১১:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের অর্থ খরচ করে সাধারণ মানুষে দুর্দশা লাঘবে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে : মিয়া গোলাম পরওয়ার 

####

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জলাবদ্ধতার জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। খালে-বিলে বাধ দিয়ে পানি আটকে জলবদ্ধতার সৃষ্টি করেছি আমরা। সরকারি কর্মকর্তাদের সহায়তায় আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা সমস্ত খালে-বিলে বাধ ও পাটা দিয়ে পানি আটকে দিয়েছিল। যার কারণে এ অঞ্চলে জলবদ্ধাতার সৃষ্টি হয়। অবিলম্বে জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের কোষাগারের অর্থ খরচ করে সাধারণ মানুষে দুর্দশা লাঘবে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলে জলাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের পক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তিনি মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দফতরে কথা বলায় ইতোমধ্যে ভোলা ও বরিশালসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ১০টি পাম্প আনা হয়েছে এবং সেগুলো স্থাপন করা হচ্ছে, আরো পাম্প আসছে। অবিলম্বে পানি নিষ্কাশন করে জলবদ্ধতা নিরসন করা হবে ইনশাআল্লাহ। ১৫ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সকাল ৯ টায় খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার থুকড়া ইসলামিয়া ওয়াজেদিয়া দাখিল মাদরাসা ও এতিমখানা এবং সকাল ১১ টায় চুকনাগরস্থ নূরানিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসা প্রাঙ্গনে বিলডাকাতিয়া, মাধবকাটি, বিলপাবলা, লতাবিল, খর্ণিয়া, শোলগাতি, রুদাঘরা, বরুনা, চেচুড়ি, ঘোষড়া, বাদুড়িয়া, কাঞ্চনপুর ও ভবদাহের জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন। নুরানীয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণে ডুমুরিয়া উপজেলা (দক্ষিণ) আমীর মাওলানা মোক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা হাবিবুর রহমানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারি পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, জেলা সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য হাফেজ আমিনুল ইসলাম, এডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা ও আশরাফুল আলম। বক্তব্য রাখেন কৃষ্ণ নন্দী, মিলন নন্দী, অশোক মল্লিক, বাবু ঘোষ, খুলনা জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি বেলাল হুসাইন রিয়াদ, ছাত্রশিবির নেতা শাহজালাল, বি এম আব্দুর রশীদ, মাওলানা সাইদুল্যাহ, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা ফরহাদ আল মাহমুদ, মাওলানা মনিরুল ইসলাম, আবুল হোসেন শেখ, মাওলানা আব্দুল মান্নান, মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, মোস্তফা কামাল, বেলাল হুসাইন শেখ, ডুমুরিয়া উপজেলা ছাত্রশিবির সভাপতি, মফিজুর রহমান, আবু তাহের, সামিদুল হাসান লিমন প্রমুখ। এখানে ৬৫০ জন ক্ষতিগ্রস্তের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়। প্রধান অতিথি আরও বলেন, এখনো প্রশাসনের ভিতরে ঘাপটি মেরে আছে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসররা। তাদেরকে অবিলম্বে সরাতে হবে। তা না হলে ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের সরকার ব্যর্থ হওয়ার আশংকা থেকে যায়। কারণ আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তাদের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, আমি এলাকার মানুষ। আমার জন্মস্থান এখানেই। আমিও আপনাদের মতো জলাবদ্ধায় ক্ষতিগ্রস্ত। ডুমুরিয়া ও ফুলতলা এলাকার ৮০-৯০ স্লুইস গেট আছে। এ গুলো পলি পরে বন্ধ হয়ে গেছে। শুস্ক মওসুমে পলি সরানোর কাজ শুরু হবে। তবে জলাবদ্ধতা একদিনে বা এক মাসে নিরসন করা সম্ভব না। তিনি বলেন, এখন যে সরকার ক্ষমতায় আছে, এটা কোন নির্বাচিত সরকার নয়। এটা একটা অন্তবর্তীকালীন সরকার। এটার কাজ দেশ শাসন করা নয়। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ এর নির্বাচনে আপনারা ভোট দিতে পারেন নাই । ছাত্রলীগ, যুবলীগ আর পুলিশ লীগে ভোট দিয়েছে। আমরা ভোট দিতে গেলে বলা হয়েছে ভোট দেয়া হয়ে গেছে। এ রকম ভোট আর বাংলাদেশে হতে দেয়া হবে না। প্রয়োজনে আরো রক্ত দিতে প্রস্তুত আছি। তিনি আরও বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে জনগণের ভোটের সরকার লাগবে। জনগণ যাদের পছন্দ করবে তারা ক্ষমতায় গিয়ে চুরি-ডাকাতি, লুটপাট, দুর্নীতি বাদ দিয়ে সরকারের টাকা দিয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধান করবে। তিনি জনগণকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, শাহপুর সড়কটি অতি দ্রুত সংস্কার করা হবে। গত ১৭ বছর বছরের অত্যাচার জুলুমের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, এ সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জামায়াতে ইসলামী। আওয়ামী সরকার জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের জেল জুলুম ফাঁসি দিয়েছে। কুরআনের পাখি খ্যাত আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে জেলের ভেতর হত্যা করা হয়েছে। গত ১৫ বছর বিএনপি-জামায়াতের লোক বাড়িতে ঘুমাতে পারেনি। চাকরি হয়নি, জামায়াতে ইসলামীর অফিসগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে আমাদের বুকের উপর চেপে থাকা জগদ্বল পাথর সরিয়ে দিয়ে মুক্ত বাতাসের নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ হয়েছে। সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, এখনো প্রশাসনের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা রয়ে গেছে। তাদেরকে সরাতে হবে। ১৫ বছরের যারা মানুষ খুন করেছে, মানুষ খুনা করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে তাদেরকে এদেশে থাকার নৈতিক কোন অধিকার নেই। যেখানের মাল সেখানেই গেছে। ওখানে তার থাকার স্থান। তিনি আরও বলেন, আপনারা যারা প্রশাসনে আছেন, তারা জনগণের ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন। ডিসি এসপি আপনারা জনগণের সেবা করুন। আপনাদের বেতন হয় জনগনের ট্যাক্সের টাকায়। তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন। তাদের সমস্যা সমাধানে কাজ করুন। তা না হলে শেখ হাসিনা যেমন পালানোর সুযোগ পেয়েছে, জরগণ এমন ধাক্কা দেবে তাতে করে আপনারা পালানোর পথও পাবেন না। অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি-জামায়াতসহ সবাইকে ডেকেছিল। আমরা বলেছি সরকারের কাজ হল একটি অবাধ গ্রহণযোগ্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দিয়ে বিদায় নেয়া। তিনি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে বলেন, বাজারে এখানো আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের সিন্ডিকেট রয়েছে। এ সব সিন্ডিকেট ভাঙতে পারলে দ্রব্য মূল্যের দাম কমানো সম্ভব না। এসব প্রভাবশালী সিন্ডিকেট দ্রব্য মূল্যের দাম বাড়িয়ে দিযে জনগণকে সরকারের মুখোমুখি দাড় করাতে চায়। সবাইকে এ সব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিরোদ গড়ে তুলতে হবে। এর আগে সকাল ৯ টায় থুকড়া ইসলামিয়া ওয়াজেদিয়া দাখিল মাদরাসা ও এতিমখানা প্রাঙ্গনে উপজেলা আমীর গাজী সাইফুল্যাহের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি বি এম আব্দুর রশীদের পরিচালনায় পরিচালনায় উপরোল্লিখিত নেতৃবৃন্দ ছাড়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সরোয়ার হোসেন, বিএনপি নেতা মাসুদুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এখানে জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০ জনের মাঝে নগদ অর্থ বিরতণ করা হয়। পরে মিকশিমিল বাজারে রুদাঘরা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয় উদ্বোধন করেন সেক্রেটারি জেনারেল। ইউনিয়ন আমীর মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি তৈয়্যেবুর রহমানের পরিচালনায় উপরোল্লিখিত নেতৃবৃন্দ ছাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান, অধ্যাপক জিএম আমানুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। দুপুর ১২ টায় চুকনগর বাজারস্থ আটলিয়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী কার্যালয় উদ্বোধন করেন সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ইউনিয়ন আমীর হাফেজ আবু বকর সিদ্দিকের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি হাফেজ মঈন উদ্দিনের পরিচালনায় উপরোল্লিখিত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বেলা ৩টায় ডুমুরিয়া উপজেলা সদরে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয় উদ্বোধন করা হয়। উপজেলা আমীর মাওলানা মোক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা হাবিবুর রহমানের পরিচালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। এতে উপরোল্লিখিত নেতৃবৃন্দ ছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন খুলনা জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মোল্লা আবুল কাশেম ও হেফাজত নেতা মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম জমাদ্দার প্রমুখ।

