১০:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘুষ আদায় ও মারধরের অভিযোগে বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

  • সংবাদদাতা
  • প্রকাশিত সময় : ০৮:৫৫:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৩
  • ১৬১ পড়েছেন

####

সুন্দরবনের জেলেদের মারধর ও ঘুষ আদায়ের অভিযোগে পশ্চিম সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেষ্ট স্টেশন কর্মকর্তা (এস ও) শ্যামা প্রসাদ রায় ও কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপের (সিপিজি) সদস্য মোঃ বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে মামলার আরজিতে ছয়জন স্বাক্ষীর নামও উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া চাঁদার টাকা না দিলে বাদীকে বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ষ্টেশন কর্মকর্তা এ অভিযোগ করা হয়েছে। গত বুধবার কয়রার মঠবাড়ি গ্রামের বনজীবী জেলে মোঃ কালাম গাজী বাদী হয়ে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করলে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী দেলোয়ার হোসেন আজ শনিবার বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন।
মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা (এসও) শ্যামা প্রসাদ রায় ও কমিউনিটি প্যাট্রলিং গ্রুপের (সিপিজি) সদস্য বিল্লাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে বনজীবী জেলে–বাওয়ালিদের নানাভাবে হয়রানি করছেন। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, ২৫ মণ ধারণক্ষমতার একটি নৌকার জন্য ১৫ টাকা হারে রাজস্ব দেওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু তাঁরা দুজন মিলে একেকটি নৌকার অনুমতিপত্র (বিএলসি) নবায়নে ২ হাজার টাকা করে ঘুষ আদায় করছেন। এ রকম ৯ শতাধিক নৌকা অনুমতিপত্র নবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া কয়রা উপজেলার ৪ নম্বর কয়রা গ্রামের মুছানুর গাজীকে মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেছেন শ্যামা প্রসাদ রায়। চাঁদার টাকা না দিলে বাদীকে বন্য প্রাণী হত্যা ও পাচার মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন স্টেশন কর্মকর্তা।
আরজিতে বাদী আরও উল্লেখ করেন, তাঁর নিজেরও একটি নৌকার অনুমতিপত্র রয়েছে। তিনি কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনে গিয়ে কর্মকর্তাকে অনুমতিপত্র নবায়নের অনুরোধ করলে একটি ভুয়া নাম-ঠিকানা দেখিয়ে তাঁর নামে বন আইনে মামলা আছে বলে নবায়ন করবেন না বলে জানান। গত ২৫ জুলাই ছিল নৌকাটির সুন্দরবনে প্রবেশের বার্ষিক অনুমতিপত্র নবায়নের শেষ দিন। ওই দিন সিপিজি সদস্য বিল্লাল হোসেনের মাধ্যমে নৌকার অনুমতিপত্র দেওয়ার কথা বলে তাঁকে এবং কয়রার মঠবাড়ি গ্রামের বনজীবী জেলে মিজানুর রহমানকে কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনে ডেকে নিয়ে জানানো হয়, তাঁদের বিরুদ্ধে হরিণ শিকারের মামলা রয়েছে। এ জন্য দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন স্টেশন কর্মকর্তা। এ সময় টাকা দিতে না চাওয়ায় স্টেশন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায় ও সিপিজি সদস্য বিল্লাল হোসেন তাঁদের বেদম প্রহার করেন। এতে তারা মারাত্মক আহত হন। মামলার স্বাক্ষীরা ফরেস্ট স্টেশন থেকে তাদের উদ্ধার করে কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায় বলেন, ‘গত বছর আমার স্টেশনের আওতায় ৯৭৫টি বনজীবী নৌকার অনুমতিপত্র ছিল। এর মধ্যে বিভিন্ন সময় সুন্দরবনকেন্দ্রিক অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় ৪৪টি অনুমতিপত্র এ বছর নবায়ন না করে বাতিল করেছি। তাছাড়া বাদী কালাম গাজী সুন্দরবন কেন্দ্রিক অপরাধের সাথে জড়িত থাকার কারণে তার বিএলসি আমার আগের এস ও বাতিল করে দিয়ে যান। উক্ত কালাম গাজী গতবারের বাতিলকৃত বিএলসি নবায়ন করতে আসলে উক্ত বিএলসি নবায়ন না করায় কালাম গাজী সহ এই বাদপড়া অপরাধীরা ষড়যন্ত্র করে আমাকে হয়রানি করতে মিথ্যা গল্প সাজিয়ে মামলা করেছে।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালী বন ব্যাবসায়ীরা সুন্দরবন অভ্যন্তরে জেলেদের অবৈধভাবে অবাদে প্রবেশের সুযোগ করে দেন। আমি এখানে যোগদান করার পর সুন্দরবন অভ্যন্তরে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরার অপরাধে অনেক অপরাধীদের জাল-নৌকাসহ আটক করে আইনের আওতায় এনেছি। গত ২৫ জুলাই ৮টি জাল-নৌকাসহ ১জনকে আটক করি। সেই রাগে ঘুষ চাওয়া মারধর করার নাটক সাজিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা করেছে। আমরা আইনগতভাবেই সবকিছু মোকাবিলা করব। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরের সোনার মুকুট চোরকে দ্রুত গ্রেপ্তারসহ মুকুট উদ্ধারের দাবী

ঘুষ আদায় ও মারধরের অভিযোগে বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত সময় : ০৮:৫৫:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৩

####

সুন্দরবনের জেলেদের মারধর ও ঘুষ আদায়ের অভিযোগে পশ্চিম সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেষ্ট স্টেশন কর্মকর্তা (এস ও) শ্যামা প্রসাদ রায় ও কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপের (সিপিজি) সদস্য মোঃ বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে মামলার আরজিতে ছয়জন স্বাক্ষীর নামও উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া চাঁদার টাকা না দিলে বাদীকে বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ষ্টেশন কর্মকর্তা এ অভিযোগ করা হয়েছে। গত বুধবার কয়রার মঠবাড়ি গ্রামের বনজীবী জেলে মোঃ কালাম গাজী বাদী হয়ে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করলে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী দেলোয়ার হোসেন আজ শনিবার বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন।
মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা (এসও) শ্যামা প্রসাদ রায় ও কমিউনিটি প্যাট্রলিং গ্রুপের (সিপিজি) সদস্য বিল্লাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে বনজীবী জেলে–বাওয়ালিদের নানাভাবে হয়রানি করছেন। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, ২৫ মণ ধারণক্ষমতার একটি নৌকার জন্য ১৫ টাকা হারে রাজস্ব দেওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু তাঁরা দুজন মিলে একেকটি নৌকার অনুমতিপত্র (বিএলসি) নবায়নে ২ হাজার টাকা করে ঘুষ আদায় করছেন। এ রকম ৯ শতাধিক নৌকা অনুমতিপত্র নবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া কয়রা উপজেলার ৪ নম্বর কয়রা গ্রামের মুছানুর গাজীকে মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেছেন শ্যামা প্রসাদ রায়। চাঁদার টাকা না দিলে বাদীকে বন্য প্রাণী হত্যা ও পাচার মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন স্টেশন কর্মকর্তা।
আরজিতে বাদী আরও উল্লেখ করেন, তাঁর নিজেরও একটি নৌকার অনুমতিপত্র রয়েছে। তিনি কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনে গিয়ে কর্মকর্তাকে অনুমতিপত্র নবায়নের অনুরোধ করলে একটি ভুয়া নাম-ঠিকানা দেখিয়ে তাঁর নামে বন আইনে মামলা আছে বলে নবায়ন করবেন না বলে জানান। গত ২৫ জুলাই ছিল নৌকাটির সুন্দরবনে প্রবেশের বার্ষিক অনুমতিপত্র নবায়নের শেষ দিন। ওই দিন সিপিজি সদস্য বিল্লাল হোসেনের মাধ্যমে নৌকার অনুমতিপত্র দেওয়ার কথা বলে তাঁকে এবং কয়রার মঠবাড়ি গ্রামের বনজীবী জেলে মিজানুর রহমানকে কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনে ডেকে নিয়ে জানানো হয়, তাঁদের বিরুদ্ধে হরিণ শিকারের মামলা রয়েছে। এ জন্য দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন স্টেশন কর্মকর্তা। এ সময় টাকা দিতে না চাওয়ায় স্টেশন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায় ও সিপিজি সদস্য বিল্লাল হোসেন তাঁদের বেদম প্রহার করেন। এতে তারা মারাত্মক আহত হন। মামলার স্বাক্ষীরা ফরেস্ট স্টেশন থেকে তাদের উদ্ধার করে কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায় বলেন, ‘গত বছর আমার স্টেশনের আওতায় ৯৭৫টি বনজীবী নৌকার অনুমতিপত্র ছিল। এর মধ্যে বিভিন্ন সময় সুন্দরবনকেন্দ্রিক অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় ৪৪টি অনুমতিপত্র এ বছর নবায়ন না করে বাতিল করেছি। তাছাড়া বাদী কালাম গাজী সুন্দরবন কেন্দ্রিক অপরাধের সাথে জড়িত থাকার কারণে তার বিএলসি আমার আগের এস ও বাতিল করে দিয়ে যান। উক্ত কালাম গাজী গতবারের বাতিলকৃত বিএলসি নবায়ন করতে আসলে উক্ত বিএলসি নবায়ন না করায় কালাম গাজী সহ এই বাদপড়া অপরাধীরা ষড়যন্ত্র করে আমাকে হয়রানি করতে মিথ্যা গল্প সাজিয়ে মামলা করেছে।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালী বন ব্যাবসায়ীরা সুন্দরবন অভ্যন্তরে জেলেদের অবৈধভাবে অবাদে প্রবেশের সুযোগ করে দেন। আমি এখানে যোগদান করার পর সুন্দরবন অভ্যন্তরে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরার অপরাধে অনেক অপরাধীদের জাল-নৌকাসহ আটক করে আইনের আওতায় এনেছি। গত ২৫ জুলাই ৮টি জাল-নৌকাসহ ১জনকে আটক করি। সেই রাগে ঘুষ চাওয়া মারধর করার নাটক সাজিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা করেছে। আমরা আইনগতভাবেই সবকিছু মোকাবিলা করব। ##