০৫:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশের বৃহত্তম চুকনগর গনহত্যা বদ্ধভূমি সংরক্ষণে সকল পদক্ষেপ নেয়া হবে : গণপূর্তমন্ত্রী

####

গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র,আ,ম, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে দেশের বৃহত্তম গনহত্যার স্থান চুকনগর বদ্ধভুমি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালির উপর পরিচালিত হত্যাযজ্ঞ এদেশের একটি গোষ্ঠী স্বীকার করতে চায় না। তারা জাতীয় সংগীত গাইতে ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে অনীহা প্রকাশ করে। তারা স্বাধীনতা বিরোধী ও দেশবিরোধী নানা ধরনের চক্রান্তে লিপ্ত। তাদের সকল চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে। শনিবার (৬জুলাই) খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর বধ্যভূমি প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আমরা একাত্তর’-এর উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বদ্ধভূমি সংরক্ষণে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন, ১৯৭১ সালে চুকনগর ছিল ভারতে যাওয়ার অন্যতম প্রধান পথ। বিভিন্ন এলাকা থেকে ভারতে পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে আগত ১০ থেকে ২০ হাজার মানুষকে ১৯৭১ সালের ২০মে এখানে হত্যা করে তাদের লাশ স্থানীয় ভদ্রা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। ইতিহাসে এমন পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের নজির বিরল। শুধু চুকনগর নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানী হানাদার গোষ্ঠী এমন হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে যার বেশিরভাগই এখনো পর্যন্ত অজানা। প্রয়োজনীয় গবেষণা ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে এসব তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে। তরুণ প্রজন্মের কাছে এসব ইতিহাস সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এসব বদ্ধভূমি সংরক্ষণ ও সংস্কারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে মন্ত্রী বদ্ধভূমির মূল বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। মন্ত্রী তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙ্গালির উপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞের সঠিক তথ্য তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ব হয়ে দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করতে উৎসাহিত করার আহবান জানান।

খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডুমুরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিক, জেলা কমান্ডার মাহবুবুর রহমান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: নবীরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রজন্ম ৭১-এর সভাপতি মাহবুব জামান ও সাধারণ সম্পাদক হেলাল ফয়েজী, সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন এমপি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

পরে মন্ত্রী খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সাতক্ষীরা সড়ক ও সিটি বাইপাসকে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি লিংক রোড নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য এসএম কামাল হোসেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুনু রেজা, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: নবীরুল ইসলাম, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম মিরাজুল ইসলাম, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত জিওবি এবং খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের যৌথ অর্থায়নে ৭১৭ কোটি ৮০ লক্ষ ২১ হাজার টাকা ব্যয়ে উল্লেখিত প্রকল্পের আওতায় তিনটি লিংক রোড নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় নিরালা আবাসিক এলাকা থেকে সিটি বাইপাস পর্যন্ত ২.৫ কিলোমিটার প্রথম লিঙ্ক রোড, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রায় মহল পর্যন্ত সংযোগ সড়ক ৪.৯০ কিলোমিটার দ্বিতীয় লিংক রোড এবং  বাস্তহারা থেকে পুরাতন সাতক্ষীরা সড়ক সংযোগ সড়ক ২.৭০ কিলোমিটার তৃতীয় লিংক রোড মোট ১০.১০ কিলোমিটার দুই লাইন বিশিষ্ট সড়ক নির্মাণ করা হবে।   ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হবার কথা রয়েছে।

এর আগে সকালে মন্ত্রী ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। এ সময় ভূমি মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ উপস্থিত ছিলেন। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

গোপালগঞ্জে অপচিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, কথিত ডাক্তার আটক

দেশের বৃহত্তম চুকনগর গনহত্যা বদ্ধভূমি সংরক্ষণে সকল পদক্ষেপ নেয়া হবে : গণপূর্তমন্ত্রী

প্রকাশিত সময় : ০৭:৩৭:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪

####

গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র,আ,ম, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে দেশের বৃহত্তম গনহত্যার স্থান চুকনগর বদ্ধভুমি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙালির উপর পরিচালিত হত্যাযজ্ঞ এদেশের একটি গোষ্ঠী স্বীকার করতে চায় না। তারা জাতীয় সংগীত গাইতে ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে অনীহা প্রকাশ করে। তারা স্বাধীনতা বিরোধী ও দেশবিরোধী নানা ধরনের চক্রান্তে লিপ্ত। তাদের সকল চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে। শনিবার (৬জুলাই) খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর বধ্যভূমি প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আমরা একাত্তর’-এর উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বদ্ধভূমি সংরক্ষণে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন, ১৯৭১ সালে চুকনগর ছিল ভারতে যাওয়ার অন্যতম প্রধান পথ। বিভিন্ন এলাকা থেকে ভারতে পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে আগত ১০ থেকে ২০ হাজার মানুষকে ১৯৭১ সালের ২০মে এখানে হত্যা করে তাদের লাশ স্থানীয় ভদ্রা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। ইতিহাসে এমন পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের নজির বিরল। শুধু চুকনগর নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানী হানাদার গোষ্ঠী এমন হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে যার বেশিরভাগই এখনো পর্যন্ত অজানা। প্রয়োজনীয় গবেষণা ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে এসব তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে। তরুণ প্রজন্মের কাছে এসব ইতিহাস সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এসব বদ্ধভূমি সংরক্ষণ ও সংস্কারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে মন্ত্রী বদ্ধভূমির মূল বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। মন্ত্রী তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনী কর্তৃক বাঙ্গালির উপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞের সঠিক তথ্য তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ব হয়ে দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করতে উৎসাহিত করার আহবান জানান।

খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডুমুরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিক, জেলা কমান্ডার মাহবুবুর রহমান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: নবীরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রজন্ম ৭১-এর সভাপতি মাহবুব জামান ও সাধারণ সম্পাদক হেলাল ফয়েজী, সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন এমপি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

পরে মন্ত্রী খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সাতক্ষীরা সড়ক ও সিটি বাইপাসকে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি লিংক রোড নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য এসএম কামাল হোসেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুনু রেজা, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: নবীরুল ইসলাম, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম মিরাজুল ইসলাম, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত জিওবি এবং খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের যৌথ অর্থায়নে ৭১৭ কোটি ৮০ লক্ষ ২১ হাজার টাকা ব্যয়ে উল্লেখিত প্রকল্পের আওতায় তিনটি লিংক রোড নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় নিরালা আবাসিক এলাকা থেকে সিটি বাইপাস পর্যন্ত ২.৫ কিলোমিটার প্রথম লিঙ্ক রোড, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রায় মহল পর্যন্ত সংযোগ সড়ক ৪.৯০ কিলোমিটার দ্বিতীয় লিংক রোড এবং  বাস্তহারা থেকে পুরাতন সাতক্ষীরা সড়ক সংযোগ সড়ক ২.৭০ কিলোমিটার তৃতীয় লিংক রোড মোট ১০.১০ কিলোমিটার দুই লাইন বিশিষ্ট সড়ক নির্মাণ করা হবে।   ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হবার কথা রয়েছে।

এর আগে সকালে মন্ত্রী ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। এ সময় ভূমি মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ উপস্থিত ছিলেন। ##