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

মোংলায় জোরপূর্বক ক্রয়কৃত জমি দখলের অভিযোগ

জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের অর্থ খরচ করে সাধারণ মানুষে দুর্দশা লাঘবে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে : মিয়া গোলাম পরওয়ার 

প্রকাশিত সময় : ০৬:৩৭:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

####

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জলাবদ্ধতার জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। খালে-বিলে বাধ দিয়ে পানি আটকে জলবদ্ধতার সৃষ্টি করেছি আমরা। সরকারি কর্মকর্তাদের সহায়তায় আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা সমস্ত খালে-বিলে বাধ ও পাটা দিয়ে পানি আটকে দিয়েছিল। যার কারণে এ অঞ্চলে জলবদ্ধাতার সৃষ্টি হয়। অবিলম্বে জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের কোষাগারের অর্থ খরচ করে সাধারণ মানুষে দুর্দশা লাঘবে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলে জলাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের পক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তিনি মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দফতরে কথা বলায় ইতোমধ্যে ভোলা ও বরিশালসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ১০টি পাম্প আনা হয়েছে এবং সেগুলো স্থাপন করা হচ্ছে, আরো পাম্প আসছে। অবিলম্বে পানি নিষ্কাশন করে জলবদ্ধতা নিরসন করা হবে ইনশাআল্লাহ। ১৫ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সকাল ৯ টায় খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার থুকড়া ইসলামিয়া ওয়াজেদিয়া দাখিল মাদরাসা ও এতিমখানা এবং সকাল ১১ টায় চুকনাগরস্থ নূরানিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসা প্রাঙ্গনে বিলডাকাতিয়া, মাধবকাটি, বিলপাবলা, লতাবিল, খর্ণিয়া, শোলগাতি, রুদাঘরা, বরুনা, চেচুড়ি, ঘোষড়া, বাদুড়িয়া, কাঞ্চনপুর ও ভবদাহের জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন। নুরানীয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণে ডুমুরিয়া উপজেলা (দক্ষিণ) আমীর মাওলানা মোক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা হাবিবুর রহমানের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারি পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, জেলা সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য হাফেজ আমিনুল ইসলাম, এডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা ও আশরাফুল আলম। বক্তব্য রাখেন কৃষ্ণ নন্দী, মিলন নন্দী, অশোক মল্লিক, বাবু ঘোষ, খুলনা জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি বেলাল হুসাইন রিয়াদ, ছাত্রশিবির নেতা শাহজালাল, বি এম আব্দুর রশীদ, মাওলানা সাইদুল্যাহ, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা ফরহাদ আল মাহমুদ, মাওলানা মনিরুল ইসলাম, আবুল হোসেন শেখ, মাওলানা আব্দুল মান্নান, মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, মোস্তফা কামাল, বেলাল হুসাইন শেখ, ডুমুরিয়া উপজেলা ছাত্রশিবির সভাপতি, মফিজুর রহমান, আবু তাহের, সামিদুল হাসান লিমন প্রমুখ। এখানে ৬৫০ জন ক্ষতিগ্রস্তের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়। প্রধান অতিথি আরও বলেন, এখনো প্রশাসনের ভিতরে ঘাপটি মেরে আছে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসররা। তাদেরকে অবিলম্বে সরাতে হবে। তা না হলে ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের সরকার ব্যর্থ হওয়ার আশংকা থেকে যায়। কারণ আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তাদের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, আমি এলাকার মানুষ। আমার জন্মস্থান এখানেই। আমিও আপনাদের মতো জলাবদ্ধায় ক্ষতিগ্রস্ত। ডুমুরিয়া ও ফুলতলা এলাকার ৮০-৯০ স্লুইস গেট আছে। এ গুলো পলি পরে বন্ধ হয়ে গেছে। শুস্ক মওসুমে পলি সরানোর কাজ শুরু হবে। তবে জলাবদ্ধতা একদিনে বা এক মাসে নিরসন করা সম্ভব না। তিনি বলেন, এখন যে সরকার ক্ষমতায় আছে, এটা কোন নির্বাচিত সরকার নয়। এটা একটা অন্তবর্তীকালীন সরকার। এটার কাজ দেশ শাসন করা নয়। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ এর নির্বাচনে আপনারা ভোট দিতে পারেন নাই । ছাত্রলীগ, যুবলীগ আর পুলিশ লীগে ভোট দিয়েছে। আমরা ভোট দিতে গেলে বলা হয়েছে ভোট দেয়া হয়ে গেছে। এ রকম ভোট আর বাংলাদেশে হতে দেয়া হবে না। প্রয়োজনে আরো রক্ত দিতে প্রস্তুত আছি। তিনি আরও বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে জনগণের ভোটের সরকার লাগবে। জনগণ যাদের পছন্দ করবে তারা ক্ষমতায় গিয়ে চুরি-ডাকাতি, লুটপাট, দুর্নীতি বাদ দিয়ে সরকারের টাকা দিয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধান করবে। তিনি জনগণকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, শাহপুর সড়কটি অতি দ্রুত সংস্কার করা হবে। গত ১৭ বছর বছরের অত্যাচার জুলুমের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, এ সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জামায়াতে ইসলামী। আওয়ামী সরকার জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের জেল জুলুম ফাঁসি দিয়েছে। কুরআনের পাখি খ্যাত আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে জেলের ভেতর হত্যা করা হয়েছে। গত ১৫ বছর বিএনপি-জামায়াতের লোক বাড়িতে ঘুমাতে পারেনি। চাকরি হয়নি, জামায়াতে ইসলামীর অফিসগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে আমাদের বুকের উপর চেপে থাকা জগদ্বল পাথর সরিয়ে দিয়ে মুক্ত বাতাসের নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ হয়েছে। সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, এখনো প্রশাসনের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা রয়ে গেছে। তাদেরকে সরাতে হবে। ১৫ বছরের যারা মানুষ খুন করেছে, মানুষ খুনা করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে তাদেরকে এদেশে থাকার নৈতিক কোন অধিকার নেই। যেখানের মাল সেখানেই গেছে। ওখানে তার থাকার স্থান। তিনি আরও বলেন, আপনারা যারা প্রশাসনে আছেন, তারা জনগণের ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন। ডিসি এসপি আপনারা জনগণের সেবা করুন। আপনাদের বেতন হয় জনগনের ট্যাক্সের টাকায়। তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন। তাদের সমস্যা সমাধানে কাজ করুন। তা না হলে শেখ হাসিনা যেমন পালানোর সুযোগ পেয়েছে, জরগণ এমন ধাক্কা দেবে তাতে করে আপনারা পালানোর পথও পাবেন না। অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি-জামায়াতসহ সবাইকে ডেকেছিল। আমরা বলেছি সরকারের কাজ হল একটি অবাধ গ্রহণযোগ্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দিয়ে বিদায় নেয়া। তিনি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে বলেন, বাজারে এখানো আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের সিন্ডিকেট রয়েছে। এ সব সিন্ডিকেট ভাঙতে পারলে দ্রব্য মূল্যের দাম কমানো সম্ভব না। এসব প্রভাবশালী সিন্ডিকেট দ্রব্য মূল্যের দাম বাড়িয়ে দিযে জনগণকে সরকারের মুখোমুখি দাড় করাতে চায়। সবাইকে এ সব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিরোদ গড়ে তুলতে হবে। এর আগে সকাল ৯ টায় থুকড়া ইসলামিয়া ওয়াজেদিয়া দাখিল মাদরাসা ও এতিমখানা প্রাঙ্গনে উপজেলা আমীর গাজী সাইফুল্যাহের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি বি এম আব্দুর রশীদের পরিচালনায় পরিচালনায় উপরোল্লিখিত নেতৃবৃন্দ ছাড়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সরোয়ার হোসেন, বিএনপি নেতা মাসুদুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এখানে জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০ জনের মাঝে নগদ অর্থ বিরতণ করা হয়। পরে মিকশিমিল বাজারে রুদাঘরা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয় উদ্বোধন করেন সেক্রেটারি জেনারেল। ইউনিয়ন আমীর মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি তৈয়্যেবুর রহমানের পরিচালনায় উপরোল্লিখিত নেতৃবৃন্দ ছাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান, অধ্যাপক জিএম আমানুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। দুপুর ১২ টায় চুকনগর বাজারস্থ আটলিয়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী কার্যালয় উদ্বোধন করেন সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ইউনিয়ন আমীর হাফেজ আবু বকর সিদ্দিকের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি হাফেজ মঈন উদ্দিনের পরিচালনায় উপরোল্লিখিত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বেলা ৩টায় ডুমুরিয়া উপজেলা সদরে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয় উদ্বোধন করা হয়। উপজেলা আমীর মাওলানা মোক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা হাবিবুর রহমানের পরিচালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। এতে উপরোল্লিখিত নেতৃবৃন্দ ছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন খুলনা জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মোল্লা আবুল কাশেম ও হেফাজত নেতা মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম জমাদ্দার প্রমুখ।