় অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসা, মানসম্মত স্নাতকোত্তর মেডিকেল শিক্ষা এবং গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাসমূহ নিশ্চিত করা, শিক্ষক, ডাক্তার, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের জন্য উন্নত, আধুনিক, নিরাপদ এবং পরিবেশসম্মত অফিস স্পেস, আবাসন এবং যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করার সামগ্রিক বিষয় অন্তর্ভূক্ত করা হয়। ২০২৩ সালের ১৩ ফেব্রæয়ারী  মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য ৫০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে নগরীর বটিয়াঘাটা এলাকায় ১ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে নকশা পরিবর্তন ছাড়া নানান কারণে সেটার বাস্তবায়ন এখনও সম্ভব হয়নি।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তাবিত মাস্টার প্লানে পরিমার্জন করে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কার্যক্রম ৩টি প্রকল্পে ভাগ করে প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরী করা হয়। প্রথম প্রকল্প প্রস্তাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, প্রশাসনিক ভবন, ডে-কেয়ার সেন্টার সহ ২টি একাডেমিক ভবন, ০১ টি ইউটিলিটি ভবন, সীমানা প্রাচীর ও সংযোগ সড়ক স্থাপন করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। দ্বিতীয় প্রকল্প প্রস্তাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বাসভবনসহ হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা এবং তৃতীয় প্রকল্পে প্রস্তাবে কর্মকর্তা, কর্মচারী অন্যান্য সকলের জন্য আবাসিক ভবনসমুহ নির্মানের পরিকল্পনা অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।

পরবর্তীতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আর্থ সামাজিক বিভাগের ব্যয় যুক্তিযুক্তকরণ কমিটি ও সর্বশেষ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে ডিপিপি চূড়ান্ত পরিমার্জন করে দাখিল করা হয়েছে। যা ২০২৪ সালের ৯ই মে একনেক সভায় কিছু শর্তসাপেক্ষে অনুমোদিত হয়। একনেক সভায় শর্তের প্রক্ষিতে প্রকল্প প্রস্তাব পরিমার্জন শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। পরিমার্জিত প্রকল্প অনুমোদনের পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জিও জারি হলে বিশ^বিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসের ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, প্রশাসনিক ভবন, ডে-কেয়ার সেন্টারসহ ২টি একাডেমিক ভবন, ০১ টি ইউটিলিটি ভবন, সীমানা প্রাচীর ও সংযোগ সড়ক স্থাপনের কাজ করা হবে। প্রথম প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রকল্পের আওতায় হাসপাতালসহ অন্যান্য নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রকিবুল ইসলাম জানান, ২০২১ সালে উপাচার্য নিয়োগের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ২০ সদস্য বিশিষ্ট সিন্ডিকেট গঠন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গত সাড়ে তিন বছরে প্রতি ৩ মাসের ব্যবধানে সিন্ডিকেটের ১০টি সভার মাধ্যমে নিয়োগ, ক্রয়সহ সকল সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই অনিয়ম, দূর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি প্রতিরোধ এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় বিশ^বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২২ সাল থেকে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন-২০০৬ এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮ যথাযথভাবে অনুসরণ করে ক্রয় কার্যক্রম ই-জিপির মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। গত তিন বছরে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৬৭শতাংশ ই-জিপি এর মাধ্যমে এবং ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৭৭শতাংশ ই-জিপি’র মাধ্যমে ক্রয় সম্পাদন করা হয়েছে। যে কারণে দল-মত নির্বিশেষে বিধি মোতাবেক উপযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কোন তদবির ছাড়াই কাজ পেয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা উন্নয়ন দপ্তরসহ চার দপ্তরের কাজ অটোমেশন করা হয়েছে। যা এ বিশ^বিদ্যালয়কে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় সর্বাধিক স্বচ্ছ ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের স্বীকৃতি পেয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ডা. নাসরিন আক্তার জানান, পরীক্ষা বিষয়ক সকল কার্যক্রম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর অটোমোশনের মাধ্যমে সম্পন্ন করছে। বর্তমানে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ, যশোর মেডিকেল কলেজ, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ, মাগুরা মেডিকেল কলেজসহ পাঁচটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও খুলনা গাজী মেডিকেল কলেজ, খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ, আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজ এবং আদ-দ্বীন সাকিনা ওমেনস মেডিকেল কলেজসহ চারটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এছাড়া খুলনা সরকারি নাসিং কলেজ এবং খুলনা মমতা নাসিং কলেজ, খুলনা এশিয়ান নাসিং কলেজ, বাগেরহাটের নার্গিস মেমোরিয়াল নাসিং কলেজ, মাগুরার ওয়ার্ল্ড নাসিং কলেজ, খুলনার নাসিং এন্ড মিডওয়াইফারি কলেজ ও যশোরের নাসিং এন্ড মিডওয়াইফারি কলেজসহ ছয়টি বেসরকারি নার্সিং কলেজ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এসব মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং কলেজগুলো ইতিপূর্বে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের অধিভূক্ত থাকায় সিন্ডিকেট এবং একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমতি সাপেক্ষে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের অনুরূপ পরীক্ষার ফিস নির্ধারণ করা হয়েছে। শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত নির্দিষ্ট কলেজগুলি ব্যাংকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সমস্ত ফিস বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টে জমা দিয়ে থাকে। সিস্টেম অটোমেশনের ফলে এখানে সরাসরি নগদ টাকা লেনদেনের যেমন কোন সুযোগ নেই-তেমনি অনিয়ম ও দূর্নীতিরও কোন সুযোগ নেই।

তিনি জানান, অটোমেশনের ফলে শিক্ষার্থীদের খাতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ওএমআর শিট ব্যবহার করা হয় যাতে কোন খাতা কোন শিক্ষার্থীর তা যেন চিহ্নিত করা না যায়। পরীক্ষার পর খাতাগুলি ভিন্ন ভিন্ন পরীক্ষকের কাছে মূল্যায়নের জন্য পাঠানো হয়। নির্দিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক খাতাগুলি মূল্যায়ন করে শুধুমাত্র প্রাপ্ত নাম্বার অটোমেশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে পাঠান। পরে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর অটোমোশন সিস্টেমের মাধ্যমে শুধুমাত্র নম্বর গুলো টেবুলেশন সিটের মাধ্যমে ফলাফল তৈরি করে। এখানে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের কোন ধরনের মূল্যায়নের নাম্বার পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংযোজনের কোন সুযোগ নেই। ব্যবহারিক এবং মৌখিক পরীক্ষার নম্বরগুলোও সংশ্লিষ্ট কলেজের শিক্ষক ও এক্সটার্নালদের কাছ থেকে অটোমেশনের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। যেন স্বচ্ছতার সাথে খাতার মূল্যায়ন ও ফলাফল প্রকাশ হয়। এখানে কোন বিশেষ কলেজ বা পরীক্ষার্থীর প্রতি পক্ষপাতিত্ব ও স্বজনপ্রীতির সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, পরিক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর কলেজ পরিদর্শকের মাধ্যমে ৫টি সরকারি মেডিকেল কলেজ, ৪টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, ১টি সরকারি নার্সিং কলেজ, ২টি সরকারি নার্সিং কলেজ এন্ড মিডওয়াইফারি কলেজ এবং ৪টি বেসরকারি নার্সিং কলেজ সমূহ যথাযথ মান যাচাই পূর্বক অধিভুক্তকরণ, আসন সংখ্যা বৃদ্ধি, পরীক্ষাকেন্দ্র অনুমোদনের জন্য পরিদর্শন ও সুপারিশ করে থাকে। যার ভিত্তিতে কাজগুলো স্বচ্ছতার সাথে সম্পাদন করা হয়। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়েব পোর্টাল চালু এবং শিক্ষার্থী বান্ধব এপস তৈরী করা হয়েছে। এছাড়া অনলাইনে সনদপত্র যাচাইকরণ প্রক্রিয়া চালু, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর শিক্ষকরা অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে জমার ব্যবস্থা এবং শিক্ষকরা তাদের বিলসমূহ অনলাইনে জমা দেয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ২০২১ সালের ২৩  জুন ১৬ জন, ২০২২ সালের ০২ জুন ১৪ জন, একই বছরের ৮ নভেম্বর ৫ জন এবং ২০২৪ সালের ৬ মে ৩ জনসহ মোট ৪৬ জন জনবল নিয়োগের অনুমোদন দেয়। পরে বিশ^বিদ্যালয় বিভিন্ন জাতীয় ও স্থাণীয় প্রত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে আবেদন আহŸান করে। বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়োগের জন্য ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. দীন-উল ইসলাম, বেসিক সায়েন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. বাপ্পা গৌতম, নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. কুতুব উদ্দীন মল্লিক, খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মো. মেহেদী নেওয়াজ, উপ-পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) রবীন্দ্রনাথ দত্ত সদস্য এবং রেজিস্ট্রার মো. আব্দুর রউফকে সদস্য-সচিব করে নিয়োগ পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। পরে নিয়োগ পরিচালনা কমিটিতে বিশ^বিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. কামদা প্রসাদ সাহাকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এই নিয়োগ কমিটির অধীনে বিশ^বিদ্যালয়ের নিয়োগবিধি ও সরকারের নির্দেশিত নীতিমালা কঠোরভাবে অনুসরণ করে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে মোট ৪০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। যা ২০২২ সালের ১২ নভেম্বর সিন্ডিকেটের ৩য় সভায় ২৫ জন, ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর সিন্ডিকেটের ৭ম সভায় ১ জন এবং ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট সিন্ডিকেটের ১০ম সভায় ১৪ জনের নিয়োগ অনুমোদন দেয়া হয়। এর আগে ২০২২ সালের ১৯ জুন ২য় সিন্ডিকেট সভায় খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. দীন-উল ইসলামকে মেডিসিন অনুষদ,  খুলনা মেডিকেল কলেজের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. বাপ্পা গৌতমকে বেসিক সায়েন্স এ্যান্ড প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদ ও খুলনা মেডিকেল কলেজের হেপাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. কুতুব উদ্দীন মল্লিককে নার্সিং অনুষদের অবৈতনিক ডিন হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রকল্প পরিচালক ও খুলনা মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মো. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি শেষে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করার পর খুলনা-মোংলা রেললাইন সংলগ্ন মাথাভাঙ্গা মৌজায় প্রাথমিকভাবে জমি বাছাই করা হয়েছে। প্রস্তাবিত জমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন এবং অর্থ বরাদ্দের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন হয়েছে। তবে অর্থ ছাড় হলে আনুষ্ঠানিকভাবে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ মাহবুবুর রহমান জানান, খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় আইন ২০২১ সালের ৪ ফেব্রæয়ারি সংসদে পাশ হয়। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের বিশেষায়িত স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্য সেবা সহজলভ্য করণ এবং স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট গবেষণাকে উৎসাহিত করা এ তিনটি উদ্দেশ্যেকে সামনে নিয়ে এ বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য একনেকে একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। এ অনুমোদিত প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে অতিশীঘ্রই জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হবে এবং সেখানে অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। এর পাশাপাশি খুলনা বিভাগে যতগুলো সরকারি বেসরকারি কলেজ ও নার্সিং কলেজকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এ সকল কলেজে যে কোর্সগুলো চালু আছে ২০২১-২২ সেশন থেকে পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম তত্ত¡াবধান করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিশ^বিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস সৃষ্টির লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। নিজেদের স্থায়ী ক্যাম্পাস হলে বিশ^বিদ্যালয়ের নিজস্ব বিশেষায়িত মেডিকেল কোর্স বিশেষ করে আইনে যে ফ্যাকাল্টি গুলোর কথা বলা হয়েছে সেগুলো চালু করার চেষ্টা করা হবে। তাছাড়া এ অঞ্চলের মানুষের বিশেষায়িত স্বাস্থ্য সেবা যেন সহজ ও সুলভ করা যায় সে উদ্দেশ্যে মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের অধীনে তিনধাপে ১৮শো বেডের একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। যে হাসপাতালে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সব ধরণের বিশেষায়িত সেবা প্রদানের ব্যবস্থা থাকবে। ফলে এ অঞ্চলের মানুষের জন্য স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তি খুবই সহজলভ্য হবে। যা ঢাকা কিংবা পাশ^বর্তী দেশে যে কয়েক লক্ষ মানুষ চিকিৎসার জন্য যায় সেটি রোধ করে বিপুল পরিমান অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব হবে। আমি খুব আশাবাদী শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের কাজ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সেটা যদি বজায় থাকে তবে অচিরেই এ অঞ্চলের মানুষ একটি আধুনিক উন্নতমানের বিশেষায়িত বিশ^বিদ্যালয় ও হাসপাতাল দেখতে পাবেন। এ আঞ্চলের মানুষের আশা আকাংখা বাস্তবায়নের সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার অর্থ ছাড় ত্বরান্বিত হলে দ্রæতই মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় বাস্তবে রূপলাভ করবে বলে তিনি আশা করেন।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ে নিয়োগ, ভর্তি ও পরীক্ষা কার্যক্রম, ক্রয় ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক সকল কিছুই অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া বিশ^বিদ্যালয়ের পরিপুর্ণ ওয়েবসাইট চালু করা  হয়েছে। সেজন্য বিশ^বিদ্যালয় শুরু প্রথম থেকেই সিন্ডিকেট সভা, নিয়োগ পরীক্ষা অন্তর্ভূক্ত কলেজগুলোর ভর্তি ও পরীক্ষাসহ যাবতীয় কার্যক্রম, ক্রয় ব্যবস্থাপনা এবং নীতিনির্ধারনী সকল বিষয়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়ে আসছে। এখানে সবশেষ আগস্টের ২৭ তারিখে অনলাইনের মাধ্যমে সিন্ডিকেট সভায় ১৪টি পদসহ সকল নিয়োগের জন্য বিধি মোতাবেক  প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে স্বচ্ছতার সাথে সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। খুলনাঞ্চলের মানুষের সার্বিক সহযোগীতায় গত প্রায় চার বছরে কেউ কোন ধরনের অনিয়ম-দূর্নীতি ও অস্বচ্ছতার কথা বলতে পারেনি। বিশেষায়িত উচ্চশিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও গবেষনায় এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতায় খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের মডেল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে উঠবে বলেও তিনি প্রত্যাশা করেন।

খুলনা সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সদস্য সচিক এ্যাড. বাবুল হাওলাদার জানান, খুলনায় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এ অঞ্চলের জন্য চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে এক নতুন দ্বার উন্মোচন হয়েছে। শুধু চিকিৎসা ক্ষেত্রেই নয়-একটি মাল্টি ডায়মেনশনাল ফ্যাসিলিটি সৃষ্টি হয়েছে। যখন এ অঞ্চলের মেডিকেল কলেজগুলো এবং নার্সিং কলেজগুলো রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের অধিনে ছিলো তখন যেমন যোগাযোগ এবং অর্থের বিষয়ে অনেক জটিলতা ছিলো। মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় মানে একটি গবেষণাগার যেটিকে কাজে লাগিয়ে এ অঞ্চলের ভৌগলিক অবস্থানকে বিবেচনায় নিয়ে বিশেষ করে এ অঞ্চলের লবনাক্ততাসহ জলবায়ূ পরিবর্তন এবং পরিবেশগত কারণে ভিন্ন মাত্রার রোগের আবির্ভাবের বিষয়ে গবেষনালব্ধ ফরাফল প্রকৃত সমাধানের পথ তৈরী করবে। এ বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে নতুন নতুন গবেষণা খুলনাঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তৈরী, সেক্টর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মানুষ এবং ইন্সুটুমেন্টসহ সমৃদ্ধাশালী উন্নত চিকিৎসার গবেষণার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমাদের মধ্যে একটি অপসংস্কৃতির চর্চার প্রবণতা রয়েছে, সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে বিগত সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বন্ধ করার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির দিয়ে বিচার করা। শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও আমরা এ ধরণে প্রবণতা দুঃখজনকভাবে লক্ষ্য করছি। কিন্তু আমরা চাই আমাদের খুলনাঞ্চলের স্বার্থের জন্য, দেশের স্বার্থের জন্য সাধারণ মানুষের স্বার্থের জন্য এ ধরণের প্রকল্প পেয়েও যেন কোনভাবে হাতছাড়া না হয়। সে জন্য প্রত্যেককে আন্তরিকতার সাথে নিষ্ঠার সাথে, সততার সাথে আমাদের সতর্ক থেকে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেণ, শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপার্চায্য যিনি খুলনায় স্কুল, কলেজে লেকাপড়া করে বড় হয়েছেন তাকে বিগত সরকারের নানাবিধ ঠ্যাগ দিয়ে এবং ম্যিথা প্রচারণা করে হয়রানি ও হেনস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে যা দু:খজনক। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ বিনা বেতনে সম্মানিত অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছেন বলে জেনেছি। বর্তমান সময়ে যা একটি দৃষ্টান্ত। এসব ডিনবৃন্দ বিশ^বিদ্যালয়ের কাজকে সুষ্ঠুভাবে করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও তাদেরকে অপসারণের জন্য একটি পক্ষ উঠে পড়ে লেগেছে। ইতিমধ্যে একজন ডিনকে জোর করে অপসারণ করা হয়েছে যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দায়িত্বে যারা আছেন তাদের প্রতি নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে এ ধরণের ঘটনা প্রতিরোধ এবং এ বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গভাবে যাতে বাস্তবায়িত হয় খুলনাবাসির যেন স্বপ্নভঙ্গ না হয়। কারণ এ ধরণের প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেলে খুলনাঞ্চলে আর কোনদিন হবে কিনা সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। সে জন্য শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্পসমূহ দ্রæত বাস্তবায়নে কাজ করার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহবান এবং বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনুসের  কাছে দ্রæত অর্থ ছাড় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়নে প্রয়োজণীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবীও জানান তিনি। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

মোংলায় জোরপূর্বক ক্রয়কৃত জমি দখলের অভিযোগ

খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে চরম অনিশ্চয়তা, দ্রুত র্অথ বরাদ্ধ করে অবকাঠামো র্নিমানের দাবী খুলনাবাসীর

প্রকাশিত সময় : ১১:৫০:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪

####

 

খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণ, দক্ষ চিকিৎসক তৈরি, স্বাস্থ্য খাতে সর্বাধুনিক উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিক গবেষণায় স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য্যরে নেতৃত্বে গত সাড়ে ৩ বছরে প্রশাসনিক, আর্থিক ও ক্রয় ব্যবস্থাপনাসহ সামগ্রিক কার্যক্রম অটোমেশনের আধুনিক প্রযুক্তির পদ্ধতিতে উন্নীত করা হয়েছে। ফলে এই বিশ^বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকায় সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন দ্রুততার সাথে প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী ক্যাম্পাস ও অবকাঠামোগত সুবিধা গড়ে তুলতে সার্বিক সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু গত সাড়ে তিন বছরেও বিশ^বিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস ও একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর জন্য জমি অধিগ্রহন, পূর্নাঙ্গ ক্যাম্পাসসহ অবকাঠামো নির্মান এবং ও প্রয়োজণীয় জনবল নিয়োগ ও আধুনিক হাসপাতাল নির্মানের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্ধ না হওয়ায় অনিশ্চয়তার মাত্রা দিন দিন বাড়ছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উচ্চশিক্ষার এ প্রতিষ্ঠানে। এদিকে, সরকার পরিবর্তনের পর বিশ^বিদ্যালয়ের উন্নয়নের প্রকল্পের দ্রæত অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় ধীরগতির সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে বিশ^বিদ্যালয়ের কাংখিত উন্নয়নের সাথে সাথে প্রশাসনিক, একাডেমিক ও গবেষণা কার্যক্রম সঠিকভাবে চালু করতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় কিছু ষড়যন্ত্রকারী অণৈতিক ও বিধিবর্হিভূত সুবিধা না নিতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনাম নষ্ট করতে উঠেপড়ে লেগেছে। যারা মনগড়া, মিথ্যা ও ভুল উদ্দেশ্যমূলক তথ্য মাধ্যমে দিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। যারা খুলনার মানুষের আন্দোলনের ফরষ এই প্রতিষ্টানকে ধ্বংস করে নিজেদের ফায়দা লোটার তৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে খুলনার সামাজিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ সকল ষড়যন্ত্র ও জটিলতা অপসারণ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ০৩ কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা খুলনার শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় প্রকল্প পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, খুলনাবাসীর দীর্ঘ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ২০২১ সালের ০৪ ফেব্রæয়ারী জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় স্থাপন আইন পাশ হয়। পরে ২০২১ সালের ০৩মে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের হেমাটোলজী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মোঃ মাহবুবুর রহমানকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। উপাচার্য নিয়োগের ৭ মাস পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা (ফিজিবিলিটি) পরিচালনার জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মেহেদী নেওয়াজকে প্রকল্প পরিচালক ও শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. নুরুল মোমেনকে উপ-প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা সম্পন্ন শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করাও হয়েছে। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস ও আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন ও মৌলিক অবকাঠামো নির্মাণে একটি খসড়া প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) ২০২৩ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে দাখিল করা হয়। এ প্রকল্প প্রস্তাবে দেশের স্বাস্থ্য শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য বেশ কয়েকটি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়। প্রকল্পে অবকাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের মাধ্যমে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে খুলনা অঞ্চলের সবচেয়ে আধুনিক ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা; দেশের সাস্থ্য খাতে সর্বাধুনিক মানের উচ্চ শিক্ষা এমডি, এমএস, এফসিপিএসসহ উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করা, রোগীদের জন্য সর্বাধুনিক মানের সার্বক্ষণিক ওয়ান-স্টপ সাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা চালু করা; খুলনা বিভাগের সকল মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং কলেজ ও ইন্সটিটিউট এবং সমজাতীয় অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসা, মানসম্মত স্নাতকোত্তর মেডিকেল শিক্ষা এবং গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাসমূহ নিশ্চিত করা, শিক্ষক, ডাক্তার, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের জন্য উন্নত, আধুনিক, নিরাপদ এবং পরিবেশসম্মত অফিস স্পেস, আবাসন এবং যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করার সামগ্রিক বিষয় অন্তর্ভূক্ত করা হয়। ২০২৩ সালের ১৩ ফেব্রæয়ারী  মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য ৫০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে নগরীর বটিয়াঘাটা এলাকায় ১ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে নকশা পরিবর্তন ছাড়া নানান কারণে সেটার বাস্তবায়ন এখনও সম্ভব হয়নি।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তাবিত মাস্টার প্লানে পরিমার্জন করে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কার্যক্রম ৩টি প্রকল্পে ভাগ করে প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরী করা হয়। প্রথম প্রকল্প প্রস্তাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, প্রশাসনিক ভবন, ডে-কেয়ার সেন্টার সহ ২টি একাডেমিক ভবন, ০১ টি ইউটিলিটি ভবন, সীমানা প্রাচীর ও সংযোগ সড়ক স্থাপন করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। দ্বিতীয় প্রকল্প প্রস্তাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বাসভবনসহ হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা এবং তৃতীয় প্রকল্পে প্রস্তাবে কর্মকর্তা, কর্মচারী অন্যান্য সকলের জন্য আবাসিক ভবনসমুহ নির্মানের পরিকল্পনা অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।

পরবর্তীতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আর্থ সামাজিক বিভাগের ব্যয় যুক্তিযুক্তকরণ কমিটি ও সর্বশেষ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে ডিপিপি চূড়ান্ত পরিমার্জন করে দাখিল করা হয়েছে। যা ২০২৪ সালের ৯ই মে একনেক সভায় কিছু শর্তসাপেক্ষে অনুমোদিত হয়। একনেক সভায় শর্তের প্রক্ষিতে প্রকল্প প্রস্তাব পরিমার্জন শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। পরিমার্জিত প্রকল্প অনুমোদনের পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জিও জারি হলে বিশ^বিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসের ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, প্রশাসনিক ভবন, ডে-কেয়ার সেন্টারসহ ২টি একাডেমিক ভবন, ০১ টি ইউটিলিটি ভবন, সীমানা প্রাচীর ও সংযোগ সড়ক স্থাপনের কাজ করা হবে। প্রথম প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রকল্পের আওতায় হাসপাতালসহ অন্যান্য নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রকিবুল ইসলাম জানান, ২০২১ সালে উপাচার্য নিয়োগের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ২০ সদস্য বিশিষ্ট সিন্ডিকেট গঠন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গত সাড়ে তিন বছরে প্রতি ৩ মাসের ব্যবধানে সিন্ডিকেটের ১০টি সভার মাধ্যমে নিয়োগ, ক্রয়সহ সকল সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই অনিয়ম, দূর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি প্রতিরোধ এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় বিশ^বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২২ সাল থেকে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন-২০০৬ এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮ যথাযথভাবে অনুসরণ করে ক্রয় কার্যক্রম ই-জিপির মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। গত তিন বছরে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৬৭শতাংশ ই-জিপি এর মাধ্যমে এবং ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৭৭শতাংশ ই-জিপি’র মাধ্যমে ক্রয় সম্পাদন করা হয়েছে। যে কারণে দল-মত নির্বিশেষে বিধি মোতাবেক উপযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কোন তদবির ছাড়াই কাজ পেয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা উন্নয়ন দপ্তরসহ চার দপ্তরের কাজ অটোমেশন করা হয়েছে। যা এ বিশ^বিদ্যালয়কে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় সর্বাধিক স্বচ্ছ ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের স্বীকৃতি পেয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ডা. নাসরিন আক্তার জানান, পরীক্ষা বিষয়ক সকল কার্যক্রম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর অটোমোশনের মাধ্যমে সম্পন্ন করছে। বর্তমানে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ, যশোর মেডিকেল কলেজ, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ, মাগুরা মেডিকেল কলেজসহ পাঁচটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও খুলনা গাজী মেডিকেল কলেজ, খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ, আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজ এবং আদ-দ্বীন সাকিনা ওমেনস মেডিকেল কলেজসহ চারটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এছাড়া খুলনা সরকারি নাসিং কলেজ এবং খুলনা মমতা নাসিং কলেজ, খুলনা এশিয়ান নাসিং কলেজ, বাগেরহাটের নার্গিস মেমোরিয়াল নাসিং কলেজ, মাগুরার ওয়ার্ল্ড নাসিং কলেজ, খুলনার নাসিং এন্ড মিডওয়াইফারি কলেজ ও যশোরের নাসিং এন্ড মিডওয়াইফারি কলেজসহ ছয়টি বেসরকারি নার্সিং কলেজ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এসব মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং কলেজগুলো ইতিপূর্বে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের অধিভূক্ত থাকায় সিন্ডিকেট এবং একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমতি সাপেক্ষে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের অনুরূপ পরীক্ষার ফিস নির্ধারণ করা হয়েছে। শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত নির্দিষ্ট কলেজগুলি ব্যাংকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সমস্ত ফিস বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টে জমা দিয়ে থাকে। সিস্টেম অটোমেশনের ফলে এখানে সরাসরি নগদ টাকা লেনদেনের যেমন কোন সুযোগ নেই-তেমনি অনিয়ম ও দূর্নীতিরও কোন সুযোগ নেই।

তিনি জানান, অটোমেশনের ফলে শিক্ষার্থীদের খাতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ওএমআর শিট ব্যবহার করা হয় যাতে কোন খাতা কোন শিক্ষার্থীর তা যেন চিহ্নিত করা না যায়। পরীক্ষার পর খাতাগুলি ভিন্ন ভিন্ন পরীক্ষকের কাছে মূল্যায়নের জন্য পাঠানো হয়। নির্দিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক খাতাগুলি মূল্যায়ন করে শুধুমাত্র প্রাপ্ত নাম্বার অটোমেশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে পাঠান। পরে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর অটোমোশন সিস্টেমের মাধ্যমে শুধুমাত্র নম্বর গুলো টেবুলেশন সিটের মাধ্যমে ফলাফল তৈরি করে। এখানে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের কোন ধরনের মূল্যায়নের নাম্বার পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংযোজনের কোন সুযোগ নেই। ব্যবহারিক এবং মৌখিক পরীক্ষার নম্বরগুলোও সংশ্লিষ্ট কলেজের শিক্ষক ও এক্সটার্নালদের কাছ থেকে অটোমেশনের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। যেন স্বচ্ছতার সাথে খাতার মূল্যায়ন ও ফলাফল প্রকাশ হয়। এখানে কোন বিশেষ কলেজ বা পরীক্ষার্থীর প্রতি পক্ষপাতিত্ব ও স্বজনপ্রীতির সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, পরিক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর কলেজ পরিদর্শকের মাধ্যমে ৫টি সরকারি মেডিকেল কলেজ, ৪টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, ১টি সরকারি নার্সিং কলেজ, ২টি সরকারি নার্সিং কলেজ এন্ড মিডওয়াইফারি কলেজ এবং ৪টি বেসরকারি নার্সিং কলেজ সমূহ যথাযথ মান যাচাই পূর্বক অধিভুক্তকরণ, আসন সংখ্যা বৃদ্ধি, পরীক্ষাকেন্দ্র অনুমোদনের জন্য পরিদর্শন ও সুপারিশ করে থাকে। যার ভিত্তিতে কাজগুলো স্বচ্ছতার সাথে সম্পাদন করা হয়। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়েব পোর্টাল চালু এবং শিক্ষার্থী বান্ধব এপস তৈরী করা হয়েছে। এছাড়া অনলাইনে সনদপত্র যাচাইকরণ প্রক্রিয়া চালু, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর শিক্ষকরা অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে জমার ব্যবস্থা এবং শিক্ষকরা তাদের বিলসমূহ অনলাইনে জমা দেয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ২০২১ সালের ২৩  জুন ১৬ জন, ২০২২ সালের ০২ জুন ১৪ জন, একই বছরের ৮ নভেম্বর ৫ জন এবং ২০২৪ সালের ৬ মে ৩ জনসহ মোট ৪৬ জন জনবল নিয়োগের অনুমোদন দেয়। পরে বিশ^বিদ্যালয় বিভিন্ন জাতীয় ও স্থাণীয় প্রত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে আবেদন আহŸান করে। বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়োগের জন্য ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. দীন-উল ইসলাম, বেসিক সায়েন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. বাপ্পা গৌতম, নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. কুতুব উদ্দীন মল্লিক, খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মো. মেহেদী নেওয়াজ, উপ-পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) রবীন্দ্রনাথ দত্ত সদস্য এবং রেজিস্ট্রার মো. আব্দুর রউফকে সদস্য-সচিব করে নিয়োগ পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। পরে নিয়োগ পরিচালনা কমিটিতে বিশ^বিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. কামদা প্রসাদ সাহাকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এই নিয়োগ কমিটির অধীনে বিশ^বিদ্যালয়ের নিয়োগবিধি ও সরকারের নির্দেশিত নীতিমালা কঠোরভাবে অনুসরণ করে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে মোট ৪০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। যা ২০২২ সালের ১২ নভেম্বর সিন্ডিকেটের ৩য় সভায় ২৫ জন, ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর সিন্ডিকেটের ৭ম সভায় ১ জন এবং ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট সিন্ডিকেটের ১০ম সভায় ১৪ জনের নিয়োগ অনুমোদন দেয়া হয়। এর আগে ২০২২ সালের ১৯ জুন ২য় সিন্ডিকেট সভায় খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. দীন-উল ইসলামকে মেডিসিন অনুষদ,  খুলনা মেডিকেল কলেজের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. বাপ্পা গৌতমকে বেসিক সায়েন্স এ্যান্ড প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদ ও খুলনা মেডিকেল কলেজের হেপাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. কুতুব উদ্দীন মল্লিককে নার্সিং অনুষদের অবৈতনিক ডিন হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রকল্প পরিচালক ও খুলনা মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মো. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি শেষে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করার পর খুলনা-মোংলা রেললাইন সংলগ্ন মাথাভাঙ্গা মৌজায় প্রাথমিকভাবে জমি বাছাই করা হয়েছে। প্রস্তাবিত জমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন এবং অর্থ বরাদ্দের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন হয়েছে। তবে অর্থ ছাড় হলে আনুষ্ঠানিকভাবে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ মাহবুবুর রহমান জানান, খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় আইন ২০২১ সালের ৪ ফেব্রæয়ারি সংসদে পাশ হয়। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের বিশেষায়িত স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্য সেবা সহজলভ্য করণ এবং স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট গবেষণাকে উৎসাহিত করা এ তিনটি উদ্দেশ্যেকে সামনে নিয়ে এ বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য একনেকে একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। এ অনুমোদিত প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে অতিশীঘ্রই জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হবে এবং সেখানে অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। এর পাশাপাশি খুলনা বিভাগে যতগুলো সরকারি বেসরকারি কলেজ ও নার্সিং কলেজকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এ সকল কলেজে যে কোর্সগুলো চালু আছে ২০২১-২২ সেশন থেকে পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম তত্ত¡াবধান করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিশ^বিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস সৃষ্টির লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। নিজেদের স্থায়ী ক্যাম্পাস হলে বিশ^বিদ্যালয়ের নিজস্ব বিশেষায়িত মেডিকেল কোর্স বিশেষ করে আইনে যে ফ্যাকাল্টি গুলোর কথা বলা হয়েছে সেগুলো চালু করার চেষ্টা করা হবে। তাছাড়া এ অঞ্চলের মানুষের বিশেষায়িত স্বাস্থ্য সেবা যেন সহজ ও সুলভ করা যায় সে উদ্দেশ্যে মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের অধীনে তিনধাপে ১৮শো বেডের একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। যে হাসপাতালে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সব ধরণের বিশেষায়িত সেবা প্রদানের ব্যবস্থা থাকবে। ফলে এ অঞ্চলের মানুষের জন্য স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তি খুবই সহজলভ্য হবে। যা ঢাকা কিংবা পাশ^বর্তী দেশে যে কয়েক লক্ষ মানুষ চিকিৎসার জন্য যায় সেটি রোধ করে বিপুল পরিমান অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব হবে। আমি খুব আশাবাদী শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের কাজ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সেটা যদি বজায় থাকে তবে অচিরেই এ অঞ্চলের মানুষ একটি আধুনিক উন্নতমানের বিশেষায়িত বিশ^বিদ্যালয় ও হাসপাতাল দেখতে পাবেন। এ আঞ্চলের মানুষের আশা আকাংখা বাস্তবায়নের সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার অর্থ ছাড় ত্বরান্বিত হলে দ্রæতই মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় বাস্তবে রূপলাভ করবে বলে তিনি আশা করেন।