০১:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রকৃতি রাঙাতে গাছে গাছে ফুটেছে বসন্তের শিমুল ফুল

  • সংবাদদাতা
  • প্রকাশিত সময় : ০৮:১২:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১৭৯ পড়েছেন

মোঃ নাইমুজ্জামান শরীফ : ঋতুরাজ বসন্তে এখন আর হরহামেসাই চোখে পড়েনা রক্তলাল শিমুল গাছ। কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে তা।
ষড়ঋতুর বাংলায় শীতের জরাজীর্নতাকে ঝেড়ে ফেলে বসন্তের শুরুতেই অপরূপ রূপে প্রকৃতিকে সাজাতে আসছে ঋতুরাজ বসন্ত। গাছের ডালে ডালে ফুটেছে আগুন রাঙ্গা লাল শিমুল ফুল। গাছে গাছে সবুজ পাতা, মুকুল আর ফুল আর কোকিলের ডাক মনে করিয়ে দেয় বসন্তের আগমনি বার্তা। আমসহ, লিচু লেবু ও বিভিন্ন গাছের পাতা ও মুকুল দেখে বোঝা যায় শীত বিদায় নিয়ে আবার এলো ফাগুন, এলো বসন্ত। কিন্তু কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার প্রকৃতি থেকে এখন বিলুপ্তির পথে মূল্যবান শিমুল গাছ। তাই আগের মত খুব একটা চোখে পড়েনা ফাগুনের রঙে রাঙানো রক্তলাল শিমুল গাছ। ঋতুরাজ বসন্তের শুরুতেই শিমুল ফুলের স্বর্গীয় সৌন্দর‌্যে নান্দনিক হয়ে উঠেছে প্রকৃতি। বসন্ত এলেই যেনো প্রকৃতির ভালোবাসার কথা জানান দিতে প্রকৃতিকে লাল করে দিয়ে হেঁসে উঠে শিমুল ফুল। ঋতু চক্রের আবর্তনে শিমুল ফুল তার মোহনীয় সৌন্দর্য্য নিয়ে আবারো হাজির হয়েছে প্রকৃতির মাঝে। শিমুল ফুলের লাল আবীর বসন্তকে দিয়েছে এক অন্যমাত্রা। প্রকৃতির এই অপরূপ রঙ্গের সাজ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।
তবে আধুনিকতার ছোয়ায় ও উন্নয়নের ধারায় প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এ গাছটি হারিয়ে যেতে বসেছে।গ্রাম বাংলার পথে প্রান্তরে এখন আর এ ফুলের গাছটি তেমন একটা চোখে পড়ে না। কয়েক বছর আগেও গ্রামের মেঠোপথে ও বাড়ির আঙ্গিনায় কম বেশী দেখা যেতো শিমুল গাছ। শিমুল ফুল শুধু সৌন্দর্য্য বর্ধনই করে না। শিমুল গাছের রয়েছে নানা উপকারিতা। এর রয়েছে নানা ভেজস গুন। গ্রামে শিমূল গাছ ঔষধি গাছ হিসেবেও পরিচিত। গ্রামাঞ্চলের মানুষ পেটের পিড়া, বিষ ফোড়া, আখের গুড় তৈরিতে শিমুলের রস ও কোষ্ঠ কাঠিণ্য নিরাময়ে এগাছের ছাল গাছের মূলকে ব্যবহার করতো।
বসন্তের আগমনে সাথে সাথে বাংলাদেশের প্রকৃতিতে শিমুল ফুলের লাল রংয়ের আভা ছড়িয়ে পড়ে চারি দিকে।এ লাল রং—কে আমাদের প্রকৃতি সজ্জিত হয় নতুন রূপে। আমরা বাংলার বসন্তে এই প্রকৃতি রক্তে রাঙা শিমুল ফুল অনন্তকাল ধরে দেখতে চাই বলে জানালেন খুলনা জেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডে সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ বেনজীর হোসেন। তিনি আরো বলেন, শিমুল ফূল বসন্ত কালের ফূল।এ ফুলই মানুষকে স্মরন করিয়ে দেয় বসন্ত এসেছে।এটি মালভেসি গোত্রের ফুল।এটি নানা কারনে ধংস হয়ে যাচ্ছে—বলে জানান। বৈশ্বিক দুষন আর জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের ফলে ধীরে ধীরে প্রতিটি ঋতুই হারাচ্ছে তার নিজস্ব বৈচিত্র আর সুন্দর্যকে।
জাতীয় শ্রমীকলীগের রূপসা উপজেলা সাধারণ সম্পাদক এস এম নুর মোহাম্মদ ( টুলু ) বলেন, এখন আর শিমুল গাছ কেউ রোপণ করেনা। শিমুল গাছ এমনিতেই জন্মায় তা দিনে দিনে বড় হয়ে একদিন বিশাল আকৃতি ধারন করে। বসন্তে শিমুল গাছে রক্ত কবরী লাল রঙ্গে ফোটে তোলে, দৃষ্টি কেড়ে নেই সবার মন। কিছুদিন পরে রক্তলাল থেকে সাদা ধুসর হয়ে তুলার তেরি হয়। গ্রাম বাংলার এই শিমূল গাছ অর্থনৈতিক সম্বৃদ্ধি এনে দিত। গ্রামের মানুষেরা এই শিমুলের তুলা কুড়িয়ে বিক্রি করতো। অনেকে নিজের গাছের তুলা দিয়ে বানাতো লেপ, তোষক, বালিশ। শিমুলের তুলা বিক্রি করে অনেকে সাবলম্বী হয়েছে,এমন নজিরও আছে ।
কিন্তু কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় তেমন চোখে পড়ে না শিমুল গাছের। প্রতিনিয়ত বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে শিমুল গাছ। যার কারনে গ্রাম বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে, অতি চিরচেনা শিমূল গাছ।

