গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করতে চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। এর মধ্যে সর্বশেষ প্রকল্প হচ্ছে গ্রামীণ জনপদে চারশ’ ৩৮ কোটি টাকার কৃষি ভিত্তিক প্রকল্প। এতে করে চাষের আওতায় আসবে সারাদেশের পতিত জমি। বসতবাড়ির চারপাশও আসবে চাষের আওতায়। বাড়ির আঙিনার পতিত জমিগুলো নানা ধরনের ফলমূলে ভরে উঠবে। এতে পরিবারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি গড়ে উঠবে পারিবারিক পুষ্টিবাগান। আয় বাড়বে মানুষের। গ্রামীণ মানুষের পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মেটানোসহ আয়বর্ধক কাজে সম্পৃক্ত করতে এই উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
বর্তমান সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলোর অন্যতম ছিলো ‘গ্রাম হবে শহর’। মানে গ্রামে পৌঁছুবে নাগরিক সব সুযোগ সুবিধা। ক্ষমতায় আসার পর সেই অনুযায়ী নানা ধরনের পরিকল্পনা শুরুও হয়েছে। গ্রামীণ আর্থসামাজিক উন্নয়নে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে ছন্দপতন ঘটেছে সবকিছুতেই। সাময়িকভাবে থমকে গেছে উন্নয়ন কর্মসূচি। করোনায় কাজ হারিয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে একটা বড় অংশ চলে গেছে গ্রামে। অপরদিকে বিদেশ থেকে কাজ হারিয়ে দেশে ফিরেছেন অনেক প্রবাসী। সেই সঙ্গে যুক্ত হলো প্রলয়ংকারি বন্যা সব মিলিয়ে বেশি চাপে পড়েছে গ্রামীণ অর্থনীতি। এই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই গ্রামের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। এই চাপ কাটিয়ে ওঠা বর্তমানে একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞগণ। তবে সরকারের পক্ষ থেকে শোনানো হচ্ছে আশার বাণী। নেয়া হচ্ছে নতুন নতুন কর্মসূচি। এর মধ্যে প্রথমেই ধরা যায় কৃষিভিত্তিক নানা প্রকল্পের কথা। গ্রামের মানুষকে আয়বর্ধক নানা কাজে সম্পৃক্ত করতে গৃহিত হয়েছে চারশ’ ৩৮ কোটি টাকার বৃহৎ প্রকল্প। কারণ, কৃষিই হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতির চালিকাশক্তি। শুধু তাই নয়, জাতীয় অর্থনীতিতেও কৃষির অবদান উল্লেখযোগ্য।
গ্রামকে শহরে ‘রূপান্তরিত’ করা নয়, বরং গ্রামের ঐতিহ্যকে ধরে রেখে যাতে মানুষ শহুরে সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে, সেই চিন্তাই রয়েছে সরকারের। গ্রামে কৃষি জমি অনাবাদি থাকবে না, ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছুবে, গ্রামে গড়ে উঠবে কলকারখানা, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে গ্রামে, যোগাযোগ, শিক্ষা প্রভৃতি খাতে যুগান্তকারী উন্নয়ন সাধিত হবে। সরকারের সেই লক্ষ্য অর্জনে দরকার সাধারণ মানুষের সচেতনতা। পাশাপাশি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের সততা ও নিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি।