০৫:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেবহাটায় মুক্তিযোদ্ধা বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাত মিজানের আদালতে জবানবন্দি

####

সাতক্ষীরার দেবহাটায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুভাষ চন্দ্র ঘোষের বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ আরো দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে দেবহাটা থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার ধোপাডাঙা গ্রামের মিজানুর রহমান ওরফে মিজান ডাকাত (৫৭) এবং একই গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে চোর জাহাঙ্গীর (৩৭)। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মিজান ডাকাত সাতক্ষীরার বিচারক হাকিম সালাহ্্উদ্দিনের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার তদন্তকারি অফিসার দেবহাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নুরুস সালাম সিদ্দিক জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষের বাড়িতে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শুক্রবার সন্ধ্যার পর নিজ বাড়ি থেকে চোর জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হবে।
তিনি আরো জানান, বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি থেকে মিজান ডাকাত কে মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষের বাড়িতে ডাকতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজানুর রহমান দুর্ধর্ষ এ ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে শুক্রবার বিচারক হাকিম সালাহ্উদ্দিনের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। তার দেওয়া স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দি যাঁচাই বাছাই করা হচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষ জানান, জাহাঙ্গীর হোসেন ও মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি তাকে পুলিশ অবহিত করেছে।
পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত মিজান ডাকাতের দেয়া স্বীকারোক্তি মোতাবেক সুভাষ ঘোষের বাড়িতে ডাকাতির আগে ও পরে পার্শ্ববর্তী অনিল স্বর্ণকারের পরিত্যক্ত বাড়িতে আস্তানা গেড়েছিল সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সদস্যরা। ডাকাতির পরে সেখানে ধারালো অস্ত্রসস্ত্র ফেলে যায় তারা। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের বাকিদের গ্রেপ্তারের স্বার্থে এরচেয়ে বেশি তথ্য এখনই গণমাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছেন পুলিশের নির্ভরযোগ্য সূত্রটি।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন বৃহষ্পতিবার দিবাগত রাত দুটো থেকে শুক্রবার ভোর সোয়া চারটা পর্যন্ত ৮/৯ জনের সংঘবদ্ধ ডাকাতদল জগন্নাথপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষের পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সিন্দুক ও আলমারির তালা ভেঙে ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ৫ লাখ টাকা, একটি দোনলা বন্দুক ও একটি মটর সাইকেলসহ মুল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
পরদিন সকালে বাড়ির ধানের গোলার পাশ থেকে ডাবল ব্যারেলের বন্দুক ও বৃহষ্পতিবার সকাল ৮টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙা ইউনিয়নের যোগরাজপুর গ্রামের নুর ইসলামের পাটক্ষেত থেকে ডাকাতি হওয়া মটর সাইকেল (সাতক্ষীরা-হ-১৩-৫৬৬১) উদ্ধার করা হয়। ডাকাতির ঘটনায় চালতেতলার আইয়ুব আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম ওরফে কালু ডাকাত কে সম্প্রতি শ্যামনগর উপজেলার কৈখালি থেকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গত ২ জুলাই তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশের পক্ষ থেকে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হলে বিচারক মহিতুল ইসলাম ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ৪ জুলাই রিমান্ড শেষে তাকে পুনরায় জেল হাজতে পাঠানো হয়। এনিয়ে সুভাষ ঘোষের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করলো

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

গোপালগঞ্জে অপচিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, কথিত ডাক্তার আটক

দেবহাটায় মুক্তিযোদ্ধা বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাত মিজানের আদালতে জবানবন্দি

প্রকাশিত সময় : ১১:১৯:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪

####

সাতক্ষীরার দেবহাটায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুভাষ চন্দ্র ঘোষের বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ আরো দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে দেবহাটা থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার ধোপাডাঙা গ্রামের মিজানুর রহমান ওরফে মিজান ডাকাত (৫৭) এবং একই গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে চোর জাহাঙ্গীর (৩৭)। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মিজান ডাকাত সাতক্ষীরার বিচারক হাকিম সালাহ্্উদ্দিনের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার তদন্তকারি অফিসার দেবহাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নুরুস সালাম সিদ্দিক জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষের বাড়িতে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শুক্রবার সন্ধ্যার পর নিজ বাড়ি থেকে চোর জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হবে।
তিনি আরো জানান, বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি থেকে মিজান ডাকাত কে মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষের বাড়িতে ডাকতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজানুর রহমান দুর্ধর্ষ এ ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে শুক্রবার বিচারক হাকিম সালাহ্উদ্দিনের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। তার দেওয়া স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দি যাঁচাই বাছাই করা হচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষ জানান, জাহাঙ্গীর হোসেন ও মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি তাকে পুলিশ অবহিত করেছে।
পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত মিজান ডাকাতের দেয়া স্বীকারোক্তি মোতাবেক সুভাষ ঘোষের বাড়িতে ডাকাতির আগে ও পরে পার্শ্ববর্তী অনিল স্বর্ণকারের পরিত্যক্ত বাড়িতে আস্তানা গেড়েছিল সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সদস্যরা। ডাকাতির পরে সেখানে ধারালো অস্ত্রসস্ত্র ফেলে যায় তারা। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের বাকিদের গ্রেপ্তারের স্বার্থে এরচেয়ে বেশি তথ্য এখনই গণমাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছেন পুলিশের নির্ভরযোগ্য সূত্রটি।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন বৃহষ্পতিবার দিবাগত রাত দুটো থেকে শুক্রবার ভোর সোয়া চারটা পর্যন্ত ৮/৯ জনের সংঘবদ্ধ ডাকাতদল জগন্নাথপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষের পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সিন্দুক ও আলমারির তালা ভেঙে ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ৫ লাখ টাকা, একটি দোনলা বন্দুক ও একটি মটর সাইকেলসহ মুল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
পরদিন সকালে বাড়ির ধানের গোলার পাশ থেকে ডাবল ব্যারেলের বন্দুক ও বৃহষ্পতিবার সকাল ৮টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙা ইউনিয়নের যোগরাজপুর গ্রামের নুর ইসলামের পাটক্ষেত থেকে ডাকাতি হওয়া মটর সাইকেল (সাতক্ষীরা-হ-১৩-৫৬৬১) উদ্ধার করা হয়। ডাকাতির ঘটনায় চালতেতলার আইয়ুব আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম ওরফে কালু ডাকাত কে সম্প্রতি শ্যামনগর উপজেলার কৈখালি থেকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গত ২ জুলাই তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশের পক্ষ থেকে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হলে বিচারক মহিতুল ইসলাম ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ৪ জুলাই রিমান্ড শেষে তাকে পুনরায় জেল হাজতে পাঠানো হয়। এনিয়ে সুভাষ ঘোষের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করলো