০৭:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পটুয়াখালী আশ্রয়নের বাসিন্দা রহিমজানদের রমজানে শাখ-পাতা, ডাল দিয়ে চলছে সংসার

###     বয়োবৃদ্ধ রহিমজান বিবি (৮০) দীর্ঘ ২২ বছর যাবত বসবাস করেন দশমিনা উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের রামনাবাদ নদীর তীরের পূর্ব আলীপুরা আশ্রয়নে। ছেলে ছেলের বৌ নাতি নাতনী নিয়ে ৬ সদস্যর সংসার তার। রহিমজান বিবির একমাত্র ছেলে বাবুল (৫৫) রিক্সা চালিয়ে যা আয় করেন সেটা দিয়ে চাল কিনে আর কোন টাকা অবশিষ্ট থাকে না। পবিত্র রমজান মাসে রোজার সময়টায় শাকপাতা আর ডাল খেয়েই চলছে রহিমজান বিবির অভাবের সংসার। শনিবার বিকেলে সরেজমিনে পূর্ব আলীপুর আশ্রয়নের বাসিন্দাদের নিদারুন কষ্ট আর আভাবের এরকম চিত্র দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, ২০০১ সালে আলীপুরা ইউনিয়নের রামনাবাদ নদীর তীরে তৎকালীন সরকার ৫০ টি পরিবারের জন্য আশ্রয়ন প্রকল্পটি গড়ে তোলেন। বর্তমানে ওই আশ্রয়নে মাত্র ১৫টি পরিবারের অর্ধ শতাধিক মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। বাকি পরিবারগুলো কর্মসংস্থানের অভাবে পর্যায়ক্রমে অন্যত্র চলে গেছেন। আশ্রয়নের বাসিন্দা খাদিজা বেগমের (৫০) স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র চলে গেছেন, দিন মজুর ছেলেকে নিয়ে আশ্রয়নে বসবাস করছেন তিনি, খাদিজা বলেন, প্রতিদিন তার ছেলে কাজ পায় না তাই চরম অভাবের মধ্যে শাক ডাল খেয়েই চলছে তাদের জীবন, দীর্ঘ এক বছরের মধ্যে তারা মাংস খেতে পাননি। একই আশ্রয়ননের বাসিন্দা বিধবা সুফিয়া বেগম (৫৫) বলেন, মাছ-মাংস তো স্বপ্নে দেখা যায়। রোজার মাসে আয় রোজগার না থাকায় শাকপাতা খেয়ে চলছে আমাদের জীবন। তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ ২২ বছর আগে তৈরি হওয়া এই ঘরগুলো জরাজীর্ন হয়ে পরেছে, বৃষ্টিতে চালের ফুটো দিয়ে পানি পরে হাটু সমান কাদা পানিতে একাকার হয়ে যায় তাদের বসবাসের ঘরগুলো। যাদের অন্যত্র যাওয়ার যায়গা নেই শুধু তারাই আশ্রয়নে বসবাস করছেন। সরকারী সহায়তা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানান সুফিয়া বেগম।
আলীপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সাগর বলেন, আশ্রয়নে আশ্রিতদের ঘরগুলো সংস্কার করার জন্য একাধিকবার আমি উপজেলা মাসিক সভায় অবহিত করেছি এবং দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, তিনি বলেন দুর্গম গ্রাম্য এলাকা হওয়ায় আশ্রয়নে আশ্রিতদের কর্মসংস্থানের কোন সুযোগ নেই। তিনি আরো বলেন, আসছে ঈদে আশ্রয়নের বাসিন্দাদের ভিজিএফ এর মাধ্যমে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) নাফিসা নাজ নীরা বলেন, উপজেলার গত মাসিক সভায় বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান আশ্রয়নের ঘরগুলো সংস্কারের জন্য প্রস্তাব করেন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে এবং উপজেলা প্রশাসানের পক্ষ থেকে সংস্কার করার ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
স্থানীয় সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা এমপি আজকের পত্রিকা প্রািতনিধিকে বলেন আমি শুনলাম আপনার মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে ঘর সংস্কারের ব্যবস্থা গ্রহন করবো।##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik adhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

পটুয়াখালী আশ্রয়নের বাসিন্দা রহিমজানদের রমজানে শাখ-পাতা, ডাল দিয়ে চলছে সংসার

প্রকাশিত সময় : ০৬:৪৮:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল ২০২৩

###     বয়োবৃদ্ধ রহিমজান বিবি (৮০) দীর্ঘ ২২ বছর যাবত বসবাস করেন দশমিনা উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের রামনাবাদ নদীর তীরের পূর্ব আলীপুরা আশ্রয়নে। ছেলে ছেলের বৌ নাতি নাতনী নিয়ে ৬ সদস্যর সংসার তার। রহিমজান বিবির একমাত্র ছেলে বাবুল (৫৫) রিক্সা চালিয়ে যা আয় করেন সেটা দিয়ে চাল কিনে আর কোন টাকা অবশিষ্ট থাকে না। পবিত্র রমজান মাসে রোজার সময়টায় শাকপাতা আর ডাল খেয়েই চলছে রহিমজান বিবির অভাবের সংসার। শনিবার বিকেলে সরেজমিনে পূর্ব আলীপুর আশ্রয়নের বাসিন্দাদের নিদারুন কষ্ট আর আভাবের এরকম চিত্র দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, ২০০১ সালে আলীপুরা ইউনিয়নের রামনাবাদ নদীর তীরে তৎকালীন সরকার ৫০ টি পরিবারের জন্য আশ্রয়ন প্রকল্পটি গড়ে তোলেন। বর্তমানে ওই আশ্রয়নে মাত্র ১৫টি পরিবারের অর্ধ শতাধিক মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। বাকি পরিবারগুলো কর্মসংস্থানের অভাবে পর্যায়ক্রমে অন্যত্র চলে গেছেন। আশ্রয়নের বাসিন্দা খাদিজা বেগমের (৫০) স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র চলে গেছেন, দিন মজুর ছেলেকে নিয়ে আশ্রয়নে বসবাস করছেন তিনি, খাদিজা বলেন, প্রতিদিন তার ছেলে কাজ পায় না তাই চরম অভাবের মধ্যে শাক ডাল খেয়েই চলছে তাদের জীবন, দীর্ঘ এক বছরের মধ্যে তারা মাংস খেতে পাননি। একই আশ্রয়ননের বাসিন্দা বিধবা সুফিয়া বেগম (৫৫) বলেন, মাছ-মাংস তো স্বপ্নে দেখা যায়। রোজার মাসে আয় রোজগার না থাকায় শাকপাতা খেয়ে চলছে আমাদের জীবন। তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ ২২ বছর আগে তৈরি হওয়া এই ঘরগুলো জরাজীর্ন হয়ে পরেছে, বৃষ্টিতে চালের ফুটো দিয়ে পানি পরে হাটু সমান কাদা পানিতে একাকার হয়ে যায় তাদের বসবাসের ঘরগুলো। যাদের অন্যত্র যাওয়ার যায়গা নেই শুধু তারাই আশ্রয়নে বসবাস করছেন। সরকারী সহায়তা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানান সুফিয়া বেগম।
আলীপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সাগর বলেন, আশ্রয়নে আশ্রিতদের ঘরগুলো সংস্কার করার জন্য একাধিকবার আমি উপজেলা মাসিক সভায় অবহিত করেছি এবং দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, তিনি বলেন দুর্গম গ্রাম্য এলাকা হওয়ায় আশ্রয়নে আশ্রিতদের কর্মসংস্থানের কোন সুযোগ নেই। তিনি আরো বলেন, আসছে ঈদে আশ্রয়নের বাসিন্দাদের ভিজিএফ এর মাধ্যমে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) নাফিসা নাজ নীরা বলেন, উপজেলার গত মাসিক সভায় বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান আশ্রয়নের ঘরগুলো সংস্কারের জন্য প্রস্তাব করেন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে এবং উপজেলা প্রশাসানের পক্ষ থেকে সংস্কার করার ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
স্থানীয় সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা এমপি আজকের পত্রিকা প্রািতনিধিকে বলেন আমি শুনলাম আপনার মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে ঘর সংস্কারের ব্যবস্থা গ্রহন করবো।##