০১:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোপালগঞ্জে অপচিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, কথিত ডাক্তার আটক

####

গোপালগঞ্জে কথিত ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় অহিদা বেগম (৬২) নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর গোবরা এলাকায় ঢাকা – খুলনা মহাসড়কের পাশে মা মমতা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় কথিত ডাক্তার এম এস এইচ রানা’কে হাতেনাতে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছে গোপালগঞ্জ থানা পুলিশ।অপচিকিৎসায় মৃত্যুর শিকার অহিদা বেগম বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার কুলিয়া বড়ঘাট এলাকার ইকু মোল্লার স্ত্রী।

অহিদা বেগমের ছেলে রানা মোল্লা জানান , বুকের ব্যাথা জনিত কারণে তার মা অহিদা বেগমকে সোমবার দুপুরে ওই কথিত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা, ১০০০ টাকা পরামর্শ ফি নেন কথিত ডাক্তার এম এস এইচ রানা। মায়ের হার্টের সমস্যা গুলো শুনে ১০ দিনের ঔষধও দেন তিনি। দুইদিন যাবত ওই ঔষধ খাওয়ার পরও সুস্থ না হওয়ায় মুঠোফোনে ডাক্তারের সাথে তারা কথা বলে। তখন তার মাকে পুনরায় উক্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে নিয়ে আসতে বলেন কথিত ডাক্তার রানা। এরপর নেয়া হলে কোন প্রকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই রোগীকে সুস্থ করে তুলতে ২১ হাজার টাকা মূল্যের একটি ইঞ্জেকশন দিতে হবে বলে জানায় কথিত ওই ডাক্তার। কোন প্রকার পরীক্ষা না করে ওই ইনজেকশন দিতে নিষেধ করেন রোগীর ছেলে। কোন কথার গুরুত্ব না দিয়ে হার্টের রোগী অহিদা বেগম’কে HCG- 1M (হরমোন) একটি ইঞ্জেকশন পুশ করে ডাক্তার। উক্ত ইঞ্জেকশন পুশ করার ৪ মিনিটের মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন অহিদা বেগম। এসব কথা বলতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অহিদা বেগমের ছেলে রানা মোল্লা।

অপচিকিৎসায় মৃত্যুর ওই ঘটনায় ভিকটিম পরিবারের সদস্যদের প্রতিবাদের একপর্যায়ে ওই স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে উপস্থিত হয় স্থানীয় লোকজন ও গোপালগঞ্জ থানা পুলিশ। তখন সকলের কাছে প্রতিয়মান হয় যে, ডাক্তার না হয়েও নিজেকে অনেক বড় মাপের ডাক্তার বলে পরিচয় দেন এম এস এইচ রানা। একইসাথে নিজেই ফার্মাসিস্ট এবং রোগিদের সকল ঔষধ নিজেই সরবারহ করেন। উল্লেখ্য, তিনি যৌন উত্তেজক এবং গর্ভধারণ সহায়ক হরমোনের ঔষধ দ্বারা মহিলা রোগীর চিকিৎসা দিয়ে থাকেন বলেও জানাযায়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) জানান, অপচিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় ডাক্তার (পরিচয়) এম এস এইচ রানাকে ঘটনার রাতেই আটক করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ভিকটিম পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় নি বলেও জানান তিনি।
এঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য সাব্বির হোসেন শিবলী ও মোল্লাহাটের কুলিয়া বড়ঘাট এলাকার মোঃ তরিকুল ইসলাম (বিএনপি নেতা) সহ অনেকে।

ডাঃ এম এস এইচ রানা জানান, তিনি ভেবেছিলেন এই ইনজেকশন দিলে শরীরে শক্তি ফিরে পাবে, তাই ২১ হাজার টাকা মূল্যের HCG- 1M (হরমোন) একটি ইঞ্জেকশন পুশ করেন। অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রোগীর আপনজনদের থেকে লিখিত না নিলেও মৌখিক অনুমতি নিয়ে এটি পুশ করা হয়েছে। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রভাবিত করার প্রস্তাবও দেন তিনি। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মতবিনিময় সভা দু’গ্রুপের হাতাহাতিতে ভন্ডুল

গোপালগঞ্জে অপচিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, কথিত ডাক্তার আটক

প্রকাশিত সময় : ১২:৪২:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

####

গোপালগঞ্জে কথিত ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় অহিদা বেগম (৬২) নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর গোবরা এলাকায় ঢাকা – খুলনা মহাসড়কের পাশে মা মমতা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় কথিত ডাক্তার এম এস এইচ রানা’কে হাতেনাতে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছে গোপালগঞ্জ থানা পুলিশ।অপচিকিৎসায় মৃত্যুর শিকার অহিদা বেগম বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার কুলিয়া বড়ঘাট এলাকার ইকু মোল্লার স্ত্রী।

অহিদা বেগমের ছেলে রানা মোল্লা জানান , বুকের ব্যাথা জনিত কারণে তার মা অহিদা বেগমকে সোমবার দুপুরে ওই কথিত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা, ১০০০ টাকা পরামর্শ ফি নেন কথিত ডাক্তার এম এস এইচ রানা। মায়ের হার্টের সমস্যা গুলো শুনে ১০ দিনের ঔষধও দেন তিনি। দুইদিন যাবত ওই ঔষধ খাওয়ার পরও সুস্থ না হওয়ায় মুঠোফোনে ডাক্তারের সাথে তারা কথা বলে। তখন তার মাকে পুনরায় উক্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে নিয়ে আসতে বলেন কথিত ডাক্তার রানা। এরপর নেয়া হলে কোন প্রকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই রোগীকে সুস্থ করে তুলতে ২১ হাজার টাকা মূল্যের একটি ইঞ্জেকশন দিতে হবে বলে জানায় কথিত ওই ডাক্তার। কোন প্রকার পরীক্ষা না করে ওই ইনজেকশন দিতে নিষেধ করেন রোগীর ছেলে। কোন কথার গুরুত্ব না দিয়ে হার্টের রোগী অহিদা বেগম’কে HCG- 1M (হরমোন) একটি ইঞ্জেকশন পুশ করে ডাক্তার। উক্ত ইঞ্জেকশন পুশ করার ৪ মিনিটের মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন অহিদা বেগম। এসব কথা বলতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অহিদা বেগমের ছেলে রানা মোল্লা।

অপচিকিৎসায় মৃত্যুর ওই ঘটনায় ভিকটিম পরিবারের সদস্যদের প্রতিবাদের একপর্যায়ে ওই স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে উপস্থিত হয় স্থানীয় লোকজন ও গোপালগঞ্জ থানা পুলিশ। তখন সকলের কাছে প্রতিয়মান হয় যে, ডাক্তার না হয়েও নিজেকে অনেক বড় মাপের ডাক্তার বলে পরিচয় দেন এম এস এইচ রানা। একইসাথে নিজেই ফার্মাসিস্ট এবং রোগিদের সকল ঔষধ নিজেই সরবারহ করেন। উল্লেখ্য, তিনি যৌন উত্তেজক এবং গর্ভধারণ সহায়ক হরমোনের ঔষধ দ্বারা মহিলা রোগীর চিকিৎসা দিয়ে থাকেন বলেও জানাযায়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) জানান, অপচিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় ডাক্তার (পরিচয়) এম এস এইচ রানাকে ঘটনার রাতেই আটক করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ভিকটিম পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় নি বলেও জানান তিনি।
এঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য সাব্বির হোসেন শিবলী ও মোল্লাহাটের কুলিয়া বড়ঘাট এলাকার মোঃ তরিকুল ইসলাম (বিএনপি নেতা) সহ অনেকে।

ডাঃ এম এস এইচ রানা জানান, তিনি ভেবেছিলেন এই ইনজেকশন দিলে শরীরে শক্তি ফিরে পাবে, তাই ২১ হাজার টাকা মূল্যের HCG- 1M (হরমোন) একটি ইঞ্জেকশন পুশ করেন। অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রোগীর আপনজনদের থেকে লিখিত না নিলেও মৌখিক অনুমতি নিয়ে এটি পুশ করা হয়েছে। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রভাবিত করার প্রস্তাবও দেন তিনি। ##