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

dainik madhumati

জনপ্রিয়

সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মতবিনিময় সভা দু’গ্রুপের হাতাহাতিতে ভন্ডুল

প্রকৃতি রাঙাতে গাছে গাছে ফুটেছে বসন্তের শিমুল ফুল

প্রকাশিত সময় : ০৮:১২:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

মোঃ নাইমুজ্জামান শরীফ : ঋতুরাজ বসন্তে এখন আর হরহামেসাই চোখে পড়েনা রক্তলাল শিমুল গাছ। কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে তা।
ষড়ঋতুর বাংলায় শীতের জরাজীর্নতাকে ঝেড়ে ফেলে বসন্তের শুরুতেই অপরূপ রূপে প্রকৃতিকে সাজাতে আসছে ঋতুরাজ বসন্ত। গাছের ডালে ডালে ফুটেছে আগুন রাঙ্গা লাল শিমুল ফুল। গাছে গাছে সবুজ পাতা, মুকুল আর ফুল আর কোকিলের ডাক মনে করিয়ে দেয় বসন্তের আগমনি বার্তা। আমসহ, লিচু লেবু ও বিভিন্ন গাছের পাতা ও মুকুল দেখে বোঝা যায় শীত বিদায় নিয়ে আবার এলো ফাগুন, এলো বসন্ত। কিন্তু কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার প্রকৃতি থেকে এখন বিলুপ্তির পথে মূল্যবান শিমুল গাছ। তাই আগের মত খুব একটা চোখে পড়েনা ফাগুনের রঙে রাঙানো রক্তলাল শিমুল গাছ। ঋতুরাজ বসন্তের শুরুতেই শিমুল ফুলের স্বর্গীয় সৌন্দর‌্যে নান্দনিক হয়ে উঠেছে প্রকৃতি। বসন্ত এলেই যেনো প্রকৃতির ভালোবাসার কথা জানান দিতে প্রকৃতিকে লাল করে দিয়ে হেঁসে উঠে শিমুল ফুল। ঋতু চক্রের আবর্তনে শিমুল ফুল তার মোহনীয় সৌন্দর্য্য নিয়ে আবারো হাজির হয়েছে প্রকৃতির মাঝে। শিমুল ফুলের লাল আবীর বসন্তকে দিয়েছে এক অন্যমাত্রা। প্রকৃতির এই অপরূপ রঙ্গের সাজ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।
তবে আধুনিকতার ছোয়ায় ও উন্নয়নের ধারায় প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এ গাছটি হারিয়ে যেতে বসেছে।গ্রাম বাংলার পথে প্রান্তরে এখন আর এ ফুলের গাছটি তেমন একটা চোখে পড়ে না। কয়েক বছর আগেও গ্রামের মেঠোপথে ও বাড়ির আঙ্গিনায় কম বেশী দেখা যেতো শিমুল গাছ। শিমুল ফুল শুধু সৌন্দর্য্য বর্ধনই করে না। শিমুল গাছের রয়েছে নানা উপকারিতা। এর রয়েছে নানা ভেজস গুন। গ্রামে শিমূল গাছ ঔষধি গাছ হিসেবেও পরিচিত। গ্রামাঞ্চলের মানুষ পেটের পিড়া, বিষ ফোড়া, আখের গুড় তৈরিতে শিমুলের রস ও কোষ্ঠ কাঠিণ্য নিরাময়ে এগাছের ছাল গাছের মূলকে ব্যবহার করতো।
বসন্তের আগমনে সাথে সাথে বাংলাদেশের প্রকৃতিতে শিমুল ফুলের লাল রংয়ের আভা ছড়িয়ে পড়ে চারি দিকে।এ লাল রং—কে আমাদের প্রকৃতি সজ্জিত হয় নতুন রূপে। আমরা বাংলার বসন্তে এই প্রকৃতি রক্তে রাঙা শিমুল ফুল অনন্তকাল ধরে দেখতে চাই বলে জানালেন খুলনা জেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডে সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ বেনজীর হোসেন। তিনি আরো বলেন, শিমুল ফূল বসন্ত কালের ফূল।এ ফুলই মানুষকে স্মরন করিয়ে দেয় বসন্ত এসেছে।এটি মালভেসি গোত্রের ফুল।এটি নানা কারনে ধংস হয়ে যাচ্ছে—বলে জানান। বৈশ্বিক দুষন আর জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের ফলে ধীরে ধীরে প্রতিটি ঋতুই হারাচ্ছে তার নিজস্ব বৈচিত্র আর সুন্দর্যকে।
জাতীয় শ্রমীকলীগের রূপসা উপজেলা সাধারণ সম্পাদক এস এম নুর মোহাম্মদ ( টুলু ) বলেন, এখন আর শিমুল গাছ কেউ রোপণ করেনা। শিমুল গাছ এমনিতেই জন্মায় তা দিনে দিনে বড় হয়ে একদিন বিশাল আকৃতি ধারন করে। বসন্তে শিমুল গাছে রক্ত কবরী লাল রঙ্গে ফোটে তোলে, দৃষ্টি কেড়ে নেই সবার মন। কিছুদিন পরে রক্তলাল থেকে সাদা ধুসর হয়ে তুলার তেরি হয়। গ্রাম বাংলার এই শিমূল গাছ অর্থনৈতিক সম্বৃদ্ধি এনে দিত। গ্রামের মানুষেরা এই শিমুলের তুলা কুড়িয়ে বিক্রি করতো। অনেকে নিজের গাছের তুলা দিয়ে বানাতো লেপ, তোষক, বালিশ। শিমুলের তুলা বিক্রি করে অনেকে সাবলম্বী হয়েছে,এমন নজিরও আছে ।
কিন্তু কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় তেমন চোখে পড়ে না শিমুল গাছের। প্রতিনিয়ত বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে শিমুল গাছ। যার কারনে গ্রাম বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে, অতি চিরচেনা শিমূল গাছ।