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ে নিয়োগ, ভর্তি ও পরীক্ষা কার্যক্রম, ক্রয় ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক সকল কিছুই অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া বিশ^বিদ্যালয়ের পরিপুর্ণ ওয়েবসাইট চালু করা  হয়েছে। সেজন্য বিশ^বিদ্যালয় শুরু প্রথম থেকেই সিন্ডিকেট সভা, নিয়োগ পরীক্ষা অন্তর্ভূক্ত কলেজগুলোর ভর্তি ও পরীক্ষাসহ যাবতীয় কার্যক্রম, ক্রয় ব্যবস্থাপনা এবং নীতিনির্ধারনী সকল বিষয়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়ে আসছে। এখানে সবশেষ আগস্টের ২৭ তারিখে অনলাইনের মাধ্যমে সিন্ডিকেট সভায় ১৪টি পদসহ সকল নিয়োগের জন্য বিধি মোতাবেক  প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে স্বচ্ছতার সাথে সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। খুলনাঞ্চলের মানুষের সার্বিক সহযোগীতায় গত প্রায় চার বছরে কেউ কোন ধরনের অনিয়ম-দূর্নীতি ও অস্বচ্ছতার কথা বলতে পারেনি। বিশেষায়িত উচ্চশিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও গবেষনায় এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতায় খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের মডেল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে উঠবে বলেও তিনি প্রত্যাশা করেন।

খুলনা সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সদস্য সচিক এ্যাড. বাবুল হাওলাদার জানান, খুলনায় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এ অঞ্চলের জন্য চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে এক নতুন দ্বার উন্মোচন হয়েছে। শুধু চিকিৎসা ক্ষেত্রেই নয়-একটি মাল্টি ডায়মেনশনাল ফ্যাসিলিটি সৃষ্টি হয়েছে। যখন এ অঞ্চলের মেডিকেল কলেজগুলো এবং নার্সিং কলেজগুলো রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের অধিনে ছিলো তখন যেমন যোগাযোগ এবং অর্থের বিষয়ে অনেক জটিলতা ছিলো। মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় মানে একটি গবেষণাগার যেটিকে কাজে লাগিয়ে এ অঞ্চলের ভৌগলিক অবস্থানকে বিবেচনায় নিয়ে বিশেষ করে এ অঞ্চলের লবনাক্ততাসহ জলবায়ূ পরিবর্তন এবং পরিবেশগত কারণে ভিন্ন মাত্রার রোগের আবির্ভাবের বিষয়ে গবেষনালব্ধ ফরাফল প্রকৃত সমাধানের পথ তৈরী করবে। এ বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে নতুন নতুন গবেষণা খুলনাঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তৈরী, সেক্টর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মানুষ এবং ইন্সুটুমেন্টসহ সমৃদ্ধাশালী উন্নত চিকিৎসার গবেষণার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমাদের মধ্যে একটি অপসংস্কৃতির চর্চার প্রবণতা রয়েছে, সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে বিগত সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বন্ধ করার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির দিয়ে বিচার করা। শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও আমরা এ ধরণে প্রবণতা দুঃখজনকভাবে লক্ষ্য করছি। কিন্তু আমরা চাই আমাদের খুলনাঞ্চলের স্বার্থের জন্য, দেশের স্বার্থের জন্য সাধারণ মানুষের স্বার্থের জন্য এ ধরণের প্রকল্প পেয়েও যেন কোনভাবে হাতছাড়া না হয়। সে জন্য প্রত্যেককে আন্তরিকতার সাথে নিষ্ঠার সাথে, সততার সাথে আমাদের সতর্ক থেকে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেণ, শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপার্চায্য যিনি খুলনায় স্কুল, কলেজে লেকাপড়া করে বড় হয়েছেন তাকে বিগত সরকারের নানাবিধ ঠ্যাগ দিয়ে এবং ম্যিথা প্রচারণা করে হয়রানি ও হেনস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে যা দু:খজনক। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ বিনা বেতনে সম্মানিত অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছেন বলে জেনেছি। বর্তমান সময়ে যা একটি দৃষ্টান্ত। এসব ডিনবৃন্দ বিশ^বিদ্যালয়ের কাজকে সুষ্ঠুভাবে করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও তাদেরকে অপসারণের জন্য একটি পক্ষ উঠে পড়ে লেগেছে। ইতিমধ্যে একজন ডিনকে জোর করে অপসারণ করা হয়েছে যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দায়িত্বে যারা আছেন তাদের প্রতি নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে এ ধরণের ঘটনা প্রতিরোধ এবং এ বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গভাবে যাতে বাস্তবায়িত হয় খুলনাবাসির যেন স্বপ্নভঙ্গ না হয়। কারণ এ ধরণের প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেলে খুলনাঞ্চলে আর কোনদিন হবে কিনা সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। সে জন্য শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্পসমূহ দ্রæত বাস্তবায়নে কাজ করার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহবান এবং বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনুসের  কাছে দ্রæত অর্থ ছাড় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়নে প্রয়োজণীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবীও জানান তিনি। ##