১২:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিবার্চনী ইশতেহারে উপকূলীয় মানুষের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার সংযুক্ত করার দাবি : রাজনৈতিক নেতাদের সম্মতি

####

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে উপকূলীয় মানুষের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার সংযুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন বাগেরহাট জেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে দেশের উপকূলের জনজীবনে সংকট প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এরপর প্রতি বছরের প্রাকৃতিক দুর্যোগ এই সংকট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এমতাবস্থায় উপকূলের মানুষের জীবন জীবিকা রক্ষায় বিশেষ প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন। বুধবার বাগেরহাট প্রেসক্লাবে জেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের আয়োজনে এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘লিডার্স’-এর সহযোগিতায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে ‘উপকূলের মানুষের ইশতেহার’ শীর্ষক উপকূল সংলাপ সভা থেকে এই দাবি জানানো হয়। সংলাপে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ শাহ- ই-আলম বাচ্চু, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন টগর, জেলা জাতীয়তাবাদী দল এর আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এ,টি,এম আকরাম হোসেন, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হাজরা শহীদুল ইসলাম বাব্লু,সি,পি,বি এর সাধারন সম্পাদক ফররুখ হাসান জুয়েল, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ দেবনাথ। জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সভাপতি অ্যাডঃ শরীফা খানম এর সভাপতিত্বে এবং সম্পাদক মোঃ আসাদুজ্জামান শেখ এর সঞ্চালনায় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাগেরহাট প্রেসক্লাব এর সভাপতি নিহার রঞ্জন সাহা,অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুখার্জী রবীন্দ্র নাথ, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারমান, বাগেরহাট সদর এর রিজিয়া পারভিন, কাকলি সরকার, অ্যাডঃ লুনা সিদ্দিকী, ইসরাত জাহান, মোঃ কাম্রুজ্জামান, গোপীনাথ সাহা, আলী আকবর টুটুল,আজাদুল হক, মাহফিজুর রহমান,মিসেস মিতা,এম এ সালাম শেখ,এস কে হাবিব, মোঃ আজমল হোসেন সহ জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। সভায় উপকূলীয় মানুষের উন্নয়নে বক্তারা আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের ইস্তেহারে সুনির্দিষ্ট কিছু দাবি সংযুক্ত করার আহ্বান জানান। দাবিগুলো হল-উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠন, নিরাপদ পানীয় জলের স্থায়ী ব্যবস্থা, একটি বাড়ি একটি শেল্টার তৈরি প্রকল্প গ্রহণ, দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলীয় এলাকাকে দুর্যোগ প্রবণ এলাকা ঘোষণা করা, উপকূলের রক্ষাকবচ সুন্দরবন সুরক্ষা, স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ পুনঃ নির্মাণ ও ভঙ্গুর সুইচ গেট মেরামত করা।

সভাপতি অ্যাডঃ শরীফা খানম বলেন, যে উপকূলের মানুষের উন্নয়নে এখনই সকল পেশার সকল মানুষের ঐক্যবদ্ধতা প্রয়োজন। লিডার্স-এর কর্মকর্তা কৌশিক রায় উপকূলীয় মানুষের দুঃখ দুর্দশার একটি চিত্র মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে সবার সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে তা নিরসনের জন্য সরকারকে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে মহাপরিকল্পনা করার দরকার।

উপকূলের ভুক্তভুগী চাঁদপাই ইউনিয়ন থেকে আগত আগ্নেশ হালদার বলেন উপকূলীয় বেড়িবাঁধ শুধু তৈরি করলে হবেনা তা রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। নয়তো অল্প ঢেউয়ের আঘাতেই বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকে সব ভাসিয়ে নিয়ে যায়। শরণখোলা থেকে আগত কোহিনূর বেগম বলেন, নিরাপদ খাবার পানির অভাবে তার এলাকার মানুষ খুবই দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। তারা শুকনোর সময়ে পাঁচ থেকে সাত কিলোমিটার দূর থেকে খাবার পানি নিয়ে আসে। তাই তিনি দাবি জানিয়েছেন যে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জন্য যেন টেঁকসই নিরাপদ খাবার পানির বাবস্থা করা হয়। শরণখোলা থেকে আগত হাসানুজ্জামান বলেন, তিনি সিডর, আম্ফান, বুলবুল, নার্গিসসহ আরো অনেক ঘূর্ণিঝড়ের সর্বনাশা আঘাত এবং ক্ষয় ক্ষতি নিজের চোখে দেখেছেন। তিনি বলেন ক্ষয় ক্ষতি যে পরিমাণ হয়েছে সেই পরিমান ক্ষতিপূরণ তারা পাননি। তাই তিনি সকল রাজনৈতিক দলের কাছে দাবি জানিয়েছেন যে দক্ষিন পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলকে দুর্যোগ প্রবণ এলাকা ঘোষণা করে অথবা উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠন করে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়।

সংলাপে বক্তারা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় অভিযোজন প্রক্রিয়া বাড়াতে হবে। আগামীতে সরকারের প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলের মানুষের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। এজন্য আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার সংযুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন উপস্থিত সকল নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। এবং তাদের এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন উপস্থিত সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ । ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মতবিনিময় সভা দু’গ্রুপের হাতাহাতিতে ভন্ডুল

নিবার্চনী ইশতেহারে উপকূলীয় মানুষের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার সংযুক্ত করার দাবি : রাজনৈতিক নেতাদের সম্মতি

প্রকাশিত সময় : ০৬:১৫:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩

####

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে উপকূলীয় মানুষের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার সংযুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন বাগেরহাট জেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে দেশের উপকূলের জনজীবনে সংকট প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এরপর প্রতি বছরের প্রাকৃতিক দুর্যোগ এই সংকট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এমতাবস্থায় উপকূলের মানুষের জীবন জীবিকা রক্ষায় বিশেষ প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন। বুধবার বাগেরহাট প্রেসক্লাবে জেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের আয়োজনে এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘লিডার্স’-এর সহযোগিতায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে ‘উপকূলের মানুষের ইশতেহার’ শীর্ষক উপকূল সংলাপ সভা থেকে এই দাবি জানানো হয়। সংলাপে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ শাহ- ই-আলম বাচ্চু, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন টগর, জেলা জাতীয়তাবাদী দল এর আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এ,টি,এম আকরাম হোসেন, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হাজরা শহীদুল ইসলাম বাব্লু,সি,পি,বি এর সাধারন সম্পাদক ফররুখ হাসান জুয়েল, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ দেবনাথ। জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সভাপতি অ্যাডঃ শরীফা খানম এর সভাপতিত্বে এবং সম্পাদক মোঃ আসাদুজ্জামান শেখ এর সঞ্চালনায় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাগেরহাট প্রেসক্লাব এর সভাপতি নিহার রঞ্জন সাহা,অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুখার্জী রবীন্দ্র নাথ, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারমান, বাগেরহাট সদর এর রিজিয়া পারভিন, কাকলি সরকার, অ্যাডঃ লুনা সিদ্দিকী, ইসরাত জাহান, মোঃ কাম্রুজ্জামান, গোপীনাথ সাহা, আলী আকবর টুটুল,আজাদুল হক, মাহফিজুর রহমান,মিসেস মিতা,এম এ সালাম শেখ,এস কে হাবিব, মোঃ আজমল হোসেন সহ জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। সভায় উপকূলীয় মানুষের উন্নয়নে বক্তারা আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের ইস্তেহারে সুনির্দিষ্ট কিছু দাবি সংযুক্ত করার আহ্বান জানান। দাবিগুলো হল-উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠন, নিরাপদ পানীয় জলের স্থায়ী ব্যবস্থা, একটি বাড়ি একটি শেল্টার তৈরি প্রকল্প গ্রহণ, দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলীয় এলাকাকে দুর্যোগ প্রবণ এলাকা ঘোষণা করা, উপকূলের রক্ষাকবচ সুন্দরবন সুরক্ষা, স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ পুনঃ নির্মাণ ও ভঙ্গুর সুইচ গেট মেরামত করা।

সভাপতি অ্যাডঃ শরীফা খানম বলেন, যে উপকূলের মানুষের উন্নয়নে এখনই সকল পেশার সকল মানুষের ঐক্যবদ্ধতা প্রয়োজন। লিডার্স-এর কর্মকর্তা কৌশিক রায় উপকূলীয় মানুষের দুঃখ দুর্দশার একটি চিত্র মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে সবার সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে তা নিরসনের জন্য সরকারকে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে মহাপরিকল্পনা করার দরকার।

উপকূলের ভুক্তভুগী চাঁদপাই ইউনিয়ন থেকে আগত আগ্নেশ হালদার বলেন উপকূলীয় বেড়িবাঁধ শুধু তৈরি করলে হবেনা তা রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। নয়তো অল্প ঢেউয়ের আঘাতেই বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকে সব ভাসিয়ে নিয়ে যায়। শরণখোলা থেকে আগত কোহিনূর বেগম বলেন, নিরাপদ খাবার পানির অভাবে তার এলাকার মানুষ খুবই দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। তারা শুকনোর সময়ে পাঁচ থেকে সাত কিলোমিটার দূর থেকে খাবার পানি নিয়ে আসে। তাই তিনি দাবি জানিয়েছেন যে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জন্য যেন টেঁকসই নিরাপদ খাবার পানির বাবস্থা করা হয়। শরণখোলা থেকে আগত হাসানুজ্জামান বলেন, তিনি সিডর, আম্ফান, বুলবুল, নার্গিসসহ আরো অনেক ঘূর্ণিঝড়ের সর্বনাশা আঘাত এবং ক্ষয় ক্ষতি নিজের চোখে দেখেছেন। তিনি বলেন ক্ষয় ক্ষতি যে পরিমাণ হয়েছে সেই পরিমান ক্ষতিপূরণ তারা পাননি। তাই তিনি সকল রাজনৈতিক দলের কাছে দাবি জানিয়েছেন যে দক্ষিন পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলকে দুর্যোগ প্রবণ এলাকা ঘোষণা করে অথবা উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠন করে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়।

সংলাপে বক্তারা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় অভিযোজন প্রক্রিয়া বাড়াতে হবে। আগামীতে সরকারের প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলের মানুষের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। এজন্য আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার সংযুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন উপস্থিত সকল নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। এবং তাদের এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন উপস্থিত সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ । ##