০৯:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরিবেশকে সমুন্নত রাখতে আমাদের মানসিক পরিবর্তন প্রয়োজন : খুবি উপাচার্য

###   খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সয়েল ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সংগঠন পিডন (PEDON)-এর আয়োজনে পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘ইকোনো-২০২২’  শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়নে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।এ সময় তিনি বলেন, পৃথিবীতে সকল সৃষ্টির মধ্যে মানুষই একমাত্র তার পরিবেশকে পরিবর্তন করতে পারে, যা অন্য কোন প্রাণী পারে না। পরিবেশের এই পরিবর্তনের কারণে আজ আমরা সভ্যতার চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছেছি। আবার সভ্যতার এই পরিবর্তনের কারণেই আমাদের বিনাশ হতে পারে। তিনি আরও বলেন, প্রকৃতি নিজেই অনেক পরিবর্তন ঘটায়। এর বাইরেও আমরা প্রাকৃতিক পরিবর্তনকে আরও দ্রুততার সাথে করছি, যার ফলে পরিবেশের পরিবর্তন হচ্ছে। আমরা নিজেরাই পরিবেশ দূষণ করছি, নষ্ট করে ফেলছি। যখনই মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে শুরু করে তখন থেকেই পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। উপাচার্য আরও বলেন, উন্নয়ন করতে গেলে নেতিবাচক প্রভাব আসবে। তবে পরিবেশকে সমুন্নত রাখতে আমরা কতটুকু সচেতন, তার উপরও আমাদের পরিবেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে। এই মুহূর্তে পরিবেশ রক্ষায় আমাদের প্রয়োজন মানসিক অবস্থার পরিবর্তন। পরিবেশের বিরূপ প্রভাব থেকে বাঁচতে প্রয়োজন অধিকহারে বনায়ন। নিজেদের পরিবেশসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন। এক সময় আমাদের দেশের জনসংখ্যা ছিলো ৭ কোটির মতো। তখন দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ছিলো না। এখন দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটিরও বেশি, অথচ আমাদের রয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা। কৃষিতে বিপ্লবের কারণে আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। তিনি আরও বলেন, অতিরিক্ত সার, কেমিক্যাল জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করে আমরা পরিবেশের ক্ষতি করছি। এরকম চলতে থাকলে আর প্রযুক্তির পরিবর্তন না হলে একসময় মাটি বন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে। এজন্য পরিবেশ রক্ষায় এই মুহূর্তে আমাদের নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার-প্রতিফলন দরকার।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে গ্রিন ক্যাম্পাসে পরিণত করার জন্য ইতোমধ্যে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্ট করা হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে এটি চালু হতে পারে। উপাচার্য বলেন, সবার আগে নিজেদের ক্যাম্পাসকে দূষণমুক্ত রাখতে হবে। নিজে সচেতন হতে হবে, অন্যকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তবেই আমাদের ক্যাম্পাস গ্রিন ক্যাম্পাসে পরিণত হবে। এক্ষেত্রে তিনি শিক্ষার্থীদেরকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন ও রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। সভাপতিত্ব করেন সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর খন্দকার কুদরতে কিবরিয়া। এসময় শিক্ষকদের মধ্য থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রফেসর মো. সানাউল ইসলাম। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক চন্দন হালদার।পরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ও খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে বিষয়ভিত্তিক প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন। দুপুরে স্পিকার সেশনে নিবন্ধ উপস্থাপন করেন এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. আব্দুল্লাহ ইউসুফ আল হারুন, সয়েল ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. হানিফ এবং ইউএনডিপি’র জিসিএ প্রকল্পের আঞ্চলিক প্রকল্প ব্যবস্থাপক অশোক অধিকারী। এসময় সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

পরিবেশকে সমুন্নত রাখতে আমাদের মানসিক পরিবর্তন প্রয়োজন : খুবি উপাচার্য

প্রকাশিত সময় : ১১:২০:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

###   খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সয়েল ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সংগঠন পিডন (PEDON)-এর আয়োজনে পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘ইকোনো-২০২২’  শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়নে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।এ সময় তিনি বলেন, পৃথিবীতে সকল সৃষ্টির মধ্যে মানুষই একমাত্র তার পরিবেশকে পরিবর্তন করতে পারে, যা অন্য কোন প্রাণী পারে না। পরিবেশের এই পরিবর্তনের কারণে আজ আমরা সভ্যতার চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছেছি। আবার সভ্যতার এই পরিবর্তনের কারণেই আমাদের বিনাশ হতে পারে। তিনি আরও বলেন, প্রকৃতি নিজেই অনেক পরিবর্তন ঘটায়। এর বাইরেও আমরা প্রাকৃতিক পরিবর্তনকে আরও দ্রুততার সাথে করছি, যার ফলে পরিবেশের পরিবর্তন হচ্ছে। আমরা নিজেরাই পরিবেশ দূষণ করছি, নষ্ট করে ফেলছি। যখনই মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে শুরু করে তখন থেকেই পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। উপাচার্য আরও বলেন, উন্নয়ন করতে গেলে নেতিবাচক প্রভাব আসবে। তবে পরিবেশকে সমুন্নত রাখতে আমরা কতটুকু সচেতন, তার উপরও আমাদের পরিবেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে। এই মুহূর্তে পরিবেশ রক্ষায় আমাদের প্রয়োজন মানসিক অবস্থার পরিবর্তন। পরিবেশের বিরূপ প্রভাব থেকে বাঁচতে প্রয়োজন অধিকহারে বনায়ন। নিজেদের পরিবেশসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন। এক সময় আমাদের দেশের জনসংখ্যা ছিলো ৭ কোটির মতো। তখন দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ছিলো না। এখন দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটিরও বেশি, অথচ আমাদের রয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা। কৃষিতে বিপ্লবের কারণে আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। তিনি আরও বলেন, অতিরিক্ত সার, কেমিক্যাল জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করে আমরা পরিবেশের ক্ষতি করছি। এরকম চলতে থাকলে আর প্রযুক্তির পরিবর্তন না হলে একসময় মাটি বন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে। এজন্য পরিবেশ রক্ষায় এই মুহূর্তে আমাদের নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার-প্রতিফলন দরকার।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে গ্রিন ক্যাম্পাসে পরিণত করার জন্য ইতোমধ্যে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্ট করা হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে এটি চালু হতে পারে। উপাচার্য বলেন, সবার আগে নিজেদের ক্যাম্পাসকে দূষণমুক্ত রাখতে হবে। নিজে সচেতন হতে হবে, অন্যকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তবেই আমাদের ক্যাম্পাস গ্রিন ক্যাম্পাসে পরিণত হবে। এক্ষেত্রে তিনি শিক্ষার্থীদেরকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন ও রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। সভাপতিত্ব করেন সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর খন্দকার কুদরতে কিবরিয়া। এসময় শিক্ষকদের মধ্য থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রফেসর মো. সানাউল ইসলাম। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক চন্দন হালদার।পরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ও খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে বিষয়ভিত্তিক প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন। দুপুরে স্পিকার সেশনে নিবন্ধ উপস্থাপন করেন এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. আব্দুল্লাহ ইউসুফ আল হারুন, সয়েল ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. হানিফ এবং ইউএনডিপি’র জিসিএ প্রকল্পের আঞ্চলিক প্রকল্প ব্যবস্থাপক অশোক অধিকারী। এসময় সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।##